Advertisement

বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

প্লুটো গ্রহের আবিষ্কারক কে? বামন গ্রহটির আবিষ্কারক আমেরিকান জ্যোতির্বিদ ক্লাইড টমবাউ। আজকের দিনটি তাঁর জন্মের ১১০ জন্মবার্ষিকী।
১৯২৮ সালে পারিবারিক খামারে বাসায় নির্মিত টেলিস্কোপের পাশে দাঁড়িয়ে প্লুটোর আবিষ্কারক ক্লাইড টমবাউ। 

টমবাউ বড় হন ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের একটি কৃষক পরিবারে। তিনিও কাজ করতেন খামারেই। শিলাঝড়ের (Hailstorm) কবলে পড়ে তাঁর পরিবারের ফসল নষ্ট হয়ে গেলে আর্থিক অভাবে পড়ে যান তাঁরা। পড়াশোনার আশা ছেড়ে দিতে হয়ে তাঁকে। কিন্তু জ্যোতির্বিদ হবার আশা কখনো মাটিতে পড়তে দেননি তিনি। জ্যোতির্বিদ্যার জন্যে প্রয়োজনীয় গাণিতিক দক্ষতা নিজে নিজেই হাসিল করলেন। শিখলেন জ্যামিতি এবং ত্রিকোণমিতি। তিনি বলেছেন, 
আপনি কি ভাবতে পারেন, বর্তমান সময়ে একটি কিশোর শুধু মজা পাবার জন্যে ত্রিকোণমিতি শিখতে পারে? আমি তাই করেছি।
বাসায় বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ দেখতেন তিনি। কিছু পরামর্শের আশায় অ্যারিজোনার লয়েল অবজারভেটরিতে নিজের আঁকা মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের ড্রয়িং পাঠালে পরামর্শের বদলে পেয়ে যান চাকরির প্রস্তাব। ১৯২৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি পর্যবেক্ষকের ভূমিকা পালন করেন।
এখানে তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিল প্ল্যানেট এক্স খুঁজে বের করা। অবজারভেটরির প্রতিষ্ঠতা পারসিভাল লয়েলও গ্রহটিকে খুঁজছিলেন। এর আগে তিনি (লয়েল সাহেব) মঙ্গল গ্রহের খাল আবিষ্কার করে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯১৬ সালে লয়েল মারা গেলেও গ্রহটির অনুসন্ধানকার্য চলতে থাকে।
টমবাউ এর দায়িত্বই ছিল লয়েলের কাজটিকে চালু রাখা। এক বছর পর, ১৯৩০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে উদ্দেশ্য সফল হল। ক্লাইড টমবাউ পেয়ে গেলেন প্লুটোকে। কৃতিত্বের জন্যে টমাবাউ স্কলারশিপ পেলেন। পাশাপাশি পেলেন ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ। শেষ পর্যন্ত ১৯৩৯ সালে তিনি ফরমাল শিক্ষা সমাপ্ত করেন।
কিন্তু জ্যোতির্বিদগণ প্ল্যানেট এক্সকে খুঁজছিলেন কেন? উনবিংশ শতকের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতেন, কিছু একটা সপ্তম গ্রহ ইউরেনাসের কক্ষপথে নাক গলাচ্ছে। সেই সময় ইউরেনাসই ছিল সবচেয়ে বহিঃস্থ জানা গ্রহ।বোঝা গেল, ইউরেনাসের বাইরেও কেউ আছে। এর অবস্থানও নির্ণয় করা হল এবং অবশেষে ১৮৪৬ সালে পাওয়া গেল নেপচুন গ্রহ।
আরো পড়ুনঃ নেপচুন আবিষ্কারের কাহিনী

কিন্তু দেখা গেল নেপচুনের কক্ষপথও রহস্যময় আচরণ করছে। ফলে, জ্যোতির্বিদরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হলেন, নেপচুনের বাইরেও আরেকটি অজানা গ্রহ আছে। এরই নাম দেওয়া হয় প্ল্যানেট এক্স। একে খুঁজতে গিয়েি বের হয়ে পড়ল প্লুটো। কিন্তু একে পাবার পরে দেখা গেল, নেপচুনের কক্ষপথের রহস্যময়তা ব্যখ্যা করার সাধ্য প্লুটোর নেই। এর ভর তুলনামূলকভাবে অতি সামান্য। পরে এর অন্য ব্যখ্যা পাওয়া গিয়েছিল।
নানা কারণে ২০০৬ সালে প্লুটো গ্রহের খাতা থেকে বাদ পড়ে গেল। পরিচিতি পেল বামন গ্রহ হিসেবে। বর্তমানে আমাদের সৌরজগতে আরো অনেক বস্তুই এই পরিচয় বহন করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হোমিয়া, মাকিমাকি, সেরেস ইত্যাদি।
কিন্তু প্ল্যানেট এক্সের কী হল? মজার ব্যাপার হল, ২০১৬ সালের শুরুতে ক্যালটেকের জ্যোতির্বিদরা ঘোষণা দিয়েছেন, প্লুটোর কক্ষপথের বাইরে আরেকটি বড় গ্রহ আছে যার ভর পৃথিবীর ১০ গুণ। ধারণা করা হচ্ছে, নেপচুন থেকে ২০ গুণ দূরে এর কক্ষপথ অবস্থিত এবং সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ২০ হাজার বছর।

সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles

বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

আজকে সহ আগামী দিনগুলোতে ভোরের আকাশে দেখা যাচ্ছে গ্রহদের। বুধ, শুক্র ও শনি ভোরের দিকে দেখা যাবে। তবে, অন্য দুটি গ্রহ- বৃহস্পতি ও মঙ্গল ভোরের অনেক আগেই হাজির হবে রাতের আকাশে।
বিস্তারিত দেখুন- ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রহরা কে কোথায়
Category: articles

মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এক সাথে পাঁচটি গ্রহ- বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি দেখার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এ মাসের প্রথম সপ্তাহটি। গত মাসের ২০ তারিখে শুরু হওয়া এই সুযোগটি চলবে এ মাসেও (২০ তারিখ নাগাদ)। প্রথম সপ্তাহে এদের আশেপাশে চাঁদের অবস্থান রাতের আকাশের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়েই তুলবে। চাঁদের সাথে মঙ্গলের দেখা ২ তারিখে, শনির ৪ তারিখে, শুক্রের ৬ তারিখে এবং বুধের সাথে দেখা ৭ তারিখে। চলুন বিস্তারিত দেখি!
ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে গ্রহদের আপাত অবস্থান

বুধঃ
জানুয়ারির শেষের সপ্তাহে বুধ গ্রহ সূর্যোদয় থেকে দূরে সরে এসে অন্য দৃশ্যমান গ্রহদের মিছিলে যোগ দেয়। এ মাসের ৬, ৭ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের খুব কাছে। মাসের ৭ তারিখের আশেপাশের দিনগুলো বুধ গ্রহ দেখার সেরা সময়। সূর্যের প্রায় ৮০ মিনিট আগেই এ সময়গুলোতে বুধ ভোরের পূবাকাশে তার অস্তিত্ব জানান দেবে। মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ এটি শুক্রের খুব কাছে থাকবে।
মার্চ মাসের ২৩ তারিখে এটি আবার চলে যাবে সন্ধ্যার আকাশে। উল্লেখ্য, এই গ্রহটিই সবচেয়ে বেশি ভোর ও সন্ধ্যার আকাশে আসা-যাওয়া করে।
বুধ ও শুকতারা


শুক্রঃ
এ মাসে শুক্রের অবস্থান অপর দুই গ্রহ বুধ ও শনির মাঝখানে। গত মাসেই শনি এর উপরে চলে এসেছিল। রাতের আকাশের জনপ্রিয় বস্তু শুকতারা এ মাসে দ্রুত সূর্যের কাছাকাছি হচ্ছে। মাসের শুরুতে এটি সূর্যের ২ ঘণ্টা আগে উদিত হলেও মাসের শেষের দিকে পূবাকাশে দেখা দিতে দিতে সূর্যোদয়ের এক ঘণ্টা বাকি থাকবে। মাসের ৬ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের কাছে। মাসের ১১ থেকে ১৫ তারিখে এটি বুধের এত কাছে থাকবে যে দুজনকে এক সাথে বাইনোকুলারে দেখা যাবে।
চাঁদ, বুধ ও শুক্র

বৃহস্পতিঃ
ইদানিং রাতের আকাশে সবার আগে উপস্থিত হয় বৃহস্পতি। মধ্য রাতের আগেই শুভকাজটি সেরে ফেলে গ্রহরাজ। অন্য দিকে মাসের শেষের দিকে এটি সূর্যাস্তের একটু পরেই (প্রায় দেড় ঘণ্টা) পূর্ব আকাশে দেখা দেবে। এ মাসে মঙ্গল ও বৃহস্পতি দুজনেই বেশ উর্ধ্বাকাশে (দিগন্ত থেকে অনেক উপরে) থাকবে। ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে বৃহস্পতি থাকবে চাঁদের খুব কাছাকাছি।
 

মঙ্গলঃ
বৃহস্পতি বা শুক্রের মত এতটা উজ্জ্বল না হলেও এ মাসে মঙ্গলকে খুব সহজে দেখা যাবে। এ মাসে এর অবস্থান শনি ও বৃহস্পতির মাঝখানে। কন্যামণ্ডলীর উজ্জ্বলতম নক্ষত্র চিত্রা (Spica) এ মাসে এর কাছাকাছি থাকলেও মঙ্গলের লাল রঙ একে চিনতে সুবিধা করে দেবে। খালি চোখে অসুবিধা হলে বাইনোকুলার ঠিকই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে দেবে। এ বছরে আগস্টের সন্ধ্যার আকাশে মঙ্গল ও শনি খুব কাছাকাছি থাকবে। আগামী কয়েক মাস মঙ্গল ক্রমেই উজ্জ্বল হতে থাকবে এবং মে মাসে এটি উজ্জ্বলতার শীর্ষে পৌঁছে বৃহস্পতির সাথেও টেক্কা দেবে যেখানে শুক্রের পরে ২য় উজ্জ্বল গ্রহের তিলক বৃহস্পতির কপালে। 
চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহ

শনিঃ
পুরো মাস জুড়ে শনি থাকবে ভোরের গ্রহ। মাসের শুরুতে এটি সূর্যোদয়ের ৪ ঘণ্টা ও মাসের শেষের দিকে ৫ ঘণ্টা আগে উদিত হবে। মাসের ৪ তারিখে চাঁদের সাথে অবস্থান একে খুঁজে পেতে ভূমিকা পালন করবে। এটিই সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের বস্তু যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই। 
তো! দেখতে থাকুন! 
Category: articles

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

শুক্র গ্রহের একটি অন্যতম ডাক নাম শুকতারা। অন্য দিকে একে সন্ধ্যাতারাও বলা হয়। অথচ বেচারা মোটেই তারা বা নক্ষত্র নয়, সৌরজগতের একটি গ্রহ মাত্র। ইংরেজিতেও একে ভুল করে star বলা হয়- যথাক্রমে Morning star ও Evening star। কিন্তু নক্ষত্র বা তারা না হওয়া সত্ত্বেও একে কেন তারা বলা হয়? এর তো নিজস্ব আলো নেই। এটিও চাঁদের মতই সূর্যের আলোই প্রতিফলিত করে।
ভোরের আকাশে শুকতারার ছবি 

