Advertisement

রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩

আকাশের এলাকায় দুই ধরনের নকশা খুব দর্শনীয়। এক হলো তারামণ্ডল৷ যা পুরো আকাশকে ৮৮টি অঞ্চলে ভাগ করেছে। সব তারা, ছায়াপথ বা দূর আকাশে জিনিস কোনো না কোনো মণ্ডলে থাকবে।


দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড তারানকশা 



আরেকটি মজার জিনিস হলো তারানকশা। বিভিন্ন তারার সংমিশ্রণে তৈরি তারার সুন্দর নকশা। এমনই একটি নকশার নাম দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড। ডায়ামন্ড বা হীরার মতোই এর চারটি কোণা। বলাই বাহুল্য, চার কোণায় আছে চারটি উজ্জ্বল তারা৷

তারামণ্ডলের পরিচয়


তারানকশা কী?


এই নকশাটা মে-জুন মাস ও এর আগে পরে ভাল দেখা যায়। ডায়ামণ্ডের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা স্বাতী। রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল তারা। উত্তর গোলার্ধের এক নম্বর উজ্জ্বল। জুনের শুরুতে রাত নয়টার দিকে ঠিক মাথার উপর থাকে। আরেকটি তারা চিত্রা (spica)। উজ্জ্বলতায় ক্রম ১৫। কন্যারাশির সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা৷

অপর দুই তারার একটি ডেনেবোলা। সিংহরাশির দ্বিতীয় নম্বর উজ্জ্বল তারা। অবস্থান কল্পিত সিংহের লেজে। আর চতুর্থ তারার নাম কর ক্যারোলি। সারমেয়যুগল মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা।

খুঁজে পাওয়া একদম সোজা। স্বাতী ও চিত্রাকে পাওয়া যাবে সপ্তর্ষীকে কাজে লাগিয়ে। 



গ্রেট ডায়ামন্ড আকারে সপ্তর্ষির চেয়ে বড়। এর দক্ষিণের তিন তারা আবার আলাদা আরেকটি নকশা তৈরি করেছে। নাম বসন্ত ত্রিভুজ। মানে স্বাতী, চিত্রা ও ডেনেবোলা। ডেনেবোলার জায়গায় অনেকসময় সিংহমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা রেগুলাসকে বসানো হয়।
Category: articles

আমরা জানি, সূর্যের আলোই পৃথিবীর আকাশকে আলোকিত করে। সূর্যের আলো ৭টি আলোর সমন্বয়ে তৈরি। বেগুনি নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। এক কথায় বেনীআসহকলা। কিন্তু সব রঙ ছাড়িয়ে আমরা আকাশ দেখি নীল। কারণ হিসেবে বলা হয়, নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম। তাই বায়ুকণায় ধাক্কা লেগে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে।  আলোর এ বিক্ষেপণের কারণে সবদিকে নীল দেখি আমরা। 


সিলেট ক্যাডেট কলেজ থেকে আকাশের দৃশ্য 

এখন, কথা হলো দৃশ্যমান সাত আলোর বর্ণালীতে সবচেয়ে কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো বেগুনি। নীল নয়। আমাদের না দেখা অনেক আলো আছে। এই যেমন গামা, অবলোহিত ইত্যাদি। তবে বেগুনি আলো তো আমাদের চোখে দৃশ্যমান। আর এর বিক্ষেপণ বা বিচ্ছুরণ সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা। নীল আলোর চেয়েও বেশি। তাহলে তো আকাশের সবদিক বেগুনি আলোয় ভরপুর হয়ে ওঠার কথা। কিন্তু কেন বেগুনি না হয়ে নীল হলো?


চিত্র ১: দৃশ্যমান বর্ণালী

ব্যাপারটা কয়েকটি কারণে হয়। প্রথমত, সূর্য থেকে নীলের সাথে বেগুনি আলোও বের হয় তা ঠিক। তবে সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর নির্গমন একই হারে হয় না। সূর্য থেকে আসা আলোকশক্তির খুব সামান্য একটি অংশই বেগুনি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের। আরেকটি কারণ হলো, বায়ুমণ্ডল বেগুনি আলোকে শোষণ করে নেয়। এই কারণেই আমরা সূর্যের অদৃশ্য ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও রক্ষা পাই। আর বেগুনি আলো দেখিও কম। 


তবে এগুলোই একমাত্র কারণ নয়। রংধনুতে আমরা কিন্তু নীল বা আসমানীর পাশাপাশি বেগুনি রংও দেখি। 


আকাশকে বেগুনি না দেখানোর আছে জীববৈজ্ঞানিক কারণও। আমাদের চোখ বেগুনি আলোর প্রতি অপেক্ষাকৃত কম সংবেদনশীল। আমাদের চোখের রেটিনায় তিন ধরনের কালার রিসেপ্টর বা বর্ণগ্রাহক আছে। এগুলোকে বলে কোন। জ্যামিতির কোণ নয়। আকৃতি কোন বা শঙ্কুর মতো। কলার মোচার নিচেরটা দেখতে যেমন। 


তিন ধরনের কোন কোষের নাম লাল, নীল ও সবুজ। এ নাম দেওয়ার কারণ কোষগুলো এই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সাড়া দেয়। আমরা কী রং দেখব তা নির্ভর করে এই কোষগুলোর উদ্দীপনার ওপর। 



ছবি ২: তিন ধরনের আলোর প্রতিক্রিয়া

লাল কোন কোষ আকাশের লাল আলো দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়। পাশাপাশি একটু কম মাত্রায় উদ্দীপ্ত হয় কমলা ও হলুদ রং দ্বারাও। সবুজ কোন কোষ হলুদ আলোর প্রতিও সাড়া দেয়। আরেকটু বেশি মাত্রায় উদ্দীপ্ত হয় সবুজ ও নীল-সবুজ আলো দিয়ে। নীল কোন কোষ মূলত নীল ও এর আশেপাশের কিছু রংয়ের আলোর প্রতি সাড়া দেয়। এ আলোগুলো খুব বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। বর্ণালীতে গাঢ় নীল ও বেগুনি না থাকলে আকাশ নীলের সাথে হালকা সবুজ হত। 


গাঢ় নীল ও বেগুনি রং সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। এ দুই রং লাল কোন কোষের পাশাপাশি নীল কোনকেও উদ্দীপ্ত করে। এ কারণেই এদেরকে নীল ও সাথে মৃদু লাল আভা দেখা যায়। সার কথা হলো, সবুজ ও লাল কোন কোষ আকাশের আলোয় প্রায় সমান সাড়া দেয়। তবে নীল কোন সাড়া দেয় এদের চেয়ে অনেক বেশি তীব্রভাবে। এ কারণেই আকাশকে মলিন নীল দেখায়। বেগুনি দেখায় না। 


