Advertisement

মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

রাতের আকাশের দ্বাদশ উজ্জ্বল তারা। আগস্ট মাস দেখার সেরা সময়৷ রাত নয়টার দিকে প্রায় মাথার উপর জ্বলজ্বল করে তারাটা৷ পাশেই আছে আরও দুটি উজ্জ্বল তারা অভিজিৎপুচ্ছ। তিনটি তারা মিলে একত্রে নাম সামার ট্রায়াঙ্গল৷ শ্রবণার অবস্থান ঈগলমণ্ডলে৷ রূপকথার কাল্পনিক ঈগলের বুকে এর অবস্থান৷


সমার ট্রায়াংগেল ও শ্রবণা তারা। 





পৃথিবী থেকে দূরত্ব ১৬.৮ আলোকবর্ষ৷ মানে পৃথিবীর অন্যতম নিকট প্রতিবেশী এক তারা। বর্তমানে প্রধান ক্রম দশায় আছে৷ সূর্যের মতো হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম বানাচ্ছে৷ আলটেয়ার বা শ্রবণার দুটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে।


সূর্য কীভাবে জ্বলে?

তারাটা প্রচণ্ড জোরে ঘোরে। নিজের অক্ষের ওপর ঘুরে আসতে এর মাত্র দশ ঘণ্টা লাগে৷ যেখানে সূর্যের লাগে প্রায় ২৭ দিন। আর পৃথিবীর ২৪ ঘণ্টা৷ মানে পৃথিবী একবার ঘুরতে ঘুরতে তারাটা ঘোরে দুইবারের বেশি৷ দ্রুত ঘূর্ণনের কারণে শ্রবণার মেরু অঞ্চল চেপে গেছে৷ বিষুব অঞ্চলে ফুলে উঠেছে৷ এ ধরনের আকৃতিকে বলে অবলেট স্ফেরয়েড (oblate spheroid)৷ এসব আকৃতিতে মেরু অঞ্চল চেপে থাকে। বিষুব এলাকার ব্যাসার্ধ মেরু এলাকার চেয়ে বেশি হয়। শ্রবণার ক্ষেত্রে তা বিশ ভাগেরও বেশি৷ অন্যদিকে মেরু অঞ্চলের ব্যাসার্ধ হলে নাম হয় প্রোলেট স্ফেরয়েড (prolate spheroid)।


আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তারাটার বিষমতা। বিষম তারার অভাব নেই আকাশে। এসব তারার উজ্জ্বলতা কিছুদিন পরপর কমে-বাড়ে৷ তবে শ্রবণা এখানেও একটু ব্যতিক্রম৷ অন্যদের উজ্জ্বলতার পরিবর্তন ঘটে মোটামুটি নিয়মিত৷ সেখানে শ্রবণার উজ্জ্বলতার পরিবর্তনের হার আছে নয় নয়টা৷ খালি চোখে অবশ্য সে তারতম্য বোঝা যাবে না৷ এ বিষমতার সাথে সম্ভবত এর ঘূর্ণনের সম্পর্ক আছে৷ শ্রবণা একটি ডেল্টা স্কুটি ধরনের বিষম তারা৷

শ্রবণার আভ্যন্তরীণ উজ্জ্বলতা বা দীপ্তি সূর্যের দশ গুণ। সূর্যের জায়গায় এ তারাটা থাকলে পৃথিবী বাসের অযোগ্য হত৷ ভর সূর্যের ১.৮ গুণ। চওড়াও প্রায় দ্বিগুণ৷ পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৬৬২৬ থেকে ৮৮২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ বয়স দশ কোটি বছর। যেখানে সূর্যের বয়স পাঁচশ কোটি বছর৷ টেলিস্কোপে এর তিনটি অনুজ্জ্বল সঙ্গী তারা দেখা যায়৷ অল্প কিছু তারারই করা ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। শ্রবণা তার অন্যতম। এদের মধ্যে আরও আছে জ্যেষ্ঠা, রেগুলাস, মাইরা ইত্যাদি৷

ঈগলমণ্ডল ও শ্রবণা তারা। মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা এটা।

আগস্টের রাতের আকাশ শ্রবণা দেখার সেরা সময়৷ আপাত উজ্জ্বলতা +০.৭৬। ফলে মেঘমুক্ত রাতের আকাশে খালি চোখে সহজেই দেখা যাবে৷ সামার ট্রায়াঙ্গলের তিন তারার মধ্যে শ্রবণা সবার পরে উদিত হয়। এই ত্রিভুজের উপর দিয়েই চলে গেছে মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গার দৃশ্যমান বাহুটা৷ দেখতে আসলেও নদীর মতো। নদীর দুই তীরে আছে অভিজিৎ ও শ্রবণা৷ পেটের মধ্যে আছে ত্রিভুজের অপর তারা পুচ্ছ৷ শ্রবণার দুই পাশে আছে দুটি অনুজ্জ্বল তারা৷ অভিজিতের বিষুবলম্ব +৩৮, আর শ্রবণার +৮। মানে অভিজিতের চেয়ে শ্রবণা আছে দক্ষিণে। বাংলাদেশ থেকে দেখতে দুটো তারাই সোজা উপর থেকে ১৫ ডিগ্রি করে দূর দিয়ে চলে। অভিজিত উত্তরে আর শ্রবণা দক্ষিণে৷ কারণ বাংলাদেশের সোজা উপরের আকাশের বিষুবলম্ব +২৩৷ মিলিয়ে নিন। কী দারুণ!


তারা চিনতে বিষুবলম্ব


নক্ষত্রটার বৈজ্ঞানিক নাম আলফা অ্যাকুইলি৷ আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতির দেওয়া নাম আলটেয়ার (Altair)৷ শব্দটা এসেছে আরবি নাম আল নিসর আল তাইর থেকে। অর্থ উড়ন্ত ঈগল।

Category: articles

মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৩

সত্যিই কি ভিনগ্রহে প্রাণ আছে? আর তারাই পাঠিয়েছিল ১৯৭৭ সালের বেতার সঙ্কেত? সেটা নিশ্চিত করে বলার কোনো জো নেই৷ তবু ব্যাপারটা যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক৷


ওয়াও সিগনালের তীব্রতার মান 6EQUJ5


১৯৭৭ সালের ১৫ আগস্ট। যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইহো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগ ইয়ার টেলিস্কোপে ধরা পড়ল বিস্ময়কর এক বেতার সঙ্কেত৷ সঙ্কেত প্রাপ্তির কয়েকদিন পোর জ্যোতির্বিদ জেরি এহম্যান সঙ্কেতটার ব্যতিক্রমী আচরণ খেয়াল করেন। লিপিবদ্ধ সঙ্কেতের পাশে লেখেন WOW! এ থেকেই নাম ওয়াও সিগনাল।

এটি 6EQUJ5 সঙ্কেত হিসেবে পরিচিত। অনেকে এটাকেই একটা বার্তা বা কথামাল মনে করেন। বাস্তবে এটা নিছক সময়ের সাথে সঙ্কেতের তীব্রতার পরিবর্তনের মান। তবুও ব্যতিক্রমী এ সঙ্কেতকে অনেকেই ভিনগ্রহের বার্তা ভাবতে পছন্দ করেন। রহস্যময় এ সঙ্কেত আসে স্যাজিটেরিয়াস বা ধনুমণ্ডল থেকে। যেদিকে আছে মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্র৷

ওয়াও সিগনালের উৎস স্যাজিটেরিয়াস বা ধনুমণ্ডল



২০১৭ সালে একদল গবেষক বলেন, রহস্যময় এ সঙ্কেত তৈরি হয়েছে সম্ভবত ধূমকেতুর কারণে৷ এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণার নেতৃত্ব দেন সেন্ট পিটার্সবাগ কলেজের অধ্যাপক অ্যান্টোনিও প্যারিস৷ তিনি ও তাঁর দল দেখেন, ১৯৭৭ সালের ঐ সময়টিতে আকাশের নির্দিষ্ট দিক দিয়ে অতিক্রম করছিল দুটি ধূমকেতু৷ খটমটে নামগুলো ২৬৬পি/ক্রিস্টেনসন ও পি/২০০৮ ওয়াইটু৷ গবেষকদের ধারণা ধূমকেতুদের কোনোটির হাইড্রোজেন মেঘ থেকে এসেছে বেতার তরঙ্গ৷ ওয়াও সিগনাল। পরে আর এমন সিগনাল না পাওয়ার ব্যাখ্যাও এ তত্ত্ব থেকে মেলে৷ ধূমকেতু ঐ অঞ্চল ছেড়ে অন্য দিকে চলে গেছে৷

গবেষক দল এখানেই থেমে থাকেননি৷ ধূমকেতু ২৬৬পি/ক্রিস্টেনসন এই জায়গায় আবার যাওয়ার সময় আবারও সঙ্কেত পাওয়ার আশায় বসে থাকেন তাঁরা৷ তাঁদের হিসাবে দেখা গেল, ধূমকেতুটা স্যাজিটেরিয়াসের কাছে আসার পরে আবারও ওয়াও সিগনালের মতো সঙ্কেত পাওয়া গেছে৷ তবে ১৯৭৭ সালের সিগনালটার তীব্রতা বেশি ছিল৷ প্যারিসদের ব্যাখ্যা আছে তার পেছনেও৷ তাদের ১০ মিটারের রেডিও টেলিস্কোপটা বিগ ইয়ারের (৫২.৫ মিটার) চেয়ে বেজায় ছোট। আবার নিকট সৌরজগতে এলে ধূমকেতু ভর হারায়। ফলে ৪০ বছর আগের (১৯৭৭-২০১৭) ধূমকেতুর ভরও বেশি ছিল৷ তবে প্যারিসরা নিশ্চিত করে দাবি করেননি যে ওয়াও সিগনালের জন্য ধূমকেতুই দায়ী৷

পরবর্তীতে জ্যোতির্বিদরা ধূমকেতুর দায়ী হবার বিষয়টি উড়িয়ে দেন। ধূমকেতুর পক্ষে এমন সঙ্কেত তৈরি আসলে সম্ভব নয়। আসলে এর গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যাখ্যা আজও মেলেনি। তারাদের মিটিমিটি জ্বলাকেও কেউ দায়ী করেছিলেন। তবে এরও পক্ষে প্রমাণ মেলেনি। একই ধরনের সঙ্কেত আবার পাওয়ার চেষ্টা এহম্যান করেছিলেন বহুদিন ধরে। কিন্তু বৃথাই চেষ্টা। ২০১২ সালে অ্যারেসিবো মানমন্দির থেকে ওয়াও সিগনালের একটি জবাব পাঠানো হয়। এতে ছিল দশ হাজারটি টুইটার মেসেজ। 

সূত্র 
Category: articles

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩

আকাশের উজ্জ্বল তারারা তৈরি করে দারুণ দারুণ নকশা৷ ৮৮টি তারামণ্ডলের একটি ধনুমণ্ডল। এটা রাশিচক্রের অন্যতম মণ্ডল। পরিচিত ধনুরাশি হিসেবে। মণ্ডলের উজ্জ্বল তারাগুলোকে দেখতে চায়ের পট বা টিপটের মতো লাগে৷ রাশিচক্রের এ মণ্ডলে সূর্য অবস্থান করে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি৷


ধনুমণ্ডলের টিপট তারানকশা


তারামণ্ডল বনাম তারানকশা


আগস্ট মাস একে দেখার সেরা সময়। এ সময় রাত নয়টার দিকে ধনুমণ্ডল দক্ষিণ আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকে। বিষুবলম্ব -২৫ ডিগ্রি। ফলে মূলত দক্ষিণ আকাশে হলেও উত্তর গোলার্ধের অধিকাংশ এলাকা থেকেও দেখা যাবে। সর্বোচ্চ ৫৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে দেখতে পাবেন একে৷

আমাদের হোম গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের কেন্দ্র এ মণ্ডলের পশ্চিম অংশের দিকে আছে৷ এ কারণেই আকাশের এ দিকটায় প্রচুর নক্ষত্রপুঞ্জ ও নীহারিকা আছে৷ টিপটের কয়েক ডিগ্রি উত্তর দিক দিয়ে চলে গেছে সূর্যপথ৷ যে কাল্পনিক পথে পৃথিবীর আকাশে সূর্য চলাচল করে৷ ধনুর ইংরেজি স্যাজিটেরিয়াস শব্দটা এসেছে ল্যাটিন থেকে। অর্থ তীরন্দাজ৷

সূর্য কখন কোথায় থাকে?

