গ্রহ-নক্ষত্রদের ক্ষেত্রে ঘূর্ণন আছে দুই রকম। একটি হলো নিজের অক্ষের সাপেক্ষে। এর কেতাবি নাম আবর্তন (rotation)। যেমন পৃথিবীর নিজ অক্ষের সাপেক্ষে একবার ঘূর্ণনে এক দিন হয়। পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই ঘূর্ণনকে তাই আহ্নিক গতিও (Diurnal motion) বলে। আর অন্য কোনো কিছুকে কেন্দ্র করে যে ঘূর্ণন তার নাম প্রদক্ষিণ (revolution)। যেমন পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এক বার ঘুরে এলে হয় এক বছর।
আরও পড়ুন
☛ আবর্তন ও প্রদক্ষিণের পার্থক্য
আমরা এর আগে বলেছিলাম, সূর্য আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরছে। বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার বা ৫ লক্ষ মাইল। এত বড় বেগেও পুরো ছায়াপথকে ঘুরে আসতে সূর্যের সময় লাগে প্রায় ২৫ কোটি বছর।
আরও পড়ুন
☛ মিল্কিওয়েকে ঘিরে সূর্যের গতি
তাহলে বোঝা গেল, সূর্য প্রদক্ষিণ করছে। তাহলে আবর্তনও কি করছে? আসলে বলতে গেলে সব মহাজাগতিক বস্তুই আবর্তিত হচ্ছে। তবে সূর্যের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। কেন? পৃথিবীর কথা একটু চিন্তা করুন। প্রায় ২৪ ঘণ্টায় পুরো পৃথিবী ১ বার নিজ অক্ষেরে চারপাশে ঘুরে আসে। চাই সেটা মেরু অঞ্চল হোক বা বা উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুর মাঝামাঝিতে থাকা বিষুব অঞ্চলই হোক। সবখানেই ২৪ ঘণ্টায় হয় একটি ঘুর্ণন। একটি বল হাতে নিয়েও যদি একবার ঘুরিয়ে নেন, এর যে কোনো জায়গাই পূর্ণ একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করবে একই সাথে।
সমস্যা হলো সূর্য পৃথিবী বা বলের মতো কঠিন পদার্থ নয়। গঠিত উত্তপ্ত আয়নিত গ্যাসীয় প্লাজমা পদার্থ দিয়ে। ফলে বিষুব অঞ্চলে একটি পূর্ণ আবর্তন হয় ২৪.৪৭ দিনে। কিন্তু বিষুব অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে যেতে থাকলে এই বেগ কমে আসে। মেরু এলাকায় সময় লাগে ৩৮ দিন। সব মিলিয়ে গড় আবর্তন সময় ২৭ দিন।
সৌরজগতের বৃহস্পতি ও শনি গ্রহও অনেকটা সূর্যের মতো। এরা হলো গ্যাস দানব। ফলে এদের ঘূর্ণনেও দেখা যায় সূর্যের মতো একই রকম বিভিন্নতা।
আরও পড়ুনঃ
☛ বৃহস্পতি কেন নক্ষত্র নয়?
এই ঘূর্ণের খবর আমরা কীভাবে জানলাম? উত্তর হলো সৌরদাগ (sun spot)। দেখা গেছে, সূর্যের বিশেষ বিশেষ দাগগুলো উল্লেখিত সময় পর একই অবস্থানে ফিরে আসে। ঘূর্ণন নিয়ে আরেকটি মজার ঘটনাও আছে। পৃষ্ঠের ওপরে যেমন ঘূর্ণনের বিভেদ আছে, তেমনি ঘূর্ণনের বিভেদ আছে সূর্যের ভেতরের অঞ্চলেও।
সূর্যের পৃষ্ঠের ঠিক ভেতরের এলাকা, কোর বা কেন্দ্রমণ্ডল ও বিকিরণ অঞ্চল একত্রে একটি কঠিন বস্তুর মতো ঘোরে। অন্য দিকে বাইরের স্তর, পরিচলন অঞ্চল ও আলোকমণ্ডল (photosphere) ঘোরে আবার ভিন্ন বেগে।
সূত্রঃ
আরও পড়ুন
☛ আবর্তন ও প্রদক্ষিণের পার্থক্য
আমরা এর আগে বলেছিলাম, সূর্য আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরছে। বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার বা ৫ লক্ষ মাইল। এত বড় বেগেও পুরো ছায়াপথকে ঘুরে আসতে সূর্যের সময় লাগে প্রায় ২৫ কোটি বছর।
আরও পড়ুন
☛ মিল্কিওয়েকে ঘিরে সূর্যের গতি
তাহলে বোঝা গেল, সূর্য প্রদক্ষিণ করছে। তাহলে আবর্তনও কি করছে? আসলে বলতে গেলে সব মহাজাগতিক বস্তুই আবর্তিত হচ্ছে। তবে সূর্যের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। কেন? পৃথিবীর কথা একটু চিন্তা করুন। প্রায় ২৪ ঘণ্টায় পুরো পৃথিবী ১ বার নিজ অক্ষেরে চারপাশে ঘুরে আসে। চাই সেটা মেরু অঞ্চল হোক বা বা উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুর মাঝামাঝিতে থাকা বিষুব অঞ্চলই হোক। সবখানেই ২৪ ঘণ্টায় হয় একটি ঘুর্ণন। একটি বল হাতে নিয়েও যদি একবার ঘুরিয়ে নেন, এর যে কোনো জায়গাই পূর্ণ একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করবে একই সাথে।
সমস্যা হলো সূর্য পৃথিবী বা বলের মতো কঠিন পদার্থ নয়। গঠিত উত্তপ্ত আয়নিত গ্যাসীয় প্লাজমা পদার্থ দিয়ে। ফলে বিষুব অঞ্চলে একটি পূর্ণ আবর্তন হয় ২৪.৪৭ দিনে। কিন্তু বিষুব অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে যেতে থাকলে এই বেগ কমে আসে। মেরু এলাকায় সময় লাগে ৩৮ দিন। সব মিলিয়ে গড় আবর্তন সময় ২৭ দিন।
সৌরজগতের বৃহস্পতি ও শনি গ্রহও অনেকটা সূর্যের মতো। এরা হলো গ্যাস দানব। ফলে এদের ঘূর্ণনেও দেখা যায় সূর্যের মতো একই রকম বিভিন্নতা।
বিভিন্ন অঞ্চলে সূর্যের আবর্তন বেগ |
আরও পড়ুনঃ
☛ বৃহস্পতি কেন নক্ষত্র নয়?
