Advertisement

সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বামন গ্রহদের পরিচয়। বড় করে দেখতে ক্লিক করুন। 


টেক্সট 

বামন গ্রহরা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। ভরের কারণে আকৃতি গ্রহদের মতোই প্রায় গোলাকার। তবে আকারে গ্রহদের চেয়ে ছোট। সূর্য ছাড়া অন্য কোনো বস্তুর চারপাশে ঘোরে  না। তবে নিজের কক্ষপথে অন্য বস্তু চলে আসতে পারে। সৌরজগতে শত শত বামন গ্রহ থাকার সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে অবশ্য পাঁচটি বহুল পরিচিত। 


সেরেস

আকার: ৫৮৪ মাইল চওড়া 

অবস্থান: গ্রহাণুবেষ্টনী 

আবিষ্কার: ১৮০১ সাল 

বিশেষ তথ্য: গ্রহাণুবেষ্টনীর সবচেয়ে বড় গ্রহাণু 


প্লুটো

আকার: ১৪৭৩ মাইল চওড়া 

অবস্থান: কাইপার বেল্টের কাছে 

আবিষ্কার: ১৯৩০ 

চাঁদ/উপগ্রহ: শ্যারন, নিক্স, হাইড্রা, স্টিক্স, কারবারোস 

বিশেষ তথ্য: একদিন সমান পৃথিবীর ৬.৪ দিন


মাকিমাকি

আকার: ৮৯০ মাইল চওড়া 

অবস্থান: কাইপার বেল্ট 

আবিষ্কার: ২০০৫ 

চাঁদ: এমকে২ 

বিশেষ তথ্য: কাইপার বেল্টের দ্বিতীয় উজ্জ্বল বস্তু 


হাউমেয়া 

আকার: ১১৯৫ x ৬১৫ মাইল (ডিম্বাকার) 

অবস্থান: কাইপার বেল্ট

আবিষ্কার: ২০০৪ 

চাঁদ: হিয়াকা, হামাকা 

বিশেষ তথ্য: নেপচুনের বাইরের বস্তুর মধ্যে এখন পর্যন্ত এরই কেবল বলয় আছে বলে জানা গেছে।  


এরিস

আকার: ১৪৪৫ মাইল চওড়া 

অবস্থান: কাইপার বেল্টের বাইরের অংশ

আবিষ্কার: ২০০৩ 

বিশেষ তথ্য: আবিষ্কারের মাধ্যমে প্লুটোর গ্রহত্ব নিয়ে বিতর্কের শুরু হয় 


সূত্র: স্পেস ডট কম
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩

সৌরজগতের পাঁচ বামন গ্রহের একটি মাকিমাকি। প্লুটো, এরিস, হাউমেয়ার মতো এর অবস্থানও কাইপার বেল্ট অঞ্চলে। এলাকাটা নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে। বরফ দিয়ে গড়া।


বামন গ্রহ মাকিমাকি। ছবিসূত্র: ইউনিভার্স টুডে 

মাকিমাকি সূর্যকে পুরো একবার ঘুরে আসতে ৩০৫ দিন সময় লাগে। আকারে প্লুটোর চেয়ে ছোট। পৃথিবী থেকে দেখতে কাইপার বেল্টের দ্বিতীয় উজ্জ্বল বস্তু মাকিমাকি। সবচেয়ে উজ্জ্বল কে জানেন? প্লুটো ছাড়া আর কেউ না। আকারের দিক থেকেও এটি কাইপার বেল্টের দ্বিতীয় বৃহত্তম।

উজ্জ্বলতার পরিমাপ
☛ একদিন কত বড়? (লেখা আসছে...)

জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাসে মাকিমাকি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। একই রকম গুরুত্ব আছে আরেক বামন গ্রহ এরিসের। এই দুই বস্তু আবিষ্কারের ফলেই আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি গ্রহের সংজ্ঞা পাল্টানোর ব্যাপারে ভাবতে থাকে। তৈরি হয় বামন গ্রহ নামে নতুন এক ধারণা।

প্লুটো যেভাবে গ্রহত্ব হারাল

মাকিমাকি প্রথম জ্যোতির্বিদদের চোখে ধরা পড়ে ২০০৫ সালে। পালোমার মানমন্দিরের তিন বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন, চ্যাড ট্রুজিলো ও ডেভিড র‍্যাবিনোউইটয একে দেখেন। ২০১৬ সালে নাসার হাবল স্পেস টেলিস্কোপ বামন গ্রহটির একটি চাঁদ খুঁজে পায়। এখনও অবশ্য স্বীকৃতি পায়নি চাঁদটি।

মাকিমাকির ব্যাসার্ধ ৭১৫ কিলোমিটার। পৃথিবীর নয় ভাগের এক ভাগ। সূর্য থেকে দূরত্ব ৪৫.৭ এইউ। সূর্য থেকে আলো পৌঁছতে সময় লাগে ৬ ঘণ্টা ২০ মিনিট। সূর্য থেকে অনেক দূরত্বের কারণে বস্তুটির পৃষ্ঠ অনেক শীতল। ফলে এতে জীবনের অস্তিত্ব থাকার কথা নয়।

পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত?
পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌঁছতে কত সময় লাগে? (লেখা আসছে...)

এর গঠন সম্পর্কে তেমন কিছু জানা নেই। নেই শনি, ইউরেনাসদের মতো বলয়। কাইপার বেল্টে এর আশেপাশে প্রচুর বরফের বস্তু আছে। এরা তৈরি হয়েছিল সৌরজগতের একেবারে শুরুর যুগে। আজ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে। এদেকে কাইপার বেল্ট্ব্র বস্তু, ট্রান্সনেপচুনিয়ান বা প্লুটোয়েড বলে ডাকা হয়।


বস্তুটার পৃষ্ঠ ঠিক কেমন তা এতদূর থেকে বোঝা যায় না। তবে যতটুকু বোঝা যায় তাতে প্লুটোর লাল-বাদামী মনে হয়। পৃষ্ঠে মিথেন ও ইথেনের অস্তিত্ব মিলেছে। খুব হালকা বায়ুমন্ডল আছে। এতে মূলত আছে নাইট্রোজেন।

সূত্র: নাস সোলার সিস্টেম পোর্টাল 
Category: articles

রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭

দুই উপগ্রহসহ হাউমেয়া 
সৌরজগতের পাঁচ বামন গ্রহের অন্যতম হাউমেয়া। কক্ষপথ সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুনেরও বাইরে। ২০০৪ সালে জ্যোতির্বিদ মাইক ব্রাউনের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধানী দল হাউমেয়াকে খুঁজে বের করেন। তবে এটি বামন গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ভর প্লুটোর তিন ভাগের এক ভাগ ও পৃথিবীর ১৪০০ ভাগের এক ভাগ। সূর্যকে ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৮৪ বছর। এখন পর্যন্ত এর দুটো উপগ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। বামন গ্রহটিতে এক দিন হয় মাত্র চার ঘণ্টায় । কারণ হলো দ্রুত আবর্তন। ১০০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি চওড়া সৌরজগতের অন্য যে কোনো বস্তুর চেয়ে এটি দ্রুত ঘুরে।

সূত্রঃ নাসা সোলার সিস্টেম 
Category: articles

বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬

আজকের তারিখ ২৪ আগস্ট। ১০ বছর আগের এই দিনে গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে যায় তৎকালীন নবম গ্রহ প্লুটো। তোলপাড় ওঠে পুরো পৃথিবীতে। অনেকেই বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারেননি, এমনকি অনেক জ্যোতির্বিদও।

গ্রহের খাতা থেকে বাদ দেবার সময় বোঝা যায়, মানুষের কাছে প্লুটো বেশ জনপ্রিয় বস্তু। প্রথমবারের মতো নিউ হরাইজনস যান যখন তাই প্লুটো অভিযানে গিয়ে এতে হার্টের আকৃতি আবিষ্কার করে, ব্যাপারটি তখন পরিহাস হয়ে দাঁড়ায়। ছবিটি গ্রহের ৪৫০,০০ ০০০ কিমি. দূর থেকে তোলা।   

