২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি। এ বছর এই তারিখে সূর্যের নিকটতম স্থানে পৃথিবীর অবস্থান। এটা অবশ্য আন্তর্জাতিক সময়ের হিসাবে। গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটবে ঐ দিনের রাত ১০টা ৪৯ মিনিটে যা আমাদের বাংলাদেশ সময় অনুসারে ৩ তারিখ ভোর ৪ টা।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার হওয়ায় কিছু সময় আমরা সূর্যের খুবই কাছে থাকি, আবার অন্য সময় থাকি দূরে। উপরোক্ত তারিখে সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর অবস্থানকে অনুসূর (Perihelion) বলা হয়। প্রত্যেকে বছরই জানুয়ারি মাসে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে। অন্য দিকে, জুলাই মাসে অবস্থান হয় সবচেয়ে দূরে। এই অবস্থানটিকে বলা হয় অপসূর (Aphelion)।
জুলাই ও জানুয়ারি মাসে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের পার্থক্য হয় ৫০ লক্ষ কিলোমিটার। তবু, এই দূরত্ব খুব বেশি নয়। কারণ, এই দূরত্বটুকুও পৃথিবী ঋতু পরিবর্তনের হাতিয়ার নয়। এ কারণেই, জানুয়ারি মাসে আমরা সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকি, তবু এ সময় উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকে। অন্য দিকে জুলাই মাসে সূর্য দূরে সত্ত্বেও থাকে গরম। আসলে শীত বা গরমের নিয়ামক সূর্য-পৃথিবীর দূরত্ব নয়, বরং পৃথিবীর কক্ষীয় নতি। আমরা জানি পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষ এর কক্ষীয় তলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে আছে। এ জন্যেই উত্তর গোলার্ধে যখন শীত, দক্ষিণ গোলার্ধে তখন গরম। সূর্যের অবস্থানের জন্যে যদি শীত বা গরম হত, তবে একই সাথে পুরো পৃথিবীতে শীত বা গরম অনুভূত হত।
এ বছরের জানুয়ারির ২ তারিখে সূর্য পৃথিবী থেকে ১৪৭, ১০০, ১৭৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অন্য দিকে অপসূর অবস্থানে এই দূরত্ব দাঁড়াবে ১৫২, ১০৩, ৭৭৬ কিলোমিটার। আমরা সাধারণত বলি, সূর্য পৃথিবী থেকে ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেটা আসলে এই দুই মানের গড় দূরত্ব।
তবে প্রত্যেক বছর একই তারিখে পৃথিবী অনুসূরে থাকে না। ২০২৪ সালে পৃথিবী অনুসূরে আসে জানুয়ারির ৩ তারিখে (ঢাকার সময় অনুসারে)। ২০২৫ সালে আবার তা হবে ৪ তারিখে। পরের দুই বছর ৩ তারিখে হয়ে ২০২৮ সালে আবার হবে ৫ই জানুয়ারি তারিখে।
সূত্র
১।
আর্থ স্কাই: http://earthsky.org/tonight/earth-comes-closest-to-sun-every-year-in-early-january
২।
অ্যাস্ট্রোফিক্সেল: http://www.astropixels.com/ephemeris/perap2001.html
Category:
articles