কয়েক দিন ধরে এমনিতেই এ বিষয়ে লেখার ইচ্ছে ছিল। ইচ্ছেটা ত্বরান্বিত হল একজন পাঠকের কমেন্ট পেয়ে। তিনি উজ্জ্বল তারাদের গল্প পড়ে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন।
প্রশ্নঃ
এখানে তারাদের বিষুবলম্ব দেওয়া আছে। আমাদের মাথার উপরকার বিষুবলম্ব +২৩ ডিগ্রি ।।এটা হতে কীভাবে তারাদের নির্ণয় করব? ১ ডিগ্রি পার্থক্যের জন্য কতটুকু উত্তর বা দক্ষিণে যাব?
(Avi Dewan)
উত্তরঃ
প্রথমে দেখি বিষুব লম্ব কাকে বলে? পৃথিবীর বিষুব রেখা থেকে ঠিক উপরে আকাশের কল্পিত রেখার নাম খ-বিষুব। খ-বিষুব থেকে উত্তরে বা দক্ষিণের অবস্থানকে বিষুব লম্ব দ্বারা প্রকাশ করা হয়। উত্তরে গেলে '+' চিহ্ন ও দক্ষিণে গেলে মাইনাস (-) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল নক্ষত্র স্বাতীর বিষুব লম্ব (+১৯) ডিগ্রি। তাই আমাদের অক্ষাংশ ২৩ ডিগ্রি উত্তর বলে এটি বাংলাদেশের উপর দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে যায়।
আরো পড়ুনঃ
☛ বিষুব লম্ব কাকে বলে?
খালি চোখে আমরা একসাথে যতগুলো তারা দেখি তার সংখ্যা কয়েক হাজার। এখন ধরুন দুটি উজ্জ্বল তারকা কিছুটা দূরে অবস্থান করছে। আমরা এ দুটির নাম জানলাম। এদের বিষুব লম্বও জানলাম। ধরলাম, জানা আছে যে একটি তারা অপরটি থেকে ৫ ডিগ্রি দূরে আছে। এই বিষুব লম্ব কাজে লাগিয়ে বাস্তব রাতের আকাশে এদেরকে খুঁজে পাব কীভাবে? উল্লেখ্য যে বিষুব রেখাকে উদ্দেশ্য করে নিবন্ধটি লিখলেও আকাশের এই পরিমাপ অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে। যেমন, বিষুব লম্বতো শুধু উত্তর- দক্ষিণে কাজ করে। আমাদের এই পরিমাপ কাজ করবে পূর্ব- পশ্চিম ও কোনাকুনি যে কোনো দিকেই।
আরো পড়ুনঃ
☛ আমরা খালি চোখে কত তারা দেখি?
প্রথমে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে পুরো আকাশ সব মিলিয়ে একটি গোলকের মতো ৩৬০ ডিগ্রি। এর মধ্যে আমরা একসাথে এর অর্ধেক মানে ১৮০ ডিগ্রি দেখতে পাই, কারণ বাকিটা থাকে আমাদের উল্টো পাশে। পূর্ব থেকে পশ্চিম বা উত্তর থেকে দক্ষিণ দিগন্ত পর্যন্ত কৌণিক দূরত্ব ১৮০ ডিগ্রি। কোনাকুনিভাবে দুটি বিপরীত বিন্দু যোগ করলেও ১৮০ ডিগ্রিই পাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে যে কোনো সরল রেখা মানেই কিন্তু ১৮০ ডিগ্রি। আর, দিগন্ত থেকে মাথার উপর পর্যন্ত কৌণিক দূরত্ব হচ্ছে ৯০ ডিগ্রি।
এবার মূল কাজ শুরু করি। আমরা খালি হাতেই আকাশ মাপবো। এ জন্যে আপনাকে ডান বা বাম হাতটি লম্বা করে প্রসারিত করে সামনে মেলে ধরতে হবে। এবার আকাশের যে দিকের পরিমাপ নিতে চান হাতটি সেদিকে ধরুন। হাতকে টান টান করে রাখতে হবে, বাঁকিয়ে রাখা যাবে না। এবার বিভিন্ন ডিগ্রির জন্যে বিভিন্ন কৌশল খাটাতে হবে। কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ বা মোটা, চিকন- সবার ক্ষেত্রেই এই কৌশল কাজ করবে। তাই উদ্বিগ্ন হবার প্রয়োজন নেই।
