Advertisement

বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

সূর্য হল আমাদের সৌরজগতের শক্তি সরবরাহ কেন্দ্র। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় এটি হল একটি সাধারণ নক্ষত্র। কিন্তু সাধারণ এই নক্ষত্রই প্রতি সেকেন্ডে উৎপন্ন করে বিপুল পরিমাণ শক্তি, প্রধানত আলো ও তাপ বিকিরণের মাধ্যমে।  প্রতি সেকেন্ডে সূর্যে উৎপন্ন শক্তির পরিমাণ হল 5 x 1023  অশ্বশক্তির সমপরিমাণ। ধারণা পেতে চান এই পরিমাণ শক্তি কতটা বেশি? মনে করুন, পৃথিবী থেকে সূর্য  অবধি একটা বরফের সেতু নির্মাণ করা হল, যা ১ মাইল পুরু ও দুই মাইল চওড়া। এই সেটুটাকে এক সেকেন্ডে উড়িয়ে দিতে সমান পরিমাণ শক্তি লাগবে!
চলুন, জেনেই নিই সূর্যের বয়স কত।

সূর্যের বয়স জানার সরাসরি কোন উপায় নেই। পৃথিবীতে প্রাপ্ত সবচেয়ে প্রাচীন প্রস্তরখণ্ড ও উল্কাপিণ্ডের বয়স হচ্ছে ৪৬০ কোটি বছর। যদি ধরে নেওয়া হয়, পুরো সৌরজগত একই সাথে সৃষ্টি হয়েছিল, তবে সূর্যের বয়সও হয় এটাই। অবশ্য, এই অনুমান ভুল হবার সম্ভাবনা তেমন একটা নেই। অর্থ্যাৎ সূর্যের বয়স প্রায় ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি বছর।
সবচেয়ে প্রাচীন পাথরের তেজস্ক্রিয় ভাঙ্গন সূত্র কাজে লাগিয়ে এর বয়স বের করা হয়।
সূত্রঃ
নাসা হেলিওস
Category: articles

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪

পৃথিবীর বাইরে প্রাণ তথা এলিয়েনের প্রসঙ্গ আসলেই ঘুরে ফিরে আসে মঙ্গল গ্রহের কথা। এর আগেও বহুবার খবরের শিরোনাম হয়েছে এই লাল গ্রহটি। এবার এতে পাওয়া গেল মিথেন গ্যাস। তাতে কী? প্রাণের অস্তিত্ত্বের সাথে তো সম্পর্ক পানির। মিথেনের তাতে কাজ কি? হ্যাঁ, সম্পর্ক আছে। আর সেজন্যই তো আবারো শিরোনাম হল পৃথিবীর ২য় নিকটতম প্রতিবেশী।
নাসার মঙ্গল যান কিওরিওসিটি রোভার

এবার নাসার মহাকাশযান কিউরিওসিটি রোভার মঙ্গলে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পেরেছে। এ থেকে ধারণা করা যায় বর্তমানে বা অন্তত অতীতে হলেও মঙ্গলে প্রাণ ছিল। গ্রহটিতে মিথেনের উপস্থিতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য। কারণ, পৃথিবীর মিথেনের ৯৫ শতাংশই আসে অণুজীবদের থেকে। এ থেকেই গবেষকরা আশা করছেন, মঙ্গলে প্রাণ থাকতেও পারে।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবের গবেষক ড. ক্রিস ওয়েবস্টার বলেন, "হিসেবে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রায় ৫ হাজার টন মিথেন আছে। একে যদি আপনি পৃথিবীর সাথে তুলনা করেন, তবে পৃথিবীতে আছে ৫০ কোটি টন। পৃথিবীতে এই গ্যাসের ঘনত্ব হচ্ছে ১৮০০ পিপিবিভি (Parts per billion by volume) যেখানে মঙ্গলে ০.৭ পিপিবিভি।"  
কিউরিওসিটির দল গ্রহটিতে মিথেনের উৎসের সন্ধান না পেলেও মনে করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ স্টোরই এর উৎসস্থল। এই গ্যাসের উৎস কোন জীব নাকি নিছকই ভৌগলিক ব্যাপার তা জানতে সহায়তা করতে পারে গ্যসে উপস্থিত কার্বনের আইসোটোপের প্রকৃতি। পৃথিবীতে ১২ ভরের কার্বন (C-12) জীবনের ক্ষেত্রে কার্বন-১৩ এর চেয়ে বেশি সহায়ক।
C-13 এর তুলনায় C-12 এর অধিক উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েই বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ অন্তত ৪ বিলিয়ন বছর আগেও ছিল বলে অনুমান করছেন। তবে, মঙ্গলের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি ভালো মত পরীক্ষা করবার যথেষ্ট গ্যাস নেই বলেই আপাতত সমস্যা।
এখানে উল্লেখ্য, মিথেন হল একটি জৈব (Organic) যৌগ। আর জৈব যৌগের প্রধান উপাদান হল কার্বন।
নাসার পাঠানো কিউরিওসিটি যানটি ২০১২ সালের আগস্টে মঙ্গলে অবতরণ করে এর এর বায়ু ও উপাদান নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে। 
সূত্রঃ
বিবিসি নিউজ, উইকিপিডিয়া
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৪

