Advertisement

সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট ও লিঙ্কভূক্ত হবে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত পরিভাষা দেখতে এখানে ক্লিক করুন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিভাষায় ক্লিক করে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।

পদার্থবিজ্ঞানের বিশেষ কিছু পরিভাষা এখানে পাবেন
(এই রংয়ের লেখাগুলোয় ক্লিক করে বিস্তারিত জানা যাবে।)

| | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | |

অক্ষীয় অয়নচলন
ঘূর্ণায়মান বস্তুর আবর্তন অক্ষের ধীর কিন্তু ধারাবাহিক পরিবর্তন। পৃথিবীর অক্ষ প্রায় ২৫,৭৭২ বছরে এক ঘূর্ণন চক্র শেষ করে। ব্যাপারটা লাটিমের ঘুরন্ত মাথার সাথে তুলনীয়। ইংরেজি Axial precession
অতিক্রমন
বুধ বা শুক্র গ্রহরা পৃথিবী থেকে দেখতে অনেকসময় সূর্যের সামনে চলে আসে। ফলে একটি বিন্দুর মতো জায়গা দিয়ে সূর্যের আলো চোখে আসতে বাধা পায়। এ ঘটনার নামই অতিক্রমন। একই ধরনের ঘটনা চাঁদের ক্ষেত্রে হলে বিন্দুর চেয়ে অনেক বেশি আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়। এরই নাম সূর্যগ্রহণ। সৌরজগতের বাইরের গ্রহদেরও নিজ নক্ষত্রের সাথে এমনটা ঘতে। এটা বহির্গ্রহ খুঁজে পাওয়ারও একটি উপায়। ইংরেজি Transit
আরও দেখুন - বহির্গ্রহ
অন্তঃসংযোগ
অন্তঃসংযোগপৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থিত কোনো গ্রহের সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান। অন্তঃসংযোগ শুধু দুইটি গ্রহ- বুধ এবং শুক্রের পক্ষেই সম্ভব। কারণ সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে এই শুধু দুটিরই কক্ষপথ পৃথিবী থেকে ভেতরের দিকে। ইংরেজি Inferior Conjunction
আরও দেখুন - বহিঃসংযোগ।
অন্তহীন তারা
খ-মেরুর কাছাকাছি জায়গার তারা। অন্য তারাদের মতো এরা কখনও অস্ত যায় না বা ডোবে না। সবসময় দিগন্তের উপরে থাকে। ইংরেজি Circumpolar Star
অনুবিন্দু
কক্ষপথের কোনো বস্তুর কেন্দ্রীয় বস্তু থেকে সর্বনিম্ন দূরত্ব। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। সে কারণেই অনুবিন্দু ও অপবিন্দু নামে দুটি চরম অবস্থান তৈরি হয়। চাঁদ ও পৃথিবীর ক্ষেত্রে এর বিশেষ নাম অনুভূ, পৃথিবী ও সূর্যের ক্ষেত্রে নাম অনুসূর। ইংরেজি Periapsis আরও দেখুন - অপবিন্দু
অনুভূ
পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করা কোনো বস্তুর (চাঁদ, কৃত্রিম উপগ্রহ) নিকটতম অবস্থান। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Perigee আরও দেখুন - অপভূ, অনুসূর
অনুসূর
গ্রহ, ধূমকেতু ইত্যাদি সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের নিকটতম অবস্থান। ইংরেজি Perihelion
আরও দেখুন - অপসূর।
অপবিন্দু
কক্ষপথের কোনো বস্তুর কেন্দ্রীয় বস্তু থেকে সর্বোচ্চ দূরত্ব। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Apoapsis
আরও দেখুন - অনুবিন্দু
অপভূ
পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করা কোনো বস্তুর (চাঁদ, কৃত্রিম উপগ্রহ) সবচেয়ে দূরের অবস্থান। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Apogee আরও দেখুন - অপবিন্দু, অনুসূর
অপসূর
অনুসূরের বিপরীত। সূর্যের চারপাশের উপবৃত্তাকার কক্ষপথে কোনো বস্তুর সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরের অবস্থান। ইংরেজি Aphelion
অপেরণ
আলোর গতি সসীম। ফলে মহাজাগতিক কোনো বস্তু থেকে আলো গতিশীল পর্যবেক্ষকের চোখে পৌঁছতে পৌঁছতে পর্যবেক্ষকের গতির কারণে বস্তুটির অবস্থানের আপাত পরিবর্তন ঘটে। এ পরিবর্তনের কৌণিক পরিমাপই অপেরণ। ইংরেজি Aberration।
অভিজিৎ
রাতের আকাশের পঞ্চম উজ্জ্বল নক্ষত্র। উত্তর গোলার্ধে দ্বিতীয়। বীণামণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল। বিষুবলম্ব +৩৮o। বাংলাদেশ থেকে দেখতে সোজা উপর থেকে ১৫ ডিগ্রি উত্তর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে চলে। ইংরেজি Vega
অয়ন
বছরের যে দুটি সময় খ-বিষুব থেকে সূর্য সবচেয়ে দূরে অবস্থান করে। ইংরেজি Solstice
আরও দেখুন - উত্তরায়ন, দক্ষিণায়ন
অরোরা
সৌরবায়ুর সাথে পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডলের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট উজ্জ্বল আলো। উত্তর ও দেখুন মেরুতে মূলত দেখা যায় এ আলো। ইংরেজি Aurora
অন্য নাম - মেরুজ্যোতি, মেরুপ্রভা
আইনস্টাইন ক্রস
ভারী বস্তুর কারণে স্থান-কালের বক্রতার ফলে দূরের আলোর বাঁক খেয়ে একই বস্তুর সৃষ্ট চারটি ছবি। বিশেষ করে কিউ২২৩৭+০৩০ কোয়াসারের চিত্র। ইংরেজি Einstein Ring
আইনস্টাইন বলয়
ভারী বস্তুর মহাকর্ষ বক্রতার কারণে পেছনে থাকার বস্তুর বলয়সদৃশ্য চিত্র। ইংরেজি Einstein Ring

আকাশ
পৃথিবী থেকে উপরের দিকে বাধাহীন দৃশ্য। এর মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও বহিঃআকাশ আছে। আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রদের দেখে মনে হয় সবাই একটি গম্বুজ বসে আছে। অবস্থান চিহ্নিত করার সুবিদার্থে এ গম্বুজের নাম খ-গোলক। বিষুবলম্ব ও বিষবাংশ দিয়ে আকাশের বুকে যেকোনো বস্তুর অবস্থান বের করা যায়। গম্বুজাকার এ আকাশকে ৮৮টি তারামণ্ডলে ভাগ করা আছে। ইংরেজি Sky
আকাশগঙ্গা
দেখুন - মিল্কিওয়ে
আখেরনার
রাতের আকাশের নবম উজ্জ্বল তারা। ইরিডানাস তারামণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব (-৫৭) ডিগ্রি। দিগন্ত পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধের তারাটাকে দেখা যেতে পারে। ইংরেজি Achernar
অন্য নাম- নদীমুখ
আপাত উজ্জ্বলতা
পৃথিবী থেকে একটি কোন বস্তুকে (যেমন তারকা, গ্যালাক্সি বা গ্রহ) কতটা উজ্জ্বল দেখায় তার একটি পরিমাপ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণের বিভিন্ন বস্তুর উজ্জ্বলতার অসম তারতম্য হতে পারে বলে এটি পরিমাপের সময় বায়ুমণ্ডলকে অনুপস্থিত ধরে মান বের করা হয়। এর মান যত কম হয়, সংশ্লিষ্ট বস্তুটি হয় তত উজ্জ্বল। রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকের ক্ষেত্রে এই মান -১.৪৬ (মাইনাস ১ দশমিক ৪৬)। ইংরেজি Apparent Magnitude
আবর্তন
কোন বস্তুর নিজের অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণন। একটি গোলাকার বস্তুর পৃষ্ঠে একটি দাগ দিয়ে একে যতটুকু ঘোরালে দাগটি পুনরায় দেখা যাবে সেটা হলো একটি পূর্ণ আবর্তন। অন্য দিকে যে প্রক্রিয়ায় বস্তুকে ঘুরিয়ে একই অঞ্চল আবার দেখা যায় সেটাই আবর্তন। পৃথিবী একবার আবর্তন করলে এক দিন হয়। ইংরেজি Rotation
আরও দেখুন- প্রদক্ষিণ
আর্দ্রা
দেখুন - বিটলজুস
আলো
এক ধরনের তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ। যা খালি চোখে দেখা যায়। দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার। ইংরেজি Light
আলোক দূষণ
রাতের একশে কৃত্রিম আলোর আভা। আলোক দূষণের কারণে রাতের আকাশে দৃশ্যমান বস্তুর সংখ্যা কমে যায়। টেলিস্কোপে বিশেষ ফিল্টার ব্যবহার করে এর প্রভাব কিছুটা কমিয়ে আনা যায়। ইংরেজি Light Pollution
আলোকবর্ষ
‍আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। সংজ্ঞা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এটা সময়ের নয়, বরং দূরত্বের একক। এটি ৯ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার বা ৬ ট্রিলিয়ন সমপরিমাণ দূরত্বের সমান। ইংরেজি Light-year
আলোক-সেকেন্ড
আলো এক সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। এর প্রকৃত মান ২,৯৯,৭৯,২৪,৫৮ মিটার। কাছাকাছি মান ৩ লক্ষ কিলোমিটার। ইংরেজি Light-second
আলটেয়ার
ঈগলমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। রাতের আকাশে ১২ নং উজ্জ্বল। সামার ট্রায়াঙ্গেলের তিন তারার একটি। বিষুবলম্ব +৯o। ইংরেজি Altair
অন্য নাম - শ্রবণা
আলফা সেন্টোরি
রাতের আকাশের তৃতীয় উজ্জ্বল নক্ষত্র। চোখে দেখা আলো তিন তারার মিলিত আলো। রাইজিল কেন্টোরাস, টোলিম্যান ও প্রক্সিমা সেন্টোরি। বিষুবলম্ব (-৬১o)। ফলে তাত্বিকভাবে সম্ভব হলেও বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেখাই যায় না। অনেক বেশি দক্ষিণে আছে। ইংরেজি Alpha Centauri
আহ্নিক গতি
পৃথিবীর আবর্তনের কারণে পৃথিবীর চারদিকে চন্দ্র, সূর্য, তারাসহ খ-বস্তুদের আপাত গতি। Diurnal Motion
অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ
পৃথিবী থেকে ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরের ছায়াপথ। মিল্কিওয়ের সবচেয়ে কাছের উল্লেখযোগ্য ছায়াপথ। ব্যাস এক লাখ ৫২ হাজার আলোকবর্ষ। ইংরেজি Andromeda Galaxy
অ্যানড্রোমিডা তারামণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডল বা এলাকার একটি। অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ এ মণ্ডলেই অবস্থিত। সবচেয়ে উজ্জ্বল তারার নাম আলফেরাজ। ইংরেজি Andromeda Constellation
অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (এইউ)
পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। সংক্ষেপে এইউ। ইংরেজি Astronomical Unit (AU)
অ্যালডেবারান
রাতের আকাশের ১৪ নং উজ্জ্বল তারা। বৃষয়মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল। বিষুবলম্ব +১৬o

ইউরেনাস
সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে সপ্তম গ্রহ। আয়তনের দিক দিয়ে এটি সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। ১৭৮১ সালে উইলিয়াম হার্শেল ইউরেনাস আবিষ্কার করেন। ইংরেজি Urnaus

ঈগলমণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডলের অন্যতম। মিল্কিওয়ের দৃশ্যমান বাহুটা এ মণ্ডলের ওপর দিয়ে চলে গেছে। সামার ট্রায়াঙ্গেল তারানকশার অন্যতম তারা আলটেয়ার (শ্রবণা) এ মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। ইংরেজি Aquila