এই ঘূর্ণের খবর আমরা কীভাবে জানলাম? উত্তর হলো সৌরদাগ (sun spot)। দেখা গেছে, সূর্যের বিশেষ বিশেষ দাগগুলো উল্লেখিত সময় পর একই অবস্থানে ফিরে আসে। ঘূর্ণন নিয়ে আরেকটি মজার ঘটনাও আছে। পৃষ্ঠের ওপরে যেমন ঘূর্ণনের বিভেদ আছে, তেমনি ঘূর্ণনের বিভেদ আছে সূর্যের ভেতরের অঞ্চলেও।
সূর্যের পৃষ্ঠের ঠিক ভেতরের এলাকা, কোর বা কেন্দ্রমণ্ডল ও বিকিরণ অঞ্চল একত্রে একটি কঠিন বস্তুর মতো ঘোরে। অন্য দিকে বাইরের স্তর, পরিচলন অঞ্চল ও আলোকমণ্ডল (photosphere) ঘোরে আবার ভিন্ন বেগে।
সূর্যের বিভিন্ন অঞ্চল। বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। |
২। উইকিপিডিয়া
৩। লাইভ সায়েন্স
6 comments
Write commentsযেহেতু সূর্য্য আমাদের মিল্কিওয়েকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে 25 কোটি বছরে একবার এবং পৃথিবী ও বাকি সৌরজগতের গ্রহগুলি সূর্য্যকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে, তাহলে যদিয় পৃথিবীর সাপেক্ষে আমাদের সৌরজাগতিক বস্তুগুলির অবস্থান স্থায়ী কিন্তু সৌরজগতের বায়রের কোনো বস্তুর অবস্থান পরিবর্তনশীল।
Replyতাহলে কিভাবে প্রাচীন কাল থেকে ধ্রুবতারা বা অন্যান্য তারামন্ডলের ( constillation) অবস্থান পৃথিবীর সাপেক্ষে অপরিতর্তিত থাকে যা থেকে তখনকার নাবিকরা দিক নির্নয়ের কাজে লাগতো?
সুন্দর প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ।
Replyমজার ব্যাপার হলো, আজকের ধ্রবতারা সব সময় ধ্রুবতারা ছিল না।
৫ হাজার বছর আগে যখন মিশরিয়রা পিরামিড বানাচ্ছিল, তখন কংস (thuban) নক্ষত্রটি ছিল আজকের ধ্রুবতারার জায়গায়। মানেই, সেটিই তখন ছিল ধ্রুবতারা (North star)।
বর্তমান ধ্রুবতারা (পোলারিস) ২১০০ সালের মার্চে একদম উত্তর মেরুর বরাবর থাকবে। আবার, আজ থেকে ১২ হাজার বছর পর আবার ধ্রুবতারা হবে অভিজিৎ (Vega) নক্ষত্র।
তবে ধ্রুবতারার বদলে যাবার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে precession বা অয়নচলন নামের প্রক্রিয়া। মিল্কিওয়ের চারপাশে সূর্যের ঘূর্ণন কিন্তু শুধু সূর্য একার জন্যে প্রযোজ্য নয়। সূর্যের আশেপাশের নক্ষত্ররাও কিন্তু ঘুরছে। ফলে ধ্রুবতারার পরিবর্তনে এই ঘূর্ণনের ভূমিকা খুব একটা নেই বলেই মনে হয়।
বাঃ সুন্দর উত্তর আবদুল্লা মহাশয়। অসংখ্য ধন্যবাদ।
Replyযেসব নক্ষত্র নির্দিষ্ট কক্ষপথে নির্দিষ্ট গতিতে ও সময়ে গ্রহকে প্রদক্ষিণ করে তাঁদের কি বলে?
Replyএই প্রশ্ন টা আমাকে ভাবিয়া তুলেছে কারণ নক্ষত্র কি কখনো গ্রহের চারপাশে ঘোরে না.. এ বিষয়ে আপনাদের কি মতামত দয়া করে জানাবেন...
"পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে" এই কথাটা বুঝি পুরোটা ঠিক নয়। এটা হবার কথা, পৃথিবী সৌরজগতের ভরকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
Replyঠিকই বলেছেন। এটা নিয়ে আমরা আগেও লিখেছি। আরেকটি বিস্তারিত লেখাও আসছে। সাথেই থাকুন। তবে সাধারণ অর্থে কথাটা দোষের নয়। যেভাবে আমরা সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত পরিভাষগুলো ব্যবহার করি।
Replyhttps://sky.bishwo.com/2016/12/jupiter-not-orbitting-sun.html