আর কোন কোষের এ বৈশিষ্ট্যের কারণেই ক্যামেরা কিন্তু আকাশকে আমাদের চেয়ে ভিন্ন দেখে। ডিজিটাল ক্যামেরায় আকাশকে কিছুটা রক্তবর্ণের বা গাঢ় নীল দেখা যায়৷ পাহাড় বা বিমান থেকে তোলা ছবিতে ব্যাপারটা আরও বেশি স্পষ্ট। ক্যামেরার চোখ বেগুনি আলোর প্রতি মানুষের চোখের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল। এ কারণে ক্যামেরায় ইউভি বা অতিবেগুনি ফিল্টার থাকে। 


** নীল ও আকাশী রং নিয়ে বাংলা ভাষায় কিছু বিভ্রান্তি  আছে৷ আমরা সাধারণত যাকে নীল বলি সেটা আসলে আসমানী। যেমন আকাশ আসলে নীল নয়, আসমানী। নীল রংয়ের প্রকৃত কিছু উদাহরণ হলো ব্লুবেরি, কালো আঙ্গুর বা বেগুন। ইংরেজি blue এর বাংলা আসমানী। আর নীলের ইংরেজি indigo। আকাশের রং হলো ব্লু বা আসমানী। ইন্ডিগো বা নীল নয়। তবে লেখায় বোঝার সুবিদার্থে আসমানীকে নীল লিখেছি। মানে আকাশকে আসমানী না বলে নীল ধরে নিয়েছি। আর নীলকে লিখেছি গাঢ় নীল। 


লেখাটি ইতোপূর্বে দৈনিক বাংলা পত্রিকার বিজ্ঞান পাতা ইউরেকায় প্রকাশিত। 

সূত্র

  1. http://www.atmo.arizona.edu/students/courselinks/fall14/atmo170a1s2/lecture_notes/scattering/why_not_violet.html
  2. https://math.ucr.edu/home/baez/physics/General/BlueSky/blue_sky.html
  3. https://www.quora.com/Why-isnt-the-sky-violet-since-violet-light-has-an-even-shorter-wavelength

Category: articles

শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩

উদয় বা অস্তের কাছাকাছি সময়ে চাঁদকে বড় দেখায়। তখন কি চাঁদ তাহলে পৃথিবীর কাছে চলে আসে? চাঁদ পৃথিবীকে ঘুরে আসতে প্রায় ২৯ দিন লাগে। পৃথিবীর চারপাশে চাঁদের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার। গোলাকার নয়। ফলে পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব বাড়ে-কমে। ২৯ দিনে চাঁদ মাত্র একবার করে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে আসে ও দূরে যায়। কিন্তু অথচ উদয়-অস্ত তো প্রায় প্রতি ২৪ ঘন্টায় একবার হয়। তার মানে দিগন্তের চাঁদ বড় হওয়ার জন্যে দূরত্ব দায়ী নয়।  




পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কত?


চাঁদ কত বড়?


একাধিক উপায়ে প্রমাণ করা যায়, দিগন্তের উপরের চাঁদ আর মাথার উপরের চাঁদ আসলে একই সমান। ব্যাপারটা খুব সহজেই প্রমাণ করা যায়। পূর্ণিমার সময় হাতকে লম্বা করে প্রসারিত করে তর্জনীকে চাঁদ বরাবর রাখুন। দেখবেন আঙ্গুলের মাথা চাঁদকে পুরোপুরি ঢেকে দিচ্ছে। কাজটা করুন দুইবার। একবার চাঁদ দিগন্তের কাছে থাকতে। আবার মাথার উপর৷ দেখবেন চাঁদের আকার একই আছে। দুইবারই আঙ্গুলের মাথা চাঁদকে ঢেকে দিচ্ছে। আবার ছবি তুলেও ব্যাপারটা বোঝা যায়। ক্যামেরার জুম একই রেখে দুই অবস্থানের চাঁদে ছবি তুললেই ব্যাপারটা দেখা যায়। তাহলে দিগন্তে বড় দেখানোর ব্যাখ্যা কী?


পূর্ণিমা কীভাবে হয়?


আসলে সঠিক ব্যাখ্যা আজো জানি না আমরা। যদিও প্রচলিত কিছু ব্যাখ্যা আছে। তবে কোনোটাই অকাট্য নয়।

আমাদের ব্রেন কি ব্যাপারটা বুঝতে ভুল করে? আরও অনেক ব্যাপারেই ব্রেন এমন ভুল করে। তা ঠিক আছে। আমাদের ব্রেন দূরের ও কাছের জিনিসকে আলাদাভাবে দেখে। দিগন্তের কাছের বস্তু আসলে কত দূরে থাকা উচিত সেটা ব্রেন নিজের মতো করে ভেবে নেয়। সম্ভবত, আমাদের ব্রেন জানে না, দিগন্তের কাছে থাকলে চাঁদের দূরত্ব কমে যায় না।


আমাদের ব্রেনের ভুল করার কিছু জীববৈজ্ঞানিক কারণও আছে। বহু লক্ষ বছর ধরে মানবমস্তিষ্ক ক্রমেই উন্নত হয়েছে। আমাদের পূর্বপুরুষরা দলবদ্ধ হয়ে থাকত ও শিকার করত। এ করতে গিয়ে মাথায় জমা হয়েছে কিছু সহজাত ধারণা। মাঝেমধ্যে আমাদের ব্রেইন খুব বেশি না ভেবেই দ্রুত কোনো সিদ্ধান্তে চলে আসে। এভাবে ব্রেন হঠাৎ আসা বিপদ থেকে আমাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। আমরা গল্প করতে ভালবাসি। ভালবাসী নাটকীয় কাহিনি। সে যুগে এগুলোই ছিল ফলপ্রসূ তথ্য ও খবরের একমাত্র মাধ্যম। চিনি ও ফ্যাট বা চর্বি আমাদের মজা লাগে। এগুলো ছিল খাদ্যস্বল্পতার সময়ে জীবনরক্ষকারী শক্তির উৎস। আমাদের এমন কিছু সহজাত বৈশিষ্ট্য আছে যা হাজার হাজার বছর আগে খুব দরকারী ছিল। কিন্তু এখন আমরা বাস করি ভিন্ন যুগে। ব্রেন কিন্তু আগের ধারণা ও বৈশিষ্ট্যগুলো স্মৃতিতে রেখে দিয়েছে। 


চাঁদ দিগন্তের কাছে থাকলে চাঁদের সামনে পাহাড়, বিল্ডিং বা গাছপালা দেখা যায়। এ থেকে ব্রেন হয়তোবা চাঁদকে আসল আকারের চেয়ে বড় বা কাছে মনে করে। এমন একটি বিভ্রম প্রায় একশ বছর আগে আবিষ্কৃত হয়। নাম পনজো ইল্যুশন। 


