Advertisement

সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০১৪

দুই মেরুতে সূর্য ৬ মাস দিগন্তের উপরে ও ছয় মাস দিগন্তের নিচে থাকে। মেরুবৃত্ত থেকে দূরের অক্ষাংশে আমরা যেমন রাত দিন অনুভব করি সেখানের রাত দিন ঠিক তেমন নয়, অনেকটা গোধূলির মত।
এর মূল কারণ হল সূর্যের সাথে পৃথিবীর ২৩.৫ ডিগ্রি নতি।
কোন মেরুতে কখনঃ
২১ মার্চ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ছয় মাস উত্তর মেরুতে অবিরত দিন ও দক্ষিণ মেরুতে অবিরত রাত থাকে। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ মার্চ ঘটে উল্টোটি মানে ৬ মাস একটানা দক্ষিণ মেরুতে দিন ও উত্তর মেরুতে রাত। তার মানে ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর হচ্ছে মেরুদ্বয়ে রাত দিন পাল্টানোর দুই প্রান্তিক তারিখ। এই দুই দিন উভয় মেরু সূর্য থেকে সমান দূরে থাকে।
উত্তর মেরুতে দিনঃ
২১ মার্চের পর উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ঝুঁকতে থাকে। ঝুঁকতে ঝুঁকতে ২১ জুন গিয়ে ঝোঁকার পরিমান হয় সর্বোচ্চ। ২১ জুনের পর  উত্তর মেরু এবার সূর্য থেকে দূরে সরতে থাকে। সরতে সরতে ২৩ সেপ্টেম্বরে সূর্য থেকে দক্ষিণ মেরুর সমান দূরত্বে থাকে।
এই ছয় মাস উত্তর মেরুতে (প্রকৃত অর্থে মেরুবৃত্তে) সূর্য দিগন্তের উপরে অবস্থান করে। তাই তখন এখানে দিন। অপর দিকে এই সময় দক্ষিণ মেরুবৃত্ত দিগন্তের নিচে অবস্থান করায় সেখানে রাত।
দক্ষিণ মেরুতে দিনঃ
উত্তর মেরু সূর্য থেকে সরতে সরতে ২৩ সেপ্টেম্বরে এসে দক্ষিণ মেরুর সমান দূরত্বে পৌঁছেছিল। এবার সে আরো সরতে থাকে। এভাবে ২২ ডিসেম্বর উত্তর মেরু সূর্যের সবচেয়ে দূরে ও দক্ষিণ মেরু সবচেয়ে কাছে থাকে। এবার দক্ষিণ মেরুর আবার সরার পালা। দক্ষিণ মেরু সরতে থাকে আর উত্তর মেরু পুনরায় দূরত্ব কমাতে থাকে। এভাবে ২১ মার্চ আবার দুই মেরু সূর্য থেকে সমান দূরে থাকে। ফলে, এই ছয় মাস দক্ষিণ মেরুতে দিন আর উত্তর মেরুতে রাত হয়।
Category: articles
পরিক্রমণকালে পৃথিবীর মেরুরেখা ধ্রুবতারামুখি হয়ে কক্ষতলের সাথে সব সময় ৬৬.৫ ডিগ্রি কোণ করে হেলে থাকে। আবার নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখার সমতল কক্ষতলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকে।
সাধারণত ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সব জায়গায় দিন রাত্রি সমান হয়। চিত্রে খেয়াল করুন, এই দুই দিন সূর্য থেকে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু সমান দূরত্বে থাকে। আর তাই উত্তর বা দক্ষিণ কোন গোলার্ধই একে অপরের চেয়ে সূর্যের আলো বেশি বা কম পায় না। (চিত্রে মনোনিবেশ করুন)
এই দিন তাই ২৪ ঘন্টার অর্ধেক সময় যে কোথাও দিন  ও বাকিটা রাত থাকে।
এই দিন গুলোয় সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখায় ৯০ ডিগ্রি কোণে, সুমেরু ও কুমেরুবৃত্তে ৬৬.৫ ডিগ্রি ও মেরুদ্বয়ে ০ ডিগ্রি কোণে পতিত হয়।

২৩ সেপ্টেম্বরের আগে ২১ জুন পৃথিবীর উত্তর মেরু সূর্যের দিকে সবচেয়ে ঝুঁকে থাকে ও দক্ষিণ মেরু সবচেয়ে দূরে থাকে। পরের দিন থেকে উত্তর মেরু সরতে থাকে আর দক্ষিণ মেরু কাছে আসতে থাকে। এভাবে ২৩ সেপ্টেম্বরে এসে দুই মেরু সমান দুরত্বে আসে। একে বলে শারদ বিষুব ( autumnal equinox)।
আবার ২১ মার্চের আগে ২২ ডিসেম্বরে সূর্য দক্ষিণ মেরুর দিকে সবচেয়ে হেলে থাকে আর উত্তর মেরু থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে। এর পর থেকে আবার দক্ষিণ মেরু থেকে সরতে সরতে এবং উত্তর মেরুর দিকে আসতে ২১ মার্চে এসে দুই মেরু থেকে সমান দূরত্বে আসে। একে বলে বাসন্ত বিষুব ( Vernal equinox)।
Category: articles

