Advertisement

শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আমরা জানি, বাসযোগ্য (Habitable) হতে হলে একটি গ্রহকে সংশ্লিষ্ট নক্ষত্র (যেমন আমাদের ক্ষেত্রে সূর্য) থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থিত হতে হয়। নক্ষত্র থেকে দূরের এই অঞ্চলটিকে হতে হয় একদম পারফেক্ট- খুব উষ্ণও নয় আবার খুব শীতলও নয়।  প্রশ্ন হতে পারে খোদ গ্যালাক্সির ক্ষেত্রেও কি এমন কোন শর্ত আছে?

গ্রহ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বাসযোগ্যতার যে শর্ত তা প্রযোজ্য হতে পারে গ্যালাক্সির ক্ষেত্রেও। অর্থ্যাৎ, গ্যালক্সিদের ক্ষেত্রেও এমন একটি অঞ্চল থাকবে যেখান গ্রহরা বেড়ে উঠতে পারবে। কেপলার স্পেইস টেলিস্কোপসহ কিছু মিশন সৌরজগতের বাইরে হাজার হাজার গ্রহের সন্ধান পাচ্ছে। এই বহির্গ্রহদের সংখ্যা এবং অবস্থান চোখে পড়ার মত।
তবে গ্যালাক্সিদের ক্ষেত্রে বাসযোগ্য গ্রহের অঞ্চল থাকার বিষয়টি এখনো বিতর্কের উর্ধ্বে উঠতে পারেনি। জ্যোতির্পদার্থবিদ গুইলিয়েরমো গনজালেজ এর মতে, একটি গ্রহকে ছায়াপথ কেন্দ্র (Galactic center) থেকে এত দূরে থাকতে হবে যাতে এটি ক্ষতিকারক বিকিরণ এড়াতে পারে। আবার এর অবস্থান এত বেশি দূরেও হওয়া চলবে না যাতে এতে যথেষ্ট পরিমাণ ভারী মৌল তৈরি হতে সমস্যা হয়। ফলে গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে ২৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে ৬ হাজার আলোকবর্ষব্যাপী একটি অঞ্চল বাসযোগ্যতার আওতায় পড়ে। এর অবস্থান হয় কেন্দ্র ও প্রান্তের প্রায় মাঝামাঝিতে।
তবে, গ্যালাক্সিতে বাসযোগ্য গ্রহের অবস্থানের নিখুঁৎ সীমানা চিহ্নিত করার মত যথেষ্ট গ্রহ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। অবশ্য, দিন দিন এ সংশ্লিষ্ট জ্ঞান ও তথ্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হচ্ছে।

সূত্রঃ
[১] স্পেইস আনসার
[২] গুলিয়েরমো গনজালেজ
Category: articles
অধিকাংশ অন্যান্য গ্যালাক্সির মতই এনজিসি ৪৮৮৯ গ্যালাক্সির কেন্দ্রে বাস করছে একটি বিশাল ভরযুক্ত ব্ল্যাক হোল। জ্যোতির্বিদদের ধারনা, এটি নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে এখন বিশ্রাম নিচ্ছে।
শত শত গ্যালাক্সির ভীড়ে এনজিসি ৪৮৮৯ গ্যালাক্সির ছবি। এরই কেন্দ্রে লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে আছে একটি ব্ল্যাক হোল। 
উপরের ছবির সবচেয়ে উজ্জ্বল এবং বড় গ্যালাক্সিটিই এনজিসি ৪৮৮৯। ৩০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে কোমা গ্যলাক্সি ক্লাস্টারে এর অবস্থান। এর কেন্দ্রে থাকা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলটি আগের অনেক রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছে। এর ভর সূর্যের ২১ বিলিয়ন (বা ২ হাজার ১০০ কোটি) গুণ।
অন্য দিকে এর ঘটনা দিগন্তের ব্যাস ১৩ হাজার কোটি কিলোমিটার। এই পাল্লাটি সূর্য থেকে নেপচুনের কক্ষপথের দূরত্বের ১৫ গুণ।  ঘটনা দিগন্ত হচ্ছে একটি ব্ল্যাক হোলের বাইরে সেই অঞ্চল যেখান থেকে আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে এর ভেতরের কিছু দেখা সম্ভব হয় না। অন্য দিকে, আমাদের নিজেদের গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের কেন্দ্রে থাকা সম্ভাব্য ব্ল্যাক হোলখানির ভর সূর্যের ৪০ লাখ গুণ। এর ঘটনা দিগন্তের পাল্লা বুধের কক্ষপথের এক পঞ্চমাংশ মাত্র।
কিন্তু আলোচ্য গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাক হোলের রাক্ষুসে আচরণের সমাপ্তি ঘটেছে। এনজিসি ৪৮৮৯ এর খাবার কক্ষে এটি এখন বিশ্রামরত। বর্তমানে এর আশেপাশে নতুন জন্মানো তারকারা শান্তিতে বেড়ে উঠছে এবং একে প্রদক্ষিণও করছে। 
অন্য ব্ল্যাক হোলের মতই এটি বিভিন্ন গ্যালাকটিক বস্তু যেমন গ্যাস, ধূলিকণা ও অন্যান্য ধ্বংশাবশেষ সাবাড় করে করে একটি আক্রেশন ডিস্ক (Accretion disk) গঠন করে। গ্যাস-ধূলিকণার ঘুর্ণায়মান এই চাকতিকে ব্ল্যাক হোলটি তীব্র অভিকর্ষীয় ত্বরণে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। পরিণামে চাকতির তাপমাত্রা উঠে যায় লক্ষ ডিগ্রি পর্যন্ত। এই উত্তপ্ত বস্তু কতৃক নির্গত হয় দানবীয় এবং শক্তিশালী জেট বা ফোয়ারা । 
সক্রিয় থাকায় সময় জ্যোতির্বিদরা ব্ল্যাক হোলটিকে কোয়াসার শ্রেণিতে নাম তালিকাবদ্ধ করেন। ব্ল্যাক হোলটির ডিস্ক মিল্কিওয়ের চেয়ে হাজার গুণ বেশি শক্তি নির্গত করত। ডিস্কটি ব্ল্যাক হোলের খাবারের যোগান দিয়ে দিতে দিতে এক পর্যায়ে আশেপাশের সব গ্যালাকটিক বস্তু নিঃশেষ করে ফেলে। ফলে, এটি এখন সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। তবু, রহস্যময় কোয়াসাররা মহাবিশ্বের শৈশবকালে কিভাবে গঠিত হয়েছিল তা জানতে ব্ল্যাক হোলটি জ্যোতির্বিদদের গবেষণার কাজে আসবে। 
আলো বেরিয়ে আসতে পারে না বলে ব্ল্যাক হোলকে সরাসরি দেখা না গেলেও পরোক্ষ উপায়ে এর ভর বের করা যায়। এনজিসি ৪৮৮৯ গ্যালাক্সির চারদিকে প্রদক্ষিণরত নক্ষত্রদের বেগ পরিমাপ করা সম্ভব হয়েছে। এই বেগ থেকেই জানা গেছে ব্ল্যাক হোলটির বিশাল ভরের তথ্য।  


Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

অনুসন্ধান চলছিল ১০০ বছর ধরে। এবারে আন্তর্জাতিক এক দল পদার্থবিদ ঘোষণা দিলেন, পাওয়া গেছে মহাকর্ষ তরঙ্গ (Gravitational wave)। ফলে সত্যি হল আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী। এর আগে স্থান-কালের বক্রতার প্রতিক্রিয়া প্রত্যক্ষ করা গেলেও বিশাল ভরের বস্তুরা এই বক্রতা যে তরঙ্গের মাধ্যমে  চারপাশে ছড়িয়ে দেয় তাকে সরাসরি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

লিগো অবজারভেটরির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড রিজ ঘোষণাটি দেন। তিনি একে ৪০০ বছর আগে গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ আবিষ্কারের সাথে তুলনা করেন। এর কারণ হতে পারে, তখন টেলিস্কোপের মাধ্যমে গ্যালিলিও মহাকাশের অনেক অজানাকে নিয়ে আসেন চোখের সামনে। একইভাবে বর্তমানে আবিষ্কৃত মহাকর্ষীয় তরঙ্গও মহাবিশ্বের একটি রহস্যময় বস্তুকে নিয়ে এল ধরাছোঁয়ার মধ্যে।

মহাকাশের নতুন এক দিগন্ত খুলে দেওয়া এই আবিষ্কার যে নোবেল পুরস্কার পাবার যোগ্য তা নিয়ে খুব বেশি সন্দেহ নেই।

মহাকর্ষ তরঙ্গ সৃষ্টির জন্যে প্রয়োজন উত্তাল কোন ঘটনা। এটা হতে পারে সুপারনোভা, দুটি নিউট্রন নক্ষত্রের সংঘর্ষ বা ব্ল্যাক হোলের মিশ্রণ। মহাবিশ্বের ফেব্রিকের এই কম্পন বা স্থান-কালের বক্রতা চলে আলোর বেগে। পৃথিবীতে পৌঁছতে পৌঁছতে একটি পরমাণুর ব্যাসের বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ হয়ে যায় এটি। এ কারণেই এদেরকে ধরতে বিজ্ঞানীদের খুব বেশি চতুরতার পরিচয় দিতে হয়েছে।
এর পেছনে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে লিগো- Laser Interferometer Gravitational-Wave Observatory। এটি অনলাইনে আসে ২০০২ সালে। কিন্তু সফলতা আসছিল না। পরে লিগো এর যান্ত্রিক সংবেদনশীলতা বাড়ায় ১০ গুণ। ফলে, উন্নততর লিগো আগের চেয়ে ১০ হাজার গুণ বেশি আয়তনের অঞ্চল থেকে মহাকর্ষ তরঙ্গ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এ কারণে নতুন পরিস্থিতিতে সাফল্যের সম্ভাবনা বেড়ে গিয়েছিল।
এই সাফল্য মহাবিশ্বের আরেকটি জানালা খুলে দিল আমাদের সামনে। এটা ঠিক যেন এ রকম যে আগে আমরা অন্ধ ছিলাম, আর এখন দেখতে পাচ্ছি মহাবিশ্বকে। এই তরঙ্গ কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোল, নিউট্রন স্টার এবং শিশু মহাবিশ্ব নিয়ে নতুনভাবে গবেষণা করতে পারবেন যা আগে ছিল অচিন্তনীয়।
এটা আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের সর্বশেষ বড় পূর্বাভাস।

সূত্রঃ Earth sky
Category: articles

মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আমরা জানি, চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করে। কিন্তু চাঁদকি নিজের অক্ষের সাপেক্ষেও ঘোরে? সাধারণত মনে হতে পারে, উত্তর নেতিবাচক কারণ আমরা জানি, চাঁদের একটি পৃষ্ঠই সব সময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে।