ইল্যুশনটি এরকম: রেল লাইন দূরে যেতে যেতে যেন দুই পাশ একে অপরের কাছে চলে এসেছে। (চিত্র ২) এখন রেল লাইনে আমাদের কাছে আর দূরে দুটি লাইন টানা হলো। দূরের লাইনকে বড় মনে হবে। যদিও দুটোই সমান। আলাদা মনে হবার কারণ, ব্রেন মনে করে দূরের দাগটা তো দূরে আছে। তাই বাস্তবে ওটা আসলে বড় হবে। 


চিত্র ২: পনজো ইল্যুশন 

তবে এগুলোর কোনোটাই অকাট্য ব্যাখ্যা নয়। নাসার নভোচারীরা মহাশূন্যেও দিগন্তের চাঁদকে বড় দেখেন। যেখানে চাঁদের সামনে পাহাড় বা গাছপালা নেই। তার মানে, দিগন্তের চাঁদ বড় দেখানোর সঠিক কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। 


দিগন্তের চাঁদ আসলে বড় না হলেও কিছুটা হলুদ বা কমলা আসলেই হয়। এর কারণ দিগন্তের কাছে থাকলে চাঁদের আলো বায়ুমন্ডল দিয়ে বেশি পথ পাড়ি দেয়। দীর্ঘ পথে আসার সময় ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের নীল আলো বিক্ষিপ্ত হয়ে হারিয়ে যায়। বড় দৈর্ঘ্যের লালাভ আলো থেকে যায়। বায়ুদূষণ বা বায়ুতে ধুলিকণার উপস্থিতি লাল রঙকে আরও ঘন করে। একই কারণে সূর্যও অস্ত বা উদয়ের সময় লাল হয়। 


সুপারমুনের গল্প


চাঁদ কীভাবে আলো দেয়?


সূত্র: নাসা, টাইম অ্যান্ড ডেইট ডট কম

লেখাটি ইতোপূর্বে দৈনিক বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত। 

Category: articles

মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০২৩

রাতের আকাশে কত শত-সহস্র তারকা দেখা যায়। হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরের তারা তো খালি চোখে প্রচুর দেখা যায়ই। এমনকি মিল্কিওয়ে থেকে ২৫ লাখ আলোকবর্ষ দূরের ত্রিকোণ ছায়াপথও দেখা যায় খালি চোখে। কিন্তু দেখা যায় না সূর্যের সবচেয়ে কাছের তারাটাকে।


আলফা সেন্টোরি এ ও বি নক্ষত্র। লাল বৃত্তের জায়গায় প্রক্সিমা সেন্টোরি। 

খালি চোখে কত তারা দেখা যায়?

হ্যাঁ, বলছি প্রক্সিমা সেন্টোরির কথা। তারাটার দূরত্ব পৃথিবী থেকে মাত্র ৪.২৫ আলোকবর্ষ। তাও খালি চোখে একে আপনি কখনোই দেখবেন না। কারণ আর কিছুই নয়, তারাটির অভ্যন্তরীণ উজ্জ্বলতা বা দীপ্তি (luminosity) অনেক কম৷ সূর্যের এক ভাগও না। মাত্র ০.১৬ ভাগ। পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় তিন হাজার কেলভিন৷ সূর্যের প্রায় অর্ধেক।

আবিষ্কৃত হয় ১৯১৫ সালে। এটি একটি লোহিত বামন তারা। সূর্যের মতো প্রধান ক্রমের তারাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ও কম উষ্ণ হলো লোহিত বামন। তবে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে এরাই সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি। কম দীপ্তির কারণে এদের কাউকেই পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা যায় না। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের ৬০ তারার মধ্যে ৫০টাই লোহিত বামন।

সূর্য কীভাবে জ্বলে?

তারাটির ভর সূর্যের মাত্র ১২.৫ ভাগ। ঘনত্ব ৩৩ ভাগ। চওড়া সূর্যের ১৪ ভাগ। তবে তারাটার চৌম্বক সক্রিয়তার কারণে মাঝেমধ্যে উজ্জ্বলতা বেড়ে যায়৷ চৌম্বক অঞ্চল তৈরি হয় পরিচলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে৷ ভর কমের কারণে এতে জ্বালানি পোড়ে খুব ধীরে। আবার পরিচলনের মাধ্যমে জ্বালানি পুরো নক্ষত্রে ছড়িয়ে যাওয়ায় এর আয়ু অনেক লম্বা। নক্ষত্রটা আরও ৪ ট্রিলিয়ন (৪ লক্ষ কোটি) বছর হাইড্রোজেন পুড়িয়ে যেতে থাকবে। যেখানে সূর্য এ কাজটা করবে আর মাত্র পাঁচশো কোটি বছর।

সূর্যের তুলনায় প্রক্সিমার সেন্টোরির আকার। 

জানা গ্রহ আছে দুটি। প্রক্সিমা সেন্টোরি বি ও ডি। সি নামে আরেকটা প্রস্তাবিত গ্রহ আছে। বি গ্রহটার অবস্থান নক্ষত্রের বাসযোগ্য অঞ্চলে। ভর পৃথিবীর ১.০৭ গুণ। ১১ দিনে নক্ষত্রকে ঘুরে আসে। ডি গ্রহটা কাজটা করে ৫ দিনেই।

১৯১ সালে স্কটিশ জ্যোতির্বিদ রবার ইনেস তারাটি আবিষ্কার করেন। তিনিই প্রক্সিমা সেন্টোরি নামটা প্রস্তাব করেন৷

পাশেই কত উজ্জ্বল এক তারা। আলফা সেন্টোরি। রাতের আকাশের তৃতীয় উজ্জ্বল। আলফা সেন্টোরি এ ও বি প্রক্সিমা সেন্টোরিসহ একটি ত্রিতারা জগতের অংশ। তিনজনই তাদের মিলিত ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে৷



তারাটা খালি চোখে দেখা গেলেও বাংলাদেশ থেকে দেখা কঠিন হত। কারণ বিষুব লম্ব (-৬২)। সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি উত্তর উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত একে দেখা সম্ভব।
Category: articles

সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩

বিটলজুস নিক্ষত্র এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। যেকোনো সময় এটি সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হতে পারে। ঠিক কখন সেটা আমরা জানি না। আমরা নক্ষত্রটা থেকে যথেষ্ট নিরাপদ দূরত্বে আছি৷ তাই বিস্ফোরণে ক্ষতি হবে না। দেখব শুধু সুপারনোভার অসাধারণ রূপ!