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০১৪

মহাকাশবিজ্ঞানে এক অতি প্রয়োজনীয় একক হল আলোকবর্ষ । সাবধান! শেষে 'বর্ষ' শব্দ দেখে একে সময়ের একক মনে করা যাবে না! এটি আসলে দূরত্বের একক।

এর মানে কী?
আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে বলা হয় এক আলোকবর্ষ। আলো যেখানে প্রতি সেকেন্ডেই ৩ লক্ষ কিলোমিটার (১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল) পথ অতিক্রম করে, সেখানে এক বছরে কত দূর যাবে ভাবতেই নিজেকে খুব ছোট্ট ছোট্ট লাগে, তাই না? নিচে আমরা দেখবো, এই মান আসলে কত বিশাল এবং এর কিছু উদাহরণ।

আলোকবর্ষ এককটির প্রয়োজন হল কেন? 
মহাজাগতিক বস্তুসমূহ এবং তাদের মধ্যকার দূরত এত বিশাল যে আমাদের সাধারণ এসআই একক মিটার এমনকি কিলোমিটারও সেখানে কোণঠাসা। প্রয়োজন আরও অনেক বড় এককের। যেমন আমাদের প্রতিবেশি গ্যালাক্সিদের মধ্যে সবচেয়ে বড়- অ্যান্ড্রোমিডার দূরত্ব যদি আপনি এসআই একক মাপতে যান, তাহলে তা হবে 2.4×1022 মিটার। এত বড় মান এসআই এককে লিখতে গেলে অঙ্কটি যেমন বড় হয়ে যায়, তেমনি এর মানে বোঝাও হয়ে দাঁড়ায় কঠিন। তাই জ্যোতির্বিদ্যায় অন্যান্য এককের পাশাপাশি আলোকবর্ষ এককটি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত নিকটবর্তী নক্ষত্রদের দূরত্ব বের করতে এই এককটি ব্যবহার করা হয়। 


এখন, এই এককে হিসাব করলে দেখা যায়, আমাদের সৌরজগত যে গ্যলাক্সিতে অবস্থিত (মিল্কিওয়ে) তার ব্যাস প্রায় ১ লাখ আলোকবর্ষ।  আমাদের প্রতিবেশি গ্যালাক্সি অ্যান্ড্রোমিডার দূরত্ব প্রায় ২.৫ লাখ ও ব্যাস ২ লাখ বিশ হাজার আলোকবর্ষ । ফলে, সহজে লেখাও যাচ্ছে, বিভিন্ন দূরত্বের তুলনাও করা যাচ্ছে।  আবার, সৌরজগতের বাইরে বৃহত্তম গ্রহ ট্রেস-৪ এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে ১৪০০ আলোকবর্ষ দূরে।

আরো দেখুনঃ জ্যোতির্বিদ্যায় দূরত্বের এককেরা

আলোকবর্ষের মান কত? 
আলোকবর্ষ হল সেই পরিমাণ দূরত্ব যা আলো এক বছরে অতিক্রম করে। আমরা জানি আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 3×108 মিটার, মানে ৩ এর পরে ৮টি শুন্য দিলে যা হয়। মাইলের হিসাবে তা ১ লক্ষ ৮৬ হাজার।

গাণিতিক হিসাব তাহলে এ রকমঃ
১ আলোকবর্ষ  = ১ বছরে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = ৩৬৫ দিনে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = ৩৬৫ × ২৪ ঘণ্টায়  আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    =  ৩৬৫ × ২৪ × ৩৬০০ সেকেন্ডে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = 365 × 24 × 3600 ×  3×108 মিটার
                    = 9.4607×1015 মিটার। 
অর্থাৎ ৯ ৪৬০ ৮০০ ০০০ ০০০ ০০০ মিটার। 

এটি ৯ ট্রিলিয়ন কিলোমিটারের চে একটু বেশি বা প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। 
জ্যোতির্বিদ্যায় আরেকটি প্রয়োজনীয় একক পারসেক। এটি আলোকবর্ষের চেয়ে বড়। এর মান ৩.২৬ আলোকবর্ষের সমান। 

অপেক্ষাকৃত ছোট দূরত্বের ক্ষেত্রে আবার আলোকবর্ষের পরিবর্তে আলোকমিনিট বা আলোকসেকেন্ড জাতীয় এককগুলো ব্যবহার করা হয়। বোঝাই যাচ্ছে, আলোর এক মিনিটে অতিক্রান্ত দূরত্বই হচ্ছে আলোকমিনিট ইত্যাদি। উপরের ছবিতে এ রকম প্রয়োগগুলো দেখুন। 
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...