দেখে নিনঃ আবর্তন ও প্রদক্ষিণের পার্থক্য
আসলে, চাঁদ যদি আবর্তন না করত, তবেই আমরা একেক সময় একেক অংশ দেখতে পেতাম যখন এটি কক্ষপথের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থাকত।
ঘটানাটি প্র্যাকটিক্যালি বুঝতে হলে একজন বন্ধুকে সামনে দাঁড় করিয়ে রাখুন। বন্ধু কাছে না থাকলে একটু বস্তুকে বন্ধুর জায়গায় কল্পনা করুন। মনে করুন, ও হচ্ছে পৃথিবী। এবার আপনি নিজেকে চাঁদ ধরে নিয়ে তার চারপাশে ঘুরে আসুন। খেয়াল রাখতে ঘুরে আসার সময় আপনারা সব সময় মুখোমুখি থাকবেন। ঘোরা শেষ হলে কী দেখা গেল? একেক সময় আপনি রুমের একেক অংশ দেখলেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, আপনি আবর্তন করেছেন মানে নিজের অক্ষের সাপেক্ষে ঘুরেছেন।
এবার আবার ঘুরেন। এবারে ঘুরে আসার সময় দেয়ালের একটি নির্দিষ্ট অংশের দিকে তাকিয়ে থাকুন। এর অর্থ হচ্ছে এবার শুধু প্রদক্ষিণই করবেন, আবর্তন নয়। খেয়াল করুন, এ ক্ষেত্রে বন্ধু আপনার পেছনের, সামনের, পাশ্বের- সব অংশ দেখতে পাবে।
তবে, মজার ব্যাপার হচ্ছে চাঁদ পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে যত সময় নেয়, ততক্ষণেই একবার আবর্তন সম্পন্ন করে। এ কারণেই আসলে আমরা সব সময় এর একই পৃষ্ঠ দেখি। অবশ্য আরো কিছু কারণে সব মিলিয়ে আমরা বিভিন্ন সময়ে চাঁদের প্রায় ৫৯% পর্যন্ত অংশ দেখতে পাই। তবে, এক সাথে অবশ্যই ৫০% এর বেশি দেখি না।

সূত্রঃ
১। কর্নেল ইউনিভার্সিটি
২। Earth Sky
Category: articles

সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

বলয়সহ নীল ও সোনালী রঙে শনি গ্রহ 

বিবরণঃ
আপনি যদি বলয়ধারী গ্রহটির কাছাকাছি অবস্থানে ভেসে থাকতে পারতেন, তবে একে উপরের ছবির মত দেখবেন। ২০০৬ সালের মার্চে মহাকাশযান ক্যাসিনি ছবিটি সংগ্রহ করে। রোবটজাতীয় এই স্পেসশিপটির কার্যক্রম ২০১৬ এসেও চালু আছে। শনির রাজকীয় বলয়টি এখানে শুধুই একটি উলম্ব দাগের মত দেখাচ্ছে। বলয়ের সমতলেই দেখা যাচ্ছে শনির উপগ্রহ এনচেলাডাস। উপগ্রহটির ব্যাস মাত্র ৫০০ কিলোমিটার।
শনি গ্রহের উত্তর গোলার্ধ দেখতে আংশিক নীল। পৃথিবীর আকাশ যে কারণে নীল তার সাথে এই ঘটনার মিল আছে। দুই গ্রহের ক্ষেত্রেই মেঘহীন বায়ুমণ্ডলের অণু লাল আলোর চেয়ে নীল আলো সহজে বিক্ষেপণ করতে পারে- নীল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম বলে।  তবে মেঘ এড়িয়ে গ্রহটির আরো গভীরে দৃষ্টিপাত এর সহজাত সোনালী রঙ গোচরে আসে। শনির দক্ষিণ গোলার্ধ কেন নীল রঙ প্রদর্শন করে না তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। গ্রহটিতে ভেসে থাকা মেঘেরা সোনালী দেখায়ো কেন তাও জানা যায়নি।
শনি গ্রহ দেখতে খানিকটা নীল কেন? 
Category: articles
লুব্ধক (Sirius) রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। কিন্তু লুব্ধককে কীভাবে খুঁজে পাব? লুব্ধক আকাশের কোন দিকে থাকে? কোন মাসে বা ঋতুতে একে ভালো দেখা যায়?
লুব্ধককে খুঁজে পেতে হলে তার আগে খুঁজে নিতে হবে আদম সুরত বা কালপুরুষ তারামণ্ডলীটিকে। খুশির খবর হচ্ছে, আদম সুরত হচ্ছে সেই সব তারামণ্ডলীর মধ্যে অন্যতম যাদেরকে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।

 তারামণ্ডলীর পরিচয়

বছরের বিভিন্ন মাসের মধ্যে মে, জুন, জুলাই- এই তিন মাস আদম সুরত ও লুব্ধক সূর্যের কাছাকাছি সময়ে অস্ত যায় বলে এ মাসগুলোতে এদেরকে দেখা যায় না। আগস্টের দিকে ভোরের পূর্ব আকাশে এরা পুনরায় দেখা দিতে শুরু করে। প্রতি দিন প্রায় চার মিনিট আগে আগে এরা উদিত হয়। ফলে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে এদেরকে সন্ধ্যার আকাশেই খুব সহজে চোখে পড়ে। এপ্রিল মাসে সন্ধ্যায় এরা থাকে পশ্চিম আকাশে। তার একটু পরেই ডুবে যায়।

আদমসুরত ও লুব্ধক

তবে লুব্ধক খুঁজে পাবার সেরা সময় হিসেবে আপনি ফেব্রুয়ারি মাসকে বাছাই করতে পারেন। এ সময় রাত নয়টার দিকে এটি সোজা দক্ষিণ আকাশে থাকবে, মাথার খাড়া উপর থেকে কিছুটা নিচে।
কতটা নিচে?

এটা বুঝতে হলে আপনাকে বিষুবলম্ব বুঝতে হবে। এটা না বুঝেও বের করা সম্ভব। তাই বেশি গভীরে যেতে না চাইলে বাকি অংশ না পড়লেও চলবে। লুব্ধকের বিষুব লম্ব হচ্ছে প্রায় (-১৭) ডিগ্রি। অর্থ্যাৎ, বাংলাদেশ থেকে দেখতে হলে মাথার খাড়া উপর থেকে (২৩+১৭) = ৪০ ডিগ্রি দক্ষিণে যেতে হবে।

উজ্জ্বল তারাদের গল্প

এছাড়াও বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্রদের খুঁজে পাবার ব্যাপারে নিয়মিত আপডেট পেতে এই দুটি লিঙ্ক ফলো করুন
Category: articles
[নোটঃ পরভাষাগুলো সাজানোর ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বর্ণানুক্রম মেনে চলার চেষ্টা করা হয়েছে]

অনিশ্চয়তা নীতি (Uncertainty principle): হাইজেনবার্গের প্রদান করা এই নীতি যে, কোনো কণিকার অবস্থান ও বেগ একইসাথে নিশ্চিত করে জানা সম্ভব নয়। এর একটি যত বেশি নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা হবে, অপরটি সম্পর্কে পাওয়া তথ্য ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আইন্সটাইন- রোজেন সেতু (Einstein-Rosen bridge): স্থান- কালের একটি সরু টিউব, যা দুটি ব্ল্যাক হোলকে যুক্ত করে। আরো দেখুন, ওয়ার্মহোল

আলোকবর্ষ (light-year): আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। (* মনে রাখতে এটি, আলোক-সেকেন্ড এবং এই জাতীয় এককগুলো সময়ের নয়, দূরত্বের একক)

আলোক-সেকেন্ড (Light-second): আলো এক সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে।

অ্যানথ্রোপিক নীতি (Anthropic principle): আমরা মহাবিশ্বকে এখন যেমন দেখছি এর এমন হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, এটি যদি এমন না হত তাহলে একে পর্যবেক্ষণ করার মতো এখানে থাকতামই না।

ইলেকট্রন (Electron): নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘুর্ণনরত নেগেটিভ বা ঋণাত্মক চার্জধারী কণিকা।

ইলেকট্রিক চার্জ বা তড়িৎ আধান (Electric charge): কণিকার এমন ধর্ম যার মাধ্যমে এটি বিপরীত চার্জধারী অন্য কণিকাকে আকর্ষণ করে এবং একই রকম চার্জধারী কণিকাকে বিকর্ষণ করে।

ইলেকট্রোউইক ইউনিফিকেশান এনার্জি (Electroweak unification energy): শক্তির যে পরিমাণকে (১০০ গিগা ইলেকট্রোভোল্ট) ছাড়িয়ে গেলে তড়িচ্চুম্বকীয় বল এবং দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।

ওজোন (Weight): মহাকর্ষীয় (বা অভিকর্ষীয়) ক্ষেত্র দ্বারা কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল। এটি ভরের সমানুপাতিক কিন্তু সমান নয়। (* আমরা সাধারণত যাকে ওজোন বলি, সেটি আসলে ভর। ভরের সাথে অভিকর্ষীয় ত্বরণ গুণ করলে ওজোন পাওয়া যায়)। আরো দেখুন, অভিকর্ষীয় ত্বরণ।

ওয়ার্মহোল (Wormhole): মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী একটি পাতলা টিউব বা সুড়ঙ্গ। ওয়ার্মহোলের অপর প্রান্তে সমান্তরাল বা শিশু মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যার মাধ্যমে সময় ভ্রমণ সম্ভব হতে পারে।
মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী একটি পাতলা টিউব বা সুড়ঙ্গকে ওয়ার্মহোল বলা হয়
কণা ত্বরকযন্ত্র (Particle accelerator): যে মেশিনের সাহায্যে ইলেকট্রোম্যাগনেট বা তড়িচ্চুম্বক ব্যবহার করে বেশি শক্তি দিয়ে দিয়ে গতিশীল চার্জধারী কণিকাদের বেগ বৃদ্ধি করা যায়।

কণা- তরঙ্গ দ্বৈততা (Wave/particle duality): কোয়ান্টাম মেকানিক্সের এই নীতি যে, কণিকা ও তরঙ্গের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো সময় কণিকা আচরণ করে তরঙ্গের মতো, আবার কখনো তরঙ্গ কণিকার মতো আচরণ করে।

কসমোলজি বা মহাবিশ্বতত্ত্ব (Cosmology): সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়ে যে শাস্রে।

কোয়ান্টাম (Quantum): কোনো পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া বস্তুর সর্বনিম্ন পরিমাণ।

কোয়ান্টাম মেকানিক্স (Quantum mechanics): প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম নীতি ও হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি থেকে প্রস্তুত করা থিওরি।