বিটলজুস



সম্প্রতি লোহিত অতিদানব নক্ষত্রটার উজ্জ্বলতা ৫০% গুণ বেড়েছে। ফলে আবারও শুরু হয়েছে জল্পনাকল্পনা৷

বিটলজুস একইসাথে একটি লোহিত অতিদানব ও অর্ধনিয়মিত বিষম ও স্পন্দনশীল তারা। মানে এর উজ্জ্বলতার পরিবর্তন কিছু নিয়ম মেনে চলে। উজ্জ্বলতার পরিবর্তনের আছে বেশ কিছু চক্র৷ মূল চক্রটি ৪০০ দিনের। তবে ১২৫ ও ২৩০ দিনের দুটি ছোট চক্রও আছে। আছে আবার ২২০০ দিনের একটি বড় চক্র৷ এসব কারণে বিটলজুসের উজ্জ্বলতার পরিবর্তন জ্যোতির্বিদদের কাছে এক মহাধাঁধা৷

কয়েক বছর আগে এর উজ্জ্বলতা কমে আসে। সবাই এর কারণ নিয়ে ভাবতে থাকল। পরে দেখা গেল, উজ্জ্বলতা আসলে কমেনি। নক্ষত্রটার পৃষ্ঠ থেকে নিক্ষিপ্ত পদার্থ ঠাণ্ডা হয়ে মেঘে পরিণত হয়৷ আর তাতে বাধাগ্রস্ত হয় আলো৷

এখন আবার উজ্জ্বল হচ্ছে বিটলজুস৷ এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটা সম্ভবত প্রত্যাশার চেয়ে আগেই সুপারনোভা হিসেবে বিস্ফোরিত হবে৷ মান্থলি নোটিসেস অব দ্য রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিকেল সোসাইটি জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে মিল্কিওয়ের পরবর্তী সুপারনোভা হবে বিটলজুসই৷

বিটলজুস বর্তমানে লোহিত অতিদানব তারা। পেছনে ফেলে এসেছে প্রধান ক্রম দশা। যে সময় এটি হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম বানাত৷ ৮০ থেকে ৮৫ লাখ বছর ধরে কাজটি করে এসেছে নক্ষত্রটা৷ ভর হারিয়ে তারারা ফিউশন বিক্রিয়ার বহির্মুখী চাপকে আর ধরে রাখতে পারে না। নক্ষত্রের বাইরের দিক ফুলে ফেঁপে ওঠে৷ ভর কমলেও আকার যায় বেড়ে৷

তবে ফিউশন তখনও চলে। শুরু হয় কার্বন পোড়া। তৈরি হয় আরও কিছু ভারী মৌল। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, বিটলজুস এ ধাপের শেষের দিকে আছে। কার্বন পোড়ার ধাপ আছে কয়েকটি৷ বিটলজুস স্পন্দিত হয়, পদার্থ ছুঁড়ে মারে, আবর্তন করে। আবার ছুটে চলে মহাশূন্য ধরে। কার্বন পোড়ারনোর কোন ধাপে নক্ষত্রটা আছে তা না জানা গেলে সঠিক করে বলা যাবে না কবে নক্ষত্র সুপারনোভা হবে৷ জ্যোতির্বিদরা দেখেন নক্ষত্রের বাইরে অংশ৷ ভেতরের খবর সঠিক করে বলা সম্ভব হয় না।

তবে সাম্প্রতিক এ গবেষণা বলছে বিস্ফোরণটা হতে পারে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে৷ ২০০ পারসেক দূরের এ বিস্ফোরিত পৃথিবীর আকাশে অন্যতম সুন্দর এক দৃশ্যের অবতারণাই করবে। ছুঁড়ে দেওয়া ক্ষতিকর এক্সরে বা গামা রশ্মি থেকে আমরা নিরাপদ।



বিটলজুস রাতের আকাশের নবম উজ্জ্বল তারা। আদমসুরত বা কালপুরুষ মণ্ডলে এর অবস্থান। শীতের আকাশে সহজেই উজ্জ্বল এ তারার দেখা পাবেন। মে মাসের দিকে পশ্চিম দিগন্তে হারিয়ে যাবে। আগস্টের শেষের দিকে আবার দেখা যায় ভোরের পূবাকাশে। নিচের লিঙ্কে বিটলজুস ও অন্যান্য উজ্জ্বল তারা কীভাবে খুঁজে পাবেন দেখানো আছে। 

আদমসুরত তারামণ্ডল। উপরে বামপাশের তারাটাই বিটলজুস। 

Category: articles

শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩

রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল তারা। উত্তর গোলার্ধের আকাশে অবশ্য সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা এটাই৷ লুব্ধক, সুহাইল ও আলফা সেন্টোরিরা সবাই দক্ষিণ গোলার্ধে। যদিও উত্তরের অনেকাংশ থেকে এদেরকেও দেখা যায়। বলছি স্বাতী নক্ষত্রের কথা৷ ইংরেজি নাম আর্কটিউরাস (arcturus)।



উত্তর গোলার্ধের আকাশে স্বাতীকে সহজেই দেখবেন। মেঘমুক্ত আকাশে সঠিক ঋতুতে তাকালেই দেখতে পাবেন। সেই সঠিক ঋতুর মধ্যে সেরা সময়টা জুন মাস। বিশেষ করে জুনের ১০ তারিখ বাংলাদেশ ও আশেপাশের অক্ষাংশের এলাকায় রাত নয়টায় তারাটা ঠিক মাথার উপর থাকে।

উজ্জ্বল তারাদের গল্প

স্বাতী চেনার উপায়
আকাশের অন্যতম সহজলব্ধ একটি তারানকশা সপ্তর্ষী। এর সাতটি তারায় গঠিত তারানকশা সপ্তর্ষী দেখতে চামচের মত। চামচের হাতলের দিকের তারাগুলোকে বৃত্তচাপের মত করে বাইরের দিকে প্রসারিত করে দিলেই পাওয়া যায় উজ্জ্বল নক্ষত্র স্বাতী। চাপকে আরেকটু প্রসারিত করলে পাওয়া যাবে আরেকটি উজ্জ্বল নক্ষত্র চিত্রা ডিসেম্বর-জানুয়ারির সময় স্বাতীকে দেখা যাবে না।

সপ্তর্ষীমণ্ডলীর তারানকশা সপ্তর্ষীর হাতল স্বাতীকে চিনিয়ে দেয়




সূর্য থেকে স্বাতীর দূরত্ব ৩৬.৭ আলোকবর্ষ৷ বয়স প্রায় ৭০১ কোটি বছর৷ সূর্যের চেয়ে ২০০ কোটির বেশি। বর্তমানে তারাটা লোহিত দানব দশায় আছে। মানে এর কোরের হাইড্রোজেন জ্বালানি শেষ। ভর সূর্যের প্রায় সমান। তবে আকার বেড়ে সূর্যের ২৫ গুণ হয়েছে। উজ্জ্বল সূর্যের ১৭০ গুণ। স্বাতী সূর্যের ২৫ গুণ চওড়া। শুনে হয়ত বোঝা যাবে না কত বড়। ছবিটা একবার দেখে নিন৷