শুক্র গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে সূর্যের নিকটে থাকায় এর কক্ষপথ পৃথিবীর চেয়েও ভেতরের দিকে। এ কারণে, বুধের মতই এটিও সব সময় সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে। পৃথিবীর আকাশে এটি যখন সূর্যের পেছনে থাকে (সূর্যের পরে উদয়-অস্ত ঘটার কারণে), তখন সূর্যাস্তের পরেই পশ্চিমাকাশে এটি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল থাকার সময়গুলোতে এটি সূর্য ডোবার কয়েক মিনিট পরেই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এ সময় একে আমরা সন্ধ্যাতারা বলি (Evening star)।
অন্য দিকে, এটি পৃথিবীর আকাশে সূর্যের চেয়ে এগিয়ে থাকলে এটি সূর্যের আগেই অস্ত যায়। এ সময় একে সন্ধ্যার আকাশে দেখা যায় না। কিন্তু সূর্যের আগে অস্ত গিয়েছে এ কারণেই যে এটি আসলে ভোরে উদিতও হয়েছিল সূর্যের আগে। ফলে, এই সময়গুলোতে একে ভোরের আগে পূবাকশে দেখা যায়। সূর্য উদিত হয়ে এর আলোতে মিলিয়ে যায় এর আলো। এ অবস্থায় একে আমরা বলি সন্ধ্যাতারা।

প্রাচীন গ্রিকরা শুকতারা ও সন্ধ্যাতারাকে দুটি আলাদা বস্তু মনে করত। তারা এদেরকে যথাক্রমে ফসফোরস (Phosphoros) ও হেসপেরোস (Hesperos) নাম দিয়েছিল। প্রথমটির অর্থ আলো আনয়নকারী ও সন্ধ্যার তারা। কয়েকশো বছর পরে তারা বুঝতে পারে যে, এরা দুজন আসলে একই বস্তু।
সূত্রঃ
১। ইউনিভার্স টুডে
Category: articles
জ্যোতির্বিদ্যা মানেই বিশাল বিশাল দূরত্বের হিসাব। মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর দূরত্ব নির্ণয়ের জন্যে আলাদা আলাদা একক ব্যবহৃত হয়। 


অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (Astronomical unit) বা এইউ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক একক। এটি হলো পৃথিবী থেকে সূর্যের গড় দূরত্ব। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণের সময় এই সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব পরিবর্তিত হয়। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে এর কক্ষপথের অনুসূর ও অপসূর অবস্থানে যথাক্রমে নিকটতম ও দূরতম অবস্থানে থাকে। 

বর্তমানে এক এইউ সমান ধরা হয় ১,৪৯,৫৯,৭৮,৭০,৭০০ মিটার যা প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার বা ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইলের সমান। সাধারণত সৌরজগতের বিভিন্ন বস্তুদের দূরত্বের হিসাব করতে এই এককটি ব্যবহৃত হয়।


আরও দূরের বস্তুর জন্য ব্যবহার করা হয় আলোকবর্ষ। এটি আলোর এক বছরে অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান। 
সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টোরি ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকের দূরত্ব ৮.৬ আলোকবর্ষ। নিকটবর্তী নক্ষত্রদের দূরত্ব নির্ণয়ে এই একক কাজে লাগে।



পৃথিবী থেকে বিভিন্ন বস্তুর দূরত্ব।

আরেকটু বড় একক পারসেক (pc)। এক পারসেক সমান ৩.২৬ আলোকবর্ষ। পারসেকের হিসাবে প্রক্সিমা সেন্টোরি ১.৩ একক দূরে অবস্থিত। রাতের আকাশের খালি চোখে দেখা যাওয়া নক্ষত্রদের অধিকাংশই সূর্যের ৫০০ পারসেকের মধ্যে অবস্থিত। 


আরও দূরের জিনিসের ক্ষেত্রে পারসেকও কাজে আসে না। দরকার হয় আরও বড় একক। এই যেমন কিলোপারসেক (kpc)। এক পারসেকের ১ হাজার গুণ। গ্যালাকটিক স্কেলের দূরত্ব মাপতে ব্যবহৃত হয়। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাস ৩৪ কিলোপারসেক।

এক পারসেকের ১০ লক্ষ গুণ হলো মেগাপারসেক (Mpc)। নিকটবর্তী গ্যালাক্সিদের দূরত্ব মাপার জন্য এই একক কাজে আসে। আনড্রোমিডা গ্যালাক্সি ০.৭৬৫ Mpc দূরত্বে অবস্থিত। অন্য দিকে আমাদের নিকটতম বড় গ্যালাক্সি স্তবক ভার্গো ক্লাস্টার (Virgo Cluster) আছে ১৬.৫ Mpc দূরে।

Category: articles
আমরা জানি, গ্রহদের অন্তত দুটি গতি আছে- আবর্তন গতি ও সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ গতি। অবশ্য এরা সূর্যের সাথে সাথে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিকে কেন্দ্র করেও ঘুরছে। সেটা আলাদা কথা। এখানে আমরা গ্রহদের আবর্তন নিয়ে কথা বলছি।

পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, শুক্র এবং ইউরেনাস ছাড়া সৌরজগতের সবগুলো গ্রহ ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিকে ঘোরে। অন্য কথায়, গতিটি হচ্ছে পশ্চিম থেকে পূবে। এটা একই সাথে সূর্যের চারপাশে গ্রহদের প্রদক্ষিণেরও দিক। ধারণা করা হয়, একটি বড়সড় গ্রহাণুর আঘাতে ইউরেনাসের আবর্তন গতি খেই হারিয়ে ফেলে। ফলে, এর আবর্তনের দিক এর প্রদক্ষিণ দিকের সাথে প্রায় সমকোণে তথা ৯০ ডিগ্রি কোণে হেলে পড়ে। অন্য দিকে, অন্য গ্রহের তুলনায় শুকতারা নামে পরিচিত শুক্র গ্রহের গতি একেবারেই উল্টো দিকে। অর্থ্যাৎ, এর আবর্তন হয় পূর্ব থেকে পশ্চিমে। এ কারণে, এই গ্রহে সূর্যোদয় ঘটে পশ্চিমে!
ধারনা করা হয়, এরও উল্টো গতির পেছনে দায়ী কোন গ্রহাণু।