উৎকেন্দ্রিকতা
বৃত্তাকার আকৃতি থেকে কক্ষপথের বিচ্যুতি। ইংরেজি Eccentricity
উত্তরায়ন
উত্তর গোলার্ধে সূর্যের সবচেয়ে উত্তরের অবস্থান। এদিন উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন। প্রতি বছর ২০ বা ২১ জুন তারিখে এটা হয়। এরপর সূর্য আবার দক্ষিণে সরতে থাকে। ছয় মাস পর হয় দক্ষিণায়ন। যখন সূর্য সবচেয়ে দক্ষিণে চলে যায়। উত্তরায়নের আগে ও পরে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণে শীতকাল থাকে। ইংরেজি Northern Solstice বা June Solstice বা Summer Solstice
আরও দেখুন - দক্ষিণায়ন
উপগ্রহ
গ্রহদের চারদিকে প্রদক্ষিণরত বস্তু। বুধ ও শুক্র গ্রহ ছাড়া সৌরজগতের সব গ্রহেরই উপগ্রহ আছে। ইংরেজি Satellite বা Moon
উর্ট মেঘ
সূর্যের দুই হাজার থেকে দুই লক্ষ এইউ দূরের হিমেল বস্তু দিয়ে গড়া চাকতিসদৃশ একটি মেঘ। ইংরেজি Oort cloud
আরও দেখুন - কাইপার বেল্ট, গ্রহাণুবেষ্টনী
উল্কা
পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা কোনো বস্তু বায়ুর কণা ধাক্কা লেগে জ্বলে উঠা। অধিকাংশ সময় এরা বায়ুর ধাক্কায় ক্ষয় হয়ে যায়। অনেকসময় ভূপৃষ্ঠে চলে আসে। তখন একে বলে উল্কাপিণ্ড (Meteorite)। ইংরেজি Meteor
উল্কাপাত
বছরের বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক সংখ্যা উল্কা দেখা যায় পৃথিবীর আকাশে। জানুয়ারি, এপ্রিল, আগস্ট বিভিন্ন মাসে নিয়ম করে উল্কাপাত হয়। ইংরেজি Meteor Shower

এইউ
দেখুন - অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট
এরিস
একটি বামন গ্রহ। বামন গ্রহদের মধ্যে এর ভর সবচেয়ে বেশি। ইংরেজি Eris
আরও দেখুন - ভর

ওজন
পৃথিবী বা অন্য গ্রহ, নক্ষত্র যে বলে কোনো বস্তুকে আকর্ষণ করে। ইংরেজি Weight
ওয়ার্মহোল
মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী নল বা সুড়ঙ্গ। ওয়ার্মহোলের অপর প্রান্তে সমান্তরাল বা শিশু মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যার মাধ্যমে সময় ভ্রমণ সম্ভব হতে পারে। ইংরেজি Wormhole

কন্যামণ্ডল
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। মে মাসে রাত ৯টার দিকে একে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা চিত্রা। প্রতি বছর আগস্টের ২৩ থেকে সেপ্টেম্বরের ২২ পর্যন্ত সূর্য এ অঞ্চলে থাকে। ইংরেজি Virgo
কক্ষপথ
কোন বস্তুর অন্য বস্তুকে প্রদক্ষিণ করার জন্য সাধারণত যে বৃত্তাকার, উপবৃত্তাকার বা এর কাছাকাছি ধরনের পথ অতিক্রম করে। ইংরেজি Orbit
ক্যানোপাস
দেখুন - সুহাইল নক্ষত্র
ক্যাপেলা
অরাইজা বা প্রজাপতিমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। রাতের আকাশে ষষ্ঠ উজ্জ্বল। বাংলাদেশ থেকে ভালভাবে দেখা যায়। বিষুবলম্ব +৪৬ ডিগ্রি। ইংরেজি Capella
ক্যাস্টর
রাতের আকাশের ২৪ নং উজ্জ্বল তারা। মিথুনমণ্ডলের দ্বিতীয় উজ্জ্বল (পোলাক্সের পরেই)। উইন্টার হেক্সাগনের অংশ। ইংরেজি Castor
কর্কটক্রান্তি রেখা
পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের যে রেখা বরাবর সূর্য সরাসরি মাথার উপর আলো দেয়। বিষুবরেখা থেকে কৌণিক দূরত্ব ২৩.৪৪ ডিগ্রি। সূর্য উত্তরায়নের দিন এ রেখার উপর আসে। বাংলাদেশের খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকা কল্পিত এ রেখার ওপর পড়েছে। ইংরেজি Tropic of Cancer
কর্কটমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। জুলাই মাসের রাত ৯টায় একে সবচেয়ে ভাল দেখা যায়। মূলত উত্তর গোলার্ধে দেখা গেলেও দক্ষিণ গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। ২০ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত সূর্য মোটামুটি এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Cancer
কসমোলজি
সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়ে যে শাস্রে। এতে আলোচনা করা হয় মহাবিশ্বের জন্ম, মৃত্যু ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। ইংরেজি Cosmology
অন্য নাম - মহাবিশ্বতত্ত্ব
কাইপার বেল্ট
সূর্যের চারদিক বেষ্টনকারী একটি চাকতি। গ্রহাণুবেষ্টনীর মতো হলেও এর সাইজ অনেক বড়। নেপচুনের কক্ষপথ (দূরত্ব ৩০ এইউ) থেকে শুরু করে সূর্য থেকে ৫০ এইউ পর্যন্ত বিস্তৃত। ইংরেজি Kuiper Belt
কুবিন্দু
সুবিন্দুর উল্টো দিকের বিন্দু। পায়ের তলার দিক বরাবর আকাশের বিন্দু। ইংরেজি Nadir
আরও দেখুন - কুবিন্দু
কারমান রেখা
পৃথিবী ও মহাশূন্যের মাঝখানে কাল্পনিক রেখা, যেখানে পৃথিবীর মহাকর্ষীয় বল খুব দুর্বল। সমুদ্র স্তর থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে। ইংরেজি Kármán Line
কুম্ভমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সূর্য ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ সময়ে এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Aquarius
কোয়াসার
অতিউজ্জ্বল সক্রিয় ছায়াপথকেন্দ্র। এর কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী সুপারম্যাসিভ বা বড় আকারের ব্ল্যাকহোল। কোয়াসি-স্টেলার বা নক্ষত্রসদৃশ কথা থেকে কোয়াসার শব্দ এসেছে। ইংরেজি Quasar
কৌণিক দূরত্ব:
কৌণিক পথে অতিক্রান্ত বস্তুর দূরত্ব। জ্যামিতিক কোণ দিয়ে এর পরিমাপ হয়। পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিদ্যায় এর দারুণ ব্যবহার আছে। হাতকে লম্বা করে প্রসারিত করলে আকাশে (খ-গোলকে) তর্জনির পরিমাপ হয় এক ডিগ্রি। ইংরেজি Angular Distance
পড়ুন - খালি হাতে আকাশ পরিমাপ
কৃত্রিম উপগ্রহ
মানুষের প্রচেষ্টায় কোনো বস্তুর (পৃথিবী, অন্য গ্রহ ইত্যাদি) কক্ষপথে স্থাপিত বস্তু। ইংরেজি Artificial Satellite
আরও দেখুন - চাঁদ, উপগ্রহ
ক্রোমোস্ফিয়ার
সূর্য বা যেকোনো নক্ষত্রের বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তর। আলোকমণ্ডলের উপরে এর অবস্থান। ইংরেজি Chromosphere
অন্য নাম - বর্ণমণ্ডল

খ-গতিবিদ্যা
জ্যোতির্বিদ্যার শাখা, যেখানে আকাশের সব ধরনের বস্তুর গতি নিয়ে কাজ করা হয়। গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ বা কৃত্রিম উপগ্রহ সবাইকে নিয়েই এ কাজ হয়। ইংরেজি Celestial Mechanics
আরও দেখুন - জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা
খ-গোলক:
আকাশের সবগুলো বস্তু একটি গোলকের নিচের পৃষ্ঠে অবস্থিত আছে বলে কল্পনা করলে ঐ গোলকটিকে বলা হয় খ-গোলক। ইংরেজি Celestial Sphere
খ-বিষুব:
পৃথিবীর বিষুব রেখার বরাবর উপরে খ-গোলকে কল্পিত বিশাল বৃত্ত। পৃথিবী নিজের কক্ষতলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকায় খ-বিষুবও একই কোণে সূর্যপথের সাথে হেলে আছে। ইংরেজি Celestial Equator
খ-মেরু
পৃথিবীর দুই মেরু বরাবর উপরে খ-গোলক বিন্দু। ইংরেজি Celestial Pole
আরও দেখুন - অন্তহীন তারা

গোধূলি
সূর্যাস্তের পরে বা সূর্যোদয়ের আগের আলো-আঁধারি অবস্থা। সূর্য দিগন্তের ১৮ ডিগ্রি পর্যন্ত নিচে থাকার সময়টা গোধূলি। ইংরেজি Twilight
গ্রহ
সৌরজগতে সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণরত ৮টি বস্তু। এরা হল- বুধ, শুক্র,পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। প্লুটো বর্তমানে গ্রহ নয়। সৌরজগতের বাইরের গ্রহকে বলে বহির্গ্রহ। ইংরেজি Planet
গ্রহাণু
সূর্যের চারপাশে ঘোরা ছোট ছোট বস্তু। ব্যাস এক হাজার কিলোমিটার বা আরও কম। এদের বেশিরভাগের অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতির কক্ষপথের মাঝের গ্রহাণু বেষ্টনীতে। অপর নাম মাইনর প্ল্যানেট বা প্ল্যানেটয়েড। ইংরেজি Asteroid
গ্রহাণুবেষ্টনী
মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে সূর্যের চারদিক বেষ্টনকারী ভরের সমাবেশ। বিভিন্ন আকারের গ্রহাণু ও ক্ষুদ্র গ্রহ দিয়ে জায়গাটা ভর্তি। সূর্যের সবচেয়ে কাছের তারাবেষ্টনী এটা। সূর্য থেকে মঙ্গলের দূরত্ব গড়ে ১.৫ এইউ। ইংরেজি Asteroid Belt
আরও দেখুন - তারাবেষ্টনী
গ্যালাক্সি
মহাকর্ষীয় বন্ধনে আবদ্ধ নক্ষত্র, নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষ, আন্তঃনাক্ষত্রিক গ্যাস ও ধূলিকণা এবং ডার্ক ম্যাটারের সমাবেশ। ইংরেজি Galaxy
অন্য নাম - ছায়াপথ

ঘটনা দিগন্ত
ব্ল্যাক হোলের সীমানা। ব্ল্যাক হোলের চারপাশের এ অঞ্চলের বাইরে আলো আসতে পারে না। এর ভেতরে ঘটা কোনো ঘটনা আমরা কখনোই দেখব না। ইংরেজি Event Horizon

চন্দ্রগ্রহণ
চাঁদ ও সূর্যের মাঝে পৃথিবী একই রেখায় থাকলে পৃথিবীয় ছায়ায় চাঁদ ঢাকা পড়ে। এটাই চন্দ্রগ্রহণ। সূর্যগ্রহণের মতোই এটা পূর্ণ, আংশিক বা বলয়ের মতো হতে পারে। ইংরেজি Lunar Eclipse
আরও দেখুন - সূর্যগ্রহণ
চাঁদ
পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। ২৭.৩ দিনে পুরো একবার পৃথিবীকে ঘুরে আসে। অনেকসময় উপগ্রহ বোঝাতেও চাঁদ শব্দটা ব্যবহার করা হয়। যেভাবে নক্ষত্র বোঝাতে সূর্য ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি Moon

জোড়াতারা
এমন দুইটি দুইটি নক্ষত্র যারা একে অপরকে প্রদক্ষিণ করে। ইংরেজি Binary Star
আরও দেখুন- ডাবল স্টার
জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা
জ্যোতির্বিজ্ঞানের শাখা, যেখানে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের নীতি ব্যবহার করে মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনার বৈশিষ্ট্য বের করা হয়। উজ্জ্বলতা, ঘনত্ব, তাপমাত্রা ও রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা হয়। ইংরেজি Astrophysics
আরও দেখুন - খ-গতিবিদ্যা
জ্যোতির্বিদ্যা
মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর বৈজ্ঞিনিক অনুসন্ধান। ইংরেজি Astronomy (Astrology নয়)
আরও দেখুন- জ্যোতিষবিদ্যা
জ্যোতির্মিতি
জ্যোতির্বিদ্যার শাখা, যেখানে নক্ষত্র ও অন্যান্য খ-বস্তুর আকার, অবস্থান ও চলাচল নিয়ে কাজ করা হয়। ইংরেজি Astrometry
জ্যোতিষবিদ্যা
আকাশের বস্তু দেখে ভাগ্যগণনা। এর সাথে বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। ইংরেজি Astrology (Astronomy নয়)

টেলিস্কোপ
দূরের বস্তু দেখার আলোকীয় যন্ত্র। হালের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পৃথিবীর কক্ষপথের একটি অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ। ইংরেজি Telescope
ট্রিলিয়ন
এক লক্ষ কোটি বা এক হাজার বিলিয়ন। ১০১২। ইংরেজি Trillion