কোয়ার্ক (Quark): একটি চার্জধারী মৌলিক কণিকা, যা সবল নিউক্লিয়ার বল অনুভব করে। প্রোটন ও নিউট্রন দুটি কণিকাই তিনটি করে কোয়ার্ক দ্বারা গঠিত।

কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকুয়েন্সি (Frequency): কোনো তরঙ্গ প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো চক্র বা কম্পন সম্পন্ন করে।

ক্ষেত্র (Field): এমন কিছু যা স্থান- কালের উল্লেখযোগ্য অংশে বিস্তৃত । এটি কণিকার বিপরীত, যা নির্দিষ্ট কোনো সময়ে শুধু একটি বিন্দুতেই অবস্থান করে।

গামা রশ্মি (Gamma rays): খুব ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তড়িচ্চুম্বকীয় রশ্মি। তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বা মৌলিক কণিকাদের সংঘর্ষের ফলে এটি উৎপন্ন হয়। আরো দেখুন, তেজস্ক্রিয়তা।

গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরি বা মহা-সমন্বয় তত্ত্ব (Grand unified theory বা GUT): যে থিওরি তড়িচ্চুম্বকীয় এবং সবল ও দুর্বল নিউক্লিয়ার বলকে একীভূত করে।

ঘটনা (Event): নির্দিষ্ট স্থান ও সময়বিশিষ্ট স্থান- কালের উপরস্থ কোনো বিন্দু।

ঘটনা দিগন্ত (Event horizo): ব্ল্যাক হোলের সীমানা (*ব্ল্যাক হোলের চারপাশের যে অঞ্চলের বাইরে আলো আসতে পারে না)।

চৌম্বক ক্ষেত্র বা ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Magnetic field): চৌম্বক বলের জন্যে দায়ী ক্ষেত্র। তড়িৎ ক্ষেত্রের (electric field) সাথে সমন্বিত হয়ে এটি এখন তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের অংশ।

ডার্ক ম্যাটার (Dark matter): গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও এদের মাঝে অবস্থিত সেসব বস্তু যাদেরকে এখনো সরাসরি দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। মহাবিশ্বের অন্তত ৯০ ভাগ ভরই ডার্ক ম্যাটার।

তড়িচ্চুম্বকীয় বল (Electromagnetic force): ইলেকট্রিক চার্জধারী কণিকাদের মধ্যে যে বল কাজ করে। চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে শক্তিতে দ্বিতীয়।

তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength): কোনো তরঙ্গের পাশাপাশি অবস্থিত দুটি চূড়া বা খাঁজের মধ্যে দূরত্ব। [চিত্র দেখুন]

তেজস্ক্রিয়তা (Radioactivity): কিছু কিছু পরমাণু নিজেই নিজেই অন্য পরমাণুতে পরিণত হবার যে প্রক্রিয়া।

দশা (Phase): নির্দিষ্ট সময়ে কোনো তরঙ্গের অবস্থান। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে তরঙ্গের অবস্থান কি খাঁজে, চূড়ায় নাকি এই দুইয়ের মাঝে অন্য কোথাও আছে।

দুর্বল নিউক্লিয়ার বল (Weak force): চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে দ্বিতীয় দুর্বল বল। এটি মহাকর্ষের চেয়ে শক্তিশালী। এরও পাল্লা খুব ছোট। এটি যে কোনো বস্তু কণাকে আকর্ষণ করে, তবে বলবাহী কণিকাকে আকর্ষণ করে না। (*একে সংক্ষেপে বলা হয় দুর্বল বল।)

নিউক্লিয়ার ফিউসান (Nuclear fusion): যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস সংঘর্ষের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটিমাত্র ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে।

নিউক্লিয়াস (Nucleus): পরমাণুর কেন্দ্রীয় অংশ। এতে সবল বলের মাধ্যমে প্রোটন ও নিউট্রন যুক্ত থাকে।

নিউট্রন (Neutron): অনেকটা প্রোটনের মতোই একটি কণিকা, তবে এতে কোনো চার্জ নেই। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের অর্ধেক কণিকা এই নিউট্রন দিয়ে পূরণ হয়।

নিউট্রন নক্ষত্র (Neutron star): সুপারনোভা বিস্ফোরণের পরে অনেক সময় যে শীতল অংশ বাকি থেকে যায়। এটি ঘটে যখন কোনো নক্ষত্রের কেন্দ্রভাগের বস্তু গুটিয়ে নিউট্রনের ঘন ভরের বস্তুতে পরিণত হয়। (*এর মহাকর্ষ এতটা শক্তিশালী যে ইলেকট্রন ও প্রোটন এক হয়ে গিয়ে পুরোটা চার্জহীন নিউট্রনে পরিণত হয়।) আরো দেখুন, নিউট্রন।

নিউট্রিনো (Neutrino): একটি অসম্ভব হালকা কণিকা, যা শুধু মহাকর্ষ এবং দুর্বল নিউক্লিয়ার বল দ্বারা প্রভাবিত হয়।

জিওডেসিক (Geodesic): দুটি বিন্দুর মধ্যে সর্বনিম্ন (বা সর্বোচ্চ) পথ। (*গোলকের মতো ধনাত্নক বক্রতার ক্ষেত্রে এটি হবে সর্বনিম্ন পথ। আর ঘোড়ার জিনের মত আকৃতির বস্তুর ঋণাত্মক বক্রতার ক্ষেত্রে এটি হবে সর্বোচ্চ দূরত্ব)

ত্বরণ (Acceleration): যে হারে (সময়ের পরিবর্তনের সাথে) কোনো বস্তুর বেগ পরিবর্তন হয়।

দ্বৈততা (duality):  আপাত দৃষ্টিতে আলাদা হলেও একই ফলাফল প্রদান করা দুটো থিওরির মধ্যে সম্পর্ক।  আরো দেখুন, কণা/ তরঙ্গ দ্বৈততা।

পজিট্রন (Positron): ইলেকট্রনের ধনাত্মক চার্জধারী প্রতিকণিকা। আরো দেখুনঃ প্রতিকণিকা।

পরম শূন্য তাপমাত্রা (Absolute zero temperature): সর্বনিম্ন সম্ভাব্য সেই তাপমাত্রা, যাতে বস্তুর কোনো তাপ শক্তি থাকে না।

পরমাণু (Atom): সাধারণ বস্তুর মৌলিক একক। এতে একটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াসের (প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে তৈরি) চারপাশে ইলেকট্রনরা কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।

প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম নীতি (Planck’s quantum principle): এই ধারণা যে, আলো (বা অন্য যে কোনো প্রচলিত তরঙ্গ) শুধু বিচ্ছিন্ন কোয়ান্টা আকারে নির্গত হয়, যার শক্তি এর কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যস্তানুপাতিক। আরো দেখুনঃ সমানুপাতিক ও ব্যস্তানুপাতিক।

প্রতিকণিকা (Antiparticle): বস্তুর প্রতেকটি কণিকার বিপরীতে একটি প্রতিকণিকা আছে (*যার চার্জ ছাড়া আর সব ধর্ম কণিকার মতোই। যেমন ইলেকট্রনের প্রতিকণিকা পজিট্রন, যার চার্জ +১।)। কণিকা ও প্রতিকণিকার মধ্যে সংঘর্ষ হলে দুটিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, বিনিময়ে পাওয়া যায় শক্তি।

প্রান্থীনতার শর্ত (No-boundary condition): এই ধারণা যে, মহাবিশ্বের সাইজ সসীম কিন্তু এর কোনো সীমানা বা প্রান্ত নেই।

প্রোটন (Proton): প্রায় নিউট্রনের মতোই একটি কণিকা। কিন্তু এর রয়েছে ধনাত্মক চার্জ। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের কণিকাদের প্রায় অর্ধেকসংখ্যক এরা।

ফোটন (Photon): আলোর একটি কোয়ান্টাম। আরো দেখুনঃ কোয়ান্টাম।

বর্ণালী (Spectrum): একটি তরঙ্গের উপাদান কম্পাঙ্কগুলো। সৌরবর্ণালীর দৃশ্যমান অংশ রংধনুতে দেখা যায়।

বিগ ব্যাঙ (Big bang): মহাবিশ্বের শুরুতে যে সিঙ্গুলারিটি ছিল। আরো দেখুন, সিঙ্গুলারিটি।

বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব (Special relativity): মহাকর্ষের অনুপস্থিতিতে যে কোনো বেগে গতিশীল সকল পর্যেবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই থাকবে- এই নীতির ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। (*কাল দীর্ঘায়ন, দৈর্ঘ সঙ্কোচন, ভর-শক্তি সমতুল্যতা ইত্যাদি এই থিওরির ফসল।)। আরো দেখুন, সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব।

ব্যস্তানুপাতিক (inversely proportional): X, Y এর ব্যস্তানুপাতিক হলে এর অর্থ হচ্ছে Y কে কোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে X কে সেই সংখ্যা দ্বারা ভাগ দেওয়া হচ্ছে। (*অর্থ্যাৎ, Y যত গুণ বাড়বে, X তত গুণ কমে যাবে। যেমন Y দ্বিগুণ হলে X হয়ে যাবে অর্ধেক। Y তিন গুণ হলে X হবে তিন ভাগের এক ভাগ। তবে যদি বলা হয় X, Y এর বর্গের ব্যস্তানুপাতিক, তাহলে Y দ্বিগুণ হলে X হবে চার ভাগের এক ভাগ।) আরো দেখুন, সমানুপাতিক।

ব্ল্যাক হোল (Black hole): স্থান- কালের এমন অঞ্চল যেখানে মহাকর্ষ এত শক্তিশালী যে এখান থেকে কোনো কিছুই বের হয়ে আসতে পারে না, এমনকি আলোও না। (*বাংলা নাম কৃষ্ণগহ্বর বা কৃষ্ণবিবর)

ভর (Mass): কোনো বস্তুতে উপস্থিত পদার্থের পরিমাণ; বস্তুর জড়তা বা ত্বরণের প্রতি বাধা।

ভার্চুয়াল কণিকা (Virtual particle): যে কণবিকাদেরকে সরাসরি দেখা যায় না, কিন্তু পরিমাপযোগ্য প্রতিক্রিয়া থাকে।

মহাজাগতিক ধ্রুবক (Cosmological constant): স্থান- কালের সহজাত ধর্মই হচ্ছে প্রসারিত হওয়া- এমন ব্যাখ্যা দেবার জন্যে আইনস্টাইনের উদ্ভাবিত গাণিতিক ধ্রুবক। (*পরে দেখা গিয়েছিল এই ধ্রুবক আনা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখন আবার এর প্রয়োজন আছে বলে মনে হচ্ছে)।

মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণ (Microwave background radiation): আদি উত্তপ্ত মহাবিশ্ব থেকে নির্গত বিকিরণ। বর্তমানে এর এত বেশি লাল সরণ হয়েছে যে একে আর আলো হিসেবে দেখা যায় না, পাওয়া যায় মাইক্রোওয়েভ হিসেবে। মাইক্রোওয়েভ হল কয়েক সেন্টিমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ। আরো দেখুন, লাল সরণ।

মৌলিক কণিকা (Elementary particle): এমন কণিকা যাকে আর ভাঙা যায় না বলে বিশ্বাস করা হয়।

রেডার (Radar): বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে বস্তুর অবস্থান নির্ণয়ের যন্ত্র। যন্ত্র থেকে প্রেরিত সঙ্কেত বস্তুতে পৌঁছে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসতে যে সময় লাগে তা কাজে লাগিয়ে দূরত্ব বের করা হয়।

লাল বা লোহিত সরণ (Red shift): ডপলার ক্রিয়ার কারণে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া নক্ষত্রের আলোকে লাল দেখা।

সবল নিউক্লিয়ার বল (Strong force): চার প্রকারের মৌলিক বলের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বল। তবে এর পাল্লা সবচেয়ে ছোট (* বেশি দূর পর্যন্ত এর প্রভাব কাজ করে না)। এটি কোয়ার্কদেরকে যুক্ত করে প্রোটন ও নিউট্রন এবং প্রোটন ও নিউট্রনকে যুক্ত করে পরমাণু গঠন করে।  একে সংক্ষেপে সবল বলও বলা হয়।

সমানুপাতিক (Proportional): X, Y এর সমানুপাতিক হলে এর অর্থ হচ্ছে Y কে কোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করা হলে X কেও সেই সংখ্যা দ্বারা গুণ করা হবে (* এর অর্থ হবে Y যে হারে বাড়বে Xও সেই হারে বাড়বে। তবে যদি বলা হয় X, Y এর বর্গের সমানুপাতিক, তবে Y দ্বিগুণ হলে X চার গুণ হবে; Y তিন গুণ হলে X নয় গুণ হবে ইত্যাদি।) আরো দেখুন, ব্যস্তানুপাতিক।

সাধারণ বা সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব (General relativity): যে কোনো গতিতে চলা পর্যবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই হবে- এই ধারণার ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। এই থিওরি মহাকর্ষকে চতুর্মাত্রিক স্থান- কালের সাহায্যে প্রকাশ করে।

সিঙ্গুলারিটি (Singularity): স্থান- কালের এমন বিন্দু যেখানে স্থান- কালের বক্রতা (অথবা অন্য কোনো বস্তুগত রাশি) অসীম হয়। (*বাংলায় একে অনন্যতাও বলা হয়।)

স্ট্রিং থিওরি (String theory): পদার্থবিদ্যার সেই থিওরি যাতে বিভিন্ন কণিকাকে স্ট্রিং (* সুতা, দড়ি ইত্যাদি) এর কম্পন মনে করা হয়। স্ট্রিং এর শুধু দৈর্ঘ্য আছে, অন্য কোনো মাত্রা (উচ্চতা বা প্রস্থ) নেই।

স্থানাংক (Coordinates): স্থান ও কালের মধ্যে কোনো বিন্দুর অবস্থান প্রকাশ করতে যে সংখ্যাগুলো প্রয়োজন।

স্থান- কাল (Space-time): চতুর্মাত্রিক স্থান, যার বিন্দুগুলোকে ঘটনা বলা হয়।

স্থানিক মাত্রা (Spatial dimension): সময় ছাড়া অন্য তিন মাত্রার যে কোনোটি। 
Category: articles
[নোটঃ পরভাষাগুলো সাজানোর ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির বর্ণানুক্রম মেনে চলার চেষ্টা করা হয়েছে]

অনিশ্চয়তা নীতি (Uncertainty principle): হাইজেনবার্গের প্রদান করা এই নীতি যে, কোনো কণিকার অবস্থান ও বেগ একইসাথে নিশ্চিত করে জানা সম্ভব নয়। এর একটি যত বেশি নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা হবে, অপরটি সম্পর্কে পাওয়া তথ্য ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আইন্সটাইন- রোজেন সেতু (Einstein-Rosen bridge): স্থান- কালের একটি সরু টিউব, যা দুটি ব্ল্যাক হোলকে যুক্ত করে। আরো দেখুন, ওয়ার্মহোল

আলোকবর্ষ (light-year): আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে। (* মনে রাখতে এটি, আলোক-সেকেন্ড এবং এই জাতীয় এককগুলো সময়ের নয়, দূরত্বের একক)

আলোক-সেকেন্ড (Light-second): আলো এক সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে।

অ্যানথ্রোপিক নীতি (Anthropic principle): আমরা মহাবিশ্বকে এখন যেমন দেখছি এর এমন হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে, এটি যদি এমন না হত তাহলে একে পর্যবেক্ষণ করার মতো এখানে থাকতামই না।

ইলেকট্রন (Electron): নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঘুর্ণনরত নেগেটিভ বা ঋণাত্মক চার্জধারী কণিকা।

ইলেকট্রিক চার্জ বা তড়িৎ আধান (Electric charge): কণিকার এমন ধর্ম যার মাধ্যমে এটি বিপরীত চার্জধারী অন্য কণিকাকে আকর্ষণ করে এবং একই রকম চার্জধারী কণিকাকে বিকর্ষণ করে।

ইলেকট্রোউইক ইউনিফিকেশান এনার্জি (Electroweak unification energy): শক্তির যে পরিমাণকে (১০০ গিগা ইলেকট্রোভোল্ট) ছাড়িয়ে গেলে তড়িচ্চুম্বকীয় বল এবং দুর্বল নিউক্লিয়ার বলের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।

ওজোন (Weight): মহাকর্ষীয় (বা অভিকর্ষীয়) ক্ষেত্র দ্বারা কোনো বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল। এটি ভরের সমানুপাতিক কিন্তু সমান নয়। (* আমরা সাধারণত যাকে ওজোন বলি, সেটি আসলে ভর। ভরের সাথে অভিকর্ষীয় ত্বরণ গুণ করলে ওজোন পাওয়া যায়)। আরো দেখুন, অভিকর্ষীয় ত্বরণ।

ওয়ার্মহোল (Wormhole): মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী একটি পাতলা টিউব বা সুড়ঙ্গ। ওয়ার্মহোলের অপর প্রান্তে সমান্তরাল বা শিশু মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যার মাধ্যমে সময় ভ্রমণ সম্ভব হতে পারে।
মহাবিশ্বের দূরবর্তী দুটি অঞ্চলের সংযোগ প্রদানকারী একটি পাতলা টিউব বা সুড়ঙ্গকে ওয়ার্মহোল বলা হয়
কণা ত্বরকযন্ত্র (Particle accelerator): যে মেশিনের সাহায্যে ইলেকট্রোম্যাগনেট বা তড়িচ্চুম্বক ব্যবহার করে বেশি শক্তি দিয়ে দিয়ে গতিশীল চার্জধারী কণিকাদের বেগ বৃদ্ধি করা যায়।

কণা- তরঙ্গ দ্বৈততা (Wave/particle duality): কোয়ান্টাম মেকানিক্সের এই নীতি যে, কণিকা ও তরঙ্গের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো সময় কণিকা আচরণ করে তরঙ্গের মতো, আবার কখনো তরঙ্গ কণিকার মতো আচরণ করে।

কসমোলজি বা মহাবিশ্বতত্ত্ব (Cosmology): সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়ে যে শাস্রে।

কোয়ান্টাম (Quantum): কোনো পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া বস্তুর সর্বনিম্ন পরিমাণ।

কোয়ান্টাম মেকানিক্স (Quantum mechanics): প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম নীতি ও হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা নীতি থেকে প্রস্তুত করা থিওরি।

কোয়ার্ক (Quark): একটি চার্জধারী মৌলিক কণিকা, যা সবল নিউক্লিয়ার বল অনুভব করে। প্রোটন ও নিউট্রন দুটি কণিকাই তিনটি করে কোয়ার্ক দ্বারা গঠিত।

কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকুয়েন্সি (Frequency): কোনো তরঙ্গ প্রতি সেকেন্ডে যতগুলো চক্র বা কম্পন সম্পন্ন করে।

ক্ষেত্র (Field): এমন কিছু যা স্থান- কালের উল্লেখযোগ্য অংশে বিস্তৃত । এটি কণিকার বিপরীত, যা নির্দিষ্ট কোনো সময়ে শুধু একটি বিন্দুতেই অবস্থান করে।

গামা রশ্মি (Gamma rays): খুব ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তড়িচ্চুম্বকীয় রশ্মি। তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বা মৌলিক কণিকাদের সংঘর্ষের ফলে এটি উৎপন্ন হয়। আরো দেখুন, তেজস্ক্রিয়তা।

গ্র্যান্ড ইউনিফায়েড থিওরি বা মহা-সমন্বয় তত্ত্ব (Grand unified theory বা GUT): যে থিওরি তড়িচ্চুম্বকীয় এবং সবল ও দুর্বল নিউক্লিয়ার বলকে একীভূত করে।

ঘটনা (Event): নির্দিষ্ট স্থান ও সময়বিশিষ্ট স্থান- কালের উপরস্থ কোনো বিন্দু।

ঘটনা দিগন্ত (Event horizo): ব্ল্যাক হোলের সীমানা (*ব্ল্যাক হোলের চারপাশের যে অঞ্চলের বাইরে আলো আসতে পারে না)।

চৌম্বক ক্ষেত্র বা ম্যাগনেটিক ফিল্ড (Magnetic field): চৌম্বক বলের জন্যে দায়ী ক্ষেত্র। তড়িৎ ক্ষেত্রের (electric field) সাথে সমন্বিত হয়ে এটি এখন তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের অংশ।

ডার্ক ম্যাটার (Dark matter): গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সিপুঞ্জ ও এদের মাঝে অবস্থিত সেসব বস্তু যাদেরকে এখনো সরাসরি দেখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু মহাকর্ষীয় প্রভাবের কারণে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। মহাবিশ্বের অন্তত ৯০ ভাগ ভরই ডার্ক ম্যাটার।

তড়িচ্চুম্বকীয় বল (Electromagnetic force): ইলেকট্রিক চার্জধারী কণিকাদের মধ্যে যে বল কাজ করে। চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে শক্তিতে দ্বিতীয়।

তরঙ্গদৈর্ঘ্য (Wavelength): কোনো তরঙ্গের পাশাপাশি অবস্থিত দুটি চূড়া বা খাঁজের মধ্যে দূরত্ব। [চিত্র দেখুন]