সূর্য ও বিভিন্ন নক্ষত্রের তুলনামূলক আকার

বেশ কয়েকটি তারানকশার অংশ স্বাতী। চিত্রা ও ডেনেবোলার (বা রেগুলাস) সাথে মিলে তৈরি করেছে বসন্ত ত্রিভুজ। আবার কর ক্যারোলিসহ চারটি তারা মিলে চার কোণাকার দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড৷ স্বাতী ভূতেশমণ্ডলের তারা। এই পুরো মণ্ডলটা আবার দেখতে কোন আইসক্রিমের মতো। যার একদম নিচে আছে স্বাতী।

তারামণ্ডলী বনাম তারানকশা


বসন্ত ত্রিভুজ তারানকশা

দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড তারানকশা
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩

রাশি শব্দটা দেখে জ্যোতিষশাস্রের কথা ভাববেন না। রাশি মানে আসলে তারামণ্ডল। তুলারাশি মানে আসলে আকাশের তুলামণ্ডল। ইংরেজিতে লিব্রা (Libra)। পৃথিবীর আকাশে ৮৮টি তারামণ্ডল আছে। বছরের একেক মাসে একেকটাকে ভাল দেখা যায়। এর মধ্যে জুন মাসের অন্যতম তারামণ্ডল তুলারাশি।



তারামণ্ডলের পরিচয়


জুনের রাত নয়টার দিকে দেখা যায় এ মণ্ডলটাকে। খুব বেশি উজ্জ্বল নয়। তবে অন্ধকার মেঘমুক্ত আকাশে খালি চোখে সহজেই দেখা যায়। জুবেনেলজিনুবি ও জুবেনেশামেলি এ মণ্ডলের উজ্জ্বল দুই তারা। জুবেনেলজিনুবির বাংলা নাম বিশাখা। জুবেনেশামেলির নাম সৌম্যকীলক। খুঁজে পেতে কাজে আসবে পাশের তারামণ্ডল বৃশ্চিক।




বৃশ্চিকের হৃদয়ের তারাটির নাম অ্যান্টারেস। বাংলায় জ্যেষ্ঠা। মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাও এটাই। আর রাতের আকাশের ১৬তম উজ্জ্বল তারা। পরিষ্কার আকাশে অ্যান্টারেস ও কাঁকড়াবিছা আকৃতির পুরো বৃশ্চিক সহজেই দেখা যায়। এই মণ্ডলের উপর দিয়েই আবার চলে গেছে মিল্কিওয়ে ছায়াপথের সুন্দর দৃশ্যমান বাহুটা।

উজ্জ্বল তারাদের গল্প

অ্যান্টারেসের সামনেই আছে তুলামণ্ডল। অ্যান্টারেসের সামনে বৃশ্চিকেরই আরও তিনটি মোটামুটি উজ্জ্বল তারা আছে। অ্যান্টারেস থেকে এ তিনটির মাঝের তারাটির সাথে রেখা টেনে প্রায় তিনগুণ গেলেই পাওয়া যাবে তুলার দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারা জুবেনেলজিনুবি। এটাই এ মণ্ডলের আলফা তারা। তারাটির অবস্থান প্রায় বরাবর সূর্যপথের ওপর। এ কারণেই সম্ভবত একে আলফা তারা নাম দেওয়া হয়েছে।


তুলামণ্ডল খুঁজে পেতে কাজে আসবে বৃশ্চিক



মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটি হলো জুবেনেশামেলি। আনুষ্ঠানিক নাম বেটা লিব্রি। যাকে পাওয়া যাবে জুবেনেলজেনুবির বাঁয়ে। অ্যান্টারেসের প্রায় অর্ধেক দূরত্বে। জুবেনেলজিনুবির চেয়ে একটু বেশিই উজ্জ্বল।

বাংলায় মণ্ডলটাকে আমরা তুলা বা দাঁড়িপাল্লা বলি। ব্যাবিলনীয়রাও একে স্কেল বা পাল্লা বলত। গ্রিকরাসহ কেউ আবার কাঁকড়াবিছার দাঁড়াও বলত। এটি রাশিচক্রের ১৩ মণ্ডলের অন্যতম রাশি। মানে পৃথিবী থেকে সূর্যের আপাত অবস্থান আকাশে যে যে অঞ্চলে মনে হয়, তুলাও সেরকম একটি অঞ্চলে আছে।

রাশিচক্রের পরিচয়

প্রাচীন মিশরে লিব্রার তিন উজ্জ্বল তারাকে একত্রে নৌকা বলা হত। আলফা, বেটা ও সিগমা তারার এই নৌকার পেটের দিকটা আছে বৃশ্চিকের দিকে। টলেমির ৪৮টি তারানকশার মধ্যে তুলাও ছিল। প্রাচীন রোমে প্রথম একে তারামণ্ডল নাম দেওয়া হয়।

স্বাভাবিকভাবেই তুলার আশেপাশে রাশিচক্রের আরও মণ্ডল আছে। সামনে আছে ভার্গো বা কন্যারাশি। বৃশ্চিকের কথা আগেই বলেছি। যা আছে পেছনে। এছাড়াও আছে সর্পধারীমণ্ডলজুবেনেশামেলির পাশে। আরেকটি মণ্ডল হাইড্রা আছে সিগমা তারার পাশে। হাইড্রা রাশিচক্রের বাইরের মণ্ডল।

অক্টোবরের ৩১ থেকে নভেম্বরের ২২ পর্যন্ত সূর্য এ মণ্ডলে থাকে। ফলে এ সময় একে দেখা যাবে না। কারণ উদয়-অস্ত হবে সূর্যের সাথে।

সূত্র: আর্থস্কাই, ইংরেজি উইকিপিডিয়া 
Category: articles

ড্যানিয়েল কে ইনুয়েই সোলার টেলিস্কোপ। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সৌর টেলিস্কোপ। যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াই অঙ্গরাজ্যের হালিয়াকালা মানমন্দিরে রাখা। টেলিস্কোপটির কাজ এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। এরই মাঝে জ্যোতির্বিদরা এর তোলা তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো কিছু ছবি প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমে নিজের সক্ষমতা জানান দিয়েছে টেলিস্কোপটি৷




অনেকগুলো ছবিতে আছে সৌরকলঙ্ক। সূর্যের মধ্যে কালো কালো দাগ। এ দাগগুলো আর কিছুই নয়, সৌরপৃষ্ঠের অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা ও শক্তিশালী চৌম্বক অঞ্চল। এরা আছে সূর্যের পৃষ্ঠে। যার কেতাবি নাম ফটোস্ফিয়ার বা আলোকমণ্ডল৷ সৌরকলঙ্ক বিভিন্ন আকারের হয়। অন্তত পৃথিবীর সমান তো হয়ই। জটিল কলঙ্ক বা কলঙ্কগুচ্ছ সৌরশিখা ও সৌরঝড়ের উৎস৷

