Advertisement

মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩

আজকের জ্যোতির্বিদ: উইলিয়াম ক্যাম্পবেল

আজ ১১ এপ্রিল। ১৮৬২ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন অ্যামেরিকান জ্যোতির্বিদ উইলিয়াম ওয়ালেচ ক্যাম্পবেল। 

১৯০১ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত তিনি লিক অবজারভেটরির পরিচালক ছিলেন। জ্যোতির্বিদ্যায় বর্ণালীবীক্ষণে অসামন্য অবদানের জন্য স্মরণ করা হয় তাঁকে। 




জন্ম ওহাইও অঙ্গরাজ্যে। ১৮৮৬ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায়ই জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন৷ এতে মূলত অবদান সাইমন নিউকমের বই পপুলার অ্যাস্ট্রোনমি। 

পড়াশোনা শেষ করে কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের অধ্যাপনা শুরু করেন। তবে কিছুদিন বাদেই ফিরে আসেন নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ানো শুরু করেন জ্যোতির্বিদ্যা। 

১৮৯১ সাল। তাঁকে ক্যালিফোর্নিয়ায় আমন্ত্রণ জানানো হয় লিক অবজারভেটরিতে। বর্ণালীবীক্ষণ নিয়ে কাজের জন্য। এখানে এসেই তিনি স্মরণীয় হয়ে ওঠার মতো কাজ শুরু করেন। 


নক্ষত্রের রেডিয়াল বা অরীয় (radial) বেগ বের করা শুরু করেন। অরীয় বেগ মূলত বহির্গ্রহ খুঁজে পাওয়ার একটি পদ্ধতি। পাশাপাশি তুলতে থাকেন সূর্যগ্রহণের ছবি। ১৮৯৩ সালে আবিষ্কার করেন এইচডি ১৮৪৭৩৮ নক্ষত্র। অপর নাম ক্যাম্পবেলের হাইড্রোজেন এনভেলপ স্টার। এটি একটি উলফ রায়েট ধরনের তারা। 

১৯১৪ সালে ক্যাম্পবেল ও জার্মান জ্যোতির্বিদ ফ্রেন্ডলিখ রাশিয়া যান সূর্যগ্রহণের ছবি তুলতে। ফ্রেন্ডলিখ ছিলেন বার্লিন অবজারভেটরির পর্যবেক্ষক। দুজনের উদ্দেশ্য ছিল আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব পরীক্ষা করা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তাঁদের যন্ত্রপাতি রুশ সেনারা কব্জা করে। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র নিরপেক্ষ দেশ হওয়ায় ক্যাম্পবেল কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পান। তবে আকাশে মেঘ থাকায় ছবি তোলা সম্ভব হয়নি।

১৯১৮ সালে আবার চেষ্টা চালান। তবে চার বছর আগে রাশিয়ায় ভাল যন্ত্রপাতি রেখে আসতে হয়েছিল। লিক অবজারভেটরিতে থাকা যন্ত্রপাতি দিয়েই কাজ চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে আইনস্টাইনের পূর্বাভাস অনুসারে আলোর বাঁকের পরিমাপ এখানকার ক্যামেরা দিয়ে মাপ সম্ভব ছিল না। 

এই কাজটাই আর্থার এডিংটন করেন পরের বছর। ১৯১৯ সালে। তবে কিছু কারণে তত্ত্বের পূর্ণাঙ্গ স্বীকৃতি তখনো মেলেনি। চূড়ান্ত ও অকাট্য স্বীকৃতি মেলে ক্যাম্পবেলের ১৯২২ সালের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। লিক অবজারভেটরির পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় সূর্যগ্রহণের ছবি থেকে পাওয়া যায় এ নিশ্চয়তা। 

মহান এ বিজ্ঞানীর জীবনাবসান হয় করুণভাবে। তিনি চারতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। বয়স হয়েছিল ৭৬। অন্ধত্ব ও বাকশক্তি লোপ পাওয়ার হতাশা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 

জীবনে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছিলেন। এর মধ্যে আছে ফ্রেঞ্চ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের লাঁলা পদক। পেয়েছেন রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিকেল সোসাইটির স্বর্ণ পদক। চাঁদ ও মঙ্গলের দুটি খাতের নামের সাথে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। গ্রহাণু ২৭৫১ ক্যাম্পবেল তাঁর নাম ধারণ করে আছে।


Advertisement 02

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ

লেখকের পরিচয়

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ। প্রভাষক, পরিসংখ্যান বিভাগ, সিলেট ক্যাডেট কলেজ। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রকাশিত বই পাঁচটি | সব লেখা | ফেসবুক | পারসোনাল ওয়েবসাইট

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...