তেজস্ক্রিয়তা (Radioactivity): কিছু কিছু পরমাণু নিজেই নিজেই অন্য পরমাণুতে পরিণত হবার যে প্রক্রিয়া।

দশা (Phase): নির্দিষ্ট সময়ে কোনো তরঙ্গের অবস্থান। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে তরঙ্গের অবস্থান কি খাঁজে, চূড়ায় নাকি এই দুইয়ের মাঝে অন্য কোথাও আছে।

দুর্বল নিউক্লিয়ার বল (Weak force): চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে দ্বিতীয় দুর্বল বল। এটি মহাকর্ষের চেয়ে শক্তিশালী। এরও পাল্লা খুব ছোট। এটি যে কোনো বস্তু কণাকে আকর্ষণ করে, তবে বলবাহী কণিকাকে আকর্ষণ করে না। (*একে সংক্ষেপে বলা হয় দুর্বল বল।)

নিউক্লিয়ার ফিউসান (Nuclear fusion): যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস সংঘর্ষের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে একটিমাত্র ভারী নিউক্লিয়াস গঠন করে।

নিউক্লিয়াস (Nucleus): পরমাণুর কেন্দ্রীয় অংশ। এতে সবল বলের মাধ্যমে প্রোটন ও নিউট্রন যুক্ত থাকে।

নিউট্রন (Neutron): অনেকটা প্রোটনের মতোই একটি কণিকা, তবে এতে কোনো চার্জ নেই। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের অর্ধেক কণিকা এই নিউট্রন দিয়ে পূরণ হয়।

নিউট্রন নক্ষত্র (Neutron star): সুপারনোভা বিস্ফোরণের পরে অনেক সময় যে শীতল অংশ বাকি থেকে যায়। এটি ঘটে যখন কোনো নক্ষত্রের কেন্দ্রভাগের বস্তু গুটিয়ে নিউট্রনের ঘন ভরের বস্তুতে পরিণত হয়। (*এর মহাকর্ষ এতটা শক্তিশালী যে ইলেকট্রন ও প্রোটন এক হয়ে গিয়ে পুরোটা চার্জহীন নিউট্রনে পরিণত হয়।) আরো দেখুন, নিউট্রন।

নিউট্রিনো (Neutrino): একটি অসম্ভব হালকা কণিকা, যা শুধু মহাকর্ষ এবং দুর্বল নিউক্লিয়ার বল দ্বারা প্রভাবিত হয়।

জিওডেসিক (Geodesic): দুটি বিন্দুর মধ্যে সর্বনিম্ন (বা সর্বোচ্চ) পথ। (*গোলকের মতো ধনাত্নক বক্রতার ক্ষেত্রে এটি হবে সর্বনিম্ন পথ। আর ঘোড়ার জিনের মত আকৃতির বস্তুর ঋণাত্মক বক্রতার ক্ষেত্রে এটি হবে সর্বোচ্চ দূরত্ব)

ত্বরণ (Acceleration): যে হারে (সময়ের পরিবর্তনের সাথে) কোনো বস্তুর বেগ পরিবর্তন হয়।

দ্বৈততা (duality):  আপাত দৃষ্টিতে আলাদা হলেও একই ফলাফল প্রদান করা দুটো থিওরির মধ্যে সম্পর্ক।  আরো দেখুন, কণা/ তরঙ্গ দ্বৈততা।

পজিট্রন (Positron): ইলেকট্রনের ধনাত্মক চার্জধারী প্রতিকণিকা। আরো দেখুনঃ প্রতিকণিকা।

পরম শূন্য তাপমাত্রা (Absolute zero temperature): সর্বনিম্ন সম্ভাব্য সেই তাপমাত্রা, যাতে বস্তুর কোনো তাপ শক্তি থাকে না।

পরমাণু (Atom): সাধারণ বস্তুর মৌলিক একক। এতে একটি ক্ষুদ্র নিউক্লিয়াসের (প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে তৈরি) চারপাশে ইলেকট্রনরা কক্ষপথে ঘুরতে থাকে।

প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম নীতি (Planck’s quantum principle): এই ধারণা যে, আলো (বা অন্য যে কোনো প্রচলিত তরঙ্গ) শুধু বিচ্ছিন্ন কোয়ান্টা আকারে নির্গত হয়, যার শক্তি এর কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যস্তানুপাতিক। আরো দেখুনঃ সমানুপাতিক ও ব্যস্তানুপাতিক।

প্রতিকণিকা (Antiparticle): বস্তুর প্রতেকটি কণিকার বিপরীতে একটি প্রতিকণিকা আছে (*যার চার্জ ছাড়া আর সব ধর্ম কণিকার মতোই। যেমন ইলেকট্রনের প্রতিকণিকা পজিট্রন, যার চার্জ +১।)। কণিকা ও প্রতিকণিকার মধ্যে সংঘর্ষ হলে দুটিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, বিনিময়ে পাওয়া যায় শক্তি।

প্রান্থীনতার শর্ত (No-boundary condition): এই ধারণা যে, মহাবিশ্বের সাইজ সসীম কিন্তু এর কোনো সীমানা বা প্রান্ত নেই।

প্রোটন (Proton): প্রায় নিউট্রনের মতোই একটি কণিকা। কিন্তু এর রয়েছে ধনাত্মক চার্জ। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের কণিকাদের প্রায় অর্ধেকসংখ্যক এরা।

ফোটন (Photon): আলোর একটি কোয়ান্টাম। আরো দেখুনঃ কোয়ান্টাম।

বর্ণালী (Spectrum): একটি তরঙ্গের উপাদান কম্পাঙ্কগুলো। সৌরবর্ণালীর দৃশ্যমান অংশ রংধনুতে দেখা যায়।

বিগ ব্যাঙ (Big bang): মহাবিশ্বের শুরুতে যে সিঙ্গুলারিটি ছিল। আরো দেখুন, সিঙ্গুলারিটি।

বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব (Special relativity): মহাকর্ষের অনুপস্থিতিতে যে কোনো বেগে গতিশীল সকল পর্যেবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই থাকবে- এই নীতির ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। (*কাল দীর্ঘায়ন, দৈর্ঘ সঙ্কোচন, ভর-শক্তি সমতুল্যতা ইত্যাদি এই থিওরির ফসল।)। আরো দেখুন, সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব।

ব্যস্তানুপাতিক (inversely proportional): X, Y এর ব্যস্তানুপাতিক হলে এর অর্থ হচ্ছে Y কে কোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে X কে সেই সংখ্যা দ্বারা ভাগ দেওয়া হচ্ছে। (*অর্থ্যাৎ, Y যত গুণ বাড়বে, X তত গুণ কমে যাবে। যেমন Y দ্বিগুণ হলে X হয়ে যাবে অর্ধেক। Y তিন গুণ হলে X হবে তিন ভাগের এক ভাগ। তবে যদি বলা হয় X, Y এর বর্গের ব্যস্তানুপাতিক, তাহলে Y দ্বিগুণ হলে X হবে চার ভাগের এক ভাগ।) আরো দেখুন, সমানুপাতিক।

ব্ল্যাক হোল (Black hole): স্থান- কালের এমন অঞ্চল যেখানে মহাকর্ষ এত শক্তিশালী যে এখান থেকে কোনো কিছুই বের হয়ে আসতে পারে না, এমনকি আলোও না। (*বাংলা নাম কৃষ্ণগহ্বর বা কৃষ্ণবিবর)

ভর (Mass): কোনো বস্তুতে উপস্থিত পদার্থের পরিমাণ; বস্তুর জড়তা বা ত্বরণের প্রতি বাধা।

ভার্চুয়াল কণিকা (Virtual particle): যে কণবিকাদেরকে সরাসরি দেখা যায় না, কিন্তু পরিমাপযোগ্য প্রতিক্রিয়া থাকে।

মহাজাগতিক ধ্রুবক (Cosmological constant): স্থান- কালের সহজাত ধর্মই হচ্ছে প্রসারিত হওয়া- এমন ব্যাখ্যা দেবার জন্যে আইনস্টাইনের উদ্ভাবিত গাণিতিক ধ্রুবক। (*পরে দেখা গিয়েছিল এই ধ্রুবক আনা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। কিন্তু এখন আবার এর প্রয়োজন আছে বলে মনে হচ্ছে)।

মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণ (Microwave background radiation): আদি উত্তপ্ত মহাবিশ্ব থেকে নির্গত বিকিরণ। বর্তমানে এর এত বেশি লাল সরণ হয়েছে যে একে আর আলো হিসেবে দেখা যায় না, পাওয়া যায় মাইক্রোওয়েভ হিসেবে। মাইক্রোওয়েভ হল কয়েক সেন্টিমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ। আরো দেখুন, লাল সরণ।

মৌলিক কণিকা (Elementary particle): এমন কণিকা যাকে আর ভাঙা যায় না বলে বিশ্বাস করা হয়।

রেডার (Radar): বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে বস্তুর অবস্থান নির্ণয়ের যন্ত্র। যন্ত্র থেকে প্রেরিত সঙ্কেত বস্তুতে পৌঁছে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসতে যে সময় লাগে তা কাজে লাগিয়ে দূরত্ব বের করা হয়।

লাল বা লোহিত সরণ (Red shift): ডপলার ক্রিয়ার কারণে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া নক্ষত্রের আলোকে লাল দেখা।

সবল নিউক্লিয়ার বল (Strong force): চার প্রকারের মৌলিক বলের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী বল। তবে এর পাল্লা সবচেয়ে ছোট (* বেশি দূর পর্যন্ত এর প্রভাব কাজ করে না)। এটি কোয়ার্কদেরকে যুক্ত করে প্রোটন ও নিউট্রন এবং প্রোটন ও নিউট্রনকে যুক্ত করে পরমাণু গঠন করে।  একে সংক্ষেপে সবল বলও বলা হয়।

সমানুপাতিক (Proportional): X, Y এর সমানুপাতিক হলে এর অর্থ হচ্ছে Y কে কোনো সংখ্যা দ্বারা গুণ করা হলে X কেও সেই সংখ্যা দ্বারা গুণ করা হবে (* এর অর্থ হবে Y যে হারে বাড়বে Xও সেই হারে বাড়বে। তবে যদি বলা হয় X, Y এর বর্গের সমানুপাতিক, তবে Y দ্বিগুণ হলে X চার গুণ হবে; Y তিন গুণ হলে X নয় গুণ হবে ইত্যাদি।) আরো দেখুন, ব্যস্তানুপাতিক।

সাধারণ বা সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব (General relativity): যে কোনো গতিতে চলা পর্যবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই হবে- এই ধারণার ভিত্তিতে তৈরি আইনস্টাইনের থিওরি। এই থিওরি মহাকর্ষকে চতুর্মাত্রিক স্থান- কালের সাহায্যে প্রকাশ করে।