ডাবল স্টার
পৃথিবী থেকে দেখতে কাছাকাছি অবস্থানের দুটি তারা। তারা দুটি বাইনারি বা জোড়াতারা হতে পারে, আবার আকাশের একই দিকে থাকায় কাছাকাছি দেখাতে পারে। বাস্তবে হয়তো তারা একে অপর থেকে অনেক দূরে। যেভাবে রাতের আকাশে মাঝেমধ্যে চাঁদকে অন্য গ্রহ বা তারার পাশে দেখা যায়। অনেকসময় দ্বিতারার দুটি তারাকে খালি চোখে আলাদা দেখা যায় না। দেখা যায় টেলিস্কোপে। ইংরেজি Double Star
অন্য নাম - দ্বিতারা
ডার্ক এনার্জি
মহাবিশ্বের বড় কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করা অজানা শক্তি। ধারণা করা হয়, অদৃশ্য এ শক্তির প্রভাবেই মহাবিশ্ব ক্রমেই দ্রুত হারে প্রসারিত হচ্ছে।
আরও দেখুন - ডার্ক ম্যাটার
ডার্ক ম্যাটার
(Dark matter): গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও এদের মাঝে অবস্থিত সেসব বস্তু যাদেরকে এখনো সরাসরি দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। মহাবিশ্বের অন্তত ৯০ ভাগ ভরই ডার্ক ম্যাটার। ইংরেজি Dark Matter
আরও দেখুন - ডার্ক এনার্জি

তারকা
মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামে গড়া ভারী গোলকীয় বস্তু। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় অভ্যন্তরে আলো ও তাপ তৈরি হয়। সূর্য আমাদের সবচেয়ে কাছে তারকা। রাতের আকাশের উজ্জ্বল তারাদের গল্প পড়ুন এখানে। ইংরেজি Star
অন্য নাম - তারা, নক্ষত্র।
তারা
দেখুন - তারকা
তারানকশা
বিভিন্ন তারার সমন্বয়ে তৈরি আকাশের বিভিন্ন নকশা। এই যেমন সামার ট্রায়াঙ্গেল, পেগাসাস বর্গ ইত্যাদি। ইংরেজি Asterism
তারাবেষ্টনী
নক্ষত্রের চারদিকে বলয় বা ডোনাটের আকৃতির সংযোজন চাকতি। এখানে গ্যাস, ধূলিকণা, ক্ষুদ্র গ্রহ ইত্যাদি থাকে। ইংরেজি Circumstellar Disc আরও দেখুন - গ্রহাণুবেষ্টনী, কাইপার বেল্ট, উর্ট মেঘ
তারামণ্ডল
পৃথিবীর আকাশের ৮৮টি এলাকার একটি। এর মাধ্যমে মহাজাগতিক বস্তুর ঠিকানা নির্ধারিত হয়। নিকট বা দূর আকাশের সব বস্তুই ৮৮টি মণ্ডলের কোনো না কোনোটিতে অবস্থিত। ইংরেজি Constellation
তুলামণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সূর্যকে আকাশের এ এলাকায় দেখা যায় ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। ইংরেজি Libra

দক্ষিণায়ন
দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যের সবচেয়ে দক্ষিণের অবস্থান। ইংরেজি December Solstice বা Winter Solstice
আরও দেখুন অয়ন, উত্তরায়ন
দিন
পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহ নিজ অক্ষের সাপেক্ষে পূর্ণ আবর্তন করতে যে সময় লাগে। সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর পূর্ণ আবর্তন করতে প্রয়োজনীয় সময়ের নাম সৌর দিন। আর নক্ষত্রের সাপেক্ষে উক্ত সময়কে বলে নাক্ষত্রিক দিন। নাক্ষত্রিক দিনের দৈর্ঘ্য ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড। আর সৌর দিন ২৪ ঘণ্টা। ইংরেজি Day
দীপ্তি
কোনো নক্ষত্র, ছায়াপথ বা অন্য মহাজাগতিক বস্তুর একক সময়ে মোট নির্গত শক্তি। এর এসআই একক জুল পার সেকেন্ড বা ওয়াট। আপাত উজ্জ্বলতা এটা থেকে আলাদা। দীপ্তি বেশি হলেও পৃথিবী থেকে দূরত্ব বেশি হলে আপাত উজ্জ্বলতা কম হবে।
দুরবিন
দূরের বস্তু দেখার যন্ত্র। এতে দুটি নলে দুটি প্রতিসারক টেলিস্কোপ থাকে। ইংরেজি Binocular
দ্বিতারা
দেখুন - ডাবল স্টার

ধনুমণ্ডলী
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্র এ মণ্ডলে অবস্থিত। আকাশগঙ্গার দৃশ্যমান বাহুটাও এ মণ্ডলের ওপর দিকে গেছে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি প্রায় এক মাস সূর্য এ মণ্ডলে থাকে। ইংরেজি Sagittarius
ধূমকেতু
ধূলি, বরফ ও গ্যাস দিয়ে তৈরি সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করা বস্তু। সূর্যের কাছে চলে এলে সৌর বিকিরণ ও সৌরায়ুর প্রভাবে এতে লম্বা লেজ দেখা যায়। ইংরেজি Comet
পড়ুন - হ্যালির ধূমকেতু এখন কোথায়?
ধ্রুবতারা
পৃথিবী বা অন্য কোনো আবর্তনশীল বস্তুর উত্তর বরাবর সোজা উপরের আকাশের তারা। পৃথিবীর উত্তর মেরু বরাবর বর্তমান তারাটির নাম পোলারিস। অতীতের বিভিন্ন সময়ে কোচাব, থুবান নক্ষত্রা ছিল ধ্রুবতারা। দক্ষিণ মেরুতওে অনুজ্জ্বল একটি তারা দেখা যায়। নাম সিগমা অক্ট্যান্টিস। ইংরেজি Pole Star
আরও দেখুন - পোলারিস

নক্ষত্র
দেখুন - তারকা
নক্ষত্রপুঞ্জ
এক গুচ্ছ তারার সমাবেশ, যারা নিজেদের সাধারণ ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। নক্ষত্রপুঞ্জ উন্মুক্ত বা বটিকাকার হতে পারে। উন্মুক্ত পুঞ্জের নক্ষত্র সহজেই বাইরের আকর্ষণে আলাদা হয়ে যেতে পারে। ইংরেজি Star Cluster
নদীমুখ
দেখুন - আখেরনার তারা।
নিউট্রন নক্ষত্র
ব্ল্যাকহোলের পরে মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভারী ও ঘন বস্তু। সূর্যের ১০ থেকে ২৫ গুণ ভরের তারকারা জ্বালানি শেষ করে গুটিয়ে গিয়ে নিউট্রন নক্ষত্র হয়। এরা সম্পূর্ণভাবে নিউট্রন দিয়েই তৈরি। ইংরেজি Neutron Star
নিরক্ষরেখা
পৃথিবী বা অন্য গ্রহ নক্ষত্রের দুই মেরুর মাঝ দিয়ে কল্পিত রেখা। পৃথিবীর ক্ষেত্রে রেখাটি পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। ইংরেজি Equator
অন্য নাম বিষুবরেখা
নীহারিকা
হাইড্রোজেন ও মহাজাগতিক ধূলিকণায় তৈরি আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ। এ জায়গার গ্যাস ও ধূলিই ধীরে ধীরে নক্ষত্র হয়ে ওঠে। অবশিষ্টাংশ থেকে গ্রহ ও সৌরজগৎ তৈরি হতে পারে। ইংরেজি Nebula
নেপচুন
সৌরজগতের অষ্টম ও আয়তনে ৪র্থ বৃহত্তম গ্রহ। ইংরেজি Neptune (উচ্চারণ নেপটুন)
নেবুলা
দেখুন নীহারিকা
নোভা
শ্বেত দানব নক্ষত্রের সঙ্গী তারা থেকে জ্বালানি নিয়ে হঠাৎ অল্প সময়ের জন্যে জ্বলে ওঠা। নোভা কয়েক সপ্তাহ বা মাস স্থায়ী হতে পারে। ইংরেজি Nova
ন্যানোমিটার
এক মিটারের একশ কোটি ভাগের এক ভাগ। $১০^{-৯}$। ইংরেজি Nanometer

পঙ্খীরাজমণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডলের একটি। দেখার সেরা সময় অক্টোবর মাসের রাত নয়টা। বিষুবলম্ব +২.৩ ডিগ্রি থেকে +৩৬.৬১। বাংলাদেশ থেকে এ সময় ও এর আগে-পরের মাসগুলোতে পেগাসাসের বর্গ খুব ভালো দেখা যায়। পাশেই আরেক বিখ্যাত মণ্ডল অ্যানড্রোমিডা। ইংরেজি Pegasus (পেগাসাস)।
পর্যবেক্ষণকেন্দ্র
দেখুন - মানমন্দির
পরম উজ্জ্বলতা
১০ পারসেক বা ৩২.৬ আলোকবর্ষ দূরে থাকলে আপাত উজ্জ্বলতা যেমন হত। দূরের বস্তুর নিছক দূরত্বের কারণে আপাত উজ্জ্বলতা কমে যায়। পৃথিবীর আকাশে অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে৷ এ কারণে তুলনার সুবিদার্থে পরম উজ্জ্বলতা ব্যবহার করা হয়৷ ইংরেজি Absolute Magnitude
আরও দেখুন - আপাত উজ্জ্বলতা
প্রদক্ষিণ
কোন বস্তু কতৃক অন্য কোন বস্তুর চারদিকে ঘুরে আসার ঘটনা। যেমন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার প্রদক্ষিণ করলে এক বছর হয়। ইংরেজি Revolution
পারসেক
মূলত সৌরজগতের বাইরের বড় দূরত্ব পরিমাপের জন্য যে জ্যোতির্বিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ একক। এক পারসেক সমান ৩.২৬ আলোকবর্ষ। ইংরেজি Parsec
পোলারিস
পৃথিবীর বর্তমান উত্তর ধ্রুবতারা। প্রায় সোজা উত্তর আকাশে এর অবস্থান। ভূমি থেকে অক্ষাংশের সমান উঁচুতে। রাতের আকাশে অন্য তারাদের মতো এর নড়চড় হয় না। কারণ পৃথিবীর অক্ষরেখা বরাবর খ-গোলেকে এর অবস্থান। উত্তর মেরুতে গেলে তারাটা থাকবে সোজা মাথার ওপর। ইংরেজি Polaris
আরও দেখুন - ধ্রুবতারা
প্যারালাক্স
দেখুন - লম্বন
প্রভাস
রাতের আকাশের ৮ম উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব +৫ ডিগ্রি। ইংরেজি Procyon
পৃথিবী
সৌরজগতে সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে তৃতীয় ও একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। ইংরেজি Earth
প্লুটো
একটি বামন গ্রহ, যা ২০০৬ সাল থেকে গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে। ইংরেজি Pluto

ফটোস্ফিয়ার
সূর্য বা অন্য নক্ষত্রের বহিঃস্থ স্তর। এখান থেকে আলো বিকিরিত হয়। এটাই নক্ষত্রের দৃশ্যমান পৃষ্ঠ। ইংরেজি Photosphere
অন্য নাম - আলোকমণ্ডল