২০০৬ সালের এই দিনে নেপচুন হয়ে গেল সৌরজগতের সর্বেশেষ গ্রহ। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতির (IAU) দেওয়া গ্রহের নতুন সংজ্ঞা অনুসারে এল এ সিদ্ধান্ত। ২০০৬ সালের আগে কোনো বস্তুকে ভর বা আকারের ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করবার কোনো প্রয়োজন দেখা দেয়নি। কিন্তু সৌরজগতের বাইরের অঞ্চলের দিকে হাউমেয়া ও মাকিমাকির মতো বস্তুরা আবিষ্কৃত হতে শুরু করলে এর প্রয়োজন অনুভব হওয়া শুরু হয়। ২০০৫ সালে আবিষ্কৃত এরিসের ভর আবার প্লুটোর চেয়ে বেশি। অতএব, প্লুটো গ্রহ হলে এরিস কেন হবে না?

এই প্রশ্নটিই আইএইউর মাথায় এল। এই প্রশ্নের সমধান করতে গিয়েই প্ল্যানেট ডেফিনিশান কমিটি বানানো হয়, যার ফলাফল- প্লুটোর অবনতি।

এই কমিটির সিদ্ধান্তেই বাদ পড়ে প্লুটো। সিদ্ধান্তটা অবশ্যই পরিস্থিতির দাবিই ছিল। 

কমিটির সামনে কয়েকটি রাস্তা ছিল। একটি রাস্তা ছিল ভর বা সাইজের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এক্ষেত্রে প্লুটোকে গ্রহ হিসেবে মেনে নিলে এরিস এবং সেরেসও (গ্রহাণু বেষ্টনির সবচেয়ে বড়ো বস্তু) তাহলে গ্রহ হয়। কিছু সময়ের জন্যে মনে হয়েছিল যে এই সিদ্ধান্তই হয়ত হবে।

আরেকটি উপায় ছিল যে নির্দিষ্ট কোন যুক্তি দিয়ে গ্রহের সংজ্ঞা দেওয়া হবে না। পৃথিবী একটি গ্রহ, প্লুটোও আরেকটি গ্রহ। এরিস গ্রহ নয়, কারণ আমাদের ইচ্ছা হয়নি তাই।

২০০৬ এর ২৪ আগস্ট তারিখে আইএইউ ফলাফল জানিয়ে দিল। ঠিক হল, গ্রহের জন্যে নতুন একটি সংজ্ঞা থাকবে। তিনটি শর্ত নিয়ে এই সংজ্ঞা তৈরি:
১। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে হবে
২। অভিকর্ষীয় বলের মাধ্যমে গোলাকার আকৃতি পাবার জন্যে যথেষ্ট ভর থাকবে
৩। কক্ষপথ থেকে অন্য বস্তুদের সরিয়ে দেবে।

আরো দেখুনঃ
গ্রহের পরিচয়
প্রদক্ষিণ বনাম আবর্তন

তিন নম্বর শর্তটিই প্লুটোকে গ্রহের তালিকা থেকে উৎখাত করেছে। কোনো বস্তুকে গ্রহ হতে হলে একে এর নিজস্ব কক্ষপথের আধিপত্য ধরে রাখতে হবে। অন্য বস্তুদেরকে হয় ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে, নয়ত নিজের সাথে মিশিয়ে ফেলতে হবে।

প্লুটো এর কক্ষপথ অঞ্চলের মোট ভরের মাত্র ০.০৭ ভাগ নিজের করে রাখতে পেরেছে। অথচ পৃথিবীর কাছে রয়েছে নিজের কক্ষপথ অঞ্চলের অন্যান্য বস্তুর ভরের ১৭ লক্ষ গুণ ভর।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাইয়ে প্লুটোর নিকটতম অবস্থানে পৌঁছার মাত্র ১৫ মিনিট পরে ছবিটি তোলে নিউ হরাইজনস। ১৮, ০০০ কিমি. দূর থেকে তোলা ছবিতে ধরা পড়েছে ১২৫০ কিমি. এলাকা। 