পুরো মণ্ডলকে বিভিন্ন কালচারে সেভাবেই চিত্রায়িত করা হয়েছে৷ ছবি। গ্রিক রূপকথায় স্যাজিটেরিয়াসকে অর্ধমানব, অর্ধঘোড়া হিসেবে কল্পনা করা হয়৷ কল্পিত এ জন্তুর অন্য নাম সেন্টোর। কল্পিত চিত্রে তীরন্দাজ তীর ধনু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ মণ্ডলের তীরটা চলে গেছে পাশের বৃশ্চিকমণ্ডলের বিছার বুক বরাবর৷ সেন্টোর থেকে নাম পেয়েছে আকাশের আরও একটি তারামণ্ডল। সেন্টোরাস নামের মণ্ডলটার অবস্থান আরও অনেকটা দক্ষিণে।

ধনুমণ্ডলের কল্পিত সেন্টোর। অর্ধ-মানব ও অর্ধ-ঘোড়া। 


সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা এপসাইলন স্যাজিটেরাই৷ ডাকনাম কোস অস্ট্রালিস। যার অর্থ ধনুর দক্ষিণাংশ৷ দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারার নাম নানকি৷ বেয়ার পদবী সিগমা স্যাজিটেরাই৷ এ মণ্ডলেই আছে দূর আকাশে বিখ্যাত অনেক বস্তু৷ লেগুন নেবুলা, ওমেগা নেবুলা, রেড স্পাইডার ও ট্রিফিড নেবুলা - বিখ্যাত এই নীহারিকাদের পাওয়া যাবে এখানেই৷

ধনুমণ্ডলের তারাচিত্র

মহাকাশযান নিউ হরাইজনস এর গতিপথ বর্তমানে এই মণ্ডলের সামনে৷ বিখ্যাত বেতার সঙ্কেত ওয়াও! সিগনাল এসেছে এ মণ্ডল থেকেই৷ রহস্যময় যে সঙ্কেতকে অনেকে ভিনগ্রহের বাসিন্দার বার্তা মনে করতে পছন্দ করেন৷
Category: articles

শুক্রবার, ১১ আগস্ট, ২০২৩

নেবুলা বা নীহারিকা হলো আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ, যাতে থাকে গ্যাস ও ধূলিকণা৷ গ্যাসের মধ্যে মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম৷ লেগুন নেবুলাটা আছে স্যাজিটেরিয়াস বা ধনুমণ্ডলে। বছরের এ সময়ে (আগস্ট) মণ্ডলটা খুব ভাল দেখা যায়৷ পাঁচ হাজার আলোকবর্ষ দূরের এ নীহারিকাটা খালি চোখে খুবই অস্পষ্ট। তবে সাধারণ দুরবিনেই ভেসে ওঠে এর সুন্দর চেহারা৷


লেগুন নেবুলা

আগস্ট মাসে নয়টার দিকে আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকবে। জুলাই। মাসে মধ্যরাতে৷ আর সেপ্টেম্বরে সন্ধ্যায়ই। নেবুলাটার বৈজ্ঞানিক নাম মেসিয়ার ৮ বা এনজিসি ৬৫২৩।

লেগুন নেবুলার দেখা মিলবে টিপত তারানকশার পাশে। ছবি: Earthsky


Category: articles

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩

রাতের আকাশের পঞ্চম উজ্জ্বল তারা। উত্তর গোলার্ধের আকাশে দ্বিতীয় উজ্জ্বল। স্বাতীর পরেই সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা৷ লাইরা বা বীণামণ্ডলে এর অবস্থান। স্বাভাবিকভাবেই মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাও এটিই৷ সূর্য থেকে দূরত্ব মাত্র ২৫ আলোকবর্ষ। 

রাতের আকাশে অভিজিৎ নক্ষত্র। আগস্ট মাসে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। রাত নয়টার দিকে বাংলাদেশ থেকে প্রায় মাথার ওপর। 

জ্যোতির্বিদরা অভিজিৎ নক্ষত্র নিয়ে ব্যাপক কাজ করেছেন৷ এ কারণে সূর্যের পর একে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারাও বলেন অনেকে৷ সূর্যের পরে বর্ণালীর ছবি তোলা তারাও অভিজিৎ৷ প্যারালাক্স বা লম্বন পদ্ধতিতে দূরত্ব মাপা অন্যতম প্রথম তারাও এটি৷ খৃষ্টপূর্ব ১২,০০০ সালে তারাটি ছিল মেরু বা ধ্রুবতারা৷ আবারও হবে ১৩,৭২৭ বছর পরে৷ কারণ আর কিছুই নয়। পৃথিবীর মেরুরু আবর্তন৷ ঘুরন্ত লাটিমের মতো পৃথিবীও ঘুরতে ঘুরতে অক্ষ পাল্টায়৷ 





অভিজিৎ নক্ষত্রের বয়স সূর্যের দশ ভাগের এক ভাগ৷ মজার ব্যাপার হলো এর জীবনকাল বাকিও আছে সূর্যের দশ ভাগের এক ভাগ৷ এর কারণ অভিজিৎ সূর্যের ২.১ গুণ ভারী৷ ভারী নক্ষত্রদের জ্বালানি দ্রুত ফুরিয়ে যায়। এ কারণেই সূর্যের চেয়ে আগে প্রধান ক্রম দশা পার করবে অভিজিৎ৷ সবমিলিয়ে প্রধান ক্রম দশা প্রায় একশ কোটি বছর৷  তারাটা সেকেন্ডে ২৩৬ কিলোমিটার বেগে নিজের অক্ষের সাপেক্ষে ঘোরে। ১২.৫ ঘণ্টায় একবার পুরোটা সম্পূর্ণ ঘোরা হয়ে যায়৷ এ কারণে  স্বাভাবিকভাবেই বিষুব অঞ্চল অনেকটা ফোলা। অভিজিৎ বিষম তারা। মানে উজ্জ্বলতা সবসময় এক থাকে না। 

সামার ট্রায়াঙ্গল তারানকশার অন্যতম তারা অভিজিৎ


বৈজ্ঞানিক নাম আলফা লাইরি৷ সাধারণত মণ্ডলের উজ্জ্বলতম তারার নাম হয় আলফা। সে হিসেবেই এই নাম৷ ইংরেজি নাম ভেগা (Vega)। শব্দটা এসেছে আরবি শব্দ ওয়াকি থেকে৷ যার অর্থ পড়ন্ত বা অবতরণকারী (ঈগল)৷ ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি তারাটার নাম ভেগা রাখে৷ বাংলা নামটি এসেছে ভগবত পুরাণ থেকে। কৃষ্ণ অর্জুনকে বলেছিলেন, নক্ষত্রদের মধ্যে তিনি হলেন অভিজিৎ৷ 


উত্তর গোলার্ধের আকাশে সহজেই দেখা যায়। দেখার সবচেয়ে ভাল সময় জুলাই-আগস্ট। আগস্টে রাত নয়টার দিকে প্রায় ঠিক মাথার ওপর থাকে তারাটা৷ সুপরিচিত তারানকশা সামার ট্রায়াঙ্গলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা অভিজিৎ৷ তিন তারা মিলে তৈরি করেছে একটি সমকোণ৷ আর সমকোণের শীর্ষেই আছে অভিজিৎ৷ পশ্চিম-উত্তর দিকে একটু গেলেই পাওয়া যাবে সপ্তর্ষি৷ একটু চেষ্টাতেই তাই অভিজিৎকে চিনে নেওয়া যাবে৷ আবার সপ্তর্ষি দিয়েও সহজেই একে খুঁজে পাওয়া যাবে৷ অভিজিতের বিষুব লম্ব +৩৮.৭৮। ফলে বাংলাদেশ থেকে দেখলে মাথার সোজা উপর থেকে প্রায় ১৫ ডিগ্রি উত্তর দিয়ে তারাটা রাতের আকাশে পশ্চিমে যেতে থাকে। দক্ষিণে সর্বোচ্চ ৫১ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা সম্ভব। তার দক্ষিণে গেলে আর দেখা যাবে না একে। অ্যান্টার্কটিকা বা এমনকি চিলি থেকেও তারাটা দেখা যাবে না। 



সপ্তর্ষি ও ধ্রুবতারা দিয়ে অভিজিৎ খুঁজে নিতে পারেন

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩

আইনস্টাইন ক্রস বুঝতে হলে মহাকর্ষ বক্রতা সম্পর্কে জানা চাই। ভারী বস্তু এর আশেপাশের স্থানকে বাঁকিয়ে দেয়। ফলে বস্তুটা আচরণ করে লেন্সের মতো। বস্তুর পেছন থাকা জিনিসের আলোও বাঁক খেয়ে পর্যবেক্ষকের চোখে আসতে পারে৷ 


হাবল স্পেস টেলিস্কোপের চোখে আইনস্টাইন ক্রস


মহাকর্ষ কীভাবে আলো বাঁকায়?


অনেকসময় তো একই বস্তুর ছবি ভারী বস্তুর চারদিক দিয়েই বেঁকে চারটি আলাদা বিম্ব (ছবি) তৈরি করতে পারে। এমন এক বিখ্যাত ছবির নামই আইনস্টান ক্রস। জিনিসটা আসলে একটি কোয়াসারের ছবি। পৃথিবী থেকে দেখতে হুকরা'স লেন্স ছায়াপথের পেছনে এর অবস্থান। ভারী ছায়াপথটা কোয়াসারটার আলোকে বাঁকিয়ে দেয়। ফলে চারপাশে এর চারটা ছবি পাওয়া যায়। কেন্দ্রেও ঝাপসা একটি ছবি আছে৷ দেখে মনে হবে, চারটা আলাদা বস্তুর ছবি। অথচ আসলে একটাই জিনিস৷ 

১৯৮৫ সালে জন হুকরা এটা আবিষ্কার করেন। অবশ্য সেসময় চারটি ছবির অস্তিত্ব বোঝা যায়নি। শুধু ছায়াপথের পেছনের কোয়াসার থাকার কথা জানা গিয়েছিল৷ কোয়াসারটার নাম খটমটে৷ কিউ২২৩৭+০৩০।আইনস্টাইন ক্রস বলতে সাধারণত এই বস্তুটাকেই বোঝানো হয়।  তবে একই রকমের আরও ছবিও পরে আবিষ্কৃত হয়েছে৷ অনেকসময় আবার ক্রসের বদলে তৈরি হয় বলয়। এর নাম আইনস্টাইন বলয়। 


কোয়াসারটা পৃথিবী থেকে ৮০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত৷ লেন্সিং ছায়াপথের দূরত্ব ৪০ কোটি আলোকবর্ষপেগাসাস তারামণ্ডলে এর অবস্থান৷ 

Category: articles

বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩

পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। আমরা এমনটাই বলি। বলি বৃহস্পতি, শনিদের ক্ষেত্রেও। তবে আসলে কথাটায় খানিক ঘাপলা আছে। কী সেই ঘাপলা? চলুন, জেনে নেই। 


কাছাকাছির ভরের দুই বস্তুর প্রদক্ষিণ। দুটি বস্তুই + চিহ্নিত জায়গাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।


পৃথিবী হলো গ্রহ। আর সূর্য নক্ষত্র। গ্রহ ঘোরে নক্ষত্রের চারপাশে। সেজন্যেই তো আমরা বলি পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে। আসলে দুজনেই প্রদক্ষিণ করে তাদের যৌথ ভরকেন্দ্রকে। জায়গাটার গালভরা নাম ব্যারিসেন্টার। মজার ব্যাপার হলো, ব্যারিকেন্দ্র সৌরজগতের বাইরের গ্রহ খোঁজার ব্যাপারেও দারুণ কাজে লাগে! 


তো, এই ব্যারিকেন্দ্র বা ভরকেন্দ্র আসলে কী? প্রত্যেক বস্তুর ভরের একটা কেন্দ্র আছে। এটা হলো বস্তুটার উপাদান পদার্থের একদম নিখুঁত কেন্দ্র। ভরকেন্দ্র বিন্দুতে বস্তুটাকে সঠিকভাবে ব্যালেন্স করে (ভারসাম্যে) রাখা যায়। অনেকসময় ভরকেন্দ্র থাকে বস্তুর ঠিক কেন্দ্রে। যেমন ধরুন একটা রুলার। এর মাঝ বরাবর এখানে-ওখানে কয়েকবার আঙ্গুল রেখে ধরে রাখার চেষ্টা করুন। পেয়ে যাবেন সে জায়গা, যেখানে আঙ্গুল রাখলে রুলার পড়ে যাবে না। এটাই রুলারের ভরকেন্দ্র। অপর নাম অভিকর্ষ কেন্দ্র। 


অনেকসময় ভরকেন্দ্র আর বস্তুর কেন্দ্র একই জায়গায় হয় না। কেন? ধরুন ২ ও ৪ দুটি সংখ্যা। এদের গড় ৩। যা ২ ও ৪ এর ঠিক মাঝে বা কেন্দ্রে আছে। কিন্তু ২, ৪, ৪ সংখ্যা তিনটির গড়? ৩.৩৩, যা ২ ও ৪ এর ঠিক মাঝে নয়। সংখ্যার অসম বিন্যাসে পাল্টে গেছে কেন্দ্র। ৪ এর সংখ্যা ২ এর চেয়ে বেশি হওয়ায় গড় ৪ এর দিকে সরে এসেছে। ভরের ক্ষেত্রেও এটাই ঘটে। ভর একেকদিকে একেক রকম হলে সরে যায় কেন্দ্র। যেমন ধরুন হাতুড়ি। এর প্রায় সবটুকু ভর এক প্রান্তে আছে। ফলে ভরকেন্দ্রও ভারী প্রান্তটির কাছাকাছি। বস্তুর সবচেয়ে বেশি ভর যেদিকটায় থাকে, ভরকেন্দ্রও তার কাছাকাছি থাকে। 


এক নজরে সূর্য


সূর্য ও পৃথিবীরও একটি ভরকেন্দ্র বা ব্যারিসেন্টার আছে। তবে সূর্যের ভর পৃথিবীর তুলনায় অনেক অনেক বেশি। সৌরজগতের ৯৯.৮৬ ভাগ। সূর্য তাই হাতুড়ির ভারী মাথার মতো বা তার চেয়ে প্রভাবশালী। এর ফলে সূর্য ও পৃথিবীর ব্যারিসেন্টার সূর্যের কেন্দ্রের খুব কাছাকাছি। তাও ভেতরেই। বৃহস্পতি পৃথিবীর চেয়ে অনেক বড়। ভর ৩১৮ গুন। ফলে সূর্য ও বৃহস্পতির ব্যারিকেন্দ্র সূর্যের ভেতরে নয়। কিছুটা বাইরে। ফলে শুধু এই দুটি বস্তুকে আলাদা করে দেখলে ব্যাপারটাকে বাইনারি স্টার বা জোড়াতারার মতো মনে হবে। মানে বৃহস্পতি সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে না। দুজনেই দুজনকে কেন্দ্র করে ঘুরছে! 