বছর
গ্রহের নক্ষত্রকে ঘুরে আসতে যে সময় লাগে। পৃথিবী সূর্যকে একবার সম্পূর্ণ ঘুরে আসতে ৩৬৫.২৫ দিন সময় লাগে। ইংরেজি Year
বহিঃসংযোগ
সূর্য থেকে পৃথিবীর উল্টো দিকে অবস্থিত কোন গ্রহের সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান। ইংরেজি Superior Conjunction
আরও দেখুন- অন্তঃসংযোগ
বহির্গ্রহ
সৌরজগতের বাইরের গ্রহ। ইংরেজি Exoplanet
বায়ুমণ্ডল
গ্রহ, নক্ষত্র বা অন্য মহাজাগতিক বস্তুর চারপাশের গ্যাসীয় আবরণ। যা মহাকর্ষের প্রভাবে বস্তুটার সাথে লেগে থাকে। মহাকর্ষ ক্ষেত্রের মধ্যেই থাকায় বায়ুমণ্ডলও কেন্দ্রীয় বস্তুটির সাথে সাথে আবর্তন করে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে চলা বিমানও একই কাজ করে। পৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকলে বায়ুমণ্ডল হালকা হতে থাকে। ইংরেজি Atmosphere
বিগ ব্যাং
অতি উষ্ণ ও ঘন অবস্থা থেকে মহাবিশ্বের প্রসারণের ঘটনা। মহাবিশ্বের জন্ম ও বিকাশ নিয়ে এটাই বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব। ইংরেজি Big Bang
বিটলজুস
রাতের আকাশের নবম উজ্জ্বল তারা। বিষম তারাটি যেকোনো সময় সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হতে পারে। অবস্থান কালপুরুষ মণ্ডলে। বিষুবলম্ব +৭ ডিগ্রি। ইংরেজি Betelgeuse
অন্য/বাংলা নাম - আর্দ্রা
বিলিয়ন
একশ কোটি। এক (১) এর পরে নয়টি শূন্য দিলে যে সংখ্যা হয়। ১০। ইংরেজি Billion
বিষম তারা
পৃথিবী থেকে দেখতে যেসব তারার উজ্জ্বলতায় পরিবর্তন হয়। উজ্জ্বলতার পরিবর্তন তারার অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডের জন্য হতে পারে। আবার গ্রহ বা অন্য কিছুতে আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়েও হতে পারে। ইংরেজি Variable Star
বিষুব রেখা:
দেখুন - নিরক্ষরেখা
বিষুবলম্ব
খ-বিষুব থেকে উত্তর বা দক্ষিণে তারার কৌণিক দূরত্ব। ভূপৃষ্ঠের অক্ষাংশের মতো দুই দিকে ৯০ ডিগ্রি করে। তবে খ-গোলকে উত্তর গোলার্ধের বস্তুদের জন্য + ও দক্ষিণের জন্য - (মাইনাস) ব্যবহার করা হয়। যেমন চিত্রা তারাটি (-১১) বিষুব লম্বে আছে। মানে খ-বিষুব থেকে ১১ ডিগ্রি দক্ষিণে। ইংরেজি Declination
আরও দেখুন খ-বিষুব
বুধ
সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ। সৌজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ। ইংরেজি Mercury
বৃহস্পতি
সৌরজগতের সবচেয়ে বড় ও দূরত্বের দিক থেকে পঞ্চম গ্রহ। ইংরেজি Jupiter
বৃশ্চিকমণ্ডল
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। জুলাই মাসের রাত ৯টায় উত্তর গোলার্ধের দক্ষিণ আকাশে ভালো দেখা যায়। সূর্য এ মণ্ডলে থাকে মাত্র ৬ দিন। নভেম্বরের ২৩ থেকে ২৮। ইংরেজি Scorpius
ব্ল্যাকহোল
অতি উচ্চ ঘনত্বের ভরের এমন সমাবেশ যেখান থেকে আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না। এর বহিঃস্থ সীমানাকে ঘটনা দিগন্ত বলে। ইংরেজি Black Hole
অন্য নাম কৃষ্ণগহ্বর।

ভর
একটি বস্তুতে উপস্থিত মোট পদার্থের পরিমাণ। ইংরেজি Mass
আরও দেখুন - ওজন

কালপুরুষ মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও রাতের আকাশের সপ্তম উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিষুবলম্ব (-৮) ডিগ্রি। ইংরেজি Rigel
রাশিচক্র
পৃথিবী সূর্যকে এক বছরে এক বার প্রদক্ষিণ করে আসার সময় পৃথিবী থেকে দেখতে সূর্যকে খ-গোলকের যে যে অঞ্চলে অবস্থিত মনে হয়। ৮৮টি তারামণ্ডলীর মধ্যে ১৩টি রাশিচক্রের অংশ। ইংরেজি Zodiac
পড়ুন - সূর্য কখন কোথায় থাকে?
রোহণ
খ-গোলকের কোনো বস্তুর দিগন্ত থেকে সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে অবস্থান। ইংরেজি Culmination

মকরক্রান্তি রেখা:
বিষুবরেখা থেকে ২৩.৪৪ ডিগ্রি দক্ষিণে কল্পিত পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত রেখা। দক্ষিণায়নের সময় সূর্য এই রেখা বরাবর সরাসরি আলো দেয়। এ রেখার ওপর পৌঁছে সূর্য আবার উত্তরে ফিরে আসতে শুরু করে। ইংরেজি Tropic of Capricorn
আরও দেখুন - কর্কটক্রান্তি রেখা
মকরমণ্ডলী
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সেপ্টেম্বর মাসের রাত ৯টায় একে সবচেয়ে ভাল দেখা যায়। মূলত দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা গেলেও উত্তর গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সূর্য মোটামুটি এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Capricornus
মঙ্গল
সৌরজগতের ৪র্থ এবং বুধের পরে ২য় ক্ষুদ্রতম গ্রহ। এর পৃষ্ঠে আয়রন অক্সাইডের উপস্থিতির কারণে একে লাল দেখায়। ব্যাস প্রায় পৃথিবীর অর্ধেক এবং আয়তন পৃথিবীর ১১ শতাংশ। ইংরেজি Mars
মহাজাগতিক ধ্রুবক
স্থান- কালের সহজাত ধর্মই হচ্ছে প্রসারিত হওয়া- এমন ব্যাখ্যা দেবার জন্যে আইনস্টাইনের উদ্ভাবিত গাণিতিক ধ্রুবক। পরে দেখা গিয়েছিল এই ধ্রুবক আনা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখন আবার এর প্রয়োজন আছে বলে মনে হচ্ছে। ইংরেজি Cosmological Constant
মহাজাগতিক বর্ষ:
সূর্য মিল্কিওয়ে ছায়াপথকে ঘুরে আসতে যে সময় নেয়। সময়টি ২২.৫ থেকে ২৫ কোটি বছরের সমপরিমাণ। ইংরেজি Cosmic year বা Galactic year
অন্য নাম ছায়াপথ বর্ষ
মানমন্দির
পর্যবেক্ষণকেন্দ্র, যেখান থেকে আকাশ, সমুদ্র বা পৃথিবীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়। জ্যোতির্বিদ্যা গবেষণায় মানমন্দির খুব গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইংরেজি Observatory
অন্য নাম - পর্যবেক্ষণকেন্দ্র, অবজারভেটরি
মাকিমাকি
একটি বামন গ্রহ। অবস্থান কাইপার বেল্ট অঞ্চলে। ইংরজেই Makemake
মিথুনমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। মূলত উত্তর গোলার্ধে দেখা গেলেও দক্ষিণ গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। দেখার আদর্শ সময় ফেব্রুয়ারি মাসের রাত ৯টায়। সূর্য এ মণ্ডলে থাকে ২১ জুন থেকে ২০ জুলাই। ইংরেজি Gemini
মিলিয়ন
১০ লাখ। ১০ মিলিয়নে এক কোটি। ১০। ইংরেজি Million
মিল্কিওয়ে
আমাদের, পৃথিবী, সূর্য ও সৌরজগৎ যে ছায়াপথে আছে। রাতের আকাশে এর একটি বাহু বৃত্তচাপের উত্তর-দক্ষিণ জুড়ে দেখা যায়। এটা দেখতে দুধ বা নদীর মতো বলেই মিল্কিওয়ে ও বাংলায় আকাশগঙ্গা নাম হয়েছে। ইংরেজি Milky Way
মীনমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ সূর্য এ মণ্ডলে থাকে। এ সময় ও আর আগে-পরে কিছুদিন বাদ সবসময় মণ্ডলটা দেখা যাবে। দেখার সেরা সময় নভেম্বর মাসের রাত ৯টা। ইংরেজি Pisces
মেষমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি মণ্ডল। ডিসেম্বর মাসে ভাল দেখা যায়। ১৮ এপ্রিল থেকে ১৪ মে সূর্য এ মণ্ডল অতিক্রম করে। ইংরেজি Aries
মেরুজ্যোতি
দেখুন - অরোরা
মেরুপ্রভা
দেখুন - অরোরা
মুক্তিবেগ
কোনো বস্তু বা মহাকর্ষ ক্ষেত্র থেকে যে বেগে নিক্ষিপ্ত বস্তু আর ফিরে আসে না। পৃথিবীর মুক্তিবেগ সেকেন্ডে ১১.২ কিলোমিটার। সূর্যের ৬১৭.৫ কিলোমিটার। ইংরেজি Escape Velocity
ম্যাগনেটার
অতি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রেবিশিষ্ট এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্র। ইংরেজি Magnetar

লম্বন
ভিন্ন অবস্থান থেকে দেখা বস্তুর অবস্থানের আপাত পরিবর্তন। দূরের আপাত স্থির নক্ষত্রের তুলনায় নিকতবর্তী তারা, গ্রহ বা অন্য বস্তুর অবস্থানের আপাত কৌণিক পরিবর্তনকে বলে নাক্ষত্রিক পারালাক্স। নক্ষত্রের দূরত্ব মাপতে অত্যন্ত কার্যকর এ পদ্ধতি। ইংরেজি Parallax
অন্য নাম প্যারালাক্স
লুব্ধক
রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। অবস্থান ক্যানিস ম্যাজর বা মৃগব্যাধ মণ্ডলে। বিষুবলম্ব (-১৭) ডিগ্রি। ইংরেজি Sirius
লোহিত দানব
কম বা মাঝারি ভরের নক্ষত্রদের জীবনের শেষ ভাগের দশা। সূর্যের ভরের ০.৩ থেকে ৮ গুণ ভরের তারারা একসময় এ দশায় যায়। সূর্যও জ্বালানি ফুরিয়ে একদিন রেড জায়ান্ট বা লোহিত দানব হবে। ইংরেজি Red Giant
লোহিত সরণ
ডপলার ক্রিয়ার কারণে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া নক্ষত্রের আলোকে লাল দেখা। দূরে সরার কারণে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়ে যায় বলেই এমন হয়। ইংরেজি Red Shift

শনি
সূর্য থেকে ষষ্ঠ ও বৃহস্পতির পর সবচেয়ে বড় গ্রহ। ১১ মে ২০২৩ থেকে সৌরজগতে শনি গ্রহের উপগ্রহ সবচেয়ে বেশি (১৪৬)। ভর পৃথিবীর ৯০ গুন। ইংরেজি Saturn
শুক্
সূর্য থেকে দ্বিতীয় গ্রহ। সৌরজগতের গ্রহদের মধ্যে এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। অন্যতম অদ্ভুত গ্রহও এটি। যেখান সূর্য ওঠে পশ্চিমে, ডোবে পূবে। ইংরেজি Venus
শুকতারা
পৃথিবীর রাতের আকাশে দৃশ্যমান শুক্র গ্রহ। কখনও সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে আবার কখনওবা ভোরের পূবাকাশে দেখা যায়। ইংরেজি Venus
শ্রবণা
দেখুন - আলটেয়ার