ছবিতে দেখা যায়, সূর্যের এ অঞ্চলে বিকিরণ কোষের উজ্জ্বল নকশা আছে। উষ্ণ ও উর্ধগামী প্লাজমাকে ঘিরে আছে অন্ধকার, ঠাণ্ডা ও নিম্নগামী প্লাজমা রেখা।






সূত্র: kottke.org
Category: articles

আজ জুন মাসের ১ তারিখ। ১৬৩৩ সালের এই দিনে জন্ম নেন ইতালীয় জ্যোতির্বিদ জেমিনিয়ানো মনতানারি৷


জেমিনিয়ানো মনতানারি

তিনি বিজ্ঞানের পরীক্ষামূলক পদ্ধতির অন্যতম প্রস্তাবক। তিনি সবচেয়ে পরিচিত অ্যালগল নক্ষত্রের পর্যবেক্ষণের জন্য। তিনি দেখেন নক্ষত্রটির উজ্জ্বলতা পরিবর্তন ঘটছে। পারসিয়াস বা পরশু মণ্ডলের দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারা অ্যালগল৷ অন্যরাও ব্যাপারটা খেয়াল করে থাকতে পারেন। তবে মনতানারিই সর্বপ্রথম এ তথ্য লিপিবদ্ধ করেন। নক্ষত্রটি নামের অর্থ পিশাচ, যা থেকে বোঝা যায় এর উজ্জ্বলতার অস্বাভাবিক হ্রাস-বৃদ্ধি আগে থেকেই মানুষ জানত।


উজ্জ্বল তারাদের গল্প

মনতানারির জন্ম ইতালির মাদিনা শহরে। দশ বছর বয়সে বাবাকে হারান। বিশ বছর বয়সে মধ্য-ইতালির শহর ফ্লোরেন্সে যান আইন পড়তে। এ শহরে ছিলেন বছর তিনেক। যার মন পড়ে আছে জ্যোতির্বিদ্যায়, আইন কি তাকে ফিরিয়ে রাখতে পারে! শুরু করেন শনি গ্রহের পর্যবেক্ষণ। শনির বিভিন্ন দশা পর্যবেক্ষণে অংশ নেন।

১৬৫৬ সালে ফ্লোরেন্স ছেড়ে অস্ট্রিয়ার সালজবুর্গ আসেন। আইন ডিগ্রিটা এখানে এসেই সম্পন্ন করেন। তবে সবচেয়ে সুবিধাটা হয় পাওলো দেল বুয়োনোর সাথে দেখা হয়ে। এই লোক ছিলেন গ্যালিলিওর সর্বশেষ প্রত্যক্ষ শিষ্য। তাঁর অধীনে নতুন করে শুরু করেন গণিতের পাঠ।

১৬৬১ সালে ফিরে আসেন মাদিনায়। হন দরবারি দার্শনিক ও গণিতবিদ। ইতোমধ্যে পরিচয় হয় কর্নেলিয়ো মালভাসিয়ার সাথে। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানের বড় ও প্রভাবশালী পৃষ্ঠপোষক। মাদিনার কাছেই নিজের গাঁয়ের বাড়িতে ভদ্রলোক বানিয়েছিলেন মানমন্দির। দুজনে একসঙ্গে কিছু কাজ করেছিলেন।

১৬৬৪ সালে যোগ দেন বোলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। এ শহরে থাকতেই চাঁদের একটি প্রায় নিঁখুত মানচিত্র আঁকেন। এতে ব্যবহার করেন নিজের বানানো আইপিস মাইক্রোমিটার। পদার্থবিদ্যায় সান্দ্রতা নিয়েও কিছু কাজ করেন৷

আকাশ দেখতেন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। ১৬৭৬ সালের ২১ মার্চ একটি উল্কা মধ্য-ইতালির আকাশ অতিক্রম করে। পর্যবেক্ষণ করেন ১৬৮২ সালের ধূমকেতুও। যা এডমন্ড হ্যালিও দেখেন। নিউটনের প্রিন্সিপিয়ার তৃতীয় খণ্ডে তাঁর ১৬৮০ সালের ধূমকেতুর পর্যবেক্ষণের কথা দুইবার উল্লেখ আছে।

তারা দেখে ভবিষ্যৎ বলার বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে সংগ্রাম করেন। তিনি প্রমাণ করেন, তারা দেখে ভবিষ্যদ্বাণী আর মনগড়া ভবিষ্যদ্বাণী মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা সমান। চাঁদের বুকের একটি গর্ত তাঁর নাম ধারণ করে আছে। ১৬৮৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সূত্র: ব্রিটানিকা ডট কম
Category: articles

বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩

জ্যোতির্বিদ্যায় মিটার-কিলোমিটার দিয়ে কাজ চলে না। দরকার হয় অনেক বড় বড় একক। এই যেমন এক এইউ হলো পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। ১৫ কোটি কিলোমিটার। আরও বড় দূরত্বে ব্যবহার করা হয় আলোকবর্ষ। যা আলোর এক বছরে অতিক্রান্ত দূরত্ব।



জ্যোতির্বিদ্যায় দূরত্বের এককেরা

এক আলোকবর্ষ কত বড়?

আরেকটু বড় একটি একক হলো পারসেক। এর মান আলোকবর্ষের প্রায় তিনগুণ। সঠিক করে বললে ৩.২৬ গুণ। মানে, এক পারসেক = ৩.২৬ আলোকবর্ষ৷

পারসেক কথাটা এসেছে প্যারালাক্স অব ওয়ান সেকেন্ড বা এক সেকেন্ডের প্যারালাক্স থেকে। তাহলে প্যারালাক্স কী জিনিস বুঝে নেই চলুন।

হাতটা লম্বা করে চোখের সামনে এনে একটি আঙুল খাড়া করুন। এক চোখ বন্ধ করে অন্য চোখে আঙ্গুলটি দেখুন। এবার খোলা চোখ বন্ধ করে অন্য চোখে দেখুন। দেখবেন আঙ্গুলের অবস্থান দুই চোখ দুই জায়গায় দেখছে। দুই অবস্থানের এ কৌণিক পরিবর্তনের নামই প্যারালাক্স।

প্যারালাক্সের পরিবর্তন


চোখ থেকে বস্তু যত দূরে হবে, এ কোণ তত ছোট হবে। যতটা দূরে গেলে কোণের পরিমাণ এক আর্কসেকেন্ড হবে তারই নাম এক পারসেক। এখন এক আর্কসেকেন্ড জিনিসটা বুঝলেই কেল্লাফতে!