বৃহস্পতি সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে না!


পুরো সৌরজগতেরও একটি ব্যারিকেন্দ্র আছে। সূর্য, পৃথিবী ও সৌরজগতের গ্রহ ও অন্যসব বস্তু সেই ব্যারিকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। এই ব্যারিকেন্দ্র সৌরজগতের সবগুলো বস্তুর সমন্বিত ভর ধারণ করে আছে৷ তবে এই ভরকেন্দ্র হাতুড়ির মতো নয়। নয় স্থির কোনো জায়গায়। ক্রমশ পরিবর্তন হচ্ছে। কারণ সব বস্তু এখানে গতিশীল। ব্যারিকেন্দ্র হতে পারে সূর্যের কেন্দ্রের খুব কাছে। আবার হতে পারে সৌরপৃষ্ঠেরও বাইরে৷ 


ব্যারিকেন্দ্র কীভাবে গ্রহ খুঁজে পেতে কাজে আসে তা এখন বোঝা যাচ্ছে। নক্ষত্রের কোনো গ্রহ থাকলে এর ব্যারিকেন্দ্র দোল খেতে থাকে এদিক-সেদিক। মাতাল মানুষ যেমন এদিক-সেদিক ঢুলতে থাকে। সৌরজগতের বাইরের গ্রহদেরকে দেখে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। নক্ষত্রের আলোর ঝলকে এদের মৃদু প্রতিফলিত আলো হারিয়ে যায়। তবে নক্ষত্রের দোল খাওয়া দেখে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। আর এভাবে প্রচুর বহির্গ্রহ আবিষ্কার করাও হয়েছে। সংখ্যাটাও কম নয়, সব মিলিয়ে ১০৩৬। আবিষ্কৃত গ্রহের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় সফল কৌশল এটি। সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হলো নক্ষত্রের চারপাশে ঘোরা গ্রহের ট্রানজিট বা অতিক্রমন।

অতিক্রমন দেখে পাওয়া গেছে প্রায় চার হাজার গ্রহ। সে গল্প বিস্তারিত আরেকদিন শোনাব ইনশাআল্লাহ। 


সূত্র: নাসা স্পেসপ্লেস 


* লেখাটি ইতোপূর্বে কিশোরআলো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত। 


Category: articles

সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট ও লিঙ্কভূক্ত হবে। সাম্প্রতিক প্রকাশিত পরিভাষা দেখতে এখানে ক্লিক করুন। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরিভাষায় ক্লিক করে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধ থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।

পদার্থবিজ্ঞানের বিশেষ কিছু পরিভাষা এখানে পাবেন
(এই রংয়ের লেখাগুলোয় ক্লিক করে বিস্তারিত জানা যাবে।)

| | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | |

অক্ষীয় অয়নচলন
ঘূর্ণায়মান বস্তুর আবর্তন অক্ষের ধীর কিন্তু ধারাবাহিক পরিবর্তন। পৃথিবীর অক্ষ প্রায় ২৫,৭৭২ বছরে এক ঘূর্ণন চক্র শেষ করে। ব্যাপারটা লাটিমের ঘুরন্ত মাথার সাথে তুলনীয়। ইংরেজি Axial precession
অতিক্রমন
বুধ বা শুক্র গ্রহরা পৃথিবী থেকে দেখতে অনেকসময় সূর্যের সামনে চলে আসে। ফলে একটি বিন্দুর মতো জায়গা দিয়ে সূর্যের আলো চোখে আসতে বাধা পায়। এ ঘটনার নামই অতিক্রমন। একই ধরনের ঘটনা চাঁদের ক্ষেত্রে হলে বিন্দুর চেয়ে অনেক বেশি আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়। এরই নাম সূর্যগ্রহণ। সৌরজগতের বাইরের গ্রহদেরও নিজ নক্ষত্রের সাথে এমনটা ঘতে। এটা বহির্গ্রহ খুঁজে পাওয়ারও একটি উপায়। ইংরেজি Transit
আরও দেখুন - বহির্গ্রহ
অন্তঃসংযোগ
অন্তঃসংযোগপৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থিত কোনো গ্রহের সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান। অন্তঃসংযোগ শুধু দুইটি গ্রহ- বুধ এবং শুক্রের পক্ষেই সম্ভব। কারণ সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে এই শুধু দুটিরই কক্ষপথ পৃথিবী থেকে ভেতরের দিকে। ইংরেজি Inferior Conjunction
আরও দেখুন - বহিঃসংযোগ।
অন্তহীন তারা
খ-মেরুর কাছাকাছি জায়গার তারা। অন্য তারাদের মতো এরা কখনও অস্ত যায় না বা ডোবে না। সবসময় দিগন্তের উপরে থাকে। ইংরেজি Circumpolar Star
অনুবিন্দু
কক্ষপথের কোনো বস্তুর কেন্দ্রীয় বস্তু থেকে সর্বনিম্ন দূরত্ব। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। সে কারণেই অনুবিন্দু ও অপবিন্দু নামে দুটি চরম অবস্থান তৈরি হয়। চাঁদ ও পৃথিবীর ক্ষেত্রে এর বিশেষ নাম অনুভূ, পৃথিবী ও সূর্যের ক্ষেত্রে নাম অনুসূর। ইংরেজি Periapsis আরও দেখুন - অপবিন্দু
অনুভূ
পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করা কোনো বস্তুর (চাঁদ, কৃত্রিম উপগ্রহ) নিকটতম অবস্থান। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Perigee আরও দেখুন - অপভূ, অনুসূর
অনুসূর
গ্রহ, ধূমকেতু ইত্যাদি সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের নিকটতম অবস্থান। ইংরেজি Perihelion
আরও দেখুন - অপসূর।
অপবিন্দু
কক্ষপথের কোনো বস্তুর কেন্দ্রীয় বস্তু থেকে সর্বোচ্চ দূরত্ব। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Apoapsis
আরও দেখুন - অনুবিন্দু
অপভূ
পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করা কোনো বস্তুর (চাঁদ, কৃত্রিম উপগ্রহ) সবচেয়ে দূরের অবস্থান। কক্ষপথ সাধারণত উপবৃত্তাকার হয় বলে দূরত্ব কমে-বাড়ে। বৃত্তাকার কক্ষপথে দূরত্ব সবসময় একই থাকে। ইংরেজি Apogee আরও দেখুন - অপবিন্দু, অনুসূর
অপসূর
অনুসূরের বিপরীত। সূর্যের চারপাশের উপবৃত্তাকার কক্ষপথে কোনো বস্তুর সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরের অবস্থান। ইংরেজি Aphelion
অপেরণ
আলোর গতি সসীম। ফলে মহাজাগতিক কোনো বস্তু থেকে আলো গতিশীল পর্যবেক্ষকের চোখে পৌঁছতে পৌঁছতে পর্যবেক্ষকের গতির কারণে বস্তুটির অবস্থানের আপাত পরিবর্তন ঘটে। এ পরিবর্তনের কৌণিক পরিমাপই অপেরণ। ইংরেজি Aberration।
অভিজিৎ
রাতের আকাশের পঞ্চম উজ্জ্বল নক্ষত্র। উত্তর গোলার্ধে দ্বিতীয়। বীণামণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল। বিষুবলম্ব +৩৮o। বাংলাদেশ থেকে দেখতে সোজা উপর থেকে ১৫ ডিগ্রি উত্তর দিয়ে পূর্ব-পশ্চিমে চলে। ইংরেজি Vega
অয়ন
বছরের যে দুটি সময় খ-বিষুব থেকে সূর্য সবচেয়ে দূরে অবস্থান করে। ইংরেজি Solstice
আরও দেখুন - উত্তরায়ন, দক্ষিণায়ন
অরোরা
সৌরবায়ুর সাথে পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডলের প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট উজ্জ্বল আলো। উত্তর ও দেখুন মেরুতে মূলত দেখা যায় এ আলো। ইংরেজি Aurora
অন্য নাম - মেরুজ্যোতি, মেরুপ্রভা
আইনস্টাইন ক্রস
ভারী বস্তুর কারণে স্থান-কালের বক্রতার ফলে দূরের আলোর বাঁক খেয়ে একই বস্তুর সৃষ্ট চারটি ছবি। বিশেষ করে কিউ২২৩৭+০৩০ কোয়াসারের চিত্র। ইংরেজি Einstein Ring
আইনস্টাইন বলয়
ভারী বস্তুর মহাকর্ষ বক্রতার কারণে পেছনে থাকার বস্তুর বলয়সদৃশ্য চিত্র। ইংরেজি Einstein Ring

আকাশ
পৃথিবী থেকে উপরের দিকে বাধাহীন দৃশ্য। এর মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও বহিঃআকাশ আছে। আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রদের দেখে মনে হয় সবাই একটি গম্বুজ বসে আছে। অবস্থান চিহ্নিত করার সুবিদার্থে এ গম্বুজের নাম খ-গোলক। বিষুবলম্ব ও বিষবাংশ দিয়ে আকাশের বুকে যেকোনো বস্তুর অবস্থান বের করা যায়। গম্বুজাকার এ আকাশকে ৮৮টি তারামণ্ডলে ভাগ করা আছে। ইংরেজি Sky
আকাশগঙ্গা
দেখুন - মিল্কিওয়ে
আখেরনার
রাতের আকাশের নবম উজ্জ্বল তারা। ইরিডানাস তারামণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব (-৫৭) ডিগ্রি। দিগন্ত পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধের তারাটাকে দেখা যেতে পারে। ইংরেজি Achernar
অন্য নাম- নদীমুখ
আপাত উজ্জ্বলতা
পৃথিবী থেকে একটি কোন বস্তুকে (যেমন তারকা, গ্যালাক্সি বা গ্রহ) কতটা উজ্জ্বল দেখায় তার একটি পরিমাপ। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের কারণের বিভিন্ন বস্তুর উজ্জ্বলতার অসম তারতম্য হতে পারে বলে এটি পরিমাপের সময় বায়ুমণ্ডলকে অনুপস্থিত ধরে মান বের করা হয়। এর মান যত কম হয়, সংশ্লিষ্ট বস্তুটি হয় তত উজ্জ্বল। রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকের ক্ষেত্রে এই মান -১.৪৬ (মাইনাস ১ দশমিক ৪৬)। ইংরেজি Apparent Magnitude
আবর্তন
কোন বস্তুর নিজের অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণন। একটি গোলাকার বস্তুর পৃষ্ঠে একটি দাগ দিয়ে একে যতটুকু ঘোরালে দাগটি পুনরায় দেখা যাবে সেটা হলো একটি পূর্ণ আবর্তন। অন্য দিকে যে প্রক্রিয়ায় বস্তুকে ঘুরিয়ে একই অঞ্চল আবার দেখা যায় সেটাই আবর্তন। পৃথিবী একবার আবর্তন করলে এক দিন হয়। ইংরেজি Rotation
আরও দেখুন- প্রদক্ষিণ
আর্দ্রা
দেখুন - বিটলজুস
আলো
এক ধরনের তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ। যা খালি চোখে দেখা যায়। দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার। ইংরেজি Light
আলোক দূষণ
রাতের একশে কৃত্রিম আলোর আভা। আলোক দূষণের কারণে রাতের আকাশে দৃশ্যমান বস্তুর সংখ্যা কমে যায়। টেলিস্কোপে বিশেষ ফিল্টার ব্যবহার করে এর প্রভাব কিছুটা কমিয়ে আনা যায়। ইংরেজি Light Pollution
আলোকবর্ষ
‍আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। সংজ্ঞা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, এটা সময়ের নয়, বরং দূরত্বের একক। এটি ৯ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার বা ৬ ট্রিলিয়ন সমপরিমাণ দূরত্বের সমান। ইংরেজি Light-year
আলোক-সেকেন্ড
আলো এক সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। এর প্রকৃত মান ২,৯৯,৭৯,২৪,৫৮ মিটার। কাছাকাছি মান ৩ লক্ষ কিলোমিটার। ইংরেজি Light-second
আলটেয়ার
ঈগলমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। রাতের আকাশে ১২ নং উজ্জ্বল। সামার ট্রায়াঙ্গেলের তিন তারার একটি। বিষুবলম্ব +৯o। ইংরেজি Altair
অন্য নাম - শ্রবণা
আলফা সেন্টোরি
রাতের আকাশের তৃতীয় উজ্জ্বল নক্ষত্র। চোখে দেখা আলো তিন তারার মিলিত আলো। রাইজিল কেন্টোরাস, টোলিম্যান ও প্রক্সিমা সেন্টোরি। বিষুবলম্ব (-৬১o)। ফলে তাত্বিকভাবে সম্ভব হলেও বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেখাই যায় না। অনেক বেশি দক্ষিণে আছে। ইংরেজি Alpha Centauri
আহ্নিক গতি
পৃথিবীর আবর্তনের কারণে পৃথিবীর চারদিকে চন্দ্র, সূর্য, তারাসহ খ-বস্তুদের আপাত গতি। Diurnal Motion
অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ
পৃথিবী থেকে ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরের ছায়াপথ। মিল্কিওয়ের সবচেয়ে কাছের উল্লেখযোগ্য ছায়াপথ। ব্যাস এক লাখ ৫২ হাজার আলোকবর্ষ। ইংরেজি Andromeda Galaxy
অ্যানড্রোমিডা তারামণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডল বা এলাকার একটি। অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ এ মণ্ডলেই অবস্থিত। সবচেয়ে উজ্জ্বল তারার নাম আলফেরাজ। ইংরেজি Andromeda Constellation
অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (এইউ)
পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। সংক্ষেপে এইউ। ইংরেজি Astronomical Unit (AU)
অ্যালডেবারান
রাতের আকাশের ১৪ নং উজ্জ্বল তারা। বৃষয়মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল। বিষুবলম্ব +১৬o