সংযোগ
চাঁদ বা কোনো গ্রহের পৃথিবীর আকাশে অন্য গ্রহ বা তারার কাছে দৃশ্যমান হওয়া। ইংরেজি Conjunction
আরও দেখুন - বহিঃসংযোগ, অন্তঃসংযোগ
সংযোজন চাকতি
কোনো নক্ষত্র বা ব্ল্যাকহোলের চারপাশ ঘিরে প্রায় বৃত্তাকার ভরের সমাবেশ৷ বাইরের কোনো বস্তু থেকে সংগৃহীত এ বস্তুকে কেন্দ্রীয় বস্তুটি সর্পিল পথে নিজের দিকে টেনে নেয়। ইংরেজি Accretion Disk
সপ্তর্ষি
সপ্তর্ষিমণ্ডলের সাতটি তারা নিয়ে গঠিত তারানকশা
সপ্তর্ষিমণ্ডল
উত্তর আকাশের উল্লেখযোগ্য একটি তারামণ্ডল। এর নির্দেশক দুই তারা দিয়ে ধ্রুবতারা চেনা যায়।
সর্পধারীমণ্ডলী
আকাশের ৮৮টি একটি রাশিচক্রের ১৩টি তারামণ্ডলীর মধ্যে অন্যতম। সূর্য ৩০ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে অবস্থান করে। ইংরেজি Ophiuchus
সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব
যে কোনো গতিতে চলা পর্যবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই হবে- এই ধারণার ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। এই থিওরি মহাকর্ষকে চতুর্মাত্রিক স্থান- কালের সাহায্যে প্রকাশ করে। ইংরেজি General Relativity বা General Theory of Relativity
অন্য নাম - সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব
সিংহমণ্ডল
কর্কট ও কন্যামণ্ডলের মাঝে অবস্থিত রাশিচক্রের তারামণ্ডল। সূর্য এখানে থাকে ১০ আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
সিঙ্গুলারিটি
স্থান- কালের এমন বিন্দু যেখানে স্থান- কালের বক্রতা (অথবা অন্য কোনো বস্তুগত রাশি) অসীম হয়। এখানে মহাকর্ষ এত বেশি যে পদার্থবিদ্যার সূত্রগুলো কাজ করে না। এর সঠিক আচরণ জানতে লাগবে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও সার্বিক আপেক্ষিকতার মিলিত তত্ত্ব - কোয়ান্টাম মহাকর্ষ। ধারণা করা হয়, ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রে সিঙ্গুলারিটি আছে। মহাবিশ্বের সূচনাও সিঙ্গুলারিটি থেকে। ইংরেজি Singularity
অন্য নাম - অনন্যতা
সেরেস
বামন গ্রহ। অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানের গ্রহাণুবেষ্টনীতে। ইংরেজি Ceres
সুপারনোভা
নক্ষত্রের বড় ও শক্তিশালী বিস্ফোরণ। সুপারনোভা দুইভাবে হতে পারে। ভারী নক্ষত্রদের জ্বালানী ফুরিয়ে গেলে প্রসারিত হয়ে। অথবা কোনো জোড়াতারা জগতের শ্বেত বামন তারা সঙ্গী তারা থেকে জ্বালানি ধার করেও নতুন করে ফিউশন শুরু করতে পারে। উৎপন্ন শক্তি নক্ষত্রটাকে উড়িয়ে দেয়। এটাও সুপারনোভা।
সুবিন্দু
সোজা মাথার উপরের আকাশের বিন্দু। ইংরেজি Zenith
আরও দেখুন - কুবিন্দু
সুহাইল
রাতের আকাশের দ্বিতীয় উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিষুবলম্ব (-৫২) ডিগ্রি। মার্চ মাসের দিকে দক্ষিণ দিগন্তে চোখে পড়বে উজ্জ্বল ও সুন্দর তারাটা। ইংরেজি Canopus
অন্য নাম - অগস্ত্য
সূর্য
সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থিত নক্ষত্র। প্রধান ক্রমের হলুদ বামন নক্ষত্রটার ভর সৌরজগতের ৯৯.৮৬ ভাগ। ইংরেজি Sun
সূর্যগ্রহণ
পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চাঁদ সরলরেখায় চলে আসলে চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে সূর্য। এটাই সূর্যগ্রহণ। সূর্যগ্রহণ পূর্ণ, আংশিক বা বলয়ের মতো হতে পারে। ইংরেজি Solar Eclipse
সূর্যপথ
বছরের প্রত্যেকটি আলাদা দিনে আকাশে সূর্যের আপাত অবস্থানবিন্দুগুলো যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায়। ইংরেজি Ecliptic আরও পড়ুন - রাশিচক্রের পরিচয়
সৌরকলঙ্ক
সূর্যপৃষ্ঠের ক্ষণস্থায়ী দাগ। এসব জায়গার তাপমাত্রা অন্য জায়গার চেয়ে কম। এ দাগ নিরাপদে দেখতে হলে সোলার ফিল্টার ব্যবহার করতে হয়। ইংরেজি Sunspot
সৌরজগৎ
সূর্য ও এর সাথে মহাকর্ষীয় বন্ধনে আবদ্ধ বস্তুসমূহ। ইংরেজি Solar System
স্বাতী
রাতের আকাশের চতুর্থ ও উত্তর গোলার্ধের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। ইংরেজি Arcturus

হাউমেয়া
বামন গ্রহ। কক্ষপথ নেপচুনের বাইরে। আবিষ্কৃত হয় ২০০৪ সালে। ইংরেজি Haumea
হেডার
রাতের আকাশের একাদশ উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব (-৬০) ডিগ্রি। ইংরেজি Hadar
Category: articles

বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩

জ্যোতির্বিদ্যায় মিটার-কিলোমিটার দিয়ে কাজ চলে না। দরকার হয় অনেক বড় বড় একক। এই যেমন এক এইউ হলো পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। ১৫ কোটি কিলোমিটার। আরও বড় দূরত্বে ব্যবহার করা হয় আলোকবর্ষ। যা আলোর এক বছরে অতিক্রান্ত দূরত্ব।



জ্যোতির্বিদ্যায় দূরত্বের এককেরা

এক আলোকবর্ষ কত বড়?

আরেকটু বড় একটি একক হলো পারসেক। এর মান আলোকবর্ষের প্রায় তিনগুণ। সঠিক করে বললে ৩.২৬ গুণ। মানে, এক পারসেক = ৩.২৬ আলোকবর্ষ৷

পারসেক কথাটা এসেছে প্যারালাক্স অব ওয়ান সেকেন্ড বা এক সেকেন্ডের প্যারালাক্স থেকে। তাহলে প্যারালাক্স কী জিনিস বুঝে নেই চলুন।

হাতটা লম্বা করে চোখের সামনে এনে একটি আঙুল খাড়া করুন। এক চোখ বন্ধ করে অন্য চোখে আঙ্গুলটি দেখুন। এবার খোলা চোখ বন্ধ করে অন্য চোখে দেখুন। দেখবেন আঙ্গুলের অবস্থান দুই চোখ দুই জায়গায় দেখছে। দুই অবস্থানের এ কৌণিক পরিবর্তনের নামই প্যারালাক্স।

প্যারালাক্সের পরিবর্তন


চোখ থেকে বস্তু যত দূরে হবে, এ কোণ তত ছোট হবে। যতটা দূরে গেলে কোণের পরিমাণ এক আর্কসেকেন্ড হবে তারই নাম এক পারসেক। এখন এক আর্কসেকেন্ড জিনিসটা বুঝলেই কেল্লাফতে!

এক ডিগ্রি কতটুকু তা আমরা সহজেই বুঝি। চোখ মেললেই সর্বত্র ৯০ ডিগ্রি বা সমকোণ দেখা যায়। চৌরাস্তায় আছে চারটা সমকোণ। বিল্ডিংয়ের দেয়াল ও ছাদের মিলনস্থলে আছে সমকোণ। আর এর ৯০ ভাগের এক ভাগই এক ডিগ্রি। এক ডিগ্রির ৬০ ভাগের এক ভাগকে বলে আর্কমিনিট। তাকে আবার ৬০ ভাগ করলেই হয় আর্কসেকেন্ড।




মানে এক আর্কসেকেন্ড হলো আর্কমিনিটের ৬০ ভাগের এক ভাগ। আর আর্কমিনিট হলো ডিগ্রির ৬০ ভাগের এক ভাগ। তাহলে এক আর্কসেকেন্ড হল এক ডিগ্রির ৩৬০০ ভাগের এক ভাগ।

রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল তারা স্বাতী। এটি পৃথিবী থেকে ১১.২৬ পারসেক দূরে আছে। দূরত্বটা পাওয়া গেছে এর প্যারালাক্স মেপেই। তারাটির প্যারালাক্স হলো ৮৮.৮৩ মিলিআর্কসেকেন্ড।

Category: articles

সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩

মহাকর্ষের পাল্লা অসীম। মানে আপনি একটি ভারী বস্তু থেকে যত দূরেই যান, এর আকর্ষণ আপনাকে টানবেই। তবে দূরত্বের সাথে সাথে আকর্ষণ কমে আসবে। দূরত্ব দ্বিগুণ হলে আকর্ষণ হবে চার ভাগের এক ভাগ। তিন গুণ হলে হবে নয় ভাগের এক ভাগ। 





আকর্ষণ কমতে কমতে তাই একটা জায়গায় হয়ে পড়ে দুর্বল ও নগণ্য। পৃথিবী থেকেও উপরে যেতে থাকলে ঘটবে এমনটা। এমনি এক কাল্পনিক রেখার নাম কারমান লাইন। অবস্থান সমুদ্র স্তর থেকে ১০০ কিলোমিটার। সাধারণ বিমানের সাহায্যে এ রেখার ধারেকাছেও যাওয়া অসম্ভব। 


কারমান রেখা অতিক্রমের সময় কিন্তু কোনো শারীরিক বা ভৌত পরিবর্তন অনুভূত হয় না। রেখাটার অস্তিত্ব প্রয়োজন নানান আইনী কারণে। আকাশযানের নীতিমালা এ রেখায় গিয়ে বদলে যায়।


কারমান রেখার সংজ্ঞায়ন করেছে ওয়ার্ল্ড এয়ার স্পোর্টস ফেডারেশন (এফএআই)। সুইশ প্রতিষ্ঠানটি এয়ার স্পোর্টস ও মামুষের উড্ডয়ন বিষয়ক ব্যাপারগুলো সংজ্ঞায়ন করে৷ মহাশূন্যের সীমানা নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছে। তবে এফএআইএর সংজ্ঞাই বহুল স্বীকৃত। মেনে নিয়েছে জাতিসংঘও। অবশ্য নাসা ও অ্যামেরিকান মিলিটারি ৫০ মাইলকে (৮০ কিলোমিটার) মহাশূন্যের শুরু হিসবে ধরে নেয়। 


সূত্র 

১। https://www.space.com/karman-line-where-does-space-begin

Category: articles

শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৩

অবজারভেটরি ইংরেজি শব্দ। বাংলা করা হয় মানমন্দির। তবে এ থেকে এর সঠিক অর্থ বোঝা কঠিন। আরেকটি বাংলা হলো পর্যবেক্ষণকেন্দ্র। এটা শুনেই আইডিয়া পাওয়া যাচ্ছে। আসলেই তাই। অবজারভেটরি মানে হলো এমন জায়গা যেখান থেকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। 


প্যারানাল মানমন্দির, চিলি। সূত্র: উইকিপিডিয়া 

অবজারভেটরি মূলত জ্যোতির্বিদ্যায় কাজে লাগে। তবে সমুদ্র, আগ্নেয়গিরি ও আবহাওবিদ্যায়ও আছে ব্যবহার। 

অবস্থানের ভিত্তিতে জ্যোতির্বিদ্যায় অবজারভেটরি আছে চার ধরনের। এগুলো থাকে মহাকাশে, বায়ুমন্ডলে, ভূমিতে বা ভূগর্ভে। ভূমির ভাল অবজারভেটরিগুলো সাধারণত পাহাড়ের উপর স্থাপন করা হয়। এতে করে পরিষ্কার আকাশ ও বায়ু পাওয়া যায়। এছাড়াও অবস্থান হতে হয় শহর থেকে দূরে। যাতে আলোকদুষণ ক্ষতি করতে না পারে।


ইংল্যান্ডের রয়েল গ্রিনউইচ অবজারভেটরি আধুনিক সময়ের অন্যতম প্রথম মানমন্দির। এখানেই পৃথিবীর দ্রাঘিমা শূন্য ধরা হয়। এ দ্রাঘিমা শূন্য হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮ ডিগ্রি থেকে ৯২ ডিগ্রি। আতাকামা লার্জ মিলিমিটার অ্যারে একটি বিশাল টেলিস্কোপ। মহাবিশ্বের শীতল জিনিসগুলো এখান থেকে দেখা হয়। পুয়ের্তো রিকোয় আছে অ্যারেসিবো মানমন্দির। পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানের জন্য এটি বিখ্যাত। এখানে আছ এক হাজার ফুটের রেডিও টেলিস্কোপ।  


অ্যামেরিকার মাউনা কেয়া আরেক বিখ্যাত মানমন্দির। সমুদ্র স্তর থেকে ১৪ হাজার ফুট উপরে এর অবস্থান। তবে পৃথিবীর উচ্চতম মানমন্দির এটি নয়। সে রেকর্ড দখল করে রেখেছে ইউনিভার্সিটি অব টোকিও আতাকামা অবজারভেটরি (TAO)।  সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা ১৮,৫০০ ফুট বা ৫,৬৪০ মিটার। চিলির আরেক বিখ্যাত মানমন্দির প্যারানাল। এটি পরিচালনা করে ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি। 

সূত্র

১। https://thetraveltester.com/famous-observatories

২। https://wowtravel.me/the-12-best-astronomical-observatories-around-the-world/

Category: articles

সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯


দুই বা তার বেশি বস্তুর মধ্যে দূরত্ব মাপতে আমরা সাধারণত যে রাশি ব্যবহার করি সেটা আসলে মাপে রৈখিক দূরত্ব। যেমন ধরা যাক ছবিতে A ও B এর দূরত্ব ২০ মিটার। এই ২০ মিটার কিন্তু এদের রৈখিক দূরত্ব। আবার ধরা যাক, A ও C এর দূরত্ব ৩০ মিটার। এটাও রৈখিক দূরত্ব।


তবে জ্যোতির্বিজ্ঞান বা ভূগোলে সমবসময় রৈখিক দূরত্ব (linear distance) দিয়ে কাজ চলে না। দরকার হয় কৌণিক (angular) দূরত্বের। রৈখিক দূরত্বের ব্যবহার একেবারেই নেই এমনটা ভাবলেও আবার বড্ড ভুল হয়ে যাবে।  আমরা জানি, আলো প্রতি সেকেন্ডে  ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে। এটা কিন্তু রৈখিক দূরত্বই। আবার পৃথিবী থেকে চাঁদের গড় দূরত্ব তিন লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। এটাও রৈখিক দূরত্ব। এভাবে রৈখিক দূরত্বও কিন্তু খুব কাজে লাগে। 