ঐ একই দিনে প্লুটোকে বামন গ্রহ পদবীতে ভূষিত করা হল। বামন গ্রহের জন্যেও একটি সংজ্ঞা ঠিক করা হল:
১। সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরবে
২। অভিকর্ষীয় বলের মাধ্যমে গোলাকার আকৃতি পাবার জন্যে যথেষ্ট ভর থাকবে
৩। কক্ষপথের একচ্ছত্র মালিক হবে না
৪। কোনো উপগ্রহ হবে না

আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমতির মতে এখন পর্যন্ত বামন গ্রহ আছে পাঁচটি। এরা হল, প্লুটো, সেরেস, এরিস, হোমিয়া ও মাকিমাকি। তবে ষষ্ঠ বামন গ্রহ হিসেবে 2007 OR10 ছাড়াও আরো অনেক অনেক দাবিদার রয়েছে।

বর্তমানে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, বহিঃস্থ সৌরজগতের কাইপার বেল্ট অঞ্চলে শত শত অনাবিষ্কৃত বামন গ্রহ রয়েছে।

প্লুটোকে খোঁজা শুরু হয়েছিল কেন সেও এক মজার কাহিনী। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দেখছিলেন, কিছু একটা নেপচুনের কক্ষপথে বিকৃতি ঘটাচ্ছে। ১৯৩০ সালে আবিষ্কৃত না হয়ে যদি আরো এক দশক পরে এটি আবিষ্কৃত হত তাহলে কাইপার বেল্ট থাকার কারণে প্লুটো আর গ্রহ খ্যাতিই পেত না।

প্লুটোপ্রেমীরা হতাশ হলেও তাদের জন্যেও একটি সান্ত্বনা পুরস্কার রয়েছে। প্লুটো এ জন্যে বিখ্যাত যে একে কেন্দ্র করেই সৌরজগতের বস্তুরা একটি সংজ্ঞা পেয়েছে।

আরো পড়ুনঃ
প্লুটোর গ্রহত্ব হারানোর কাহিনী
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

প্লুটো গ্রহের আবিষ্কারক কে? বামন গ্রহটির আবিষ্কারক আমেরিকান জ্যোতির্বিদ ক্লাইড টমবাউ। আজকের দিনটি তাঁর জন্মের ১১০ জন্মবার্ষিকী।
১৯২৮ সালে পারিবারিক খামারে বাসায় নির্মিত টেলিস্কোপের পাশে দাঁড়িয়ে প্লুটোর আবিষ্কারক ক্লাইড টমবাউ। 

টমবাউ বড় হন ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের একটি কৃষক পরিবারে। তিনিও কাজ করতেন খামারেই। শিলাঝড়ের (Hailstorm) কবলে পড়ে তাঁর পরিবারের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আর্থিক অভাবে পড়ে যান তাঁরা। পড়াশোনার আশা ছেড়ে দিতে হয়ে তাঁকে। কিন্তু জ্যোতির্বিদ হবার আশা কখনো মাটিতে পড়তে দেননি তিনি। জ্যোতির্বিদ্যার জন্যে প্রয়োজনীয় গাণিতিক দক্ষতা নিজে নিজেই হাসিল করলেন। শিখলেন জ্যামিতি এবং ত্রিকোণমিতি। তিনি বলেছেন, 
আপনি কি ভাবতে পারেন, বর্তমান সময়ে একটি কিশোর শুধু মজা পাবার জন্যে ত্রিকোণমিতি শিখতে পারে? আমি তাই করেছি।
বাসায় বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ দেখতেন তিনি। কিছু পরামর্শের আশায় অ্যারিজোনার লয়েল অবজারভেটরিতে নিজের আঁকা মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের ড্রয়িং পাঠালে পরামর্শের বদলে পেয়ে যান চাকরির প্রস্তাব। ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করেন।
এখানে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল প্ল্যানেট এক্স খুঁজে বের করা। অবজারভেটরির প্রতিষ্ঠতা পারসিভাল লয়েলও গ্রহটিকে খুঁজছিলেন। এর আগে তিনি (লয়েল সাহেব) মঙ্গল গ্রহের খাল আবিষ্কার করে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯১৬ সালে লয়েল মারা গেলেও গ্রহটির অনুসন্ধানকার্য চলতে থাকে।
টমবাউ এর দায়িত্বই ছিল লয়েলের কাজটিকে চালু রাখা। এক বছর পর, ১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে উদ্দেশ্য সফল হল। ক্লাইড টমবাউ পেয়ে গেলেন প্লুটোকে। কৃতিত্বের জন্যে টমাবাউ স্কলারশিপ পেলেন। পাশাপাশি পেলেন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৯ সালে তিনি ফরমাল শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
কিন্তু জ্যোতির্বিদগণ প্ল্যানেট এক্সকে খুঁজছিলেন কেন? উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতেন, কিছু একটা সপ্তম গ্রহ ইউরেনাসের কক্ষপথে নাক গলাচ্ছে। সেই সময় ইউরেনাসই ছিল সবচেয়ে বহিঃস্থ জানা গ্রহ।বোঝা গেল, ইউরেনাসের বাইরেও কেউ আছে। এর অবস্থানও নির্ণয় করা হল এবং অবশেষে ১৮৪৬ সালে পাওয়া গেল নেপচুন গ্রহ।
আরো পড়ুনঃ নেপচুন আবিষ্কারের কাহিনী