ইউরেনাস
সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে সপ্তম গ্রহ। আয়তনের দিক দিয়ে এটি সৌরজগতের তৃতীয় বৃহত্তম গ্রহ। ১৭৮১ সালে উইলিয়াম হার্শেল ইউরেনাস আবিষ্কার করেন। ইংরেজি Urnaus

ঈগলমণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডলের অন্যতম। মিল্কিওয়ের দৃশ্যমান বাহুটা এ মণ্ডলের ওপর দিয়ে চলে গেছে। সামার ট্রায়াঙ্গেল তারানকশার অন্যতম তারা আলটেয়ার (শ্রবণা) এ মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। ইংরেজি Aquila

উৎকেন্দ্রিকতা
বৃত্তাকার আকৃতি থেকে কক্ষপথের বিচ্যুতি। ইংরেজি Eccentricity
উত্তরায়ন
উত্তর গোলার্ধে সূর্যের সবচেয়ে উত্তরের অবস্থান। এদিন উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন। প্রতি বছর ২০ বা ২১ জুন তারিখে এটা হয়। এরপর সূর্য আবার দক্ষিণে সরতে থাকে। ছয় মাস পর হয় দক্ষিণায়ন। যখন সূর্য সবচেয়ে দক্ষিণে চলে যায়। উত্তরায়নের আগে ও পরে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণে শীতকাল থাকে। ইংরেজি Northern Solstice বা June Solstice বা Summer Solstice
আরও দেখুন - দক্ষিণায়ন
উপগ্রহ
গ্রহদের চারদিকে প্রদক্ষিণরত বস্তু। বুধ ও শুক্র গ্রহ ছাড়া সৌরজগতের সব গ্রহেরই উপগ্রহ আছে। ইংরেজি Satellite বা Moon
উর্ট মেঘ
সূর্যের দুই হাজার থেকে দুই লক্ষ এইউ দূরের হিমেল বস্তু দিয়ে গড়া চাকতিসদৃশ একটি মেঘ। ইংরেজি Oort cloud
আরও দেখুন - কাইপার বেল্ট, গ্রহাণুবেষ্টনী
উল্কা
পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা কোনো বস্তু বায়ুর কণা ধাক্কা লেগে জ্বলে উঠা। অধিকাংশ সময় এরা বায়ুর ধাক্কায় ক্ষয় হয়ে যায়। অনেকসময় ভূপৃষ্ঠে চলে আসে। তখন একে বলে উল্কাপিণ্ড (Meteorite)। ইংরেজি Meteor
উল্কাপাত
বছরের বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক সংখ্যা উল্কা দেখা যায় পৃথিবীর আকাশে। জানুয়ারি, এপ্রিল, আগস্ট বিভিন্ন মাসে নিয়ম করে উল্কাপাত হয়। ইংরেজি Meteor Shower

এইউ
দেখুন - অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট
এরিস
একটি বামন গ্রহ। বামন গ্রহদের মধ্যে এর ভর সবচেয়ে বেশি। ইংরেজি Eris
আরও দেখুন - ভর

ওজন
পৃথিবী বা অন্য গ্রহ, নক্ষত্র যে বলে কোনো বস্তুকে আকর্ষণ করে। ইংরেজি Weight
ওয়ার্মহোল
মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী নল বা সুড়ঙ্গ। ওয়ার্মহোলের অপর প্রান্তে সমান্তরাল বা শিশু মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যার মাধ্যমে সময় ভ্রমণ সম্ভব হতে পারে। ইংরেজি Wormhole

কন্যামণ্ডল
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। মে মাসে রাত ৯টার দিকে একে সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা চিত্রা। প্রতি বছর আগস্টের ২৩ থেকে সেপ্টেম্বরের ২২ পর্যন্ত সূর্য এ অঞ্চলে থাকে। ইংরেজি Virgo
কক্ষপথ
কোন বস্তুর অন্য বস্তুকে প্রদক্ষিণ করার জন্য সাধারণত যে বৃত্তাকার, উপবৃত্তাকার বা এর কাছাকাছি ধরনের পথ অতিক্রম করে। ইংরেজি Orbit
ক্যানোপাস
দেখুন - সুহাইল নক্ষত্র
ক্যাপেলা
অরাইজা বা প্রজাপতিমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা। রাতের আকাশে ষষ্ঠ উজ্জ্বল। বাংলাদেশ থেকে ভালভাবে দেখা যায়। বিষুবলম্ব +৪৬ ডিগ্রি। ইংরেজি Capella
ক্যাস্টর
রাতের আকাশের ২৪ নং উজ্জ্বল তারা। মিথুনমণ্ডলের দ্বিতীয় উজ্জ্বল (পোলাক্সের পরেই)। উইন্টার হেক্সাগনের অংশ। ইংরেজি Castor
কর্কটক্রান্তি রেখা
পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের যে রেখা বরাবর সূর্য সরাসরি মাথার উপর আলো দেয়। বিষুবরেখা থেকে কৌণিক দূরত্ব ২৩.৪৪ ডিগ্রি। সূর্য উত্তরায়নের দিন এ রেখার উপর আসে। বাংলাদেশের খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু এলাকা কল্পিত এ রেখার ওপর পড়েছে। ইংরেজি Tropic of Cancer
কর্কটমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। জুলাই মাসের রাত ৯টায় একে সবচেয়ে ভাল দেখা যায়। মূলত উত্তর গোলার্ধে দেখা গেলেও দক্ষিণ গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। ২০ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত সূর্য মোটামুটি এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Cancer
কসমোলজি
সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়ে যে শাস্রে। এতে আলোচনা করা হয় মহাবিশ্বের জন্ম, মৃত্যু ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। ইংরেজি Cosmology
অন্য নাম - মহাবিশ্বতত্ত্ব
কাইপার বেল্ট
সূর্যের চারদিক বেষ্টনকারী একটি চাকতি। গ্রহাণুবেষ্টনীর মতো হলেও এর সাইজ অনেক বড়। নেপচুনের কক্ষপথ (দূরত্ব ৩০ এইউ) থেকে শুরু করে সূর্য থেকে ৫০ এইউ পর্যন্ত বিস্তৃত। ইংরেজি Kuiper Belt
কুবিন্দু
সুবিন্দুর উল্টো দিকের বিন্দু। পায়ের তলার দিক বরাবর আকাশের বিন্দু। ইংরেজি Nadir
আরও দেখুন - কুবিন্দু
কারমান রেখা
পৃথিবী ও মহাশূন্যের মাঝখানে কাল্পনিক রেখা, যেখানে পৃথিবীর মহাকর্ষীয় বল খুব দুর্বল। সমুদ্র স্তর থেকে ১০০ কিলোমিটার উপরে। ইংরেজি Kármán Line
কুম্ভমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সূর্য ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ সময়ে এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Aquarius
কোয়াসার
অতিউজ্জ্বল সক্রিয় ছায়াপথকেন্দ্র। এর কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী সুপারম্যাসিভ বা বড় আকারের ব্ল্যাকহোল। কোয়াসি-স্টেলার বা নক্ষত্রসদৃশ কথা থেকে কোয়াসার শব্দ এসেছে। ইংরেজি Quasar
কৌণিক দূরত্ব:
কৌণিক পথে অতিক্রান্ত বস্তুর দূরত্ব। জ্যামিতিক কোণ দিয়ে এর পরিমাপ হয়। পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিদ্যায় এর দারুণ ব্যবহার আছে। হাতকে লম্বা করে প্রসারিত করলে আকাশে (খ-গোলকে) তর্জনির পরিমাপ হয় এক ডিগ্রি। ইংরেজি Angular Distance
পড়ুন - খালি হাতে আকাশ পরিমাপ
কৃত্রিম উপগ্রহ
মানুষের প্রচেষ্টায় কোনো বস্তুর (পৃথিবী, অন্য গ্রহ ইত্যাদি) কক্ষপথে স্থাপিত বস্তু। ইংরেজি Artificial Satellite
আরও দেখুন - চাঁদ, উপগ্রহ
ক্রোমোস্ফিয়ার
সূর্য বা যেকোনো নক্ষত্রের বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তর। আলোকমণ্ডলের উপরে এর অবস্থান। ইংরেজি Chromosphere
অন্য নাম - বর্ণমণ্ডল

খ-গতিবিদ্যা
জ্যোতির্বিদ্যার শাখা, যেখানে আকাশের সব ধরনের বস্তুর গতি নিয়ে কাজ করা হয়। গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ বা কৃত্রিম উপগ্রহ সবাইকে নিয়েই এ কাজ হয়। ইংরেজি Celestial Mechanics
আরও দেখুন - জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা
খ-গোলক:
আকাশের সবগুলো বস্তু একটি গোলকের নিচের পৃষ্ঠে অবস্থিত আছে বলে কল্পনা করলে ঐ গোলকটিকে বলা হয় খ-গোলক। ইংরেজি Celestial Sphere
খ-বিষুব:
পৃথিবীর বিষুব রেখার বরাবর উপরে খ-গোলকে কল্পিত বিশাল বৃত্ত। পৃথিবী নিজের কক্ষতলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকায় খ-বিষুবও একই কোণে সূর্যপথের সাথে হেলে আছে। ইংরেজি Celestial Equator
খ-মেরু
পৃথিবীর দুই মেরু বরাবর উপরে খ-গোলক বিন্দু। ইংরেজি Celestial Pole
আরও দেখুন - অন্তহীন তারা

