যে-কোনো গোলাকার জিনিসেই মেরু ও বিষুব অঞ্চল নামে দুটো অংশ থাকে। আরও সঠিক করে এ অঞ্চল দুটি থাকে ঘুর্ণনরত গোলাকার বস্তুতে। যেমন গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি। যেমন ধরুন, আমাদের পৃথিবী। এটি ঘুরছে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে। এ কারণেই আমরা সকালবেলা পূর্ব দিকে সূর্য উঠতে দেখি। ডুবে যেতে দেখি পশ্চিমে।
আরও পড়ুনঃ
☛ গ্রহের পরিচয়
☛ নক্ষত্রের পরিচয়
এই ঘুর্ণন থেকেই বিষুব ও মেরু অঞ্চল চিহ্নিত করা হয়। উপরের ছবির একেবারে মাঝখান দিয়ে উপরে-নীচে একটি রেখা কল্পনা করুন। এই রেখাটি পৃথিবীর পৃষ্ঠ বরাবর যাবে না। যাবে পৃথিবীর পেটের ভেতর দিয়ে। উপরের পৃথিবীটাকে ফুটবলের মতো চিন্তা করলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এখন এই কল্পিত রেখাকে বলা হয় ঘুর্ণন অক্ষ। মানে যে রেখাকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরছে। এবার কল্পনা করুন এই রেখাটি উপরে ও নীচে কোন বিন্দুতে গিয়ে পৌঁছেছে। এই দুটিই বিন্দুকেই বলা হয় মেরু (pole)। উপরের বিন্দুটি হলো উত্তর মেরু। অপর নাম সুমেরু। নীচের বিন্দুটির নাম কুমেরু বা দক্ষিণ মেরু। আর মেরু বিন্দু দুটির আশেপাশের অঞ্চলই মেরু অঞ্চল নামে পরিচিত।
এবার উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর মাঝখানে একটি রেখা কল্পনা করুন। অবশ্যই রেখাটি হবে পূর্ব-পশ্চিমে। এই রেখাটিরই নাম বিষুব রেখা (equator)। অপর নাম নিরক্ষ রেখা। এই রেখার উত্তরে পৃথিবীর যে অংশ পড়েছে তার নাম উত্তর গোলার্ধ (Northern hemisphere)। আর দক্ষিণের অংশের নাম দক্ষিণ গোলার্ধ।
বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর পরিধি সবচেয়ে বেশি হয়। বিষয়টা খুব সহজ। উপরের ছবিতে দেখুন, বিষুব রেখা থেকে আমরা যতই উত্তরে বা দক্ষিণে যাব, ততই পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যাবধান কমে যাচ্ছে। তার মানে অক্ষ রেখা থেকে পৃষ্ঠের দূরত্ব কমে যাচ্ছে। বুঝতে অসুবিধা হলে ফুটবলের কথা আবার মনে করুন। এভাবে যেতে যেতে মেরুতে গিয়ে দেখুন, পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে কোন ব্যবধানই নেই। দুটো একে অপরের সাথে মিশে গেছে।
এবার আরেকভাবে চিন্তা করি। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি, বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বেশি। মেরু অঞ্চলে কম। হ্যাঁ, এটা সত্যি। তবে একটু আগে আমরা যে ব্যাসার্ধের কথা বলেছি, সেটা ছিল অক্ষ রেখা থেকে পরিধির দূরত্ব। মানে উত্তরে-দক্ষিণে কল্পিত রেখার প্রতিটি বিন্দু থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠের দূরত্ব। তবে এবারে আমরা চিন্তা করছি পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্র থেকে দূরত্ব। এই ব্যসার্ধ আপাত দৃষ্টিতে মেরু ও বিষুব অঞ্চলে সমান হওয়ার কথা। কিন্তু আসলে তা নয়।
উপরের ছবি দুটোতে আমরা পৃথিবীকে একদম খাঁটি গোলকের মতো চিন্তা করেছি। পৃথিবী সেরকমই হতো যদি এটি স্থির থাকত। কিন্তু পৃথিবী ঘণ্টায় দেড় হাজার কিলোমিটারেরও বেশি বেগে পশ্চিমে থেকে পূবে ঘুরছে। এই ঘূর্ণনের কারণেই বিষুব অঞ্চলটা একটি লম্বা হয়ে গেছে। অন্য দিকে মেরু অঞ্চলটা একটু চেপে গেছে। তার মানে পৃথিবীর সঠিক আকৃতি হবে এ রকম:
আরও পড়ুন:
☛ পৃথিবী কত জোরে ঘোরে?
এবারে আরও কিছু অঞ্চল চিনে নেওয়া যাক। উত্তর মেরু থেকে প্রায় ২৩.৫ ডিগ্রি দক্ষিণ পর্যন্ত এলাকা নিয়ে একটি বৃত্ত আঁকলে যে এলাকা পাওয়া যায়, তাকে বলে সুমেরু বৃত্ত (arctic circle)। একইভাবে দক্ষিণ মেরুর উত্তর দিকে বৃত্ত আঁকলে তার নাম হয় কুমেরু বৃত্ত (antarctic circle)।
আবার বিষুব রেখা থেকে ২৩.৫ ডিগ্রি উত্তরে পূর্ব-পশ্চিমে কল্পিত রেখাকে বলে কর্কটক্রান্তি রেখা (tropic of cancer)। অন্য দিকে, একই কৌণিক দূরত্বে দক্ষিণের রেখাকে বলে মকরক্রান্তি রেখা (tropic of capricorn)। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের কর্কটক্রান্তি রেখা আমাদের বাংলাদেশের উপর দিয়ে চলে গেছে। আরও নিখুঁত করে বলা যায়, ঢাকার উপর দিয়ে চলে গেছে।
আরও পড়ুন:
☛ পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ মেরু থাকলেও পূর্ব পশ্চিম মেরু নেই কেন?