কিন্তু দেখা গেল নেপচুনের কক্ষপথও রহস্যময় আচরণ করছে। ফলে, জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হলেন, নেপচুনের বাইরেও আরেকটি অজানা গ্রহ আছে। এরই নাম দেওয়া হয় প্ল্যানেট এক্স। একে খুঁজতে গিয়েি বের হয়ে পড়ল প্লুটো। কিন্তু একে পাবার পরে দেখা গেল, নেপচুনের কক্ষপথের রহস্যময়তা ব্যখ্যা করার সাধ্য প্লুটোর নেই। এর ভর তুলনামূলকভাবে অতি সামান্য। পরে এর অন্য ব্যখ্যা পাওয়া গিয়েছিল।
নানা কারণে ২০০৬ সালে প্লুটো গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে গেল। পরিচিতি পেল বামন গ্রহ হিসেবে। বর্তমানে আমাদের সৌরজগতে আরো অনেক বস্তুই এই পরিচয় বহন করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হোমিয়া, মাকিমাকি, সেরেস ইত্যাদি।
কিন্তু প্ল্যানেট এক্সের কী হল? মজার ব্যাপার হল, ২০১৬ সালের শুরুতে ক্যালটেকের জ্যোতির্বিদরা ঘোষণা দিয়েছেন, প্লুটোর কক্ষপথের বাইরে আরেকটি বড় গ্রহ আছে যার ভর পৃথিবীর ১০ গুণ। ধারণা করা হচ্ছে, নেপচুন থেকে ২০ গুণ দূরে এর কক্ষপথ অবস্থিত এবং সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ২০ হাজার বছর।

সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

বামন গ্রহ প্লুটো ক্ষুদ্রতম বহিঃস্থ চারটি উপগ্রহের আবর্তন বেগ এতটাই বেশি যা বিজ্ঞানীদের কাছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত। জুলাইয়ের ১৪ তারিখে নাসার মহাকাশযান নিউ হরাইজন এর কাছ দিয়ে উড়ে যাবার সময় এমনই অদ্ভুত ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। নভেম্বরের ৯ তারিখে বিজ্ঞানীরা আমেরিকান এ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির (AAS) এর একটি মিটিং-এ বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছেন।