গোধূলি
সূর্যাস্তের পরে বা সূর্যোদয়ের আগের আলো-আঁধারি অবস্থা। সূর্য দিগন্তের ১৮ ডিগ্রি পর্যন্ত নিচে থাকার সময়টা গোধূলি। ইংরেজি Twilight
গ্রহ
সৌরজগতে সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণরত ৮টি বস্তু। এরা হল- বুধ, শুক্র,পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন। প্লুটো বর্তমানে গ্রহ নয়। সৌরজগতের বাইরের গ্রহকে বলে বহির্গ্রহ। ইংরেজি Planet
গ্রহাণু
সূর্যের চারপাশে ঘোরা ছোট ছোট বস্তু। ব্যাস এক হাজার কিলোমিটার বা আরও কম। এদের বেশিরভাগের অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতির কক্ষপথের মাঝের গ্রহাণু বেষ্টনীতে। অপর নাম মাইনর প্ল্যানেট বা প্ল্যানেটয়েড। ইংরেজি Asteroid
গ্রহাণুবেষ্টনী
মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে সূর্যের চারদিক বেষ্টনকারী ভরের সমাবেশ। বিভিন্ন আকারের গ্রহাণু ও ক্ষুদ্র গ্রহ দিয়ে জায়গাটা ভর্তি। সূর্যের সবচেয়ে কাছের তারাবেষ্টনী এটা। সূর্য থেকে মঙ্গলের দূরত্ব গড়ে ১.৫ এইউ। ইংরেজি Asteroid Belt
আরও দেখুন - তারাবেষ্টনী
গ্যালাক্সি
মহাকর্ষীয় বন্ধনে আবদ্ধ নক্ষত্র, নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষ, আন্তঃনাক্ষত্রিক গ্যাস ও ধূলিকণা এবং ডার্ক ম্যাটারের সমাবেশ। ইংরেজি Galaxy
অন্য নাম - ছায়াপথ

ঘটনা দিগন্ত
ব্ল্যাক হোলের সীমানা। ব্ল্যাক হোলের চারপাশের এ অঞ্চলের বাইরে আলো আসতে পারে না। এর ভেতরে ঘটা কোনো ঘটনা আমরা কখনোই দেখব না। ইংরেজি Event Horizon

চন্দ্রগ্রহণ
চাঁদ ও সূর্যের মাঝে পৃথিবী একই রেখায় থাকলে পৃথিবীয় ছায়ায় চাঁদ ঢাকা পড়ে। এটাই চন্দ্রগ্রহণ। সূর্যগ্রহণের মতোই এটা পূর্ণ, আংশিক বা বলয়ের মতো হতে পারে। ইংরেজি Lunar Eclipse
আরও দেখুন - সূর্যগ্রহণ
চাঁদ
পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ। ২৭.৩ দিনে পুরো একবার পৃথিবীকে ঘুরে আসে। অনেকসময় উপগ্রহ বোঝাতেও চাঁদ শব্দটা ব্যবহার করা হয়। যেভাবে নক্ষত্র বোঝাতে সূর্য ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি Moon

জোড়াতারা
এমন দুইটি দুইটি নক্ষত্র যারা একে অপরকে প্রদক্ষিণ করে। ইংরেজি Binary Star
আরও দেখুন- ডাবল স্টার
জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা
জ্যোতির্বিজ্ঞানের শাখা, যেখানে পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের নীতি ব্যবহার করে মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনার বৈশিষ্ট্য বের করা হয়। উজ্জ্বলতা, ঘনত্ব, তাপমাত্রা ও রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা হয়। ইংরেজি Astrophysics
আরও দেখুন - খ-গতিবিদ্যা
জ্যোতির্বিদ্যা
মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর বৈজ্ঞিনিক অনুসন্ধান। ইংরেজি Astronomy (Astrology নয়)
আরও দেখুন- জ্যোতিষবিদ্যা
জ্যোতির্মিতি
জ্যোতির্বিদ্যার শাখা, যেখানে নক্ষত্র ও অন্যান্য খ-বস্তুর আকার, অবস্থান ও চলাচল নিয়ে কাজ করা হয়। ইংরেজি Astrometry
জ্যোতিষবিদ্যা
আকাশের বস্তু দেখে ভাগ্যগণনা। এর সাথে বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই। ইংরেজি Astrology (Astronomy নয়)

টেলিস্কোপ
দূরের বস্তু দেখার আলোকীয় যন্ত্র। হালের জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ পৃথিবীর কক্ষপথের একটি অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ। ইংরেজি Telescope
ট্রিলিয়ন
এক লক্ষ কোটি বা এক হাজার বিলিয়ন। ১০১২। ইংরেজি Trillion

ডাবল স্টার
পৃথিবী থেকে দেখতে কাছাকাছি অবস্থানের দুটি তারা। তারা দুটি বাইনারি বা জোড়াতারা হতে পারে, আবার আকাশের একই দিকে থাকায় কাছাকাছি দেখাতে পারে। বাস্তবে হয়তো তারা একে অপর থেকে অনেক দূরে। যেভাবে রাতের আকাশে মাঝেমধ্যে চাঁদকে অন্য গ্রহ বা তারার পাশে দেখা যায়। অনেকসময় দ্বিতারার দুটি তারাকে খালি চোখে আলাদা দেখা যায় না। দেখা যায় টেলিস্কোপে। ইংরেজি Double Star
অন্য নাম - দ্বিতারা
ডার্ক এনার্জি
মহাবিশ্বের বড় কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করা অজানা শক্তি। ধারণা করা হয়, অদৃশ্য এ শক্তির প্রভাবেই মহাবিশ্ব ক্রমেই দ্রুত হারে প্রসারিত হচ্ছে।
আরও দেখুন - ডার্ক ম্যাটার
ডার্ক ম্যাটার
(Dark matter): গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও এদের মাঝে অবস্থিত সেসব বস্তু যাদেরকে এখনো সরাসরি দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। মহাবিশ্বের অন্তত ৯০ ভাগ ভরই ডার্ক ম্যাটার। ইংরেজি Dark Matter
আরও দেখুন - ডার্ক এনার্জি

তারকা
মূলত হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামে গড়া ভারী গোলকীয় বস্তু। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় অভ্যন্তরে আলো ও তাপ তৈরি হয়। সূর্য আমাদের সবচেয়ে কাছে তারকা। রাতের আকাশের উজ্জ্বল তারাদের গল্প পড়ুন এখানে। ইংরেজি Star
অন্য নাম - তারা, নক্ষত্র।
তারা
দেখুন - তারকা
তারানকশা
বিভিন্ন তারার সমন্বয়ে তৈরি আকাশের বিভিন্ন নকশা। এই যেমন সামার ট্রায়াঙ্গেল, পেগাসাস বর্গ ইত্যাদি। ইংরেজি Asterism
তারাবেষ্টনী
নক্ষত্রের চারদিকে বলয় বা ডোনাটের আকৃতির সংযোজন চাকতি। এখানে গ্যাস, ধূলিকণা, ক্ষুদ্র গ্রহ ইত্যাদি থাকে। ইংরেজি Circumstellar Disc আরও দেখুন - গ্রহাণুবেষ্টনী, কাইপার বেল্ট, উর্ট মেঘ
তারামণ্ডল
পৃথিবীর আকাশের ৮৮টি এলাকার একটি। এর মাধ্যমে মহাজাগতিক বস্তুর ঠিকানা নির্ধারিত হয়। নিকট বা দূর আকাশের সব বস্তুই ৮৮টি মণ্ডলের কোনো না কোনোটিতে অবস্থিত। ইংরেজি Constellation
তুলামণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সূর্যকে আকাশের এ এলাকায় দেখা যায় ৩১ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। ইংরেজি Libra

দক্ষিণায়ন
দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যের সবচেয়ে দক্ষিণের অবস্থান। ইংরেজি December Solstice বা Winter Solstice
আরও দেখুন অয়ন, উত্তরায়ন
দিন
পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহ নিজ অক্ষের সাপেক্ষে পূর্ণ আবর্তন করতে যে সময় লাগে। সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর পূর্ণ আবর্তন করতে প্রয়োজনীয় সময়ের নাম সৌর দিন। আর নক্ষত্রের সাপেক্ষে উক্ত সময়কে বলে নাক্ষত্রিক দিন। নাক্ষত্রিক দিনের দৈর্ঘ্য ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড। আর সৌর দিন ২৪ ঘণ্টা। ইংরেজি Day
দীপ্তি
কোনো নক্ষত্র, ছায়াপথ বা অন্য মহাজাগতিক বস্তুর একক সময়ে মোট নির্গত শক্তি। এর এসআই একক জুল পার সেকেন্ড বা ওয়াট। আপাত উজ্জ্বলতা এটা থেকে আলাদা। দীপ্তি বেশি হলেও পৃথিবী থেকে দূরত্ব বেশি হলে আপাত উজ্জ্বলতা কম হবে।
দুরবিন
দূরের বস্তু দেখার যন্ত্র। এতে দুটি নলে দুটি প্রতিসারক টেলিস্কোপ থাকে। ইংরেজি Binocular
দ্বিতারা
দেখুন - ডাবল স্টার

ধনুমণ্ডলী
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্র এ মণ্ডলে অবস্থিত। আকাশগঙ্গার দৃশ্যমান বাহুটাও এ মণ্ডলের ওপর দিকে গেছে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি প্রায় এক মাস সূর্য এ মণ্ডলে থাকে। ইংরেজি Sagittarius
ধূমকেতু
ধূলি, বরফ ও গ্যাস দিয়ে তৈরি সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ করা বস্তু। সূর্যের কাছে চলে এলে সৌর বিকিরণ ও সৌরায়ুর প্রভাবে এতে লম্বা লেজ দেখা যায়। ইংরেজি Comet
পড়ুন - হ্যালির ধূমকেতু এখন কোথায়?
ধ্রুবতারা
পৃথিবী বা অন্য কোনো আবর্তনশীল বস্তুর উত্তর বরাবর সোজা উপরের আকাশের তারা। পৃথিবীর উত্তর মেরু বরাবর বর্তমান তারাটির নাম পোলারিস। অতীতের বিভিন্ন সময়ে কোচাব, থুবান নক্ষত্রা ছিল ধ্রুবতারা। দক্ষিণ মেরুতওে অনুজ্জ্বল একটি তারা দেখা যায়। নাম সিগমা অক্ট্যান্টিস। ইংরেজি Pole Star
আরও দেখুন - পোলারিস

নক্ষত্র
দেখুন - তারকা
নক্ষত্রপুঞ্জ
এক গুচ্ছ তারার সমাবেশ, যারা নিজেদের সাধারণ ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। নক্ষত্রপুঞ্জ উন্মুক্ত বা বটিকাকার হতে পারে। উন্মুক্ত পুঞ্জের নক্ষত্র সহজেই বাইরের আকর্ষণে আলাদা হয়ে যেতে পারে। ইংরেজি Star Cluster
নদীমুখ
দেখুন - আখেরনার তারা।
নিউট্রন নক্ষত্র
ব্ল্যাকহোলের পরে মহাবিশ্বের সবচেয়ে ভারী ও ঘন বস্তু। সূর্যের ১০ থেকে ২৫ গুণ ভরের তারকারা জ্বালানি শেষ করে গুটিয়ে গিয়ে নিউট্রন নক্ষত্র হয়। এরা সম্পূর্ণভাবে নিউট্রন দিয়েই তৈরি। ইংরেজি Neutron Star
নিরক্ষরেখা
পৃথিবী বা অন্য গ্রহ নক্ষত্রের দুই মেরুর মাঝ দিয়ে কল্পিত রেখা। পৃথিবীর ক্ষেত্রে রেখাটি পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। ইংরেজি Equator
অন্য নাম বিষুবরেখা
নীহারিকা
হাইড্রোজেন ও মহাজাগতিক ধূলিকণায় তৈরি আন্তঃনাক্ষত্রিক মেঘ। এ জায়গার গ্যাস ও ধূলিই ধীরে ধীরে নক্ষত্র হয়ে ওঠে। অবশিষ্টাংশ থেকে গ্রহ ও সৌরজগৎ তৈরি হতে পারে। ইংরেজি Nebula
নেপচুন
সৌরজগতের অষ্টম ও আয়তনে ৪র্থ বৃহত্তম গ্রহ। ইংরেজি Neptune (উচ্চারণ নেপটুন)
নেবুলা
দেখুন নীহারিকা
নোভা
শ্বেত দানব নক্ষত্রের সঙ্গী তারা থেকে জ্বালানি নিয়ে হঠাৎ অল্প সময়ের জন্যে জ্বলে ওঠা। নোভা কয়েক সপ্তাহ বা মাস স্থায়ী হতে পারে। ইংরেজি Nova
ন্যানোমিটার
এক মিটারের একশ কোটি ভাগের এক ভাগ। $১০^{-৯}$। ইংরেজি Nanometer