☛ আপনার হাতের তর্জনিটির প্রস্থ হবে আকাশের ১ ডিগ্রির সমান। তাহলে দুই ডিগ্রি মাপতে হলে দুই হাতের দুটি তর্জনি ধরুন।
☛ ৩, ৪ বা ৬ ডিগ্রি মাপার নিয়ম ছবি থেকে দেখে নিন। বুঝতেই পারছেন, একটু বুদ্ধি খাটিয়েই এখান থেকে ৫ ডিগ্রিও মাপা যাবে। অবশ্য পাঁচ ডিগ্রি মাপার আরেকটি উপায় আছে, যা একটু পরেই বলছি।
☛ ১০ ডিগ্রি মাপতে হলে হাতকে মুঠো বানিয়ে মুঠোর ব্যাস (এক পাশ থেকে অপর পাশ) দেখতে হবে।
☛ ২৫ ডিগ্রি মাপতে হলে মুঠো থেকে বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠাকে যতদূর সম্ভব ছড়িয়ে দিতে হবে।
☛ ৫ ডিগ্রি মাপার আরেকটি কৌশল হল হাতের মাঝের তিনটি আঙ্গুলকে মেলে ধরা।
☛ ১৫ ডিগ্রি মাপতে হলে তর্জনি ও কনিষ্ঠা আঙ্গুলির একটিক অন্যটির উল্টো দিকে টান টান করে ছড়িয়ে রাখতে হবে।
☛ ৫০ ডিগ্রি মাপার জন্যে কী করা যায়? দুই হাতকে মিলিয়ে একত্রে ২৫ ডিগ্রি করে মাপলেইতো হয়ে গেল। এইভাবে-
আরো পড়ুনঃ
☛ উজ্জ্বল তারাদের গল্প
☛ তারামণ্ডলীর পরিচয়
প্রশ্নঃ
এখানে তারাদের বিষুবলম্ব দেওয়া আছে। আমাদের মাথার উপরকার বিষুবলম্ব +২৩ ডিগ্রি ।।এটা হতে কীভাবে তারাদের নির্ণয় করব? ১ ডিগ্রি পার্থক্যের জন্য কতটুকু উত্তর বা দক্ষিণে যাব?
(Avi Dewan)
উত্তরঃ
প্রথমে দেখি বিষুব লম্ব কাকে বলে? পৃথিবীর বিষুব রেখা থেকে ঠিক উপরে আকাশের কল্পিত রেখার নাম খ-বিষুব। খ-বিষুব থেকে উত্তরে বা দক্ষিণের অবস্থানকে বিষুব লম্ব দ্বারা প্রকাশ করা হয়। উত্তরে গেলে '+' চিহ্ন ও দক্ষিণে গেলে মাইনাস (-) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল নক্ষত্র স্বাতীর বিষুব লম্ব (+১৯) ডিগ্রি। তাই আমাদের অক্ষাংশ ২৩ ডিগ্রি উত্তর বলে এটি বাংলাদেশের উপর দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে যায়।
আরো পড়ুনঃ
☛ বিষুব লম্ব কাকে বলে?
খালি চোখে আমরা একসাথে যতগুলো তারা দেখি তার সংখ্যা কয়েক হাজার। এখন ধরুন দুটি উজ্জ্বল তারকা কিছুটা দূরে অবস্থান করছে। আমরা এ দুটির নাম জানলাম। এদের বিষুব লম্বও জানলাম। ধরলাম, জানা আছে যে একটি তারা অপরটি থেকে ৫ ডিগ্রি দূরে আছে। এই বিষুব লম্ব কাজে লাগিয়ে বাস্তব রাতের আকাশে এদেরকে খুঁজে পাব কীভাবে? উল্লেখ্য যে বিষুব রেখাকে উদ্দেশ্য করে নিবন্ধটি লিখলেও আকাশের এই পরিমাপ অন্য কাজেও ব্যবহার করা যাবে। যেমন, বিষুব লম্বতো শুধু উত্তর- দক্ষিণে কাজ করে। আমাদের এই পরিমাপ কাজ করবে পূর্ব- পশ্চিম ও কোনাকুনি যে কোনো দিকেই।
আরো পড়ুনঃ
☛ আমরা খালি চোখে কত তারা দেখি?