এক ডিগ্রি কতটুকু তা আমরা সহজেই বুঝি। চোখ মেললেই সর্বত্র ৯০ ডিগ্রি বা সমকোণ দেখা যায়। চৌরাস্তায় আছে চারটা সমকোণ। বিল্ডিংয়ের দেয়াল ও ছাদের মিলনস্থলে আছে সমকোণ। আর এর ৯০ ভাগের এক ভাগই এক ডিগ্রি। এক ডিগ্রির ৬০ ভাগের এক ভাগকে বলে আর্কমিনিট। তাকে আবার ৬০ ভাগ করলেই হয় আর্কসেকেন্ড।




মানে এক আর্কসেকেন্ড হলো আর্কমিনিটের ৬০ ভাগের এক ভাগ। আর আর্কমিনিট হলো ডিগ্রির ৬০ ভাগের এক ভাগ। তাহলে এক আর্কসেকেন্ড হল এক ডিগ্রির ৩৬০০ ভাগের এক ভাগ।

রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল তারা স্বাতী। এটি পৃথিবী থেকে ১১.২৬ পারসেক দূরে আছে। দূরত্বটা পাওয়া গেছে এর প্যারালাক্স মেপেই। তারাটির প্যারালাক্স হলো ৮৮.৮৩ মিলিআর্কসেকেন্ড।

Category: articles

সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩

 আজ ২৯ মে। ১৯১৯ সালের এই দিনে প্রমাণিত হয় মহাকর্ষ বক্রতা। যা আইনস্টাইন ১৯১৫ সালে বলে গিয়েছিলেন।





১৯১১ সালেই আইনস্টাইন বলেছিলেন মহাকর্ষ বক্রতার কথা। তবে সে সময় তত্ত্বে খানিক ভুল ছিল। ১৯১৫ সালে সংশোধন করেন। কাজে লাগান জার্মান বিজ্ঞানী সোয়ার্জশল্ডের সমীকরণ।

লেন্স যেভাবে এর ভেতর দিয়ে যাওয়া আলোকে বাঁকিয়ে দেয়, তেমনি ভারী কোনো বস্তু এর কাছ দিয়ে যাওয়া আলোকে বাঁকিয়ে দেয়। এরই নাম মহাকর্ষ বক্রতা। নিচের চিত্রে দেখুন: ভারী বস্তুটির কারণে দূরের আলোক উৎস থেকে আসা আলো বেঁকে যাবে। পৌঁছবে পর্যবেক্ষকের চোখে। ভারী বস্তুটি না থাকলে আলো চোখে আসতে সোজা পথে। বেঁকে যাওয়ায় ঘটবে মজার ঘটনা। পর্যবেক্ষক আলোর মূল উৎসটি বুঝতে পারবেন না। তাছাড়া আলো ভরের কারণে দুই দিয়েই বেঁকে চোখে পৌঁছবে। পর্যবেক্ষক ভাববেন, তিনি দুটো আলাদা বস্তু দেখছেন!


মহাকর্ষ বক্রতা ও এর ফলাফল

ব্যাপারটা বাস্তব পরীক্ষার সাহায্যে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন জ্যোতির্বিদ উইলিয়াম ক্যাম্পবেল। নানা কারণে ব্যর্থ হন। ১৯১৮ সালের একটি প্রচেষ্টাও মেঘের কারণে ব্যর্থ হয়। ১৯১৯ সালে আবার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। ব্যাপারটা পর্যবেক্ষণ করার জন্য তাঁরা বেছে নেন ২৯ মে তারিখের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণকে। সূর্যের পেছন থাকা তারার আলো সূর্যের আলোর আভায় হারিয়ে যায়। ফলে বক্রতা হয় কি না তা দেখা যায় না। তবে গ্রহণের সময় আভা না থাকায় বক্রতা হয়ে থাকলে তার প্রভাব ভেসে ওঠার কথা চোখে।
 
এ সূর্যগ্রহণটির সময় সূর্যের পেছনে ছিল হায়াডিজ নক্ষত্রপুঞ্জ। সূর্যের উজ্জ্বলতার কারণে দিনের বেলায় এদেরকে দেখা যায় না। কিন্তু পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেয়। ফলে তখন ভালভাবে দেখা যায়। রাতে তো আর সূর্য না। কয়েক মাসে আগের আকাশে এরা সূর্যের পেছনে ছিল না। রাতের আকাশেই দৃশ্যমান ছিল।

এখানে বলে রাখি, রাতের আকাশে প্রতিদিন তারারা একটু একটু করে পশ্চিমে সরে। এটা একই রাতের কথা বলছি না। এক রাতে যে তারাকে আমরা যেখানেই দেখি, পরের রাতে চার মিনিট আগেই সেখানে দেখি। পশ্চিমে সরতে সরতে এভাবে এক বছর পরে একই সময়ে একই জায়গায় দেখব আবার।

☛ সূর্যগ্রহণ কীভাবে হয়? (লেখা আসছে...)

তো হায়াডিজ পুঞ্জের তারাদের দুইরকম অবস্থান পাওয়া গেলে। একটি হলো সাধারণ রাতের আকাশে। যখন সামনে সূর্য ছিল না। ছিল না সম্ভাব্য মহাকর্ষ বক্রতা। অন্তত সূর্যের কারণে নয়। আবার নির্বিঘ্নে দেখাও গেল। আরেকটি পরিমাপ পাওয়া গেল সূর্যগ্রহণের সময়। দুই পরিমাপ মিলে গেলে মহাকর্ষ বক্রতা বলতে কিছু থাকবে না। পরিবর্তন পাওয়া গেলেই প্রমাণ হবে এ ব্যাপারটা।

দুটি দল গ্রহণের ছবি তুলতে ছুটে যান দুই আলাদা জায়গায়। এক দল যান পশ্চিম আফ্রিকার দ্বীপ প্রিন্সিপায়। এ দলে ছিলেন এডিংটন ও এডউইন টার্নার কোটিংহাম। আরেক দল যান ব্রাজিলের সব্রাল শহরে। এ দলে গ্রিনিচ মানমন্দিরের অ্যান্ড্রু ক্রোমলিন ও চার্লস ডেভিডসন। মূল পরীক্ষাটি পরিচালিত হয় রয়েল সোসাইটি ও রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিকেল সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে। সেসময় ফ্র‍্যাংক ডাইসন ছিলেন অ্যাস্ট্রোনমার রয়েল। মূলত এডিংটনের পরামর্শে তিনি কাজটা নিয়ে পরিকল্পনা এগিয়ে নেন।

প্রাপ্ত ফলাফলে প্রমাণ জয় আইনস্টাইনের অনুমান। বাস্তবে দেখা গেল মহাকর্ষী বক্রতা। পরীক্ষার পরিকল্পনার পাশাপাশি তথ্য বিশ্লেষণেও ফ্র‍্যাংক ডাইসন কাজ করেন। এ পরীক্ষার ফল সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়। আইনস্টাইন ও তাঁর তত্ত্ব রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যায়।

আইনস্টাইন ক্রস 

মহাকর্ষ বক্রতার একটি দারুণ ফল হলো আইনস্টাইন ক্রস ও বলয়। 

Category: articles

রবিবার, ২১ মে, ২০২৩

 