সিঙ্গুলারিটি (Singularity): স্থান- কালের এমন বিন্দু যেখানে স্থান- কালের বক্রতা (অথবা অন্য কোনো বস্তুগত রাশি) অসীম হয়। (*বাংলায় একে অনন্যতাও বলা হয়।)

স্ট্রিং থিওরি (String theory): পদার্থবিদ্যার সেই থিওরি যাতে বিভিন্ন কণিকাকে স্ট্রিং (* সুতা, দড়ি ইত্যাদি) এর কম্পন মনে করা হয়। স্ট্রিং এর শুধু দৈর্ঘ্য আছে, অন্য কোনো মাত্রা (উচ্চতা বা প্রস্থ) নেই।

স্থানাংক (Coordinates): স্থান ও কালের মধ্যে কোনো বিন্দুর অবস্থান প্রকাশ করতে যে সংখ্যাগুলো প্রয়োজন।

স্থান- কাল (Space-time): চতুর্মাত্রিক স্থান, যার বিন্দুগুলোকে ঘটনা বলা হয়।

স্থানিক মাত্রা (Spatial dimension): সময় ছাড়া অন্য তিন মাত্রার যে কোনোটি। 
Category: articles

রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬





শীতের আকাশে উজ্জ্বল তারাদের আধিপত্য একটু বেশিই থাকে। রাতের আকাশের অন্যতম সহজে খুঁজে পাওয়া তারামণ্ডলী আদম সুরত। এর ইংরেজি নাম Orion এবং আরেকটি বাংলা নাম কালপুরুষ। এতেই আছে দুটি টপ টেনের মধ্যে থাকা উজ্জ্বল নক্ষত্র। একটি হচ্ছে উজ্জ্বলতার দৌড়ে সপ্তম রিগেল এবং অপরটি নবম স্থানে থাকা বিটলজুস (Betelgeuse) বা বাংলায় আর্দ্রা।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই আদম সুরতই আপনাকে অন্য উজ্জ্বল তারকাগুলো চিনিয়ে দেবে।
আদমের কোমরের তিনটি তারাকে যোগ করে দক্ষিণে যেতে থাকলে পেয়ে যাবেন রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধক (Sirius)।

অন্য দিকে তিনটি তারা যোগ করে উল্টো দিকে মানে উত্তরে গেলে পাবেন বৃষরাশির উজ্জ্বলতম নক্ষত্র আলডেবারান।

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এক্স-রে (নীল) ও রেডিও (লাল) ডেটার সমন্বয়ে প্রস্তুত ছবি। ছবিটি বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। 
ছবিতে দূর মহাকাশের একটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলের ৩ লাখ আলোকবর্ষ ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নিক্ষিপ্ত কণার একটি বিশাল ফোয়ারা (jet) দেখা যাচ্ছে। 
পিকটর এ (Pictor A) নামক গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাক হোলের প্রভাবে সৃষ্ট এই ফোয়ারার ছবিটি নাসা গত ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে প্রকাশ করেছে। গ্যালাক্সিটি পৃথিবী থেকে ৫০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। ব্ল্যাক হোলে পতনশীল বস্তুর প্রভাবে বাইরের দিকে কণিকার বিশাল প্রবাহ বা ফোয়ারা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে যা প্রায় আলোর বেগে ছড়িয়ে পড়ছে আন্তঃছায়াপথীয় (Intergalactic) স্থানে। ছবিটি পেতে নাসার চন্দ্রা এক্স-রে অবজারভেটরি ১৫ বছর ধরে কাজ করে গিয়েছে। চন্দ্রার এক্স-রে ডেটার (নীল) সাথে অস্ট্রেলিয়া টেলিস্কোপ কমপ্যাক্ট অ্যারে এর রেডিও ডেটা (লাল) সমন্বয় করে প্রস্তুত করা হয় ছবিখানা। 
পিকটর এ গ্যালাক্সির কেন্দ্র থেকে এই ফোয়ারা অবিরত ছড়িয়ে পড়ছে ৩ লাখ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিরই ব্যাস মাত্র ১ লাখ আলোকবর্ষ। 
গবেষকরা বলছেন, ছবির ডান দিকে যেমন একটি ফোয়ারা দেখা যাচ্ছে, তেমনি এর বিপরীত দিকে আরেকটি ফোয়ারা কাজ করছে, যাকে বলা হচ্ছে প্রতি-ফোয়ারা (counterjet)। এর আগেও প্রতি ফোয়ারার অস্তিত্ব সম্পর্কে ধারণা করা হয়েছিল। তবে, এবারে এর নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল। পৃথিবী থেকে উল্টো দিকে অবস্থিত হওয়াতে সম্ভবত প্রতি-ফোয়ারাকে অনুজ্জ্বল দেখাচ্ছে। 
ছবিতে আরো দেখা যাচ্ছে রেডিও লোব, যেখানে ফোয়ায়ার ধাক্কায় পাশ্ববর্তী গ্যাসে শক ওয়েভজনিত হটস্পট তৈরি হচ্ছে। ফোয়ারার মাথায় অবস্থিত এই হটস্পট অনেকটা সুপারসনিক বিমানের সনিক বুমের মত। 
চন্দ্রার ছবিতে দেখা ফোয়ারা ও প্রতি-ফোয়ারা সম্ভবত চৌম্বকক্ষেত্র রেখার চারপাশে ঘূর্ণনরত ইলেকট্রনের প্রভাবে তৈরি হচ্ছে। এই প্রক্রিয়াটির নাম সিনক্রোট্রন এমিসন (synchrotron emission)। এই ক্ষেত্রে বাইরের দিক নির্গত ইলেকট্রনকে অবশ্যই প্রতি মুহূর্তে বেগ বৃদ্ধি করতে হয়। এটা কিভাবে ঘটে তা এখনো বিজ্ঞানীদের ভালো জানা নেই। এই ফলাফলগুলোর বিবরণ দিয়ে একটি পেপার রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক প্রকাশনায় স্থান পাচ্ছে।
সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles
প্লুটো গ্রহের আবিষ্কারক কে? বামন গ্রহটির আবিষ্কারক আমেরিকান জ্যোতির্বিদ ক্লাইড টমবাউ। আজকের দিনটি তাঁর জন্মের ১১০ জন্মবার্ষিকী।
১৯২৮ সালে পারিবারিক খামারে বাসায় নির্মিত টেলিস্কোপের পাশে দাঁড়িয়ে প্লুটোর আবিষ্কারক ক্লাইড টমবাউ। 

টমবাউ বড় হন ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের একটি কৃষক পরিবারে। তিনিও কাজ করতেন খামারেই। শিলাঝড়ের (Hailstorm) কবলে পড়ে তাঁর পরিবারের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আর্থিক অভাবে পড়ে যান তাঁরা। পড়াশোনার আশা ছেড়ে দিতে হয়ে তাঁকে। কিন্তু জ্যোতির্বিদ হবার আশা কখনো মাটিতে পড়তে দেননি তিনি। জ্যোতির্বিদ্যার জন্যে প্রয়োজনীয় গাণিতিক দক্ষতা নিজে নিজেই হাসিল করলেন। শিখলেন জ্যামিতি এবং ত্রিকোণমিতি। তিনি বলেছেন, 
আপনি কি ভাবতে পারেন, বর্তমান সময়ে একটি কিশোর শুধু মজা পাবার জন্যে ত্রিকোণমিতি শিখতে পারে? আমি তাই করেছি।
বাসায় বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ দেখতেন তিনি। কিছু পরামর্শের আশায় অ্যারিজোনার লয়েল অবজারভেটরিতে নিজের আঁকা মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের ড্রয়িং পাঠালে পরামর্শের বদলে পেয়ে যান চাকরির প্রস্তাব। ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করেন।
এখানে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল প্ল্যানেট এক্স খুঁজে বের করা। অবজারভেটরির প্রতিষ্ঠতা পারসিভাল লয়েলও গ্রহটিকে খুঁজছিলেন। এর আগে তিনি (লয়েল সাহেব) মঙ্গল গ্রহের খাল আবিষ্কার করে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯১৬ সালে লয়েল মারা গেলেও গ্রহটির অনুসন্ধানকার্য চলতে থাকে।
টমবাউ এর দায়িত্বই ছিল লয়েলের কাজটিকে চালু রাখা। এক বছর পর, ১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে উদ্দেশ্য সফল হল। ক্লাইড টমবাউ পেয়ে গেলেন প্লুটোকে। কৃতিত্বের জন্যে টমাবাউ স্কলারশিপ পেলেন। পাশাপাশি পেলেন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৯ সালে তিনি ফরমাল শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
কিন্তু জ্যোতির্বিদগণ প্ল্যানেট এক্সকে খুঁজছিলেন কেন? উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতেন, কিছু একটা সপ্তম গ্রহ ইউরেনাসের কক্ষপথে নাক গলাচ্ছে। সেই সময় ইউরেনাসই ছিল সবচেয়ে বহিঃস্থ জানা গ্রহ।বোঝা গেল, ইউরেনাসের বাইরেও কেউ আছে। এর অবস্থানও নির্ণয় করা হল এবং অবশেষে ১৮৪৬ সালে পাওয়া গেল নেপচুন গ্রহ।
আরো পড়ুনঃ নেপচুন আবিষ্কারের কাহিনী

কিন্তু দেখা গেল নেপচুনের কক্ষপথও রহস্যময় আচরণ করছে। ফলে, জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হলেন, নেপচুনের বাইরেও আরেকটি অজানা গ্রহ আছে। এরই নাম দেওয়া হয় প্ল্যানেট এক্স। একে খুঁজতে গিয়েি বের হয়ে পড়ল প্লুটো। কিন্তু একে পাবার পরে দেখা গেল, নেপচুনের কক্ষপথের রহস্যময়তা ব্যখ্যা করার সাধ্য প্লুটোর নেই। এর ভর তুলনামূলকভাবে অতি সামান্য। পরে এর অন্য ব্যখ্যা পাওয়া গিয়েছিল।
নানা কারণে ২০০৬ সালে প্লুটো গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে গেল। পরিচিতি পেল বামন গ্রহ হিসেবে। বর্তমানে আমাদের সৌরজগতে আরো অনেক বস্তুই এই পরিচয় বহন করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হোমিয়া, মাকিমাকি, সেরেস ইত্যাদি।
কিন্তু প্ল্যানেট এক্সের কী হল? মজার ব্যাপার হল, ২০১৬ সালের শুরুতে ক্যালটেকের জ্যোতির্বিদরা ঘোষণা দিয়েছেন, প্লুটোর কক্ষপথের বাইরে আরেকটি বড় গ্রহ আছে যার ভর পৃথিবীর ১০ গুণ। ধারণা করা হচ্ছে, নেপচুন থেকে ২০ গুণ দূরে এর কক্ষপথ অবস্থিত এবং সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ২০ হাজার বছর।

সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles

বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আজকে সহ আগামী দিনগুলোতে ভোরের আকাশে দেখা যাচ্ছে গ্রহদের। বুধ, শুক্র ও শনি ভোরের দিকে দেখা যাবে। তবে, অন্য দুটি গ্রহ- বৃহস্পতি ও মঙ্গল ভোরের অনেক আগেই হাজির হবে রাতের আকাশে।
বিস্তারিত দেখুন- ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রহরা কে কোথায়
Category: articles

মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এক সাথে পাঁচটি গ্রহ- বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি দেখার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এ মাসের প্রথম সপ্তাহটি। গত মাসের ২০ তারিখে শুরু হওয়া এই সুযোগটি চলবে এ মাসেও (২০ তারিখ নাগাদ)। প্রথম সপ্তাহে এদের আশেপাশে চাঁদের অবস্থান রাতের আকাশের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়েই তুলবে। চাঁদের সাথে মঙ্গলের দেখা ২ তারিখে, শনির ৪ তারিখে, শুক্রের ৬ তারিখে এবং বুধের সাথে দেখা ৭ তারিখে। চলুন বিস্তারিত দেখি!
ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে গ্রহদের আপাত অবস্থান

বুধঃ
জানুয়ারির শেষের সপ্তাহে বুধ গ্রহ সূর্যোদয় থেকে দূরে সরে এসে অন্য দৃশ্যমান গ্রহদের মিছিলে যোগ দেয়। এ মাসের ৬, ৭ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের খুব কাছে। মাসের ৭ তারিখের আশেপাশের দিনগুলো বুধ গ্রহ দেখার সেরা সময়। সূর্যের প্রায় ৮০ মিনিট আগেই এ সময়গুলোতে বুধ ভোরের পূবাকাশে তার অস্তিত্ব জানান দেবে। মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ এটি শুক্রের খুব কাছে থাকবে।
মার্চ মাসের ২৩ তারিখে এটি আবার চলে যাবে সন্ধ্যার আকাশে। উল্লেখ্য, এই গ্রহটিই সবচেয়ে বেশি ভোর ও সন্ধ্যার আকাশে আসা-যাওয়া করে।
বুধ ও শুকতারা


শুক্রঃ
এ মাসে শুক্রের অবস্থান অপর দুই গ্রহ বুধ ও শনির মাঝখানে। গত মাসেই শনি এর উপরে চলে এসেছিল। রাতের আকাশের জনপ্রিয় বস্তু শুকতারা এ মাসে দ্রুত সূর্যের কাছাকাছি হচ্ছে। মাসের শুরুতে এটি সূর্যের ২ ঘণ্টা আগে উদিত হলেও মাসের শেষের দিকে পূবাকাশে দেখা দিতে দিতে সূর্যোদয়ের এক ঘণ্টা বাকি থাকবে। মাসের ৬ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের কাছে। মাসের ১১ থেকে ১৫ তারিখে এটি বুধের এত কাছে থাকবে যে দুজনকে এক সাথে বাইনোকুলারে দেখা যাবে।
চাঁদ, বুধ ও শুক্র

বৃহস্পতিঃ
ইদানিং রাতের আকাশে সবার আগে উপস্থিত হয় বৃহস্পতি। মধ্য রাতের আগেই শুভকাজটি সেরে ফেলে গ্রহরাজ। অন্য দিকে মাসের শেষের দিকে এটি সূর্যাস্তের একটু পরেই (প্রায় দেড় ঘণ্টা) পূর্ব আকাশে দেখা দেবে। এ মাসে মঙ্গল ও বৃহস্পতি দুজনেই বেশ উর্ধ্বাকাশে (দিগন্ত থেকে অনেক উপরে) থাকবে। ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে বৃহস্পতি থাকবে চাঁদের খুব কাছাকাছি।
 

মঙ্গলঃ
বৃহস্পতি বা শুক্রের মত এতটা উজ্জ্বল না হলেও এ মাসে মঙ্গলকে খুব সহজে দেখা যাবে। এ মাসে এর অবস্থান শনি ও বৃহস্পতির মাঝখানে। কন্যামণ্ডলীর উজ্জ্বলতম নক্ষত্র চিত্রা (Spica) এ মাসে এর কাছাকাছি থাকলেও মঙ্গলের লাল রঙ একে চিনতে সুবিধা করে দেবে। খালি চোখে অসুবিধা হলে বাইনোকুলার ঠিকই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে দেবে। এ বছরে আগস্টের সন্ধ্যার আকাশে মঙ্গল ও শনি খুব কাছাকাছি থাকবে। আগামী কয়েক মাস মঙ্গল ক্রমেই উজ্জ্বল হতে থাকবে এবং মে মাসে এটি উজ্জ্বলতার শীর্ষে পৌঁছে বৃহস্পতির সাথেও টেক্কা দেবে যেখানে শুক্রের পরে ২য় উজ্জ্বল গ্রহের তিলক বৃহস্পতির কপালে। 
চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহ

শনিঃ
পুরো মাস জুড়ে শনি থাকবে ভোরের গ্রহ। মাসের শুরুতে এটি সূর্যোদয়ের ৪ ঘণ্টা ও মাসের শেষের দিকে ৫ ঘণ্টা আগে উদিত হবে। মাসের ৪ তারিখে চাঁদের সাথে অবস্থান একে খুঁজে পেতে ভূমিকা পালন করবে। এটিই সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের বস্তু যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই। 
তো! দেখতে থাকুন! 
Category: articles

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

শুক্র গ্রহের একটি অন্যতম ডাক নাম শুকতারা। অন্য দিকে একে সন্ধ্যাতারাও বলা হয়। অথচ বেচারা মোটেই তারা বা নক্ষত্র নয়, সৌরজগতের একটি গ্রহ মাত্র। ইংরেজিতেও একে ভুল করে star বলা হয়- যথাক্রমে Morning star ও Evening star। কিন্তু নক্ষত্র বা তারা না হওয়া সত্ত্বেও একে কেন তারা বলা হয়? এর তো নিজস্ব আলো নেই। এটিও চাঁদের মতই সূর্যের আলোই প্রতিফলিত করে।
ভোরের আকাশে শুকতারার ছবি 

শুক্র গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে সূর্যের নিকটে থাকায় এর কক্ষপথ পৃথিবীর চেয়েও ভেতরের দিকে। এ কারণে, বুধের মতই এটিও সব সময় সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে। পৃথিবীর আকাশে এটি যখন সূর্যের পেছনে থাকে (সূর্যের পরে উদয়-অস্ত ঘটার কারণে), তখন সূর্যাস্তের পরেই পশ্চিমাকাশে এটি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল থাকার সময়গুলোতে এটি সূর্য ডোবার কয়েক মিনিট পরেই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এ সময় একে আমরা সন্ধ্যাতারা বলি (Evening star)।
অন্য দিকে, এটি পৃথিবীর আকাশে সূর্যের চেয়ে এগিয়ে থাকলে এটি সূর্যের আগেই অস্ত যায়। এ সময় একে সন্ধ্যার আকাশে দেখা যায় না। কিন্তু সূর্যের আগে অস্ত গিয়েছে এ কারণেই যে এটি আসলে ভোরে উদিতও হয়েছিল সূর্যের আগে। ফলে, এই সময়গুলোতে একে ভোরের আগে পূবাকশে দেখা যায়। সূর্য উদিত হয়ে এর আলোতে মিলিয়ে যায় এর আলো। এ অবস্থায় একে আমরা বলি সন্ধ্যাতারা।

প্রাচীন গ্রিকরা শুকতারা ও সন্ধ্যাতারাকে দুটি আলাদা বস্তু মনে করত। তারা এদেরকে যথাক্রমে ফসফোরস (Phosphoros) ও হেসপেরোস (Hesperos) নাম দিয়েছিল। প্রথমটির অর্থ আলো আনয়নকারী ও সন্ধ্যার তারা। কয়েকশো বছর পরে তারা বুঝতে পারে যে, এরা দুজন আসলে একই বস্তু।
সূত্রঃ
১। ইউনিভার্স টুডে
Category: articles
জ্যোতির্বিদ্যা মানেই বিশাল বিশাল দূরত্বের হিসাব। মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর দূরত্ব নির্ণয়ের জন্যে আলাদা আলাদা একক ব্যবহৃত হয়। 


অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (Astronomical unit) বা এইউ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক একক। এটি হলো পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণের সময় এই সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব পরিবর্তিত হয়। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে এর কক্ষপথের অনুসূর ও অপসূর অবস্থানে যথাক্রমে নিকটতম ও দূরতম অবস্থানে থাকে। 

বর্তমানে এক এইউ সমান ধরা হয় ১,৪৯,৫৯,৭৮,৭০,৭০০ মিটার যা প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার বা ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইলের সমান। সাধারণত সৌরজগতের বিভিন্ন বস্তুদের দূরত্বের হিসাব করতে এই এককটি ব্যবহৃত হয়।


আরও দূরের বস্তুর জন্য ব্যবহার করা হয় আলোকবর্ষ। এটি আলোর এক বছরে অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান। 
সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টোরি ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকের দূরত্ব ৮.৬ আলোকবর্ষ। নিকটবর্তী নক্ষত্রদের দূরত্ব নির্ণয়ে এই একক কাজে লাগে।



পৃথিবী থেকে বিভিন্ন বস্তুর দূরত্ব।

আরেকটু বড় একক পারসেক (pc)। এক পারসেক সমান ৩.২৬ আলোকবর্ষ। পারসেকের হিসাবে প্রক্সিমা সেন্টোরি ১.৩ একক দূরে অবস্থিত। রাতের আকাশের খালি চোখে দেখা যাওয়া নক্ষত্রদের অধিকাংশই সূর্যের ৫০০ পারসেকের মধ্যে অবস্থিত। 


আরও দূরের জিনিসের ক্ষেত্রে পারসেকও কাজে আসে না। দরকার হয় আরও বড় একক। এই যেমন কিলোপারসেক (kpc)। এক পারসেকের ১ হাজার গুণ। গ্যালাকটিক স্কেলের দূরত্ব মাপতে ব্যবহৃত হয়। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাস ৩৪ কিলোপারসেক।

এক পারসেকের ১০ লক্ষ গুণ হলো মেগাপারসেক (Mpc)। নিকটবর্তী গ্যালাক্সিদের দূরত্ব মাপার জন্য এই একক কাজে আসে। আনড্রোমিডা গ্যালাক্সি ০.৭৬৫ Mpc দূরত্বে অবস্থিত। অন্য দিকে আমাদের নিকটতম বড় গ্যালাক্সি স্তবক ভার্গো ক্লাস্টার (Virgo Cluster) আছে ১৬.৫ Mpc দূরে।