প্রথমে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে পুরো আকাশ সব মিলিয়ে একটি গোলকের মতো ৩৬০ ডিগ্রি। এর মধ্যে আমরা একসাথে এর অর্ধেক মানে ১৮০ ডিগ্রি দেখতে পাই, কারণ বাকিটা থাকে আমাদের উল্টো পাশে। পূর্ব থেকে পশ্চিম বা উত্তর থেকে দক্ষিণ দিগন্ত পর্যন্ত কৌণিক দূরত্ব ১৮০ ডিগ্রি। কোনাকুনিভাবে দুটি বিপরীত বিন্দু যোগ করলেও ১৮০ ডিগ্রিই পাওয়া যাবে। মনে রাখতে হবে যে কোনো সরল রেখা মানেই কিন্তু ১৮০ ডিগ্রি। আর, দিগন্ত থেকে মাথার উপর পর্যন্ত কৌণিক দূরত্ব হচ্ছে ৯০ ডিগ্রি।
বিভিন্ন ডিগ্রির পরিমাপ |
☛ আপনার হাতের তর্জনিটির প্রস্থ হবে আকাশের ১ ডিগ্রির সমান। তাহলে দুই ডিগ্রি মাপতে হলে দুই হাতের দুটি তর্জনি ধরুন।
☛ ৩, ৪ বা ৬ ডিগ্রি মাপার নিয়ম ছবি থেকে দেখে নিন। বুঝতেই পারছেন, একটু বুদ্ধি খাটিয়েই এখান থেকে ৫ ডিগ্রিও মাপা যাবে। অবশ্য পাঁচ ডিগ্রি মাপার আরেকটি উপায় আছে, যা একটু পরেই বলছি।
☛ ১০ ডিগ্রি মাপতে হলে হাতকে মুঠো বানিয়ে মুঠোর ব্যাস (এক পাশ থেকে অপর পাশ) দেখতে হবে।
☛ ২৫ ডিগ্রি মাপতে হলে মুঠো থেকে বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠাকে যতদূর সম্ভব ছড়িয়ে দিতে হবে।
আকাশের ডিগ্রি পরিমাপে আঙ্গুল ও মুষ্ঠি |
সপ্তর্ষীমণ্ডলী থেকে ধ্রুব তারার কৌণিক দূরত্ব প্রায় ২৫ ডিগ্রি |
☛ ৫ ডিগ্রি মাপার আরেকটি কৌশল হল হাতের মাঝের তিনটি আঙ্গুলকে মেলে ধরা।
৫ ডিগ্রি মাপার উপায় |
সপ্তর্ষীমণ্ডলীর দুটি নক্ষত্র দুবে ও মেরাক ৫ ডিগ্রি দূরে। এই দুটিকে যোগ করে ছয় গুণ সামনে গেলেই পাওয়া যায় ধ্রুবতারা। |
১৫ ডিগ্রি মাপার উপায় |
ধ্রুবতারা থেকে কোচাবের কৌণিক দূরত্ব ১৫ ডিগ্রি |
সপ্তর্ষীমণ্ডলী থেকে সিংহমণ্ডলীর উজ্জ্বলতম ও আকাশের ২১ তম উজ্জ্বল নক্ষত্র রেগুলাসের কৌণিক দূরত্ব ৫০ ডিগ্রি |
চাইলে ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন। এতে বিষয়গুলো খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ
☛ উজ্জ্বল তারাদের গল্প
☛ তারামণ্ডলীর পরিচয়