যাঁকে আধুনিক কসমোলজির জনক বলে প্রায়শই অভিহিত করা হয়, সেই বিজ্ঞানী এডুইন হাবল এমন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছিলেন যা মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধ্যানধারণা আমূল পাল্টে দেয়।
বিজ্ঞানী এডুইন হাবল
জন্ম ১৮৮৯ সালে। পেশাগত জীবন শুরু আইনজীবী হিসেবে। কিন্তু যার মন পড়ে রয়েছে মহাকাশের দূর সীমানায়, তার কি আর আইনের ধারায় মন বসে?  কয়েক বছর পরেই নিলেন জ্যোতির্বিদ্যায় ডক্টরেট । গ্র্যাজুয়েশনের পরপরই ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে (Observatory) কাজ করার দাওয়াত পেলেন। কিন্তু তিনি আবার ১ম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকও যে! তাই কাজে যোগ দিতে কিছু দিন দেরি হয়ে গেল। তবে, ফিরে এসেই লেগে গেলেন। এখানেই তিনি বিশ্বের বৃহত্তম দুটি আকাশবীক্ষণ যন্ত্র (Telescope) নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেলেন। এগুলো হল যথাক্রমে ৬০ ও ১০০ ইঞ্চির হুকার টেলিস্কোপ।

সৈনিক জীবন বুঝি বড্ড ভালো লেগেছিল!  ২য় বিশ্বযুদ্ধের দামামা শুরু হয়ে গেলে ১৯৪২ সালে আবারো মানমন্দির ছেড়ে গেলেন।  পেলেন বীরত্বের প্রতিকও।

মিল্কিওয়ের বাইরে উঁকিঃ
১৯২০ এর দশকেও আকাশে ছড়ানো ছিটানো ছোপ ছোপ আলোকে মনে করা হত নীহারিকা (Nebula)। মনে করা হত এগুলোর অবস্থানও মিল্কিওয়েতেই। আলাদা আলাদা করে NGC 6822, M33 ও এনড্রোমিডা গ্যালাক্সির ছবি নিরীক্ষা করার সময় হাবল এগুলোর প্রতিটির ভেতরে একটি সেফেইড ভেরিয়েবল নামক স্পন্দনশীল (Pulsating) নক্ষত্র (Star) দেখতে পেলেন। হাবল সাহেব হিসেব কষে বের করলেন নক্ষত্রগুলো কত দূরত্বে আছে। এতে করে বের হল নীহারিকাদের  দূরত্বও। দেখা গেল, মিল্কিওয়ে থেকে তাদের দূরত্ব অনেক বেশি দূরে।

মহাকাশবিদরাও বুঝলেন, এই নীহারিকাগুলোও আসলে মিল্কিওয়ের মতই ছায়াপথ (Galaxy)। প্রতিটি ছায়াপথে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন তারকা। আগে যেখানে মিল্কিওয়েকেই 'মহাবিশ্বের সব' মনে করা হত, সেখানে এবার মহাকাশবিজ্ঞানীদের চোখ আরো অনেক দূর প্রসারিত হয়ে গেল। 
প্রায় একই সময়ে হাবল গ্যলাক্সিদের শ্রেণিবিভক্ত করার একটি স্টান্ডার্ড উপায়ও বার করলেন। তিনিই প্রথম পরিষ্কার করে গ্যালাক্সিগুলোকে ৪টি শ্রেণিতে ফেললেন। এগুলো হল, ডিম্বাকৃতির (Elliptical), প্যাঁচানো তথা সর্পিলাকার (Spiral) , Barred Spiral ও অনিয়াতাকার (Irregular) গ্যালাক্সি। হাবল শুরুতে ধারণা করেছিলেন সর্পিল গ্যালাক্সিরা  ডিম্বাকৃতিরগুলো থেকে বিকশিত হয়। এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা জানেন সব গ্যলাক্সিদের আকৃতিই এদের জীবনের শুরুতেই নির্ধারিত হয়।

সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বঃ
গ্যালাক্সিদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে হাবল দেখলেন, ওগুলো স্থির হয়ে বসে নেই। উপরন্তু এরা প্রায় সবাই পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অবশ্য এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের সাথে পারস্পরিক মহাকর্ষীয় টানে কাছে আসছে এবং আরো ৫০০ কোটি বছর পরে একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে।