সূত্রঃ 
১। কর্নেল ইউনিভার্সিটি
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

সৌরজগতের গ্রহরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে। পৃথিবী নামক আমাদের গ্রহটি একবার সূর্যকে ঘুরে আসতে যে সময় নেয়, তাকে আমরা এক বছর বলি। সূর্যও কিন্তু নির্দিষ্ট কোন জায়গায় বসে নেই। সৌরজগতের সবকিছুকে সাথে নিয়ে আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণ করে চলছে। প্রদক্ষিণের এই বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার! মাইলের হিসাবে এটি দাঁড়ায় ৫ লক্ষে। তাহলে বলা চলে, মাত্র ৯০ সেকেন্ডে আমরা ২০ হাজার কিলোমিটার (বা সাড়ে ১২ হাজার মাইল) পথ অতিক্রম করছি!
নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, বেগটি অনেক বিশাল। তা ঠিক। কিন্তু অতিক্রম করার জন্যে যদি সামনে অনেক বিশাল পথ পড়ে থাকে তখন কিন্তু বেগটাকে আর লক্ষ্যণীয় মনে হয় না। যেমন, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাসই হচ্ছে ১ লাখ আলোকবর্ষ। মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে দুই-তৃতীয়াংশ দূরত্বে তথা ২৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের অবস্থান। ফলে, মিল্কিওয়েকে একবার ঘুরে আসতে সূর্যের ২২.৫ থেকে ২৫ কোটি বছর সময় লেগে যায়। এই সময়কে বলা হয় কসমিক ইয়ার বা মহাজাগতিক বর্ষ (Cosmic year)।
মিল্কিওয়ে ছায়াপথে সূর্যের অবস্থান 
আমরা জানলাম, সূর্য এক জায়গায় বসে নেই। আমাদের পৃথিবীর মতই প্রদক্ষিণের পাশাপাশি সূর্যও কিন্তু আবার নিজের অক্ষের সাপেক্ষেও ঘোরে। একে আমরা বলি আবর্তন। তবে, পৃথিবীর মত এর সর্বত্র আবর্তন বেগ সমান নয়। সৌরদাগ (Sunspot) দেখে বোঝা যায় সূর্যের বিষুব অঞ্চল প্রতি ২৭ দিনে এক বার আবর্তন করে। মেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই সময়ের মান ৩১ দিন। তাছাড়াও প্লাজমা পদার্থে গঠিত সূর্যের কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে আবর্তন বেগের মান আলাদা।
শিল্পীর তুলিতে সৌরজগতের ছবি
কিন্তু মিল্কিওয়ের কী খবর? ছায়াপথটিকি স্থির বসে আছে? প্রথমত এর রয়েছে আবর্তন গতি। সূর্যের মতই কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে এর বেগ ভিন্ন ভিন্ন। আমাদের সূর্যের দূরত্বে এটি ২০ কোটি বছরে এক বার আবর্তন করে। ছায়াপথটিকে প্রদক্ষিণ করতে সূর্যের প্রয়োজনীয় সময় থেকে এই হিসাব বের করা হয়েছে।
কিন্তু গ্যালাক্সিরাকি অন্য কাউকে কেন্দ্র করে ঘোরে? কখনো এরা একে অপরকে প্রদক্ষিন করে। অনেক সময় আবার দল বা গুচ্ছবদ্ধ গ্যালাক্সিরা এদের সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি লোকাল গ্রুপের অন্যান্য গ্যালাক্সিদের সাথে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ছোট ও বড় ম্যাজেলানিক ক্লাউড, অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি, ট্রায়াঙ্গুলাম গ্যালাক্সি (Triangulum)। এদের সমন্বিত কার্যক্রমে ঠিক সূর্যের মত কোন কক্ষপথ তৈরি করতে পারেনি। এটা আসলে অনেকটা জোড়াতারা বা বহুতারাজগতে যেমন দুই বা অনেকগুলো তারা সবার সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে ঠিক সে রকম আচরণ করে। অবশ্য আরো ৪ বিলিয়ন বছর পরে মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাকটিক সংঘর্ষে লিপ হবে।
সূত্রঃ
১। Earth Sky
২। Harvard University
৩। কর্নেল ইউনিভার্সিটি