নিউ হরাইজন মিশনের কো-ইনভেসটিগেটর মার্ক শোয়ালটার বলেন,
হাইড্রা (Hydra), নিক্স (Nix), কেরবারোস (Kerberos) এবং স্টাইক্স (Styx) উপগ্রহুগুলো ঘুরন্ত লাটিমের ন্যায় আচরণ করছে। সৌরজগতে এরাই সবচেয়ে বিস্ময়কর উপগ্রহ।
তিনি আরো বলেন,
এদের এই অবস্থাকে আমি বিশৃঙ্খল বলেই ক্ষান্ত হব না, এ যে বিশাল গণ্ডগোল। সত্যি বলতে, এমন কিছু আমরা আগে কখোনই দেখিনি, এরা কী বার্তা দিচ্ছে তাও মাথায় আসছে না। 
নাসার নিউ হরাইজনের বরাতে পাওয়া প্লুটোর উপগ্রহদের ছবি
এই চার উপগ্রহ প্লুটোকে প্রদক্ষিণ করার পাশিপাশি প্লুটোর বৃহত্তম উপগ্রহ শ্যারনকে প্রদক্ষিণ করছে। এদের কোন কোনটার আবর্তন গতি অনেক বেশি। নিক্সের গতি এর কক্ষপথ থেকে পেছন দিকে। কিছু আবার আবার প্লুটোর দিকেই সব সময় পাশ ফিরে থাকে যা সৌরজগতের অন্য উপগ্রহগুলোর বৈশিষ্ট্যের সাথেও মিলে যায়।
তবে ঘুর্ণন বেগে সবচেয়ে এগিয়ে আছে সর্ববহিঃস্থ উপগ্রহ হাইড্রা। এটি বামন গ্রহ প্লুটোকে একবার ঘুরে আসতে আসতে নিজের অক্ষের উপর ৮৯ বার চক্কর খায়। শোলালটার বলেন,
 হাইড্রা আরেকটু জোরে ঘুরলেই এর পৃষ্ঠবস্তু কেন্দ্রবিমুখী বলের কারণে হারিয়ে যেত। 
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্লুটোর বৃহত্তম উপগ্রহ শ্যারনের উচ্চ কৌণিক বল (টর্ক) সবগুলো উপগ্রহের যুগপৎ আবর্তনে বাধা দিয়ে থাকতে পারে।

সূত্রঃ
১। আর্থ স্কাই
২। নাসা 
Category: articles

বুধবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৪

২০ জানুয়ারি, ১৯৯৯। একটি খবর সবাইকে চমকে দিল। প্লুটো এখন আর গ্রহ নয়, একটি বিশাল বরফখণ্ড মাত্র। বিবিসিসহ বড় বড় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয় এই খবর। কিন্তু প্লুটো আসলে তক্ষুনি তার গ্রহত্ব হারায়নি।
প্লুটো গ্রহ কিনা- এই মান নির্ধারণের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশবিজ্ঞান সমিতির (IAU বা  International Astronomical Union) বিভাগ-৩ এর কাঁধে পড়ে।

১৯৩০ সালে ক্লাইড টমবাউ প্লুটো গ্রহটিকে আবিষ্কারের পর এটি সৌরজগতের নবম গ্রহের মর্যাদা লাভ করে। কিন্তু, বহু দিন ধরেই এটা স্পষ্ট যে প্লুটো অন্যান্য গ্রহের বৈশিষ্ট্যের সাথে সাদৃশ্য বজায় রাখতে অক্ষম। এর কক্ষপথ পাশ্ববর্তী গ্রহ নেপচুনকে ছেদ করে গেছে।  বিংশ শতাব্দীর একেবারে শেষের দিকে প্লুটোর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্যের সাথে বহিঃস্থ সৌরজগতের নতুন আবিষ্কৃত অনেকগুলো বস্তুর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। মাইনর প্ল্যানেট গবেষকদের কাছে ব্যাপারটি ছিল ব্যাপক আলোচিত।

পরে নেপচুন গ্রহের বাইরের এলাকার কিছু বস্তুর কক্ষপথ বেশ ভালোভাবে চিহ্নিত করতে পারার পর প্লুটো বিতর্ক আরও চাঙ্গা হল। ওই বস্তু গুলোকে নাম দেওয়া হয় ট্রান্স নেপচুনিয়ান অবজেক্টস বা TNO

IAU এর বিভাগ-৩ TNO এর তালিকায় প্লুটোকে এক নম্বরে রাখার ব্যাপারে চিন্তা করল। তখনও প্লুটোর গ্রহত্ব বজায় থাকল। তবে পরিচয় হল দুটো- গ্রহ এবং টিএনও একইসাথে। তখনও গ্রহের কোন সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা ছিল না। আশা ছিল যদি গ্রহের সংজ্ঞার ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছা যায়, তবে সৌরজগতের অনেকগুলো বস্তুকে নতুন করে তালিকাভুক্ত করা যাবে। অন্যথায় বিতর্কিত বা ঐতিহাসিক পদবী রেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে।