একইভাবে কাজে লাগে রৈখিক বেগ (linear velocity)। বেগ মানে হলো অবস্থান পরিবর্তনের হার। যেমন ধরুন, একটি বস্তু ১ সেকেন্ডে ১০ মিটার পথ গেল। তাহলে তার বেগ হলো সেকেন্ডে ১০ মিটার। বা কেতাবি ভাষায় $10 ms^{-1}$ । একইভাবে আরেকটি বস্তু যদি ৫ সেকেন্ডে ২০ মিটার যায়, তাহলে তার বেগ হবে $\frac {20}{5}$ বা $4 ms^{-1}$। সহজ কথায় বলা যায়, এক সেকেন্ডে (বা এক মিনিটে, যদি আপনি ভিন্ন মাপকাঠিতে মাপতে চান) নির্দিষ্ট দিকে অতিক্রান্ত দূরত্বই হলো বেগের মান।

কোনো বস্তু একটি নির্দিষ্ট বেগে যেতে থাকলে এই বেগকে বলা হয় সমবেগ (uniform velocity)। এক্ষেত্রে বেগ বের করার সূত্র খুব সোজা। বেগকে v, দুরত্বকে s এবং সময়কে t দিয়ে প্রকাশ করা হলে বেগ হবে,
$$v = \frac{s}{t}$$

এই সূত্রটিরই ব্যবহার একটু আগে আমরা করেছি। তবে বেগ যদি সুষম না হয়, তাহলে আর এই সূত্র কাজ করবে না। অবস্থান পরিবর্তনের হারকে যেমন বেগ বলে, তেমনি বেগ পরিবর্তনের হারকে বলে ত্বরণ (acceleration)। অসমবেগের ক্ষেত্রে ত্বরণের মান কাজে লাগে।

এতক্ষণ আমরা যা বললাম তার সবই কিন্তু রৈখিক কথাবার্তা। কৌণিক দূরত্ব কখন কাজে আসে তার একটি উদাহরণ চিন্তা করা যাক। আমরা জানি, রাতের আকাশে ধ্রুব তারা সবসময় উত্তর আকাশে থাকে। বরাবর উত্তর দিকের দিগন্তের উপরে। সময় গড়াবার সাথে সাথে অন্যান্য তারা পশ্চিম দিকে ঢলে পড়লেও ধ্রুব তারা থাকে প্রায় একই জায়গায়।

আরও পড়ুন
☛ দিক নির্ণয়ে ধ্রুব তারা

ধ্রুব তারা দিয়ে অক্ষাংশ বের করার দারুণ একটি উপায় আছে। কোনো জায়গা থেকে ধ্রুব তারা দিগন্ত থেকে যত ডিগ্রি উপরে থাকবে, ঐ জায়গার অক্ষাংশ হবে তত ডিগ্রি। যেমন বাংলাদেশের অক্ষাংশ প্রায় ২৩ ডিগ্রি। ফলে ধ্রুবতারাকেও উত্তর দিগন্ত থেকে ২৩ ডিগ্রি উপরে চোখে পড়ে। এই যে ভূমি থেকে ২৩ ডিগ্রি উপরের এই দূরত্ব, এটা কিন্তু রৈখিক দূরত্ব নয়। বরং কৌণিক দূরত্ব।

খালি হাতে রাতের আকাশের কৌণিক দূরত্ব মাপার বিস্তারিত উপায় লেখা আছে এখানে

এ তো গেল কৌণিক দূরত্বের কথা। অতএব, আগের মতোই, কৌণিক অবস্থান পরিবর্তনের হারই হলো কৌণিক বেগ। জ্যোতির্বিজ্ঞানে অসংখ্য জায়গায় এর ব্যবহার আছে। যেমন ধরা যাক সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথের কথা। পৃথিবী মোটামুটি এক বছরে সূর্যকে পুরোটা ঘুরে আসে। একইভাবে চাঁদসহ কৃত্রিম উপগ্রহরা ঘোরে পৃথিবীর চারপাশে। এসব হিসাব-নিকাশে দরকার হয় কৌণিক বেগ।

কৌণিক বেগ মাপা হয় বস্তুর সাবেক ও বর্তমান অবস্থানের কৌণিক অবস্থান দিয়ে। অন্য কথায় দুই অবস্থানে উৎপন্ন কোণ দিয়ে।

উপরের চিত্র দেখুন। মনে করুন, একটু বস্তু ০ ডিগ্রি অবস্থানে আছে। এটি ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে যাত্রা শুরু করল। ধরুন ৩০ ডিগ্রি ঘুরল। আরও ধরুন এটা অতিক্রম করতে বস্তুটির ২ সেকেন্ড লাগল। তাহলে বস্তুটির কৌণিক বেগ হলো সেকেন্ডে ১৫ ডিগ্রি। আমরা ধরে নিচ্ছি, বেগ সুষম। মানে, বেগ বাড়ছে-কমছে না।

কোনো বস্তু ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরলে পুরো এক ঘূর্ণন সম্পন্ন হয়। যেমন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে পুরোটা একবার ঘুরে এলে ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরা হয়। ঘূর্ণন বৃত্তাকার না হলেও (যেমন কক্ষপথ কিন্তু উপবৃত্তাকার) পুরো ঘূর্ণনে ৩৬০ ডিগ্রি-ই হয়।

উপরে আমরা কৌণিক বেগকে ডিগ্রি আর সেকেন্ড দিয়ে প্রকাশ করেছি। তবে কোণের আন্তর্জাতিক একক হলো রেডিয়ান। সেই হিসেবে কৌণিক বেগের একক হলো প্রতি সেকেন্ডে অতিক্রান্ত রেডিয়ান। আমরা জানি, ১৮০ ডিগ্রিকে রেডিয়ান এককে বলা হয় π রেডিয়ান। তাহলে কোনো বস্তু অর্ধবৃত্ত ঘুরলে (উপরের ০ ডিগ্রি থেকে ১৮০ ডিগ্রি অবস্থানে এলে) π রেডিয়ান কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করা হবে। একইভাবে পুরো বৃত্ত ঘুরে অতিক্রম করা হবে 2π রেডিয়ান দূরত্ব। কৌণিক দূরত্বকে সাধারণত θ বা α দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

কৌণিক বেগ বের করার সূত্র হলো,

$$\omega = \frac{\theta}{t}$$

যেখানে $\omega$ (ওমেগা) হলো কৌণিক বেগ।

কৌণিক বেগের জন্যে যে অন্য কারও চারদিকে ঘুরে আসতে হবে এমন কোনো কথা নেই। যেমন পৃথিবী নিজ অক্ষের চারপাশেও ঘুরে। এ কারণেই দিন-রাত হয়। এখানে পুরো এক ঘূর্ণন, মানে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। মানে এক দিন।

রাতের আকাশের তারা খুঁজে পেতে কৌণিক বেগের কারিশমা দেখতে পড়ুন:
☛ উজ্জ্বল তারাদের গল্প 

কৌণিক দূরত্ব থেকে আমরা সহজেই রৈখিক দূরত্ব বের করতে পারি।

উপরে চিত্রে বৃত্তটির ব্যসার্ধ r। তাহলে এর পরিধি হলো 2πr। মনে করুন, একটি সুতা দিয়ে একটি বৃত্ত বানানো হলো। বানানোর পরে এর ব্যাসার্ধ r হলে সুতার দৈর্ঘ্য ছিল 2πr। পরিধি মানে এটাই। আরেকভাবে চিন্তা করা যায়। বৃত্তটিকে একটি চাকা হিসেবে কল্পনা করুন। তাহলে এই চাকা পুরো একবার ঘুরলে 2πr দূরত্ব অতিক্রম করবে। পুরো একবার ঘূর্ণন! কথাটা চেনা চেনা লাগছে না? হ্যাঁ, পুরো একবার ঘূর্ণনের মানে হলো ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে আসা। রেডিয়ান এককে 2π কোণ। তবে π এর ব্যবহার দুই জায়গায় আলাদা। 2πr এর π-এর মান হলো ৩.১৪১৫... যা একটি অমূলদ ধ্রুবক। বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের ভাগফল। আর 2π কোণ যখন বলা হবে, তখন π মানে হলো ১৮০ ডিগ্রি কোণ। এখানে π এর একক আছে (রেডিয়ান, বা ডিগ্রিতে বললে ১৮০ ডিগ্রি)। কিন্তু 2πr এর π-এর কোনো একক নেই। একটি বিশুদ্ধ সংখ্যা।

উপরের তথ্য কাজে লাগিয়ে আমরা সহজেই কৌণিক আর রৈখিক বেগের সম্পর্ক বুঝতে পারি।

মনে করি, একটি বস্তু ১ মিনিটে পুরো বৃত্ত ঘুরে এল। ধরি, বৃত্তের ব্যসার্ধ (r) ১০ মিটার। বিশাল এক বৃত্ত! তাহলে এর রৈখিক বেগ কত?

উত্তর হবে,
$$v = \frac{2 \pi r}{60} = \frac{2 \pi × 5}{60} = 1.05 ms^{-1}$$

একইভাবে ১ মিনিটে ১৮০ ডিগ্রি (π রেডিয়ান) বা অর্ধবৃত্ত ঘুরে এলে রৈখিক বেগ হবে $\frac{\pi r}{60} ms^{-1}$।

তার মানে, রৈখিক বেগের সাথে কৌণের সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে।

বোঝাই যাচ্ছে, কোণের সাথে ব্যাসার্ধ গুণ করে সময় দিয়ে ভাগ দিলেই রৈখিক বেগ পাওয়া যাচ্ছে।
তার মানে, $v=\omega r$

উপরের সম্পর্ক থেকে বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্র থেকে যত দূরে যাওয়া হবে, রৈখিক দূরত্ব তত বেশি হতে হবে। মানে বৃত্তের কেন্দ্র থেকে বেশি দূরে থাকলে সমান কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করতে বেশি রৈখিক দূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। বাস্তবে এর অনেক উদাহরণ আছে। যেমন দুটি গাড়ি মোড় ঘুরছে। দুটি গাড়িই কিন্তু সমান কোণ নিয়ে ঘুরবে। কিন্তু যেটি দূরে দিয়ে ঘুরবে সেটিকে বেশি রৈখিক পথ অতিক্রম করতে হবে।


একটু চিন্তা করুন। রাতের আকাশে ধ্রুবতারা একই জায়গায় থাকার সাথে এই ধারণার মিল আছে। 

আরও পড়ুন

আসলে কৌণিক বেগ নিয়ে লিখতে থাকলে কখনও কথা ফুরোবে না। তাই আপাতত ক্ষান্ত দিলাম। 
Category: articles

মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮

যে-কোনো গোলাকার জিনিসেই মেরু ও বিষুব অঞ্চল নামে দুটো অংশ থাকে। আরও সঠিক করে এ অঞ্চল দুটি থাকে ঘুর্ণনরত গোলাকার বস্তুতে। যেমন গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি। যেমন ধরুন, আমাদের পৃথিবী। এটি ঘুরছে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে। এ কারণেই আমরা সকালবেলা পূর্ব দিকে সূর্য উঠতে দেখি। ডুবে যেতে দেখি পশ্চিমে।

আরও পড়ুনঃ
☛ গ্রহের পরিচয়
নক্ষত্রের পরিচয়

পৃথিবী ঘুরছে পশ্চিম থেকে পূবে। 
এই ঘুর্ণন থেকেই বিষুব ও মেরু অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়। উপরের ছবির একেবারে মাঝখান দিয়ে উপরে-নীচে একটি রেখা কল্পনা করুন। এই রেখাটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ বরাবর যাবে না। যাবে পৃথিবীর পেটের ভেতর দিয়ে। উপরের পৃথিবীটাকে ফুটবলের মতো চিন্তা করলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এখন এই কল্পিত রেখাকে বলা হয় ঘুর্ণন অক্ষ। মানে যে রেখাকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরছে। এবার কল্পনা করুন এই রেখাটি উপরে ও নীচে কোন বিন্দুতে গিয়ে পৌঁছেছে। এই দুটিই বিন্দুকেই বলা হয় মেরু (pole)। উপরের বিন্দুটি হলো উত্তর মেরু। অপর নাম সুমেরু। নীচের বিন্দুটির নাম কুমেরু বা দক্ষিণ মেরু। আর মেরু বিন্দু দুটির আশেপাশের অঞ্চলই মেরু অঞ্চল নামে পরিচিত।

এবার উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর মাঝখানে একটি রেখা কল্পনা করুন। অবশ্যই রেখাটি হবে পূর্ব-পশ্চিমে। এই রেখাটিরই নাম বিষুব রেখা (equator)। অপর নাম নিরক্ষ রেখা। এই রেখার উত্তরে পৃথিবীর যে অংশ পড়েছে তার নাম উত্তর গোলার্ধ (Northern hemisphere)। আর দক্ষিণের অংশের নাম দক্ষিণ গোলার্ধ।