Category: articles
ম্যাগনেটারকি কোন ধরনের চুম্বকীয় নক্ষত্র? দেখা যাক!
হ্যাঁ, অদ্ভুত জিনিস ম্যাগনেটার আসলে এক ধরনের নিউট্রন নক্ষত্র। এর শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র থেকে  উচ্চ শক্তিসম্পন্ন এক্স-রে ও গামা রশ্মি নির্গত হয়। মহাবিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম নক্ষত্রদের জীবনের অন্তিম সময়ে নিউট্রন স্টার জন্ম লাভ করে। নক্ষত্রদের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এর নিজস্ব অভিকর্ষের চাপে এটি নিজেই গুটিয়ে ছোট হয়ে যায়। ঘনত্ব বেড়ে হয়ে যায় অনেক বেশি।
ম্যাগনেটার এর ছবি। এরা হচ্ছে নিউট্রন নক্ষত্রের একটি জাত। 
শক্তিশালী অভিকর্ষের কারণে নিউট্রন স্টার এবং একই কারণে ম্যাগনেটাররা মহাবিশ্বের অন্যতম উচ্চ-ঘনত্ব বিশিষ্ট বস্তু। সত্যি বলতে, এরা এতটাই ঘন যে এদের এক চায়ের কাপ পরিমাণ পদার্থ মিশরের ৯০০ পিরামিডের ভরের সমান হয়ে যাবে।
সূত্রঃ
১। স্পেইস আনসার
Category: articles
মঙ্গল গ্রহ যে লাল দেখায় সেটা রাতের আকাশে খালি চোখে পৃথিবী থেকেও দেখা যায়।  কিভাবে গ্রহটি তার বিখ্যাত লাল রঙটি পেল?
মঙ্গলের লাল পৃষ্ঠের ছবি
মঙ্গল গ্রহের ছবিতে দেখা লাল রঙটি এর পৃষ্ঠের লোহার মরিচা ধরার ফলাফল। মঙ্গলের পৃষ্ঠে উপস্থিত মাটি ও পাথরের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে আয়রন (লোহা)। পাশাপাশি সামান্য পরিমাণ ক্লোরিন ও সালফারও রয়েছে। বায়ুস্রোতের প্রভাবে মাটি ও পাথর ক্ষয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। অন্য দিকে, প্রাচীন আগ্নেয়গিরি পৃষ্ঠজুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছিল ধূলিকণাদের।
ধুলিকণার মধ্যে থাকা আয়রন অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে পৃষ্ঠকে লাল বানিয়ে তোলে। অন্য দিকে, মঙ্গলের আকাশও কিন্তু লাল। এর কারণ, ঝড়ের সময় ধূলিকণা পৌঁছে গিয়েছিল এর বায়ুমণ্ডলেও। মঙ্গল গ্রহের ধূলিময় পৃষ্ঠ কয়েক মিলিমিটার থেকে সর্বোচ্চ ২ মিটার পর্যন্ত পুরু। এর নিচেই রয়েছে প্রধান্ত ব্যাসাল্টের ঘনীভূত লাভা। এই ব্যাসাল্টে লোহার ঘনত্ব পৃথিবীর তুলনায় অনেক বেশি। ফলাফল- মঙ্গলের লাল বেশ।
মঙ্গল গ্রহ দেখতে লাল- নিজের চোখে দেখতে চান? আপনার জন্যেই আমাদের নিয়মিত আয়োজনঃ রাতের আকাশ। এই সেকশন থেকে গ্রহদের খোঁজখবর পড়ুন। মঙ্গল গ্রহ কখ কোথায় দেখা যায় জানা যাবে।

সূত্রঃ
১। স্পেইস আনসার
Category: articles
সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা যায় ৫টি- বুধ, শুক্র (শুকতারা), মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। এই বছর এক মাস যাবত (জানুয়ারির ২০ থেকে ফেব্রুয়ারির ২০) এদের সবাইকে একত্রে ভোরের আকাশে দেখা যাচ্ছে। এটা দারুণ একটি দৃশ্য। এর আগে সর্বশেষ এই সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে। সে এক যুগ আগের কথা।
দৃশ্যমান এই গ্রহদের মধ্যে সবার আগে রাতের আকাশে হাজির হচ্ছে বৃহস্পতি। মধ্য রাতের কাছাকাছি সময়। দিন গড়াবার সাথে সাথে আগের দিনের চেয়ে আগে। মধ্য রাতের পরে হাজির হবে মঙ্গল। এর পর একে একে হাজির হবে শনি, শুক্র ও বুধ। বুধ অবশ্যই সবার শেষে। কারণ, বেচারা সব সময় সূর্যের কাছাকাছি থাকে।
কখন আবার সব গ্রহকে এক সাথে দেখা যাবে?
খুশির খবর হচ্ছে এ বছরই! সাথে দুঃখের খবর হচ্ছে, অফারটা খুবই সংক্ষিপ্ত! আগস্টের ১৩ থেকে ১৯- তাও উত্তর গোলার্ধের আকাশ সেই দৃশ্য দেখার জন্য খুব একটা সুবিধার জায়গা নয়।



Category: articles

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

আজ রাতে চাঁদ ও বৃহস্পতি দারুণ একটি দৃশ্য উপহার দিচ্ছে। ছবিতে এই দৃশ্যের সৌন্দর্য্য তুলে ধরা কঠিন। বিশ্বাস না হলে একবার জানালা দিয়ে উঁকে মেরে দেখুন। না দেখা গেলে সম্ভব হলে ছাদে চলে যান। 
Category: articles

সোমবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৬

এখন থেকে নিয়মিত (কয়েক দিন পরপর) রাতের আকাশের কিছু মুহূর্ত তুলে ধরা হবে ইনশাআল্লাহ। এই বিভাগে এক বা একাধিক ছবি থাকবে। ছবিতে বিশেষত গ্রহ ও নক্ষত্র ধরা পড়বে। মাঝে মাঝে ধূমকেতু, দূর গ্যালাক্সি ইত্যাদির ছবিও থাকতে পারে। এই বিভাগটি আজকের ছবি বিভাগ থেকে আলাদা।
ছবির বিবরণঃ ছবিতে রাতের আকাশের ৩য় উজ্জ্বল বস্তু ও ২য় উজ্জ্বল গ্রহ বৃহস্পতিকে দেখা যাচ্ছে। নিচে দেখা যাচ্ছে লাল গ্রহ মঙ্গলকেও। ছবির অপর দুটি বস্তু তারকা। স্বাতী আকাশের ৪র্থ উজ্জ্বল নক্ষত্র, অন্য দিকে চিত্রার রোল নং ১৫। 
Category: articles

শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬

অতীতে বিভিন্ন সময় গ্রহের (Planet) বিভিন্ন সংজ্ঞা প্রচলিত ছিল। এমনকি একই সময়েও একাধিক সংজ্ঞা বিদ্যমান ছিল। এটা নির্ভর করত কে কোথায় সংজ্ঞায়িত করছে তার উপর। বিশ্বাস করা কঠিন হলেও এখন যে সূর্যকে ভিত্তি করে আমরা গ্রহকে সংজ্ঞায়িত করি, এক সময় মানুষ সেই সূর্যকেও গ্রহ নাম দিয়েছিল। চাঁদের সাথেও করা হয়েছিল একই আচরণ। ১৮০১ সালে আবিষ্কৃত বামন গ্রহ সেরেসকেও প্রথমে গ্রহ ভাবা হয়েছিল। বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ উইলিয়াম হার্শেল একে গ্রহাণু নাম দেবার প্রস্তাব সেটা সবার মনে ধরে।
যাই হোক, নানা বিতর্কের পরেও আমরা বহু দিন পাঠ্যে বইয়ে পড়ে আসছিলাম, সৌরজগতে নয়টি গ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এর মধ্যে সর্বশেষ ও নবম গ্রহ ছিল প্লুটো। কিন্তু ২০০৩, ২০০৪ ও ২০০৫ সালে যথাক্রমে আবিষ্ক্রৃত হল বর্তমানে বামন গ্রহ নামে পরিচিত ইরিস, হোমিয়া ও মাকিমাকি। এর মধ্যে ইরিস আবার প্লুটোর চেয়েও বড়। প্লুটোর ভর আমাদের চাঁদের চেয়েও কম! এত অযোগ্যতা মাথায় বয়ে প্লুটোর পক্ষে আর গ্রহ হিসেবে জীনব ধারণ করা সম্ভব হলো না। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি ঘোষণা দিল- প্লুটো এখন থেকে ইরিস, হোমিয়া, মাকিমাকি ও সেরেসের সাথে সাথে ৫টি বামন গ্রহের একটি।
আরো পড়ুনঃ প্লুটো যেভাবে গ্রহত্ব হারালো

তাহলে গ্রহ বলা হয় কাকে? শর্ত হলো তিনটি।
১।  সূর্যের চারদিকে কক্ষপথে থেকে প্রদক্ষিণ করে চলছে।
২। নিজের অভিকর্ষ এতটা শক্তিশালী যে এতে করে এর আকৃতি গোলাকার হতে পেরেছে।
৩। এর কক্ষপথ  অন্য কোন বস্তুর হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত।
আচ্ছা, তাহলে সৌরজগতের বাইরে গ্রহ থাকবে কিভাবে যদি এখানে প্রথম শর্ত পূরণ করতেই হয়? আসলে সূর্য যেহেতু নিজেই একটি নক্ষত্র তাই অন্য যেকোন নক্ষত্রও গ্রহের মালিক হতে পারে- অসুবিধা নেই। অবশ্য তাদেরকে আমরা গ্রহ না বলে বহির্গ্রহ (Exoplanet) বলি।

পৃথিবীর রাতের আকাশে খালি চোখে ৫টি গ্রহ দেখা যায়- বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। এদের মধ্যে শুক্র (শুকতারা) ও বৃহস্পতি যথাক্রমে রাতের আকাশের ২য় ও ৩য় উজ্জ্বল বস্তু। প্রতি মাসে শখের জ্যোতির্বিদ ফেসবুক গ্রুপে ও মহাবিশ্ব সাইটে গ্রহদের নিয়মিত আপডেট দেওয়া হয়। নিয়মিত খোঁজ রাখতে হলে আপনি এই লিংক বা এই লিংক অনুসরন করতে পারেন।
সূত্রঃ
১। ইউনিভার্স টুডে
২। ইংরেজি উইকিপিডিয়াঃ গ্রহের সংজ্ঞা
৩। আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি
৪। উইকিপিডিয়াঃ বহির্গ্রহ
Category: articles

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৬

সূর্যের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টোরি 

সূর্যের নিকটতম নক্ষত্রের কি গ্রহ আছে? কেউ জানে না। তবে খোঁজ চলছে পুরোদমে। আপনি চাইলে ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির (ESO) এই অনুসন্ধানের নিয়মিত খোঁজ রাখতে পারেন। আলফা সেন্টোরি গ্রুপের নক্ষত্রদের মধ্যে প্রক্সিমা সেন্টোরি আমাদের সবচেয়ে কাছাকাছি। এই নক্ষত্র থেকে পৃথিবীতে আলো আসতে মাত্র ৪.২৪ বছর লাগে। 

ছোট্ট এই লাল তারকাটি অনেক অনুজ্জ্বল৷ আবিষ্কৃত হয়েছে মাত্র ১৯১৫ সালে৷ তাও খালি চোখে নয়,  টেলিস্কোপের চোখে। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে থাকা আরও বহু দূরের তারকাও খালি চোখে দেখা যায়। একই গ্রুপের নক্ষত্র আলফা সেন্টোরি কিন্তু রাতের আকাশের ৩য় উজ্জ্বল তারকা। এর সাথে সূর্যের ভালো মিলও আছে বটে। এই বছরের শুরু থেকে ইএসও এই নক্ষত্রে গ্রহের সন্ধান করছে। দেখা যাক!