পঙ্খীরাজমণ্ডল
আকাশের ৮৮টি তারামণ্ডলের একটি। দেখার সেরা সময় অক্টোবর মাসের রাত নয়টা। বিষুবলম্ব +২.৩ ডিগ্রি থেকে +৩৬.৬১। বাংলাদেশ থেকে এ সময় ও এর আগে-পরের মাসগুলোতে পেগাসাসের বর্গ খুব ভালো দেখা যায়। পাশেই আরেক বিখ্যাত মণ্ডল অ্যানড্রোমিডা। ইংরেজি Pegasus (পেগাসাস)।
পর্যবেক্ষণকেন্দ্র
দেখুন - মানমন্দির
পরম উজ্জ্বলতা
১০ পারসেক বা ৩২.৬ আলোকবর্ষ দূরে থাকলে আপাত উজ্জ্বলতা যেমন হত। দূরের বস্তুর নিছক দূরত্বের কারণে আপাত উজ্জ্বলতা কমে যায়। পৃথিবীর আকাশে অনুজ্জ্বল হয়ে পড়ে৷ এ কারণে তুলনার সুবিদার্থে পরম উজ্জ্বলতা ব্যবহার করা হয়৷ ইংরেজি Absolute Magnitude
আরও দেখুন - আপাত উজ্জ্বলতা
প্রদক্ষিণ
কোন বস্তু কতৃক অন্য কোন বস্তুর চারদিকে ঘুরে আসার ঘটনা। যেমন পৃথিবী সূর্যের চারদিকে একবার প্রদক্ষিণ করলে এক বছর হয়। ইংরেজি Revolution
পারসেক
মূলত সৌরজগতের বাইরের বড় দূরত্ব পরিমাপের জন্য যে জ্যোতির্বিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ একক। এক পারসেক সমান ৩.২৬ আলোকবর্ষ। ইংরেজি Parsec
পোলারিস
পৃথিবীর বর্তমান উত্তর ধ্রুবতারা। প্রায় সোজা উত্তর আকাশে এর অবস্থান। ভূমি থেকে অক্ষাংশের সমান উঁচুতে। রাতের আকাশে অন্য তারাদের মতো এর নড়চড় হয় না। কারণ পৃথিবীর অক্ষরেখা বরাবর খ-গোলেকে এর অবস্থান। উত্তর মেরুতে গেলে তারাটা থাকবে সোজা মাথার ওপর। ইংরেজি Polaris
আরও দেখুন - ধ্রুবতারা
প্যারালাক্স
দেখুন - লম্বন
প্রভাস
রাতের আকাশের ৮ম উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব +৫ ডিগ্রি। ইংরেজি Procyon
পৃথিবী
সৌরজগতে সূর্য থেকে দূরত্বের দিক থেকে তৃতীয় ও একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। ইংরেজি Earth
প্লুটো
একটি বামন গ্রহ, যা ২০০৬ সাল থেকে গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে। ইংরেজি Pluto

ফটোস্ফিয়ার
সূর্য বা অন্য নক্ষত্রের বহিঃস্থ স্তর। এখান থেকে আলো বিকিরিত হয়। এটাই নক্ষত্রের দৃশ্যমান পৃষ্ঠ। ইংরেজি Photosphere
অন্য নাম - আলোকমণ্ডল

বছর
গ্রহের নক্ষত্রকে ঘুরে আসতে যে সময় লাগে। পৃথিবী সূর্যকে একবার সম্পূর্ণ ঘুরে আসতে ৩৬৫.২৫ দিন সময় লাগে। ইংরেজি Year
বহিঃসংযোগ
সূর্য থেকে পৃথিবীর উল্টো দিকে অবস্থিত কোন গ্রহের সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান। ইংরেজি Superior Conjunction
আরও দেখুন- অন্তঃসংযোগ
বহির্গ্রহ
সৌরজগতের বাইরের গ্রহ। ইংরেজি Exoplanet
বায়ুমণ্ডল
গ্রহ, নক্ষত্র বা অন্য মহাজাগতিক বস্তুর চারপাশের গ্যাসীয় আবরণ। যা মহাকর্ষের প্রভাবে বস্তুটার সাথে লেগে থাকে। মহাকর্ষ ক্ষেত্রের মধ্যেই থাকায় বায়ুমণ্ডলও কেন্দ্রীয় বস্তুটির সাথে সাথে আবর্তন করে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে চলা বিমানও একই কাজ করে। পৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব বাড়তে থাকলে বায়ুমণ্ডল হালকা হতে থাকে। ইংরেজি Atmosphere
বিগ ব্যাং
অতি উষ্ণ ও ঘন অবস্থা থেকে মহাবিশ্বের প্রসারণের ঘটনা। মহাবিশ্বের জন্ম ও বিকাশ নিয়ে এটাই বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব। ইংরেজি Big Bang
বিটলজুস
রাতের আকাশের নবম উজ্জ্বল তারা। বিষম তারাটি যেকোনো সময় সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হতে পারে। অবস্থান কালপুরুষ মণ্ডলে। বিষুবলম্ব +৭ ডিগ্রি। ইংরেজি Betelgeuse
অন্য/বাংলা নাম - আর্দ্রা
বিলিয়ন
একশ কোটি। এক (১) এর পরে নয়টি শূন্য দিলে যে সংখ্যা হয়। ১০। ইংরেজি Billion
বিষম তারা
পৃথিবী থেকে দেখতে যেসব তারার উজ্জ্বলতায় পরিবর্তন হয়। উজ্জ্বলতার পরিবর্তন তারার অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডের জন্য হতে পারে। আবার গ্রহ বা অন্য কিছুতে আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়েও হতে পারে। ইংরেজি Variable Star
বিষুব রেখা:
দেখুন - নিরক্ষরেখা
বিষুবলম্ব
খ-বিষুব থেকে উত্তর বা দক্ষিণে তারার কৌণিক দূরত্ব। ভূপৃষ্ঠের অক্ষাংশের মতো দুই দিকে ৯০ ডিগ্রি করে। তবে খ-গোলকে উত্তর গোলার্ধের বস্তুদের জন্য + ও দক্ষিণের জন্য - (মাইনাস) ব্যবহার করা হয়। যেমন চিত্রা তারাটি (-১১) বিষুব লম্বে আছে। মানে খ-বিষুব থেকে ১১ ডিগ্রি দক্ষিণে। ইংরেজি Declination
আরও দেখুন খ-বিষুব
বুধ
সূর্যের সবচেয়ে কাছের গ্রহ। সৌজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ। ইংরেজি Mercury
বৃহস্পতি
সৌরজগতের সবচেয়ে বড় ও দূরত্বের দিক থেকে পঞ্চম গ্রহ। ইংরেজি Jupiter
বৃশ্চিকমণ্ডল
রাশিচক্রের অন্যতম তারামণ্ডল। জুলাই মাসের রাত ৯টায় উত্তর গোলার্ধের দক্ষিণ আকাশে ভালো দেখা যায়। সূর্য এ মণ্ডলে থাকে মাত্র ৬ দিন। নভেম্বরের ২৩ থেকে ২৮। ইংরেজি Scorpius
ব্ল্যাকহোল
অতি উচ্চ ঘনত্বের ভরের এমন সমাবেশ যেখান থেকে আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না। এর বহিঃস্থ সীমানাকে ঘটনা দিগন্ত বলে। ইংরেজি Black Hole
অন্য নাম কৃষ্ণগহ্বর।

ভর
একটি বস্তুতে উপস্থিত মোট পদার্থের পরিমাণ। ইংরেজি Mass
আরও দেখুন - ওজন

কালপুরুষ মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও রাতের আকাশের সপ্তম উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিষুবলম্ব (-৮) ডিগ্রি। ইংরেজি Rigel
রাশিচক্র
পৃথিবী সূর্যকে এক বছরে এক বার প্রদক্ষিণ করে আসার সময় পৃথিবী থেকে দেখতে সূর্যকে খ-গোলকের যে যে অঞ্চলে অবস্থিত মনে হয়। ৮৮টি তারামণ্ডলীর মধ্যে ১৩টি রাশিচক্রের অংশ। ইংরেজি Zodiac
পড়ুন - সূর্য কখন কোথায় থাকে?
রোহণ
খ-গোলকের কোনো বস্তুর দিগন্ত থেকে সবচেয়ে উঁচু বিন্দুতে অবস্থান। ইংরেজি Culmination

মকরক্রান্তি রেখা:
বিষুবরেখা থেকে ২৩.৪৪ ডিগ্রি দক্ষিণে কল্পিত পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত রেখা। দক্ষিণায়নের সময় সূর্য এই রেখা বরাবর সরাসরি আলো দেয়। এ রেখার ওপর পৌঁছে সূর্য আবার উত্তরে ফিরে আসতে শুরু করে। ইংরেজি Tropic of Capricorn
আরও দেখুন - কর্কটক্রান্তি রেখা
মকরমণ্ডলী
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। সেপ্টেম্বর মাসের রাত ৯টায় একে সবচেয়ে ভাল দেখা যায়। মূলত দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা গেলেও উত্তর গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি সূর্য মোটামুটি এ মণ্ডলে অবস্থান করে। ইংরেজি Capricornus
মঙ্গল
সৌরজগতের ৪র্থ এবং বুধের পরে ২য় ক্ষুদ্রতম গ্রহ। এর পৃষ্ঠে আয়রন অক্সাইডের উপস্থিতির কারণে একে লাল দেখায়। ব্যাস প্রায় পৃথিবীর অর্ধেক এবং আয়তন পৃথিবীর ১১ শতাংশ। ইংরেজি Mars
মহাজাগতিক ধ্রুবক
স্থান- কালের সহজাত ধর্মই হচ্ছে প্রসারিত হওয়া- এমন ব্যাখ্যা দেবার জন্যে আইনস্টাইনের উদ্ভাবিত গাণিতিক ধ্রুবক। পরে দেখা গিয়েছিল এই ধ্রুবক আনা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখন আবার এর প্রয়োজন আছে বলে মনে হচ্ছে। ইংরেজি Cosmological Constant
মহাজাগতিক বর্ষ:
সূর্য মিল্কিওয়ে ছায়াপথকে ঘুরে আসতে যে সময় নেয়। সময়টি ২২.৫ থেকে ২৫ কোটি বছরের সমপরিমাণ। ইংরেজি Cosmic year বা Galactic year
অন্য নাম ছায়াপথ বর্ষ
মানমন্দির
পর্যবেক্ষণকেন্দ্র, যেখান থেকে আকাশ, সমুদ্র বা পৃথিবীর বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়। জ্যোতির্বিদ্যা গবেষণায় মানমন্দির খুব গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইংরেজি Observatory
অন্য নাম - পর্যবেক্ষণকেন্দ্র, অবজারভেটরি
মাকিমাকি
একটি বামন গ্রহ। অবস্থান কাইপার বেল্ট অঞ্চলে। ইংরজেই Makemake
মিথুনমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। মূলত উত্তর গোলার্ধে দেখা গেলেও দক্ষিণ গোলার্ধেও ৬০ ডিগ্রি অক্ষাংশ পর্যন্ত দেখা যায়। দেখার আদর্শ সময় ফেব্রুয়ারি মাসের রাত ৯টায়। সূর্য এ মণ্ডলে থাকে ২১ জুন থেকে ২০ জুলাই। ইংরেজি Gemini
মিলিয়ন
১০ লাখ। ১০ মিলিয়নে এক কোটি। ১০। ইংরেজি Million
মিল্কিওয়ে
আমাদের, পৃথিবী, সূর্য ও সৌরজগৎ যে ছায়াপথে আছে। রাতের আকাশে এর একটি বাহু বৃত্তচাপের উত্তর-দক্ষিণ জুড়ে দেখা যায়। এটা দেখতে দুধ বা নদীর মতো বলেই মিল্কিওয়ে ও বাংলায় আকাশগঙ্গা নাম হয়েছে। ইংরেজি Milky Way
মীনমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি তারামণ্ডল। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ সূর্য এ মণ্ডলে থাকে। এ সময় ও আর আগে-পরে কিছুদিন বাদ সবসময় মণ্ডলটা দেখা যাবে। দেখার সেরা সময় নভেম্বর মাসের রাত ৯টা। ইংরেজি Pisces
মেষমণ্ডল
রাশিচক্রের একটি মণ্ডল। ডিসেম্বর মাসে ভাল দেখা যায়। ১৮ এপ্রিল থেকে ১৪ মে সূর্য এ মণ্ডল অতিক্রম করে। ইংরেজি Aries
মেরুজ্যোতি
দেখুন - অরোরা
মেরুপ্রভা
দেখুন - অরোরা
মুক্তিবেগ
কোনো বস্তু বা মহাকর্ষ ক্ষেত্র থেকে যে বেগে নিক্ষিপ্ত বস্তু আর ফিরে আসে না। পৃথিবীর মুক্তিবেগ সেকেন্ডে ১১.২ কিলোমিটার। সূর্যের ৬১৭.৫ কিলোমিটার। ইংরেজি Escape Velocity
ম্যাগনেটার
অতি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্রেবিশিষ্ট এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্র। ইংরেজি Magnetar