পৃথিবীর মেরু ও বিষুব অঞ্চল। 

বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর পরিধি সবচেয়ে বেশি হয়। বিষয়টা খুব সহজ। উপরের ছবিতে দেখুন, বিষুব রেখা থেকে আমরা যতই উত্তরে বা দক্ষিণে যাব, ততই পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যাবধান কমে যাচ্ছে। তার মানে অক্ষ রেখা থেকে পৃষ্ঠের দূরত্ব কমে যাচ্ছে। বুঝতে অসুবিধা হলে ফুটবলের কথা আবার মনে করুন। এভাবে যেতে যেতে মেরুতে গিয়ে দেখুন, পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে কোন ব্যবধানই নেই। দুটো একে অপরের সাথে মিশে গেছে।

এবার আরেকভাবে চিন্তা করি। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি, বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বেশি। মেরু অঞ্চলে কম। হ্যাঁ, এটা সত্যি। তবে একটু আগে আমরা যে ব্যাসার্ধের কথা বলেছি, সেটা ছিল অক্ষ রেখা থেকে পরিধির দূরত্ব। মানে উত্তরে-দক্ষিণে কল্পিত রেখার প্রতিটি বিন্দু থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠের দূরত্ব। তবে এবারে আমরা চিন্তা করছি পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্র থেকে দূরত্ব। এই ব্যসার্ধ আপাত দৃষ্টিতে মেরু ও বিষুব অঞ্চলে সমান হওয়ার কথা। কিন্তু আসলে তা নয়।

উপরের ছবি দুটোতে আমরা পৃথিবীকে একদম খাঁটি গোলকের মতো চিন্তা করেছি। পৃথিবী সেরকমই হতো যদি এটি স্থির থাকত। কিন্তু পৃথিবী ঘণ্টায় দেড় হাজার কিলোমিটারেরও বেশি বেগে পশ্চিমে থেকে পূবে ঘুরছে। এই ঘূর্ণনের কারণেই বিষুব অঞ্চলটা একটি লম্বা হয়ে গেছে। অন্য দিকে মেরু অঞ্চলটা একটু চেপে গেছে। তার মানে পৃথিবীর সঠিক আকৃতি হবে এ রকম:
দেখুন মেরুর দিকে ব্যাসার্ধ b দিয়ে বোঝানো হয়েছে। আর বিষুব রেখায় ব্যাসার্ধ a। অবশ্যই a বড় b এর চেয়ে। ছবি থেকে বোঝাও যাচ্ছে কেন এমন হল। ছবির সূত্র

আরও পড়ুন: 
পৃথিবী কত জোরে ঘোরে?

এবারে আরও কিছু অঞ্চল চিনে নেওয়া যাক। উত্তর মেরু থেকে প্রায় ২৩.৫ ডিগ্রি দক্ষিণ পর্যন্ত এলাকা নিয়ে একটি বৃত্ত আঁকলে যে এলাকা পাওয়া যায়, তাকে বলে সুমেরু বৃত্ত (arctic circle)। একইভাবে দক্ষিণ মেরুর উত্তর দিকে বৃত্ত আঁকলে তার নাম হয় কুমেরু বৃত্ত (antarctic circle)।

সুমেরু বৃত্ত ও আশেপাশের অঞ্চল। 
আবার বিষুব রেখা থেকে ২৩.৫ ডিগ্রি উত্তরে পূর্ব-পশ্চিমে কল্পিত রেখাকে বলে কর্কটক্রান্তি রেখা (tropic of cancer)। অন্য দিকে, একই কৌণিক দূরত্বে দক্ষিণের রেখাকে বলে মকরক্রান্তি রেখা (tropic of capricorn)। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের কর্কটক্রান্তি রেখা আমাদের বাংলাদেশের উপর দিয়ে চলে গেছে। আরও নিখুঁত করে বলা যায়, ঢাকার উপর দিয়ে চলে গেছে।

আরও পড়ুন: 
☛ পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ মেরু থাকলেও পূর্ব পশ্চিম মেরু নেই কেন?
Category: articles

রবিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৮

জ্যোতির্বিদ্যায় জ্যামতিক কোণের পরিমাপ বিভিন্ন কারণে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধ্রুবতারা দেখে কোনো স্থানের অক্ষাংশ জানা যায়। ধ্রুবতারা সব সময় উত্তর আকাশে থাকে। এটি উত্তর দিগন্ত থেকে যত ডিগ্রি ওপরে থাকবে, ঐ জায়গার অক্ষাংশ হবে ঠিক তত। হ্যাঁ, বিষুব রেখার দক্ষিণের এলাকায় এই কৌশল কাজে আসবে না। কারণ ধ্রুবতারা থাকবে দিগন্তেরও নীচে!

উত্তর আকাশে ধ্রুবতারা থাকে অক্ষাংশের সমান কৌণিক উচ্চতায় 

এখন, ধ্রুবতারা দেখে অক্ষাংশ নির্ণয়ের জন্যে কোণ ও কোণের পরিমাপ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। আরও নানা কারণে কোণের পরিমাপ বুঝতে হয়। যেমন এক তারা দিয়ে আরেক তারা খুঁজে পেতে তারাদের কৌণিক দূরত্ব বুঝতে হয়।

আরও পড়ুন
☛ খালি হাতে আকাশ মাপুন
☛ দিক নির্ণয়ে ধ্রুবতারা

দুটো সরলরেখার মিলনেই তৈরি হয় কোণ। যেমন নীচের OA এবং OB রেখাদ্বয় ৫৫ ডিগ্রি কোণ তৈরি করেছে। আবার OA এবং OC রেখা তৈরি করেছে ৯০ ডিগ্রি কোণ। ৯০ ডিগ্রি কোণের অপর নাম সমকোণ। সমকোণের দেখা আমরা পাই হরদম। ভূমি থেকে একটি গাছ খাড়া ওপরে উঠলে গাছ ও ভূমি তৈরি করে সমকোণ। ঘরের পূর্ব ও উত্তর দিকের দেয়ালের মিলন তৈরি করে সমকোণ। আপনি যদি পূর্ব দিকে তাকিয়ে থাকেন, তবে ৯০ ডিগ্রি ডানে ঘুরলে পাবেন দক্ষিণ। পশ্চিম থেকে ৯০ ডিগ্রি ডানে ঘুরলে পাবেন উত্তর।
দুই রেখার মিলনে হয় কোণ 
আরও পড়ুন
সূর্য দেখে দিক নির্ণয়

একটিমাত্র রেখার যেকোনো এক বিন্দুতে কোণ মাপ পরিমাপ করলে হবে দুই সমকোণ বা ১৮০ ডিগ্রি। পূর্ব ও পশ্চিম দিক বরাবর একটি রেখা কল্পনা করলে পাওয়া যাবে ১৮০ ডিগ্রি। বৃত্তাকার পথে ১৮০ ডিগ্রি পথ ঘুরলে একটি অর্ধবৃত্ত তৈরি হবে। যেমনটা হয়েছে নীচের ছবিতে। দুইজন মানুষ উল্টো দিকে হাঁটতে থাকলে বলা যায়, তারা ১৮০ ডিগ্রি কোণে হাঁটছে। কেউ আগের কথা থেকে সরে এসে বিপরীত কথা বললে আমরা বলি, "১৮০ ডিগ্রি উল্টো বলছেন এখন?"  

১৮০ ডিগ্রি বা দুই সমকোণ 
তার মানে পুরো বৃত্ত ঘুরে এলে হবে ৩৬০ ডিগ্রি বা চার সমকোণ।
বিভিন্ন রকম কোণ।
ছবির সূত্রঃ ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, সান্তা বারবারা  

কোণের পরিমাপ
কোণের আন্তার্জাতিক এককের নাম রেডিয়ান। তবে সাধারণ মানুষের কাছে এই হিসাব জনপ্রিয় নয়। আমরা চিনি ডিগ্রি। এক রেডিয়ান হলো ৫৭ দশমিক ৩ ডিগ্রির সমান। জ্যোতির্বিদ্যায় নানা সময় ডিগ্রিকে আরও ছোট করে পরিমাপের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এটা দুইভাবে করা যায়। একটি হলো দশমিক পদ্ধতি। যেমন ৩০.৫ ডিগ্রি মানে ৩০ ডিগ্রি ও আরও এক কোণের অর্ধেক। তবে আরেকটি সুবিধাজনক উপায়ও আছে।

ডিগ্রির অপেক্ষাকৃত ছোট এককগুলোর নাম হলো মিনিট ও সেকেন্ড। না, এখানে সময়ের কথা বলছি না। এক ডিগ্রিকে ৬০ ভাগ করলে তার প্রতি অংশের নাম এক মিনিট। আবার এক মিনিটকে ৬০ ভাগ করলে প্রতি ভাগের নাম হয় এক সেকেন্ড। হ্যাঁ, সময়ের সাথে এখানটা মিলে গেছে! ভাগগুলোকে যথাক্রমে আর্কমিনিট (ডিগ্রির ৬০ ভাগের এক ভাগ) ও আর্কসেকেন্ডও (মিনিটের ৬০ ভাগের এক ভাগ) বলে।

যেমন ৪০.১৮৭৫ ডিগ্রি কোণকে এভাবেও লেখা যায়: ৪০ ডিগ্রি ১১ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। একে এভাবেও লেখা হয়: ৪০° ১১′ ১৫″।
Category: articles

মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

[লেখাটি ইতোপূর্বে ব্যাপন ম্যাগাজিনের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল।]

অ্যানড্রোমিডার বিস্ময়কর কিছু কথা জানব। তবে, আগে সংক্ষিপ্ত পরিচয়।

আপনারা কি আকাশে কখনো  ছায়াপথ (Galaxy) দেখেছেন? হয়ত বা দেখে থাকলেও থাকতে পারেন! রাতের আকাশে যে শুধু তারকাই দেখা যায় না, তার আরেক উদাহরণ হল অ্যানড্রোমিডা গ্যালাক্সি। আমাদের মিলিওয়েতে গ্যালাক্সি যেমন সূর্যসহ অসংখ্য নক্ষত্রের বাস, তেমনি বহু নক্ষত্রে গড়া (নেবুলাসহ আরো বিভিন্ন পদার্থের পাশাপাশি) আরেকটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ হল অ্যানড্রোমিডা। 

অ্যানড্রোমিডা গ্যালাক্সি

অ্যানড্রোমিডা একটি সর্পিলাকার ছায়াপথ (spiral galaxy)। অবস্থান অ্যানড্রোমিডা তারামণ্ডলে। অপর নাম মেসিয়ার ৩১ বা এম৩১ (M31), জ্যোতির্বিদ চার্লে মেসিয়ে এর নাম অনুসারে। একে আবার অনেক সময় গ্রেট নেবুলাও বলা হত। বড় ছায়াপথদের মধ্যে অ্যানড্রোমিডা হল আমাদের ছায়াপথের সবচেয়ে নিকটবর্তী ছায়াপথ। নাম রাখা হয়েছিল পৌরাণিক রাজকুমারী অ্যানড্রোমিডার নাম অনুসারে। লোকাল গ্রুপ নামের প্রায় ৫৪টি গ্যালাক্সির একটি গুচ্ছের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড়। আমাদের মিল্কিওয়ে হল লোকাল গ্রুপের দ্বিতীয় বৃহত্তম সদস্য। 

প্রায় ১ ট্রিলিয়ন (১ লক্ষ কোটি) নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত অ্যানড্রোমিডা গ্যালাক্সি। এই ছায়াপথটি আমাদের থেকে ২.৫ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ব্যাস প্রায় ২২০,০০০আলোকবর্ষ, যেখানে আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়ের ব্যাস ১০০,০০০ আলোকবর্ষ। অর্থাৎ এর সাইজ আমাদের মিল্কিওয়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সেদিক থেকে বিচার করলে আমাদের মিল্কিওয়ের ভর অনেক বেশি।

আরও পড়ুনঃ

সাতটি সর্পিল বাহু বিশিষ্ট এই ছায়াপথটির নিউক্লিয়াসের সাথে সংযুক্ত আছে দুটি বাহু । বাকী পাঁচটি সর্পিল বাহু অধিকার করে আছে অসংখ্য সৌরমন্ডলকে। এর নিউক্লিয়াস তৈরী হয়েছে এক কোটি গোল নক্ষত্রগুচ্ছের (Globular Cluster) সমন্বয়ে। ছায়াপথটির ভেতরের অংশের পূর্ণ ঘূর্ণন সমাপ্ত হতে সময় লাগে ১১ মিলিয়ন বছর আর বাইরের অংশটুকু সমাপ্ত করে ৯০ থেকে ২০০ মিলিয়ন বছরে (১ মিলিয়ন সমান ১০ লাখ)।