ফলে জানা গেল, মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। যে প্রক্রিয়ায় মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার বের করা হয় তাকে বলে হাবলের নীতি (Huble's Law)। অবশ্য জর্জ লেমিটরও এর আগে ১৯২৭ সালে এই নীতি প্রস্তাব করেছিলেন। হিসেব করে পাওয়া গেল, মহাবিশ্ব একটি নির্দিষ্ট হারে প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীর সম্মানে এই হারটিকে বলা হয় হাবল ধ্রুবক (Huble Constant)।

হাবলের এক দশক আগে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনও সাধারণ আপেক্ষিকতার নীতির মাধ্যমে সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ সময়ে তার কোন প্রমাণ না পাওয়া যাওয়াতে তিনি সেই প্রস্তাবের সমীকরণগুলো প্রত্যাহার করেন। কিন্তু হাবল সেই ধারণা প্রমাণিত করবার পরে আইনস্টাইন মাউন্ট উইলসনে গিয়ে বলেন, ঐ সমীকরণগুলো প্রত্যাহার ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল

অন্যান্য অবদানঃ
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও জ্যোতির্বিদ্যার জগতেই হাবলের রয়েছে আরো অবদান। পেয়েছেন অসংখ্যা পুরস্কার। কিন্তু মহাবিশ্বের পরিচয় উন্মোচিত করার পরেও তিনি নোবেল পুরস্কার পাননি। তাঁর জীবদ্দশায় নোবেল প্রাইজের জন্য  মহাকাশবিদ্যাকে পদার্থবিদ্যার একটি ফিল্ড মনে করা হত। তিনি আজীবন চেষ্টা করে গেছেন যাতে এই ধারণা চেঞ্জ হয়ে জ্যোতির্বিদরাও নোবেলের সুযোগ পান। সুযোগটি তৈরি হল ১৯৫৩ সালে। কিন্তু একই বছর মারা গেলেন তিনিও । যেহেতু নোবেলের ক্ষেত্রে মরণোত্তর (Posthumous) পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা নেই, তাই নোবেলের তালিকায় হাবল আর স্থান পেলেন না।

১৯৫৩ সালে, ৬৩ বছর  বয়সে মারা যান মহাবিশ্বের নব দিগন্ত উন্মোচনকারী এই জ্যোতির্বিদ। মৃত্যুর আগে তিনি পালোমার পর্বতে ২০০ ইঞ্চির হ্যালি টেলিস্কোপের নির্মাণ দেখে গিয়েছিলেনীর১৯৭৬ সালে রুশ BTA-6 টেলিস্কোপ তৈরি আগ পর্যন্ত এটিই ছিল বৃহত্তম টেলিস্কোপ।

হাবলের জন্মের ১০১ বছর পর ১৯০০ সালে নাসা পৃথিবীর কক্ষপথে হাবল স্পেইস টেলিস্কোপ বসাল। এই আকাশবীক্ষণ যন্ত্র মহাবিশ্বের হাজার হাজার ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। পৃথিবীর নিখুঁত বয়স নির্ণয়, গ্যালাক্সিদের ক্রমবিকাশ ও মহাবিশ্বকে প্রসারণের জন্য দায়ী ডার্ক এনার্জির আবিষ্কারের ক্ষেত্র প্রভূত  অবদান রয়েছে এই টেলিস্কোপ্টির।

সূত্রঃ
১. স্পেইস ডট কম
২. উইকিপিডিয়াঃ Edwin Hubble

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

মহাকাশে ১৫০০ দিনের মত ঘোরাঘুরি করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির আকাশযান প্ল্যাঙ্কের পাঠানো ছায়াপথের আলোর গতিপথের চিত্র থেকে আমাদের সৌরজগতের আবাস মিল্কিওয়ে ছায়াপথের চৌম্বক ছবি বানানো হয়েছে।  সংস্থাটির দাবী, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চৌম্বক ক্ষেত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এই ছবিগুলোই অগ্রগামী। বিগ ব্যাঙ তথা মহাবিশ্বের জন্মের পর একে দেখতে ঠিক কেমন লেগেছিল - তা এই নকশা থেকে জানা যেতেও পারে।
প্ল্যাঙ্ক মহাকাশযানের পাঠানো আলোর সমাবর্তন (Polarisation) তথ্য ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে চিত্রগুলো। আলোকরশ্মি তার গতিপথে কী কী প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছিল, সমাবর্তন থেকে তার অনেকগুলো তথ্য পাওয়া যায়।
সমাবর্তনের পরিমাণ থেকে মহাকাশবিদরা আঁচ করতে পারেন, চুম্বকত্বসহ কোন ভৌত কারণে সমাবর্তন ঘটেছে।
প্ল্যাঙ্ক মহাকাশযানটিকে ১৪ মে, ২০০৯ সালে প্রেরণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল বিগ ব্যাঙ পরবর্তী কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (CMB) নিয়ে তথ্য আহরণ করা।
সূত্রঃ
ডেইলিমেইল
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...