Advertisement

শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭

মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন পরিমাপ

এর আগে একটি নিবন্ধে আমরা দেখেছিলাম, মহাকর্ষ কীভাবে কাল দীর্ঘায়ন ঘটায়। আজ এর গাণিতিক হিসাব দেখব আমরা।

মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন (Gravitational time dilation) অনুসারে, মহাকর্ষীয় বিভবের মান যেখানে বেশি, সে অঞ্চলের সময় তুলনামূলক আস্তে চলবে। অর্থ্যাৎ, মহাকর্ষের উৎসের তুলনামূলক কাছে সময় ধীরে চলে। যেমন, আপনি ভূপৃষ্ঠের যত কাছে থাকবেন,  পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা যে কারও চেয়ে আপনার সময় তত ধীরে অতিবাহিত হবে।


এ ফলাফলগুলো পাওয়া যায় আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব (General theory of relativity) থেকে। এ তত্ত্বের সমীকরণগুলো অতিমাত্রায় জটিল ও সাধারণের জন্যে দূর্বোধ্য। তবে, কাল দীর্ঘায়নের সমীকরণ সে তুলনায় অনেক সরল। বেগ জনিত কাল দীর্ঘায়নের সূত্রের সাথেও এর বেশ মিল আছে।

মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন এর সূত্র

এখানে to হচ্ছে কোনো ঘটনার প্রকৃত সময় (Proper time)। দর্শক এবং ঘটনা একই মহাকর্ষীয় বিভবে অবস্থান করলে পরিমাপে এ সময় দেখা যাবে। আর tহচ্ছে যে-কোনো ভর থেকে অসীম দূরত্বে অবস্থান করে মাপা সময়। অর্থ্যাৎ, আমরা ধরে নিচ্ছি tf পরিমাপের জায়গায় আলোচ্য ভরের মহাকর্ষীয় প্রভাব নগণ্য।

G হলো নিউটনের সার্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক। c হলো শূন্যস্থানে আলোর বেগ।  M হচ্ছে আলোচ্য বস্তুর ভর। আর r হলো বস্তুটা থেকে (মানে এর মহাকর্ষীয় কেন্দ্র থেকে) ঘটনার দূরত্ব।

সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বের একটি সূত্র বের হয় সোয়ার্জসাইল্ড সমাধান থেকে। এটাই ব্ল্যাক হোলের সমীকরণ। সূত্র থেকে আপনি পাবেন সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধের মান।  M ভরের একটি বস্তুর সবটুকু ভর এ ব্যাসার্ধের ভেতরে অবস্থান করলে বস্তুটির মহাকর্ষ এত শক্তিশালী হবে যে, এর থেকে কোনো কিছুই বেরিয়ে আসতে পারবে না। এমনকি আলোও না।

আরও পড়ুনঃ 
☛ আলো কীভাবে ব্ল্যাক হোলে আটকা পড়ে?

সূত্রটি হলোঃ
সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধের সমীকরণ


এখানে rs-ই হলো সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধ।
ব্ল্যাক হোলের সীমানায় পৌঁছে সূত্রটি প্রয়োগ করলে আমরা পাই r = rs। ফলে to এর মান হয়ে যাবে শূন্য। তার মানে, বাইরের কোনো দর্শকের কাছে মনে হবে এখানে সময় থেমে আছে। ফলে ব্ল্যাক হোলের সীমানা পেরিয়ে কোনো কিছুকে কখনোই ভেতরে যেতে দেখা যাবে না।

তবে ব্ল্যাক হোলে পড়েই গেলে ব্যাপারটা হয়ে পড়ে আরও উদ্ভট। অবশ্য বাইরে থেকে এ পতন দেখা সম্ভব হবে না। যাই হোক, এক্ষেত্রে বর্গমূলের ভেতরের রাশিটা হবে ঋণাত্মক। মানে, ফল হিসেবে পাওয়া যাবে কাল্পনিক সময়, যার ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত জানা নেই।

সূত্রঃ
১। সাসেক্স ওয়েবসাইট 


Advertisement 02

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ

লেখকের পরিচয়

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ। প্রভাষক, পরিসংখ্যান বিভাগ, সিলেট ক্যাডেট কলেজ। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রকাশিত বই পাঁচটি | সব লেখা | ফেসবুক | পারসোনাল ওয়েবসাইট

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...