আরও পড়ুনঃ
☛ গ্রহের পরিচয়
☛ নক্ষত্রের পরিচয়
পৃথিবী ঘুরছে পশ্চিম থেকে পূবে। |
এখন এই কল্পিত রেখাকে বলা হয় ঘুর্ণন অক্ষ। মানে যে রেখাকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘুরছে। এবার কল্পনা করুন এই রেখাটি উপরে ও নীচে কোন বিন্দুতে গিয়ে পৌঁছেছে। এই দুটিই বিন্দুকেই বলা হয় মেরু (pole)। উপরের বিন্দুটি হলো উত্তর মেরু। অপর নাম সুমেরু। নীচের বিন্দুটির নাম কুমেরু বা দক্ষিণ মেরু। আর মেরু বিন্দু দুটির আশেপাশের অঞ্চলই মেরু অঞ্চল নামে পরিচিত।
এবার উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর মাঝখানে একটি রেখা কল্পনা করুন। অবশ্যই রেখাটি হবে পূর্ব-পশ্চিমে। এই রেখাটিরই নাম বিষুব রেখা (equator)। অপর নাম নিরক্ষ রেখা। এই রেখার উত্তরে পৃথিবীর যে অংশ পড়েছে তার নাম উত্তর গোলার্ধ (Northern hemisphere)। আর দক্ষিণের অংশের নাম দক্ষিণ গোলার্ধ।
পৃথিবীর মেরু ও বিষুব অঞ্চল। |
বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর পরিধি সবচেয়ে বেশি হয়। বিষয়টা খুব সহজ। উপরের ছবিতে দেখুন, বিষুব রেখা থেকে আমরা যতই উত্তরে বা দক্ষিণে যাব, ততই পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যাবধান কমে যাচ্ছে। তার মানে অক্ষ রেখা থেকে পৃষ্ঠের দূরত্ব কমে যাচ্ছে। বুঝতে অসুবিধা হলে ফুটবলের কথা আবার মনে করুন। এভাবে যেতে যেতে মেরুতে গিয়ে দেখুন, পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝে কোন ব্যবধানই নেই। দুটো একে অপরের সাথে মিশে গেছে।
এবার আরেকভাবে চিন্তা করি। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি, বিষুব অঞ্চলে পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বেশি। মেরু অঞ্চলে কম। হ্যাঁ, এটা সত্যি। তবে একটু আগে আমরা যে ব্যাসার্ধের কথা বলেছি, সেটা ছিল অক্ষ রেখা থেকে পরিধির দূরত্ব। মানে উত্তরে-দক্ষিণে কল্পিত রেখার প্রতিটি বিন্দু থেকে পৃথিবীর পৃষ্ঠের দূরত্ব। তবে এবারে আমরা চিন্তা করছি পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্র থেকে দূরত্ব। এই ব্যসার্ধ আপাত দৃষ্টিতে মেরু ও বিষুব অঞ্চলে সমান হওয়ার কথা। কিন্তু আসলে তা নয়।
উপরের ছবি দুটোতে আমরা পৃথিবীকে একদম খাঁটি গোলকের মতো চিন্তা করেছি। পৃথিবী সেরকমই হতো যদি এটি স্থির থাকত। কিন্তু পৃথিবী ঘণ্টায় দেড় হাজার কিলোমিটারেরও বেশি বেগে পশ্চিমে থেকে পূবে ঘুরছে। এই ঘূর্ণনের কারণেই বিষুব অঞ্চলটা একটি লম্বা হয়ে গেছে। অন্য দিকে মেরু অঞ্চলটা একটু চেপে গেছে। তার মানে পৃথিবীর সঠিক আকৃতি হবে এ রকম:
দেখুন মেরুর দিকে ব্যাসার্ধ b দিয়ে বোঝানো হয়েছে। আর বিষুব রেখায় ব্যাসার্ধ a। অবশ্যই a বড় b এর চেয়ে। ছবি থেকে বোঝাও যাচ্ছে কেন এমন হল। ছবির সূত্র |
আরও পড়ুন:
☛ পৃথিবী কত জোরে ঘোরে?
এবারে আরও কিছু অঞ্চল চিনে নেওয়া যাক। উত্তর মেরু থেকে প্রায় ২৩.৫ ডিগ্রি দক্ষিণ পর্যন্ত এলাকা নিয়ে একটি বৃত্ত আঁকলে যে এলাকা পাওয়া যায়, তাকে বলে সুমেরু বৃত্ত (arctic circle)। একইভাবে দক্ষিণ মেরুর উত্তর দিকে বৃত্ত আঁকলে তার নাম হয় কুমেরু বৃত্ত (antarctic circle)।
সুমেরু বৃত্ত ও আশেপাশের অঞ্চল। |
আরও পড়ুন:
☛ পৃথিবীর উত্তর-দক্ষিণ মেরু থাকলেও পূর্ব পশ্চিম মেরু নেই কেন?