সূত্র
১। নাসা: আজকের মহাকাশ ছবি
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৬

এ মাসে গ্রহরা দারুণ একটি প্রদর্শনী উপহার দিচ্ছে। জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে এক মাসের জন্যে সবাই একত্রে ভোরের পূবাকাশে থাকবে। কে কখন কোথায় থাকবে, চলুন জেনে নিই।
শুক্র, শনি ও মঙ্গলের অবস্থান (২১ জানুয়ারি, ভোর ৫ঃ৫০, পূর্ব আকাশ) 

বুধ (Mercury): মাসের শুরুর দিকে পশ্চিমাকাশে থাকবে। এ সময় একে আমাদের উত্তর গোলার্ধ থেকে দেখা যাবে। মাসের ১৪ তারিখে বুধ (Mercury) সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান করবে। এই অবস্থানকে অন্তঃসংযোগ (Inferior Conjunction) বলে। অন্তঃসংযোগ শুধু পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থিত দুইটি গ্রহ- বুধ এবং শুক্রের পক্ষেই সম্ভব। অন্য গ্রহরা পৃথিবী ও সূর্যের সাথে একই রেখায় আসলে বহিঃসংযোগ (Superior Conjuction) ঘটে।
উক্ত তারিখের পর গ্রহটি পূবাকাশে পাড়ি জমাবে। এ সময় অবশ্য এটি দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দেখা সহজতর হবে।
শুক্র (Venus): এ মাসেরও পুরোটা সময় এটি ভোরের পূবাকাশে  থাকবে। মাসের শুরুর দিকে শনি এর খুব কাছাকাছি থাকবে। মাসের ১০ তারিখে শনি শুক্রের উপরে উঠে আসবে। মাসের শুরুর দিকে এটি সূর্যের ৩ ঘন্টা আগে ও শেষের দিকে ২ ঘণ্টা আগে ভোরের পূবাকাশে দেখা দেবে।
বৃহস্পতিঃ
ইদানিং এই গ্রহটি সবার আগে রাতের আকাশে হাজির হয়। মাসের শুরুর দিকে মধ্য রাতের আগেই উদিত হবে। দিন গড়াবার সাথে সাথে উদয়কাল নেমে আসবে ৯টার দিকে।
মঙ্গলঃ
এর অবস্থান থাকবে বৃহস্পতি ও শুক্রের মাঝে। কাছাকাছি অবস্থানে চিত্রা (Spica) নক্ষত্রও থাকবে। কিন্তু গ্রহটির লাল আলো একে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে সুবিধা করে দেবে। আগামী মে মাসে এটি সবচেয়ে উজ্জ্বল হবে। অবিশ্বাস্য হলেও এটি তখন বর্তমান অবস্থায় বৃহস্পতির উজ্জ্বলতার সমান হবে।
শনিঃ
মাসের শুরুতে এটি দেখা যাবে সূর্যের ২ ঘণ্টা আগে। মাস শেষ হতে হতে এই সময় হয়ে যাবে ৪ ঘণ্টা।


সূত্রঃ
১। স্পেইস ডট কম
২। Earth Sky
Category: articles

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬

আমরা অনেক সময় এই দুটি শব্দের মধ্যে গোলমাল পাকিয়ে ফেলি।
কোন বস্তুর নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুর্ণনকে আবর্তন বলে। এর ইংরেজি পরিভাষা Rotation। অন্য দিকে কোন বস্তু যদি অন্য কোন বস্তুর চারদিকে ঘুরে আসে, তখন তাকে প্রদক্ষিণ বলে। এর ইংরেজি Revolution।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর যে গতি এটা হচ্ছে প্রদক্ষিণ। পৃথিবী একবার সূর্যের চারদিকে কক্ষপথ ঘুরে আসলে এক বছর হয়। অন্য দিকে, পৃথিবী নিজের চারদিকে আবর্তন করার ফলে একেকটি দিন হয়। সুতোয় বাঁধা একটি লাটিমের মাটিতে ঘুরতে থাকাও আবর্তনের উদাহরণ। একটি টেনিস বলকে উপরের দিকে ছুঁড়ে মারলে এটি উপরে বা নিচে উঠানামার পাশাপাশি নিজেও ঘুরতে থাকে। এই ঘূর্ণনই আবর্তন।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ
তবে পৃথিবীর মত সূর্যও আবর্তন কিন্তু আবর্তন করে। সৌরদাগ (Sunspot) দেখে বোঝা যায় সূর্যের বিষুব অঞ্চল প্রতি ২৭ দিনে এক বার আবর্তন করে। মেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই সময়ের মান ৩১ দিন। তাছাড়াও প্লাজমা পদার্থে গঠিত সূর্যের কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে আবর্তন বেগের মান আলাদা। আর প্রদক্ষিণ? হ্যাঁ, সূর্য সেটাও করে। 
Category: articles

শুক্রবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৬

২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি। এ বছর এই তারিখে সূর্যের নিকটতম স্থানে পৃথিবীর অবস্থান। এটা অবশ্য আন্তর্জাতিক সময়ের হিসাবে। গ্রিনিচ মান সময় অনুযায়ী ঘটনাটি ঘটবে ঐ দিনের রাত ১০টা ৪৯ মিনিটে যা আমাদের বাংলাদেশ সময় অনুসারে ৩ তারিখ ভোর ৪ টা।

সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ উপবৃত্তাকার হওয়ায় কিছু সময় আমরা সূর্যের খুবই কাছে থাকি, আবার অন্য সময় থাকি দূরে। উপরোক্ত তারিখে সূর্যের সাপেক্ষে পৃথিবীর অবস্থানকে অনুসূর (Perihelion) বলা হয়। প্রত্যেকে বছরই জানুয়ারি মাসে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকে। অন্য দিকে, জুলাই মাসে অবস্থান হয় সবচেয়ে দূরে। এই অবস্থানটিকে বলা হয় অপসূর (Aphelion)।


