এক্স-রে (নীল) ও রেডিও (লাল) ডেটার সমন্বয়ে প্রস্তুত ছবি। ছবিটি বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। |
ছবিতে দূর মহাকাশের একটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলের ৩ লাখ আলোকবর্ষ ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নিক্ষিপ্ত কণার একটি বিশাল ফোয়ারা (jet) দেখা যাচ্ছে।
পিকটর এ (Pictor A) নামক গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাক হোলের প্রভাবে সৃষ্ট এই ফোয়ারার ছবিটি নাসা গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে প্রকাশ করেছে। গ্যালাক্সিটি পৃথিবী থেকে ৫০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ব্ল্যাক হোলে পতনশীল বস্তুর প্রভাবে বাইরের দিকে কণিকার বিশাল প্রবাহ বা ফোয়ারা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে যা প্রায় আলোর বেগে ছড়িয়ে পড়ছে আন্তঃছায়াপথীয় (Intergalactic) স্থানে। ছবিটি পেতে নাসার চন্দ্রা এক্স-রে অবজারভেটরি ১৫ বছর ধরে কাজ করে গিয়েছে। চন্দ্রার এক্স-রে ডেটার (নীল) সাথে অস্ট্রেলিয়া টেলিস্কোপ কমপ্যাক্ট অ্যারে এর রেডিও ডেটা (লাল) সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয় ছবিখানা।
পিকটর এ গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে এই ফোয়ারা অবিরত ছড়িয়ে পড়ছে ৩ লাখ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিরই ব্যাস মাত্র ১ লাখ আলোকবর্ষ।
গবেষকরা বলছেন, ছবির ডান দিকে যেমন একটি ফোয়ারা দেখা যাচ্ছে, তেমনি এর বিপরীত দিকে আরেকটি ফোয়ারা কাজ করছে, যাকে বলা হচ্ছে প্রতি-ফোয়ারা (counterjet)। এর আগেও প্রতি ফোয়ারার অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করা হয়েছিল। তবে, এবারে এর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল। পৃথিবী থেকে উল্টো দিকে অবস্থিত হওয়াতে সম্ভবত প্রতি-ফোয়ারাকে অনুজ্জ্বল দেখাচ্ছে।
ছবিতে আরো দেখা যাচ্ছে রেডিও লোব, যেখানে ফোয়ায়ার ধাক্কায় পাশ্ববর্তী গ্যাসে শক ওয়েভজনিত হটস্পট তৈরি হচ্ছে। ফোয়ারার মাথায় অবস্থিত এই হটস্পট অনেকটা সুপারসনিক বিমানের সনিক বুমের মত।
চন্দ্রার ছবিতে দেখা ফোয়ারা ও প্রতি-ফোয়ারা সম্ভবত চৌম্বকক্ষেত্র রেখার চারপাশে ঘূর্ণনরত ইলেকট্রনের প্রভাবে তৈরি হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াটির নাম সিনক্রোট্রন এমিসন (synchrotron emission)। এই ক্ষেত্রে বাইরের দিক নির্গত ইলেকট্রনকে অবশ্যই প্রতি মুহূর্তে বেগ বৃদ্ধি করতে হয়। এটা কিভাবে ঘটে তা এখনো বিজ্ঞানীদের ভালো জানা নেই। এই ফলাফলগুলোর বিবরণ দিয়ে একটি পেপার রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক প্রকাশনায় স্থান পাচ্ছে।
সূত্রঃ
১। Earth Sky
সূত্রঃ
১। Earth Sky