Category: articles
আমরা জানি, গ্রহদের অন্তত দুটি গতি আছে- আবর্তন গতি ও সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ গতি। অবশ্য এরা সূর্যের সাথে সাথে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিকে কেন্দ্র করেও ঘুরছে। সেটা আলাদা কথা। এখানে আমরা গ্রহদের আবর্তন নিয়ে কথা বলছি।

পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, শুক্র এবং ইউরেনাস ছাড়া সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে ঘোরে। অন্য কথায়, গতিটি হচ্ছে পশ্চিম থেকে পূবে। এটা একই সাথে সূর্যের চারপাশে গ্রহদের প্রদক্ষিণেরও দিক। ধারণা করা হয়, একটি বড়সড় গ্রহাণুর আঘাতে ইউরেনাসের আবর্তন গতি খেই হারিয়ে ফেলে। ফলে, এর আবর্তনের দিক এর প্রদক্ষিণ দিকের সাথে প্রায় সমকোণে তথা ৯০ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়ে। অন্য দিকে, অন্য গ্রহের তুলনায় শুকতারা নামে পরিচিত শুক্র গ্রহের গতি একেবারেই উল্টো দিকে। অর্থ্যাৎ, এর আবর্তন হয় পূর্ব থেকে পশ্চিমে। এ কারণে, এই গ্রহে সূর্যোদয় ঘটে পশ্চিমে!
ধারনা করা হয়, এরও উল্টো গতির পেছনে দায়ী কোন গ্রহাণু।

সূত্রঃ 
১। কর্নেল ইউনিভার্সিটি
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

সৌরজগতের গ্রহরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে। পৃথিবী নামক আমাদের গ্রহটি একবার সূর্যকে ঘুরে আসতে যে সময় নেয়, তাকে আমরা এক বছর বলি। সূর্যও কিন্তু নির্দিষ্ট কোন জায়গায় বসে নেই। সৌরজগতের সবকিছুকে সাথে নিয়ে আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণ করে চলছে। প্রদক্ষিণের এই বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার! মাইলের হিসাবে এটি দাঁড়ায় ৫ লক্ষে। তাহলে বলা চলে, মাত্র ৯০ সেকেন্ডে আমরা ২০ হাজার কিলোমিটার (বা সাড়ে ১২ হাজার মাইল) পথ অতিক্রম করছি!
নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, বেগটি অনেক বিশাল। তা ঠিক। কিন্তু অতিক্রম করার জন্যে যদি সামনে অনেক বিশাল পথ পড়ে থাকে তখন কিন্তু বেগটাকে আর লক্ষ্যণীয় মনে হয় না। যেমন, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাসই হচ্ছে ১ লাখ আলোকবর্ষ। মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে দুই-তৃতীয়াংশ দূরত্বে তথা ২৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের অবস্থান। ফলে, মিল্কিওয়েকে একবার ঘুরে আসতে সূর্যের ২২.৫ থেকে ২৫ কোটি বছর সময় লেগে যায়। এই সময়কে বলা হয় কসমিক ইয়ার বা মহাজাগতিক বর্ষ (Cosmic year)।
মিল্কিওয়ে ছায়াপথে সূর্যের অবস্থান 
আমরা জানলাম, সূর্য এক জায়গায় বসে নেই। আমাদের পৃথিবীর মতই প্রদক্ষিণের পাশাপাশি সূর্যও কিন্তু আবার নিজের অক্ষের সাপেক্ষেও ঘোরে। একে আমরা বলি আবর্তন। তবে, পৃথিবীর মত এর সর্বত্র আবর্তন বেগ সমান নয়। সৌরদাগ (Sunspot) দেখে বোঝা যায় সূর্যের বিষুব অঞ্চল প্রতি ২৭ দিনে এক বার আবর্তন করে। মেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই সময়ের মান ৩১ দিন। তাছাড়াও প্লাজমা পদার্থে গঠিত সূর্যের কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে আবর্তন বেগের মান আলাদা।
শিল্পীর তুলিতে সৌরজগতের ছবি
কিন্তু মিল্কিওয়ের কী খবর? ছায়াপথটিকি স্থির বসে আছে? প্রথমত এর রয়েছে আবর্তন গতি। সূর্যের মতই কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে এর বেগ ভিন্ন ভিন্ন। আমাদের সূর্যের দূরত্বে এটি ২০ কোটি বছরে এক বার আবর্তন করে। ছায়াপথটিকে প্রদক্ষিণ করতে সূর্যের প্রয়োজনীয় সময় থেকে এই হিসাব বের করা হয়েছে।
কিন্তু গ্যালাক্সিরাকি অন্য কাউকে কেন্দ্র করে ঘোরে? কখনো এরা একে অপরকে প্রদক্ষিন করে। অনেক সময় আবার দল বা গুচ্ছবদ্ধ গ্যালাক্সিরা এদের সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি লোকাল গ্রুপের অন্যান্য গ্যালাক্সিদের সাথে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ছোট ও বড় ম্যাজেলানিক ক্লাউড, অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি, ট্রায়াঙ্গুলাম গ্যালাক্সি (Triangulum)। এদের সমন্বিত কার্যক্রমে ঠিক সূর্যের মত কোন কক্ষপথ তৈরি করতে পারেনি। এটা আসলে অনেকটা জোড়াতারা বা বহুতারাজগতে যেমন দুই বা অনেকগুলো তারা সবার সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে ঠিক সে রকম আচরণ করে। অবশ্য আরো ৪ বিলিয়ন বছর পরে মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাকটিক সংঘর্ষে লিপ হবে।
সূত্রঃ
১। Earth Sky
২। Harvard University
৩। কর্নেল ইউনিভার্সিটি

Category: articles
ম্যাগনেটারকি কোন ধরনের চুম্বকীয় নক্ষত্র? দেখা যাক!
হ্যাঁ, অদ্ভুত জিনিস ম্যাগনেটার আসলে এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্র। এর শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র থেকে  উচ্চ শক্তিসম্পন্ন এক্স-রে ও গামা রশ্মি নির্গত হয়। মহাবিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম নক্ষত্রদের জীবনের অন্তিম সময়ে নিউট্রন স্টার জন্ম লাভ করে। নক্ষত্রদের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এর নিজস্ব অভিকর্ষের চাপে এটি নিজেই গুটিয়ে ছোট হয়ে যায়। ঘনত্ব বেড়ে হয়ে যায় অনেক বেশি।
ম্যাগনেটার এর ছবি। এরা হচ্ছে নিউট্রন নক্ষত্রের একটি জাত। 
শক্তিশালী অভিকর্ষের কারণে নিউট্রন স্টার এবং একই কারণে ম্যাগনেটাররা মহাবিশ্বের অন্যতম উচ্চ-ঘনত্ব বিশিষ্ট বস্তু। সত্যি বলতে, এরা এতটাই ঘন যে এদের এক চায়ের কাপ পরিমাণ পদার্থ মিশরের ৯০০ পিরামিডের ভরের সমান হয়ে যাবে।
সূত্রঃ
১। স্পেইস আনসার
Category: articles
মঙ্গল গ্রহ যে লাল দেখায় সেটা রাতের আকাশে খালি চোখে পৃথিবী থেকেও দেখা যায়।  কিভাবে গ্রহটি তার বিখ্যাত লাল রঙটি পেল?
মঙ্গলের লাল পৃষ্ঠের ছবি
মঙ্গল গ্রহের ছবিতে দেখা লাল রঙটি এর পৃষ্ঠের লোহার মরিচা ধরার ফলাফল। মঙ্গলের পৃষ্ঠে উপস্থিত মাটি ও পাথরের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে আয়রন (লোহা)। পাশাপাশি সামান্য পরিমাণ ক্লোরিন ও সালফারও রয়েছে। বায়ুস্রোতের প্রভাবে মাটি ও পাথর ক্ষয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। অন্য দিকে, প্রাচীন আগ্নেয়গিরি পৃষ্ঠজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছিল ধূলিকণাদের।
ধুলিকণার মধ্যে থাকা আয়রন অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে পৃষ্ঠকে লাল বানিয়ে তোলে। অন্য দিকে, মঙ্গলের আকাশও কিন্তু লাল। এর কারণ, ঝড়ের সময় ধূলিকণা পৌঁছে গিয়েছিল এর বায়ুমণ্ডলেও। মঙ্গল গ্রহের ধূলিময় পৃষ্ঠ কয়েক মিলিমিটার থেকে সর্বোচ্চ ২ মিটার পর্যন্ত পুরু। এর নিচেই রয়েছে প্রধান্ত ব্যাসাল্টের ঘনীভূত লাভা। এই ব্যাসাল্টে লোহার ঘনত্ব পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি। ফলাফল- মঙ্গলের লাল বেশ।
মঙ্গল গ্রহ দেখতে লাল- নিজের চোখে দেখতে চান? আপনার জন্যেই আমাদের নিয়মিত আয়োজনঃ রাতের আকাশ। এই সেকশন থেকে গ্রহদের খোঁজখবর পড়ুন। মঙ্গল গ্রহ কখ কোথায় দেখা যায় জানা যাবে।

সূত্রঃ
১। স্পেইস আনসার
Category: articles
সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা যায় ৫টি- বুধ, শুক্র (শুকতারা), মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। এই বছর এক মাস যাবত (জানুয়ারির ২০ থেকে ফেব্রুয়ারির ২০) এদের সবাইকে একত্রে ভোরের আকাশে দেখা যাচ্ছে। এটা দারুণ একটি দৃশ্য। এর আগে সর্বশেষ এই সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে। সে এক যুগ আগের কথা।
দৃশ্যমান এই গ্রহদের মধ্যে সবার আগে রাতের আকাশে হাজির হচ্ছে বৃহস্পতি। মধ্য রাতের কাছাকাছি সময়। দিন গড়াবার সাথে সাথে আগের দিনের চেয়ে আগে। মধ্য রাতের পরে হাজির হবে মঙ্গল। এর পর একে একে হাজির হবে শনি, শুক্র ও বুধ। বুধ অবশ্যই সবার শেষে। কারণ, বেচারা সব সময় সূর্যের কাছাকাছি থাকে।
কখন আবার সব গ্রহকে এক সাথে দেখা যাবে?
খুশির খবর হচ্ছে এ বছরই! সাথে দুঃখের খবর হচ্ছে, অফারটা খুবই সংক্ষিপ্ত! আগস্টের ১৩ থেকে ১৯- তাও উত্তর গোলার্ধের আকাশ সেই দৃশ্য দেখার জন্য খুব একটা সুবিধার জায়গা নয়।



Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...