লম্বন
ভিন্ন অবস্থান থেকে দেখা বস্তুর অবস্থানের আপাত পরিবর্তন। দূরের আপাত স্থির নক্ষত্রের তুলনায় নিকতবর্তী তারা, গ্রহ বা অন্য বস্তুর অবস্থানের আপাত কৌণিক পরিবর্তনকে বলে নাক্ষত্রিক পারালাক্স। নক্ষত্রের দূরত্ব মাপতে অত্যন্ত কার্যকর এ পদ্ধতি। ইংরেজি Parallax
অন্য নাম প্যারালাক্স
লুব্ধক
রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। অবস্থান ক্যানিস ম্যাজর বা মৃগব্যাধ মণ্ডলে। বিষুবলম্ব (-১৭) ডিগ্রি। ইংরেজি Sirius
লোহিত দানব
কম বা মাঝারি ভরের নক্ষত্রদের জীবনের শেষ ভাগের দশা। সূর্যের ভরের ০.৩ থেকে ৮ গুণ ভরের তারারা একসময় এ দশায় যায়। সূর্যও জ্বালানি ফুরিয়ে একদিন রেড জায়ান্ট বা লোহিত দানব হবে। ইংরেজি Red Giant
লোহিত সরণ
ডপলার ক্রিয়ার কারণে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া নক্ষত্রের আলোকে লাল দেখা। দূরে সরার কারণে তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেড়ে যায় বলেই এমন হয়। ইংরেজি Red Shift

শনি
সূর্য থেকে ষষ্ঠ ও বৃহস্পতির পর সবচেয়ে বড় গ্রহ। ১১ মে ২০২৩ থেকে সৌরজগতে শনি গ্রহের উপগ্রহ সবচেয়ে বেশি (১৪৬)। ভর পৃথিবীর ৯০ গুন। ইংরেজি Saturn
শুক্
সূর্য থেকে দ্বিতীয় গ্রহ। সৌরজগতের গ্রহদের মধ্যে এর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। অন্যতম অদ্ভুত গ্রহও এটি। যেখান সূর্য ওঠে পশ্চিমে, ডোবে পূবে। ইংরেজি Venus
শুকতারা
পৃথিবীর রাতের আকাশে দৃশ্যমান শুক্র গ্রহ। কখনও সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে আবার কখনওবা ভোরের পূবাকাশে দেখা যায়। ইংরেজি Venus
শ্রবণা
দেখুন - আলটেয়ার

সক্রিয় ছায়াপথ কেন্দ্র
ছায়াপথের কেন্দ্রের একটি ঘন অঞ্চল। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি দীপ্তি এ জায়গায়। ফলে বোঝা যায়, জায়গাটার উজ্জ্বলতার জন্য নক্ষত্র দায়ী নয়। ইংরেজি Active Galactic Nucleus (এজিএন)।
সংযোগ
চাঁদ বা কোনো গ্রহের পৃথিবীর আকাশে অন্য গ্রহ বা তারার কাছে দৃশ্যমান হওয়া। ইংরেজি Conjunction
আরও দেখুন - বহিঃসংযোগ, অন্তঃসংযোগ
সংযোজন চাকতি
কোনো নক্ষত্র বা ব্ল্যাকহোলের চারপাশ ঘিরে প্রায় বৃত্তাকার ভরের সমাবেশ৷ বাইরের কোনো বস্তু থেকে সংগৃহীত এ বস্তুকে কেন্দ্রীয় বস্তুটি সর্পিল পথে নিজের দিকে টেনে নেয়। ইংরেজি Accretion Disk
সপ্তর্ষি
সপ্তর্ষিমণ্ডলের সাতটি তারা নিয়ে গঠিত তারানকশা
সপ্তর্ষিমণ্ডল
উত্তর আকাশের উল্লেখযোগ্য একটি তারামণ্ডল। এর নির্দেশক দুই তারা দিয়ে ধ্রুবতারা চেনা যায়।
সর্পধারীমণ্ডলী
আকাশের ৮৮টি একটি রাশিচক্রের ১৩টি তারামণ্ডলীর মধ্যে অন্যতম। সূর্য ৩০ নভেম্বর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে অবস্থান করে। ইংরেজি Ophiuchus
সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব
যে কোনো গতিতে চলা পর্যবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই হবে- এই ধারণার ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। এই থিওরি মহাকর্ষকে চতুর্মাত্রিক স্থান- কালের সাহায্যে প্রকাশ করে। ইংরেজি General Relativity বা General Theory of Relativity
অন্য নাম - সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব
সিংহমণ্ডল
কর্কট ও কন্যামণ্ডলের মাঝে অবস্থিত রাশিচক্রের তারামণ্ডল। সূর্য এখানে থাকে ১০ আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
সিঙ্গুলারিটি
স্থান- কালের এমন বিন্দু যেখানে স্থান- কালের বক্রতা (অথবা অন্য কোনো বস্তুগত রাশি) অসীম হয়। এখানে মহাকর্ষ এত বেশি যে পদার্থবিদ্যার সূত্রগুলো কাজ করে না। এর সঠিক আচরণ জানতে লাগবে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও সার্বিক আপেক্ষিকতার মিলিত তত্ত্ব - কোয়ান্টাম মহাকর্ষ। ধারণা করা হয়, ব্ল্যাকহোলের কেন্দ্রে সিঙ্গুলারিটি আছে। মহাবিশ্বের সূচনাও সিঙ্গুলারিটি থেকে। ইংরেজি Singularity
অন্য নাম - অনন্যতা
সেরেস
বামন গ্রহ। অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝখানের গ্রহাণুবেষ্টনীতে। ইংরেজি Ceres
সুপারনোভা
নক্ষত্রের বড় ও শক্তিশালী বিস্ফোরণ। সুপারনোভা দুইভাবে হতে পারে। ভারী নক্ষত্রদের জ্বালানী ফুরিয়ে গেলে প্রসারিত হয়ে। অথবা কোনো জোড়াতারা জগতের শ্বেত বামন তারা সঙ্গী তারা থেকে জ্বালানি ধার করেও নতুন করে ফিউশন শুরু করতে পারে। উৎপন্ন শক্তি নক্ষত্রটাকে উড়িয়ে দেয়। এটাও সুপারনোভা।
সুবিন্দু
সোজা মাথার উপরের আকাশের বিন্দু। ইংরেজি Zenith
আরও দেখুন - কুবিন্দু
সুহাইল
রাতের আকাশের দ্বিতীয় উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিষুবলম্ব (-৫২) ডিগ্রি। মার্চ মাসের দিকে দক্ষিণ দিগন্তে চোখে পড়বে উজ্জ্বল ও সুন্দর তারাটা। ইংরেজি Canopus
অন্য নাম - অগস্ত্য
সূর্য
সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থিত নক্ষত্র। প্রধান ক্রমের হলুদ বামন নক্ষত্রটার ভর সৌরজগতের ৯৯.৮৬ ভাগ। ইংরেজি Sun
সূর্যগ্রহণ
পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চাঁদ সরলরেখায় চলে আসলে চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে সূর্য। এটাই সূর্যগ্রহণ। সূর্যগ্রহণ পূর্ণ, আংশিক বা বলয়ের মতো হতে পারে। ইংরেজি Solar Eclipse
সূর্যপথ
বছরের প্রত্যেকটি আলাদা দিনে আকাশে সূর্যের আপাত অবস্থানবিন্দুগুলো যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায়। ইংরেজি Ecliptic আরও পড়ুন - রাশিচক্রের পরিচয়
সৌরকলঙ্ক
সূর্যপৃষ্ঠের ক্ষণস্থায়ী দাগ। এসব জায়গার তাপমাত্রা অন্য জায়গার চেয়ে কম। এ দাগ নিরাপদে দেখতে হলে সোলার ফিল্টার ব্যবহার করতে হয়। ইংরেজি Sunspot
সৌরজগৎ
সূর্য ও এর সাথে মহাকর্ষীয় বন্ধনে আবদ্ধ বস্তুসমূহ। ইংরেজি Solar System
স্বাতী
রাতের আকাশের চতুর্থ ও উত্তর গোলার্ধের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। ইংরেজি Arcturus

হাউমেয়া
বামন গ্রহ। কক্ষপথ নেপচুনের বাইরে। আবিষ্কৃত হয় ২০০৪ সালে। ইংরেজি Haumea
হেডার
রাতের আকাশের একাদশ উজ্জ্বল তারা। বিষুবলম্ব (-৬০) ডিগ্রি। ইংরেজি Hadar
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩

নোভা। ল্যাটিন এই কথাটার অর্থ নতুন তারা। শুনলে মনে হবে নতুন জন্ম নেওয়া নক্ষত্রের নাম নোভা। অথচ আসলে তা নয়। ভুল নাম থেকে যে জ্যোতির্বিজ্ঞানও মুক্ত নয়, তার আরেক উদাহরণ এই নোভা। ব্ল্যাকহোলের কথাই ধরুন। জিনিসটা না ব্ল্যাক না হোল। কালোও না। নেই কোনো গর্তও। তাও নাম ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর৷


নোভা নক্ষত্রের ছবি


এ তো গেল অর্থ। সংজ্ঞায়ও আছে গড়বড়৷ বলা হয় নোভা এমন নক্ষত্র যার উজ্জ্বলতা হঠাৎ বেড়ে গিয়ে আবার স্বাভাবিক হয়৷ তার মানে নোভা নক্ষত্র খুব অল্প সময়ের জন্য হঠাৎ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে৷ বাস্তবে নোভার গল্পটা আরেকটু জটিল৷ অনেকগুলো ব্যাপার ঠিকঠাক কাজ করলে তবেই পাওয়া যায় নোভা৷

আধুনিক যন্ত্রপাতি আসার আগে দূর আকাশে কথা জানা ছিল জ্যোতির্বিদদের৷ তখন থেকেই নতুন তারাকে তাঁরা নোভা বলেন৷ মানে নতুন বা নবতারা৷ নামটা খানিক ভুল। এই তারাগুলো মোটেও নতুন নয়। ছিল সেখানে আগে থেকেই৷ হ্যাঁ, দেখার মতো যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিল না এই যা।

নোভা পাওয়ার জন্য একটা তারা হলে হবে না। লাগবে দুটি তারা। হতে হবে সূর্যের মতো। সূর্যের মতো থাকবে প্রধান ক্রম দশায়। মানে হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম বানাবে৷ এ দুই তারা হবে বাইনারি বা জোড়াতারা। একে অপরকে কেন্দ্র করে ঘুরবে। বলা ভাল মিলিত ভরকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘুরবে।

কয়েকশো কোটি বছর পরের কথা৷ একটি নক্ষত্রের কোর বা কেন্দ্রীয় অঞ্চলের হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যাবে৷ বাইরের অংশ বড় হয়ে নক্ষত্রটা হবে লোহিত দানব৷ পরে ভেতরের অংশ মহাকর্ষের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে ছোট হয়ে হবে শ্বেত বামন। কিছু সময় পরে আরেকটা নক্ষত্রও লোহিত দানব হবে৷

এবার আমাদের দুটি তারার একটি লোহিত দানব। আরেকটি শ্বেত বামন৷ ঘুরছে একে অপরকে ঘিরে৷ শ্বেত বামন তারাটা দেখবে আয়তনে বড় পাশের তারাটার বাইরের দিকে এখনও হাইড্রোজেন আছে৷ এটি মহাকর্ষ দিয়ে ছোঁ মেরে লোহিত দানব থেকে জ্বালানি ও পদার্থ ছিনতাই করবে৷ বিশেষ করে হাইড্রোজেন৷ লোহিত দানবের হাইড্রোজেন এবার জমা হতে থাকবে শ্বেত বামনের চারপাশে৷ আমদানিকৃত পদার্থে ঢেকে যাবে বামন নক্ষত্রটা৷

পদার্থ জমা হতে হতে ও বেড়ে সঙ্কুচিত হয়ে তাপমাত্রা বাড়বে৷ তাপমাত্রা প্রায় ২০ হাজার কেলভিন হলে এখানেও শুরু হবে ফিউশন। প্রধান ক্রম অবস্থায় নক্ষত্রের কোরে যেমন হত। হাইড্রোজেনরা মিলিত হয়ে হিলিয়াম হবে৷ বাইরের দিকের এ পদার্থ জ্বলে জ্বলে নিজেকেই বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয়৷ এ সময়ই তৈরি হয় উজ্জ্বল আলো৷এরই নাম নোভা। এ ঘটনা ঘটতে মাত্র কয়েক মাস সময় লাগে৷


সঙ্গী তারা থেকে জ্বালানি নিচ্ছে নোভা তারা



আগে যে তারাকে দেখতে টেলিস্কোপ লাগত, এখন তাকে দেখা যায় খালি চোখেই৷ কিছু কিছু তারাটা কাজটা করে নিয়মিত৷ একশো বছরের মধ্যে কয়েকবার উজ্জ্বল ও মলিন হয়৷ অন্যদের আরও বেশি সময় লাগে। তবে আধুনিক যন্ত্র আসার পরে একবারের বেশি দেখা এখনও সম্ভব হয়নি৷ জ্যোতির্বিদদের অনুমান বলছে, আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথে বছরে প্রায় ৪০ নোভা হয়৷ দেখা যায় অন্য ছায়াপথেও৷