এই অনৈক্যের সুবাদে প্লুটো আরো কয়েক বছর গ্রহত্বের সাধ নিল। কিন্তু ২০০৩ সালে আবিষ্কৃত হল ইরিস। এর আকার প্লুটোর চেয়ে বড়। প্লুটো আবারও বিতর্কে পড়ে গেল। কফিনে শেষ পেরেকগুলো ঠুকে দিতে ২০০৪ সালে আবিষ্কৃত হল হোমিয়া (Haumea), ২০০৫ সালে মাকিমাকি(Makemake) যারা ভর ও আয়তনে প্লুটোর কাছকাছি । অন্য দিকে ১৮০১ সালে তথা নেপচুন আবিষ্কারের ৪৫ বছর আগে আবিষ্কৃত হয় সেরেস (Ceres)। একে অর্ধ-শতক ধরে গ্রহ বলে মনে করা হত। পরে ফেলা হয় গ্রহাণুদের তালিকায়। এরও ভর ও আয়তন প্লুটোর কাছাকাছি। তাছাড়া, প্লুটোর ভর চাঁদের মাত্র ১৮ শতাংশ! 
এখন তাহলে, প্লুটো যদি গ্রহ হয়, তাহলে এই ইরিস (যে প্লুটোর চেয়েও বড়), হোমিয়া, মাকিমাকি, সেরেস বেচারারা কী দোষ করল? অন্য দিকে, শুধু এরাই নয়, ২০০২ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে অরকাস, স্যালাসিয়া, কৌয়ার, সেডনা ইত্যাদি ৬-৭ টি উল্লেখ্যযোগ্য বস্তু আবিষ্কৃত হল।
প্লুটোর সাথে অন্যান্য বামন গ্রহ ও চাঁদের তুলনা
আন্তর্জাতিক মহাকাশবিজ্ঞান সমিতি এবার গ্রহের সংজ্ঞা নির্ধারণ করল। আরেকটি তালিকা তৈরি করল বামন গ্রহদের নিয়ে। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে  ইরিস, হোমিয়া, মাকিমাকি ও সেরেসের সাথে প্লুটোর নাম লেখা হল বামন গ্রহদের (Dwarf Planet) খাতায়।
সংজ্ঞায়  বলা হল, গ্রহ হচ্ছে সেই সব বস্তু যারা
 ক. যথেষ্ট ভারী হওয়ায় নিজস্ব অভিকর্ষের চাপে গোলাকৃতি পেয়েছে।
 খ. তাপ নিউক্লিয়ার ফিউসন বিক্রিয়া ঘটানোর মত বেশি ভরবিশিষ্ট নয়।
 গ. আশেপাশের অঞ্চল থেকে প্ল্যানেটেসিমালদের সরাতে পেরেছে। ফলে কক্ষপথের সীমানায় আর কেউ নেউ। 
এই সংজ্ঞা অনুযায়ী বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহত্ব ধরে রাখতে সক্ষম হয়।
আর বামন গ্রহের সংজ্ঞা হলঃ
সেই সব বস্তু যাদের ভর গ্রহের সমান কিন্তু গ্রহও নয়, উপগ্রহও নয়; সূর্যকে সরাসরি প্রদক্ষিণ করে; নিজস্ব আকৃতি পাবার মত অভিকর্ষের মালিক কিন্তু কক্ষপথকে অন্যান্য বস্তু থেকে আলাদা বা স্বতন্ত্র করতে পারেনি।

প্লুটো যে বামন গ্রহই থাকবে- এই সিধান্ত চূড়ান্ত হলেও কতটা স্থায়ী হতে পারে তা সময়ই বলে দেবে, কারণ এই সিধান্তে সবাই খুশি নয়। কারণটা মূলত ঐতিহাসিক।
সূত্রঃ
১. উইকিপিডিয়াঃ Planet; Dwarf_planet;
২. নাসা
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...