ওমুয়ামুয়া। সৌরজগতে প্রবেশ করা প্রথম আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু৷ ২০১৭ দালের ১৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইর হালিয়াকালা মানমন্দির থেকে বস্তুটা আবিষ্কার করেন কানাডিয়ান জ্যোতির্বিদ ডেভিড ওয়ার্ক৷ সেসময় সূর্য থেকে দূরে সরতে শুরু করে দিয়েছিল বস্তুটা।
দেখতে ধূমকেতুর মতো হলেও আসলে এটা তা নয়। গ্রহাণুর সাথে মিল আছে। তবে ঠিক তাও নয়। কেউ কেউ তো আবার একে এলিয়েনদের সৃষ্টি বলেও মনে করেছিলেন। যদিও তার সপক্ষে প্রমাণ নেই।
Category: articles

শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

 আজ ২০ মে। ১৯৭৮ সালের এই দিনে মহাশূন্যে পাঠানো হয় পাইওনিয়ার ভিনাস প্রোগ্রামের মহাকাশযান। ফ্লোরিডার ক্যাপ ক্যানাভেরাল থেকে শুক্র গ্রহের কক্ষপথের দিকে ছুটে যায় এ প্রকল্পের দুটি মহাশূন্যযান।


পাওনিয়ার ভিনাস অরবিটার

পাওনিয়ার ভিনাস প্রোগ্রামের যান দুটির একটি হলো পাওনিয়ার ভিনাস অরবিটার। শুনেই বোঝা যাচ্ছে এর কাজ ছিল শুক্রের অরবিট মানে কক্ষপথে। অ্যাটলাস-সেন্টোর রকেটে করে একে পাঠানো হয় নির্দিষ্ট গন্তব্যে। ঐ বছরই ডিসেম্বরের ৪ তারিখে যানটি শুক্রের কক্ষপথে স্থান করে নেয়। কক্ষপথটি হয় উপবৃত্তাকার। ১৯৯২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত যানটি শুক্র গ্রহ থেকে উপাত্ত পাঠাতে থাকে। সক্রিয় থাকে ১৪ বছর ৪ মাস।


১৯৮৬ সালে অরবিটারটি হ্যালির ধূমকেতকে পর্যবেক্ষণ করে। যানের বিভিন্ন যন্ত্র শুক্রের বায়ুমণ্ডল ও পৃষ্ঠ নিয়ে অনুসন্ধান চালায়। ১৯৯১ সালে ম্যাজেলান যানের সাথে যৌথভাবে গ্রহটির দক্ষিণ ভাগে অনুসন্ধান চালায়। ১৯৯২ সালের অক্টোবরে এটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। আলাদা হয়ে যায় এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। শুক্রকে কেন্দ্র করে ঘোরার সময় এর দূরত্ব শুক্র থেকে ১৮২ কিলোমিটার থেকে ৬৬ হাজার কিলোমিটারের বেশিও ছিল।

অপভূ বনাম অনুভূ
হ্যালির ধূমকেতু এখন কোথায় ? 

পাইওনিয়ার প্রোগ্রামের অপর অংশে ছিল ভিনাস মাল্টিপ্রোব। এতে আবার ছিল একটি ছোট ও তিনটি ছোট অনুসন্ধানী যান। ডিসেম্বর মাসে এরা গ্রহটির ঘন বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। কাজ করে ৪ মাস ১ দিন। শুক্রের বায়ুমণ্ডলের জন্ম, বিকাশ ও চলমান কর্মকাণ্ড নিয়ে কাজ করে একটি যন্ত্র। বাগুমণ্ডলের উপরিভাগের স্তরগুলো জানার চেষ্টা করে। স্তরগুলো ওপর সৌর বিকিরণ ও আন্তঃগ্রহ স্থানের প্রভাব বের করার চেষ্টা করে।


ভিনাস মাল্টিপ্রোব


আরেকটি যন্ত্র শুক্রের সাথে সৌর বায়ুর মিথষ্ক্রিয়া জানার চেষ্টা করে। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে শুক্রের বায়ুমণ্ডলের তাপ বিন্যাস নিয়ে জানার চেষ্টা করে। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রোবের সাথে নাসার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। যন্ত্রাংশগুলো আলাদা হওয়ার আগে ১১০ কিলোমিটার উপরে থেকে কাজ করছিল।
Category: articles

রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩

আজ ১৪ মে। ১৯৭৩ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশে প্রথম কোনো স্টেশন প্রেরণ করে। নাম স্কাইল্যাব। এর আগে ১৯৭১ সালে রাশিয়া পাঠিয়েছিল মহাকাশে প্রথম স্টেশন সালিউট ১। স্কাইল্যাব কক্ষপথে সময় কাটায় ২৪ সপ্তাহ। ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।


স্কাইল্যাব স্টেশন 
স্টেশনটিকে অনেকগুলো কাজ দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে আছে সৌর মানমন্দির, পৃথিবী পর্যবেক্ষণ ও বহু বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা।

প্রথম মহাশূন্য স্টেশন

২০২৩ সালে এসেও স্কাইল্যাবই যুক্তরাষ্ট্রের এককভাবে পরিচালিত একমাত্র স্টেশন। যদিও ১৯৮৮ সালে আরেকটি স্থায়ী স্টেশনের পরিকল্পনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের পরিকল্পনা হচ্ছিল বলে মনোযোগ সেদিকে সরে যায়।

কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্যাটার্ন ভি রকেটে চেপে এটি ছুটে যায় মহাশূন্যে। ভর ছিল ৭৬.৫ কেজি। দৈর্ঘ্য ৮২ ফুট। কক্ষপথের দূরত্ব ছিল পৃথিবী থেকে ৪৩৪ ও ৪৪২ কিলোমিটার (অনুভূ ও অপভূ)। দিনে প্রায় ১৫ বার চক্কর খেত পৃথিবীকে। ৩টি অভিযানে মোট ৯ জন মানুষ স্টেশনটিতে সময় কাটিয়েছিলেন।

১৭১ দিনে স্টেশনটি মোট ২৪৭৬ বার পৃথিবীকে পাক খায়। নভোচারীরা এটি থেকে দশবার স্পেসওয়াক করেছিলেন। এতে ২০০০ ঘণ্টা ব্যাপী বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও মেডিকেল পরীক্ষা চালানো হয়। ৮টি সৌর শিখার ছবি ধারণ করা হয়, যা মনুষ্যবিহীন যানের মাধ্যমে সম্ভব হত না। এরই মাধ্যমে সৌর মুকুটের অস্তিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। অনেকগুলো পরীক্ষায় দেখা হয় মাইক্রোগ্র‍্যাভিটিতে দীর্ঘ সময় থাকলে কীভাবে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...