১৫৭২ সালে টাইকো ব্রাহে নোভা শব্দটা প্রথম ব্যবহার করেন৷ঐ বছর তিনি আসলে টেলিস্কোপে দেখেছিলেন একটা সুপারনোভা৷ এখন যার নাম এসএন ১৫৭২৷ এসএন মানে সুপারনোভা৷ এটা দেখা গিয়েছিল উত্তর আকাশের ক্যাসিওপিয়া মণ্ডলে৷ সূর্যের প্রায় দশ গুণ ভরের তারকারা জীবনের শেষ ভাগে সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হতে পারে। জ্বালানি ফুরিয়ে গিয়ে নক্ষত্র ঠাণ্ডা হয়। নক্ষত্রের বহির্মুখী চাপ কমে। এতদিন যে চাপ মহাকর্ষকে ধরে রেখেছিল। চাপ নেই বলে এবার মহাকর্ষ জয়ী হয়। নক্ষত্র যায় গুটিয়ে। পৃথিবীর চেয়ে লক্ষ লক্ষ গুণ বড় ভারী জিনিসের আকার হয়ে যায় পৃথিবীর চেয়ে ছোট। কাজটা হতে সময় লাগে মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মতো। এই দ্রুত ঘটনাই একটি শক ওয়েভ তৈরি করে। বিস্ফোরিত হয় নক্ষত্রের বাইরের অঞ্চল। এ ধরনের বিস্ফোরণের নাম টাইপ টু সুপারনোভা।

টাইকো ব্রাহে ১৫৭২ সালে এমন বিস্ফোরণ দেখে ভাবলেন এ মনে হয় এক নতুন তারা। নাম দিলেন নোভা স্টেলা। বাংলায় যার অর্থ নবতারা। নামটা জ্যোতির্বিদদের মনে ধরে। আকাশে উজ্জ্বল কিছু দেখা গেলেই অনেকে নাম দিচ্ছিলেন নোভা।

নোভা বিস্ফোরণের শ্বেত বামনে জড় হওয়া মাত্র পাঁচ ভাগ পদার্থ ফিউশনে খরচ হয়। কিছু নিক্ষিপ্ত হয় মহাশূন্যে। ফিউশনের উপজাত হিসেবে কিছু আবার জমা হয় পৃষ্ঠে। কয়েক লক্ষ বছরে শ্বেত বামন প্রচুর পদার্থ জমা করে ফেলে। শুরু হয় কার্বন ফিউশন। শ্বেত বামনটার ভর সূর্যের ১.৪৪ গুণ হলে নক্ষত্রটা ঢেকে যায় ফিউশনের চাদরে। জমা হয় প্রচুর শক্তি। সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটে যায় বিস্ফোরণ। একে তখন আর নোভা বলে না। বলে সুপারনোভা। বিশেষ নাম টাইপ ওয়ান-এ সুপারনোভা।

তাহলে নোভা হলো মৃত তারার সঙ্গী তারা থেকে চুরি করা পদার্থ নিয়ে ফিউশন ঘটানোর ফলে সৃষ্ট বিস্ফোরণ। আর প্রচুর ভর জমা হয়ে শেষের বড় বিস্ফোরণটার নাম টাইপ ওয়ান-এ সুপারনোভা।
Category: articles

মঙ্গলবার, ১৮ জুলাই, ২০২৩

১৬৩৯ সালের এক মেঘলা বিকেল। সে বিকেলে যুগান্তকারী এক কাজ করে ফেললেন ইংরেজ জ্যোতির্বিদ জেরেমায়া হরকস। কী সেই কাজ? আর এই মানুষটা-ই বা কে? নামটা অপরিচিত লাগছে। না চেনার একটা কারণ আমরা সোনার তরীর ফসল নিয়ে মেতে থাকি। ভুলে যাই সোনার ফসলের চাষীকে। 


 জেরেমায়া হরকস:  জ্যোতির্বিদ্যার অচেনা নায়ক 

সেদিন বিকেলে এই মানুষটি নির্ভুলভাবে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব বের করেন। এছাড়াও পূর্বাভাস প্রদান করেন শুক্রগ্রহের ট্রানজিট বা অতিক্রমন। আমরা জানি, চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চলে এলে পৃথিবী থেকে সূর্যকে দেখা যায় না। সূর্য ঢাকা পড়ে যায় চন্দ্রের পেছনে। এটাই সূর্যগ্রহণ। একইভাবে শুক্র গ্রহ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে এলে হয় শুক্রের অতিক্রমন। পৃথিবী থেকে চাঁদের তুলনায় শুক্র অনেক দূরে। ফলে আসলে বড় হলেও শুক্রকে আকাশে দেখা যায় ছোট। তাই শুক্র সূর্যকে চাঁদের মতো ঢেকে দিতে পারে না। তবে সূর্যের আলোকে বাধাগ্রস্থ একটু করেই। সেটাই সূর্যের গায়ে কালো দাগ হিসেবে দেখা যায়। এটাই শুক্রের অতিক্রমন বা ট্রানজিট। ব্যাপারটা ঘটে অন্য গ্রহের বেলায়ও।


চাঁদ কত দূরে আছে? 


শুক্র গ্রহের গল্প 


এমন একটি সূক্ষ্ম ব্যাপার সঠিকভাবে অনুমান করেন হরকস। শুধু তাই নয়, তিনিই প্রথম প্রমাণ করেন, পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয়। ঘুরছে সূর্যকে কেন্দ্র করে। আর এরই মাধ্যমে নির্মাণ হয় পরবর্তীতে নিউটনের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর। 


মহাবিশ্বের কেন্দ্র কোথায়?


হরকসের আগে মহাবিশ্বের পরিধি সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। শুক্র গ্রহের অতিক্রমন নিয়ে হরকসের প্রবন্ধ অল্পের জন্যে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়। গৃহযুদ্ধ ও লন্ডনের মহাঅগ্নি থেকে বেঁচে যায় শুধু ল্যাটিন ভাষায় লিখিত একটি পাণ্ডুলিপি। 


এ প্রবন্ধ ২০ বছর ধরে জ্যোতির্বিদদের হাত ঘুরছিল। পরে ১৬৬২ সালে এক পোলিশ জ্যোতির্বিদের বইয়ের পরিশিষ্টে প্রকাশিত হয়। কিন্তু নিউটনের হাতে আসার আগে কেউ এই প্রবন্ধের গুরুত্ব অনুভব করতে পারেনি। 


১৬৩৯ সালে হোরকসের বয়স ছিল মাত্র কুড়ি বছর। এ অল্প বয়সেই তিনি এক বড় গাণিতিক সাফল্য অর্জন করেন। জোহানেস কেপলারের মতো জ্যোতির্বিদের হিসাবের ভুল বের করেন। করেন সংশোধনও। কেপলার বলেছিলেন ১৬৩৯ সালে অল্পের জন্য অতিক্রমন হবে না। 


হরকসের সংশোধনী থেকে দেখা যায়, শুক্র গ্রহের পরবর্তী অতিক্রমন কয়েক দিনের মধ্যেই হতে যাচ্ছে। আর পরের অতিক্রমন ১৭৬১ সালের আগে হবে না। হরকস ছাড়া আর কেউ এটা বলতে পারেনি। তাঁর এক বন্ধু ছিল শখের জ্যোতির্বিদ ও কাপড়ের ব্যবসায়ী। হরকস ছুটে যান তার কাছে। ম্যানচেস্টারের এ ভদ্রলোকের নাম উইলিয়াম ক্র‍্যাবট্রি। 


শুক্রের অতিক্রমন দেখতে দুজনে দুই জায়গায় ছুটে যান। দুই আলাদা স্থান থেকে পর্যবেক্ষণ করেন সূর্যের গায়ে শুক্রের ছায়ার চিহ্ন। এর মাধ্যমে জ্যোতির্বিদ্যার এমন কিছু পরিমাপ সম্ভব হয়ে ওঠে, যা অন্যদের নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছিল। আগে সূর্যের দূরত্ব বের করতে হলে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে একটি বস্তুকে স্থির ধরে ত্রিভুজ বানানো লাগত। 


এ সময় হরকস একটি সরল হেলিওস্কোপ যন্ত্র বানান। এটা দিয়ে সূর্যের আলোকে টেলিস্কোপের ভেতর দিয়ে ফোকাস (মিলিত) করে সমতল পৃষ্ঠে দেখা যেত। এতে করে সূর্যের বিম্ব নিরাপদে দেখা যেত। পর্যবেক্ষণ থেকে হরকস শুক্রের আকারও ভালভাবে অনুমান করেন৷ আগে শুক্রকে পৃথিবীর চেয়ে বড় অ আরও কাছে ভাবা হত। তিনি পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব বের করেছিলেন ৯ কোটি ৫০ লক্ষ কিলোমিটার। সঠিক দূরত্ব ১৫ কোটি কিলোমিটার হলেও সে সময়ের তুলনায় সেটা ছিল অনেক ভাল হিসাব। 


প্রায় ১৪-১৫ বছর বয়সে তিনি ল্যাংকাশায়ার থেকে ক্যামব্রিজে আসতেন পায়ে হেঁটে। শুধুই নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য। বাবা ঘড়ির কাজ করতেন। আর হরকস ক্যামব্রিজে পড়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের কিছু কাজ করতেন। সহপাঠীদের কক্ষ পরিস্কার করাসহ বিভিন্ন কাজ করে দিতেন বেতনের টাকা যোগাড় করতে। ক্যামব্রিজের বিভিন্ন কলেজ থেকে বই ধার নিতেন। শেষ পর্যন্ত ডিগ্রি না নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন। সম্ভবত পড়ার মতো বই শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্যামব্রিজে থাকার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। 


পরিবারের লোকেরা ঘড়ির কাজ করত বলে জ্যোতির্বিদ্যার প্রাথমিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে পরিবারের অন্যদের সাহায্য পেয়েছিলেন তিনি। দিনে পরিবারকে ঘড়ির কাজে সাহায্য করতেন। রাতে বাবা ও চাচারা তাঁকে যন্ত্র বানাতে সহায়তা করতেন। তরুণা বয়সেই তিনি তার সময়ে প্রাপ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানের সব জ্ঞান অর্জন করেন। সেগুলোর ভুলও বের করেন। সতের বছর বয়স থেকেই নতুন গবেষণার জন্ম দিতে থাকেন। 


অল্প বয়সেই তিনি গভীর গাণিতিক জ্ঞান অর্জন করেন। সাধারণ টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণের সাথে কাজে লাগান গাণিতিক বিদ্যা। এরপর আসেন এমন উপসংহারে যা প্রচলিত বৈজ্ঞানিক ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রচলিত স্রোতের বিপরীতে গিয়ে মহাবিশ্বের কেন্দ্র থেকে পৃথিবীকে তুলে নেওয়া সহজ কাজ ছিল না। 


হরকসই প্রথম দেখাবন, চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরছে। তিনি এ থেকে অনুমান করেন, ধূমকেতুও একই পথে চলবে। চাঁদের কক্ষপথ তৈরিতে চাঁদ ও পৃথিবীর ভূমিকার কথা তিনি তুলে আনেন। নিউটন প্রিন্সিপিয়ায় বলেছিলেনও, তাঁর চাঁদের গতিপথ নির্ণয়ে হরকসের অবদান আছে৷ শেষ জীবনে হরকস জোয়ার-ভাটায় চাঁদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করার কাজ করছিলেন। 


হরকস খ্যাতি ও স্বীকৃতি না পাবার অন্যতম কারণ অল্প বয়সে মৃত্যু। এর ফলে তিনি নিজের গবেষণা প্রকাশ ও প্রচার করার সুযোগ পাননি। ফলে অন্য জ্যোতির্বিদরা তাঁর গবেষণার কথা জানতেই পারেনি। আর সে কারণেই তিনি কেপলার ও গ্যালিলিওর মতো সাধারণ মানুষের প্রশংসা পাননি। যদিও তিনি কোপার্নিকাস, টাইকো ব্রাহে, গ্যালিলিও ও কেপলারদের সাথে নিউটনের সেতুবন্ধন ঘটিয়েছিলেন। 


তবে জ্যোতির্বিদ্যায় হরকস এখন অচেনা এক নাম। জ্যোতির্বিদ্যায় তাঁর অবদানের কথাও জানেন অল্পসংখ্যক মানুষ। আগে এর জন্য আমি আমাদের নিজেদের দুষলেও এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল তাঁর স্বল্পায়ু। ভদ্রলোক বেঁচেছিলেন মাত্র ২২ বছর। জীবদ্দশায় তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণাকর্ম প্রকাশিত হয়নি। তাঁর অসামান্য গাণিতিক অবদান তাই পায়নি বহুল পরিচিতি ও স্বীকৃতি। ১৬৮৭ সালে নিউটন প্রিন্সিপিয়ায় হরকসের পর্যবেক্ষণের অবদানের কথা স্বীকার করেন। হরকসের পর্যবেক্ষণ ছাড়া নিউটনের পক্ষে মহাকর্ষের কাজ শেষ করা ছিল অসম্ভব। 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

লেখাটি ইতোপূর্বে বিজ্ঞানচিন্তার মে, ২০২৩ সংখ্যায় প্রকাশিত। 

Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...