কিন্তু মজার ব্যাপার হল, আমাদের মহাবিশ্বে ছায়াপথের আসল সংখ্যা কত সেটা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারবে না। কারণ, জ্যোতির্বিদরা যতই মহাবিশ্বের দিকে তাকাচ্ছেন, ততই বেরিয়ে আসছে নতুন নতুন ছায়াপথ। মহাবিশ্বের এখনও অনেক জায়গা আছে, যেটা বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতে পারেননি। কিছু কিছু জায়গা আছে, যা টেলিস্কোপ দিয়েও দেখা যায় না। তবু জ্যোতির্বিদদের হিসাব অনুসারে মহাবিশ্বে ছায়াপথের সংখ্যা আনুমানিক ১০০ থেকে ২০০ বিলিয়ন (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি)। 


অ্যানড্রোমিডা সম্পর্কে কিছু বিস্ময়কথা জেনে নেওয়া যাকঃ 

১। মিল্কিওয়ে বনাম অ্যানড্রোমিডাঃ

লোকাল গ্রুপের গ্যালাক্সিদের মধ্যে সম্ভবত মিল্কিওয়ের ভর-ই সবচেয়ে বেশি। তবুও আনড্রোমিডা ছায়াপথেই নক্ষত্রের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণ থেকে জানা গেছে, এতে নক্ষত্রের সংখ্যা মিল্কিওয়ের প্রায় দ্বিগুণ। সাইজেও এটিই বড়।


২। এক সময় আনড্রোমিডাকে নীহারিকা ভাবা হতঃ

যখন মহাবিশ্বের প্রকৃত পরিধি কেউ জানত না, তখন ধারণা করা হত, আমাদের মিল্কিওয়ে গালাক্সি-ই মহাবিশ্বের সব কিছু। অ্যানড্রোমিডা গালাক্সিকে এর ভেতরেই অবস্থিত বলে মনে করা হত, যাকে শুধুমাত্র একটা অস্পষ্ট দাগের মতো দেখা যেত। কিন্তু বিংশ শতকে অত্যন্ত শক্তিশালী টেলিস্কোপ আবিষ্কারের পর দ্বারা পর্যবেক্ষণ করে জানা গেল, এটি নিজেই আরেকটি গ্যালাক্সি। তার আগের টেলিস্কোপগুলোর পর্যবেক্ষণ অনুসারে এটি ছিল মহাজগতিক ধূলোর মেঘ এবং শুধুমাত্র নক্ষত্র গঠনের উপাদানসমূহ এতে বিদ্যামান। এর মাধ্যমে তখন ধরে নেওয়া হয়েছিল, বিশাল অ্যানড্রোমিডা একটা নীহারিকা মাত্র। নতুন তারকা তৈরির অঞ্চলকে বলা হয় নীহারিকা। 

৩। অ্যানড্রোমিডায় ব্ল্যাক হোল!

সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হল, অ্যানড্রোমিডার শুধু কেন্দ্রেই ২৬ টির মতো ব্ল্যাক হোল আছে। এছাড়াও চন্দ্র এ-ক্সরে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সাহায্যে আরো অনেকগুলো ব্ল্যাক হোল খুঁজে পাওয়া গেছে। আমাদের ছায়াপথের মতোই অ্যানড্রোমিডার কেন্দ্রে একটি বিশাল ব্লাকহোল আছে। আরও দুটি যুগল ব্ল্যাক হোল একে অপরকে ঘিরে পাক খাচ্ছে। এদের ভর সূর্যের প্রায় ১৪ কোটি গুণ।

আরো পড়ুনঃ
ব্ল্যাক হোলের পরিচয়

৪। ইতিহাসঃ

এই গ্যালাক্সিটি আবিস্কার করেছিলেন পারস্যের এক মুসলমান জ্যোতির্বিদ আব্দুর রহমান আস-সুফি। ৯৬৪ সালে তিনি গ্যালাক্সিটি পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু সেই সময়ে গ্যালাক্সি সম্পর্কে মানুষের ধারণা না থাকায় তিনি `তার "Book of Fixed Stars" গ্রন্থে এর নাম দেন 'Small Cloud' বা 'ক্ষুদ্র মেঘ'। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকেও বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল যে, মিল্কিওয়ে-ই হল মহাবিশ্বের একমাত্র ছায়াপথ। অ্যানড্রোমিডাকে গ্যালাক্সিকে তখন মনে করা হত নীহারিকা। কিন্তু এডউইন হাবলের সম্প্রসারণ তত্ত্ব
পাওয়ার পর জানা গেল, মিল্কিওয়ে আসলে মহাবিশ্বের ক্ষুদ্র একটা অংশ মাত্র। অ্যানড্রোমিডাকে মেসিয়ার -৩১ নামকরণ করেন বিজ্ঞানী চার্লস মেসিয়ে, ১৭৬৪ সালে। তবে তিনি এর আবিস্কারের কৃতিত্ব দিতে চেয়েছিল জার্মান জ্যোতির্বিদ সাইমন মারিয়াসকে। বর্তমানে অবশ্য আব্দুর রহমান আস-সুফিকে এর আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেওয়া হয়। 

৫। মিল্কিওয়ের সাথে সংঘর্ষঃ

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, কয়েকশ কোটি বছরের মধ্যেই এটি আমাদের গ্যালাক্সির উপর এসে পড়বে। দুটো মিলে বড় একটি উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সিতে পরিণত হবে। যদিও মহাবিশ্ব সামগ্রিকভাবে প্রসারিত হচ্ছে, তবুও কাছাকাছি অবস্থিত এই দুটি গ্যালাক্সি মহাকর্ষের আকর্ষণ এড়াতে পারছে না। এরা প্রতি সেকেন্ডে ৭৫ মাইল বেগে একে অপরের দিকে ধেয়ে আসছে।
ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।  তত দিন আমরা থাকব না। আর আসলে ঐ সংঘর্ষে নক্ষত্রদের মতো ছোট জায়গায়ও বড় কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।

আনড্রোমিডা সম্পর্কে  একটি প্রচলিত ভুল ধারণা হল, এটি আমাদের সবচেয়ে কাছের গ্যালাক্সি। এটি হল, বামন ক্যানিস ম্যাজর
আরো পড়ুনঃ
☛ আমাদের নিকটতম গ্যালাক্সি কোনটি? 


সূত্রঃ
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Andromeda_Galaxy
৩। https://en.wikipedia.org/wiki/Milky_Way
Category: articles

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

পালসার হল এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্র। পালসার শব্দটি আসলে পালসেটিং স্টার (pulsating star) কথার সংক্ষেপ। Pulsate শব্দের অর্থ হল স্পন্দিত হওয়া। এরা নিয়মিত বিরতিতে স্পন্দিত হয় বলেই এই নাম। এরা আবার খুব দ্রুত আবর্তিত হয়। নির্গত করে তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ। নির্গত বেতার সঙ্কেত কাজে লাগিয়েই খুঁজে বের করা হয় এদেরকে।পালসারকে মহাবিশ্বের লাইটহাউজ বা আলোকবর্তিকাও বলা হয়।

আরো পড়ুনঃ
নিউট্রন নক্ষত্র কাকে বলে?

সৃষ্টিঃ
এরা যেহেতু এক ধরনের নিউট্রন স্টার, তাই সৃষ্টিও ওদের মতোই। ধরুন, একটি নক্ষত্রের ভর সূর্যের ৪ থেকে ৮ গুণ। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এটি মৃত্যুমুখে পতিত হবার সময় পরিণত হয় নিউট্রন নক্ষত্রে। ঘটে একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণ। নক্ষত্রের বাইরের অংশ ছিটকে যায় মহাশূন্যে। ভেতরের অংশ গুটিয়ে ছোট্ট হয়ে যায়। এ সময় এর মহাকর্ষ এত শক্তিশালী হয় যে এর মধ্যে থাকা প্রোটন ও ইলেকট্রন মিলিত হয়ে নিউট্রন হয়ে যায়। এদের ভর আরো বেশি হলে হয় ব্ল্যাক হোল। আর কম হলে শ্বেত বামন (white dwarf)।

পালসার ও একটি সঙ্গী তারা 

নক্ষত্রের ভর ১ দশমিক ৪ থেকে ৩ দশমিক ২ এর মধ্যে থাকলেও এরা সুপারনোভার মতো বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। তবে ব্ল্যাক হোলে পরিণত হবার জন্যে এ পরিমাণ ভর যথেষ্ট নয়। এরা বরং নিউট্রন নক্ষত্রে পরিণত হয়। এদেরই কেউ কেউ পরিণত হয় পালসারে। কেউ বা আবার হয় ম্যাগনেটার

সাইজে ছোট্ট হয়ে গেলেও এরা  কৌণিক ভরবেগ অক্ষুণ্ণ রাখে। কিন্তু সাইজ ছোট্ট হয়ে যাবার কারণে এ সময় আবর্তন বেগ প্রচণ্ড বেড়ে যায়। এ অবস্থায় এরা প্রতি সেকেন্ডে বহুবার ঘুরে। এই ক্ষুদ্র ও খুব ঘন এই বস্তুরা এদের চৌম্বক ক্ষেত্র রেখা বরাবর নির্গত করে খুব শক্তিশালী বিকিরণ। বিকিরণ যে সব সময় ঘূর্ণন অক্ষের বরাবরেই থাকবে, এমন কোনো কথা নেই।


ইতিহাসঃ
১৯৬৭ সালে জোকেলিন বেল বার্নেল ও অ্যান্টনি হিউইশ প্রথম পালসার আবিষ্কার করেন। বিজ্ঞানী মহল বিস্ময়ে হতবাক। কারণ, একেবারে নিয়মিত বিরতিতে পাওয়া যাচ্ছে বেতার সঙ্কেত। আকাশের একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে পাওয়া যাচ্ছিল সঙ্কেত। ঠিক ১ দশমিক ৩৩ সেকেন্ড পর পর সঙ্কেত খুব তীব্র হচ্ছিল। এত নিয়মিত বিরতিতে সঙ্কেত আসছে দেখে কোনো কোনো জ্যোতির্বিদ তো ভেবেই বসেন, এটা হয়ত অন্য কোনো মহাজাগতিক সভ্যতার কাজ!

বার্নেল ও হিউইশ নিশ্চিত ছিলেন, এটা নিতান্তই প্রাকৃতিক ঘটনা। কোনো সভ্যতার কাজ নয়। তবু তাঁরা এর নাম দিলেন এলজিএম-১ (LGM-1)। এলজিএম মানে হল লিটল গ্রিন ম্যান বা ক্ষুদ্র সবুজ মানব। প্রথম আবিষ্কৃত পালসারটির নাম ছিল পিএসআর বি১৯১৯+২১ ( PSR B1919+21)। এর পরে আরও পালসার আবিষ্কৃত হতে থাকলে এদের প্রকৃত রহস্য আস্তে আস্তে উন্মোচিত হতে থাকে।

কিছু দিন পর কাঁকড়া নেবুলায় আরেকটি পালসার পাওয়া যায়। এর পর্যায়কাল মাত্র ৩৩ মিলিসেকেন্ড। এ পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ পালসার পাওয়া গেছে। এদের একটি তো মাত্র এক সেকেন্ডে ৭১৬ টি সঙ্কেত প্রেরণ করে। পরে পালসারদেরকে পাওয়া গেল বাইনারি জগতেও। এর ফলে আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বের আরেকটি স্বীকৃতি অর্জন হয়েছিল। ১৯৮২ সালে পাওয়া গেল আরেকটি বিস্ময়কর পালসার। এর আবর্তনকাল মাত্র ১ দশমিক ৬ মাইক্রো সেকেন্ড।
সৌরজগতের বাইরে প্রথম কোনো গ্রহের সন্ধানও পাওয়া গিয়েছিল একটি পালসারের পাশে।

মজার তথ্যঃ
প্রথমে যখন  একটি পালসারের জন্ম হয়, তখন এর শক্তি ও আবর্তনের গতি থাকে খুব উচ্চ। তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ নির্গত করতে করতে এটি শক্তি হারিয়ে ফেলে। কমে যায় ঘুর্ণনের গতিও। ১ থেকে ১০ কোটি বছরের মধ্যে এটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। সক্রিয় থাকার সময় এরা দারুণভাবে সময় মেনে চলে। এমনকি সময়ের হিসাব রাখতে জ্যোতির্বিদরাও এদের ওপর ভরসা রাখেন। কিছু কিছু পালসারের সূক্ষ্মতা  হার মানায় আণবিক ঘড়িকেও

সূত্রঃ
১। http://www.universetoday.com/25376/pulsars/
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Pulsar
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...