জুলাই ও জানুয়ারি মাসে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের পার্থক্য হয় ৫০ লক্ষ কিলোমিটার। তবু, এই দূরত্ব খুব বেশি নয়। কারণ, এই দূরত্বটুকুও পৃথিবী ঋতু পরিবর্তনের হাতিয়ার নয়। এ কারণেই, জানুয়ারি মাসে আমরা সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকি, তবু এ সময় উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকে। অন্য দিকে জুলাই মাসে সূর্য দূরে সত্ত্বেও থাকে গরম। আসলে শীত বা গরমের নিয়ামক সূর্য-পৃথিবীর দূরত্ব নয়, বরং পৃথিবীর কক্ষীয় নতি। আমরা জানি পৃথিবীর ঘূর্ণন অক্ষ এর কক্ষীয় তলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে আছে। এ জন্যেই উত্তর গোলার্ধে যখন শীত, দক্ষিণ গোলার্ধে তখন গরম। সূর্যের অবস্থানের জন্যে যদি শীত বা গরম হত, তবে একই সাথে পুরো পৃথিবীতে শীত বা গরম অনুভূত হত।

এ বছরের জানুয়ারির ২ তারিখে সূর্য পৃথিবী থেকে ১৪৭, ১০০, ১৭৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অন্য দিকে অপসূর অবস্থানে এই দূরত্ব দাঁড়াবে ১৫২, ১০৩, ৭৭৬ কিলোমিটার। আমরা সাধারণত বলি, সূর্য পৃথিবী থেকে ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেটা আসলে এই দুই মানের গড় দূরত্ব।

তবে প্রত্যেক বছর একই তারিখে পৃথিবী অনুসূরে থাকে না। ২০২৪ সালে পৃথিবী অনুসূরে আসে জানুয়ারির ৩ তারিখে (ঢাকার সময় অনুসারে)। ২০২৫ সালে আবার তা হবে ৪ তারিখে। পরের দুই বছর ৩ তারিখে হয়ে ২০২৮ সালে আবার হবে ৫ই জানুয়ারি তারিখে। 


সূত্র
১। আর্থ স্কাই: http://earthsky.org/tonight/earth-comes-closest-to-sun-every-year-in-early-january
২। অ্যাস্ট্রোফিক্সেল: http://www.astropixels.com/ephemeris/perap2001.html
৩। টাইম অ্যান্ড ডেট ডট কম: https://www.timeanddate.com/astronomy/perihelion-aphelion-solstice.html
Category: articles

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

আজ বা আসন্ন কয়েক দিনের মধ্যে যে কোন মেঘ বা কুয়াশামুক্ত সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের ঠিক পরপরই আপনি পশ্চিমাকাশে তিনটি উজ্জ্বল তারকা দেখতে পাবেন। এদেরকেই একত্রে বলা হয় সামার ট্রায়াঙ্গেল (Summer triangle) বা গ্রীষ্মের ত্রিভুজ। ত্রিভুজটি কোন তারামণ্ডলী নয়, একটি তারানকশা (Asterism) মাত্র।


শীতকালে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ! কেমন অদ্ভুত বিষয়, তাই না? আসলে একে সামার ট্রায়াঙ্গেল বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে এই তারাচিত্রটি মাথার উপরে থাকে। তিনটি আলাদা তারামণ্ডলীর উজ্জলতম নক্ষত্র ত্রিভুজের তিন শীর্ষে বসে আছে। বীণামণ্ডলীর (Lyra) অভিজিৎ (Vega), বকমণ্ডলীর পুচ্ছ (Deneb) এবং ঈগলমণ্ডলীর শ্রবণা (Altair) হচ্ছে এই তিনটি তারকা।

শীঘ্রই এরা সূর্যের আভায় আবৃত হয়ে যাবে। বেশ কিছু দিন দেখা যাবে না। ২/৩ মাস পরে আবার হাজির হবে ভোরের আকাশে।

সূত্র: আর্থ স্কাই
Category: articles

বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

বছরে দুই বার অয়ন ঘটে। নিরক্ষরেখার উত্তরে বা দক্ষিণে সূর্যের দূরতম অবস্থানকে অয়ন (Solstice) বলা হয়। বছরের অয়ন দুটি ঘটে জুন (সাধারণত ২১ তারিখ) ও ডিসেম্বর মাসে (সাধারণত ২২ তারিখ)। আমাদের উত্তর গোলার্ধে জুনের অয়নকে উত্তরায়ণ (Summer Solstice) এবং ডিসেম্বরের অয়নকে দক্ষিণায়ন (Winter Solstice) বলা হয়। উত্তর গোলার্ধে জুনের অয়নকে কেন্দ্র করে গ্রীষ্মকাল এবং ডিসেম্বরের অয়নকে কেন্দ্র করে শীতকাল আবর্তিত হয়। আসলে, এ কারণেই Summer Solstice কথাটিকে আমাদের বাংলায় উত্তরায়ণ বলা হচ্ছে। অন্য দিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে এর উল্টো ঘটনা ঘটে। অর্থ্যাৎ, জুনের দিকে শীত এবং ডিসেম্বরের দিকে থাকে গরম আবহাওয়া।
দক্ষিণায়নের সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকে থাকে। এই দিনটিই উত্তর গোলার্ধের ক্ষুদ্রতম দিন।

চলুন, দক্ষিণায়ন সম্পর্কে ১০টি কথা জেনে নিই।
১। একই সাথে শীত ও গ্রীষ্মের কেন্দ্রবিন্দুঃ
এই সময় আমাদের উত্তর গোলার্ধে শীতকাল থাকলেও দক্ষিণ গোলার্ধে থাকে উষ্ণ আবহাওয়া। ইংরেজরা উত্তর গোলার্ধের মানুষ হওয়ায় এবং ডিসেম্বরের অয়নের সময় এই অঞ্চলে শীত থাকায় তারা এই অয়নকে নাম দিয়েছে শীতের অয়ন (Winter Solstice)। অথচ, দক্ষিণ গোলার্ধের শীতের অয়ন কিন্তু জুন মাসে ঘটে। ফলে, ডিসেম্বরের অয়নকে দক্ষিণ গোলার্ধে ডাকা হয় গ্রীষ্মের অয়ন (Summer Solstice) নামে। এই দিক থেকে বাংলায় নামগুলো বেশ উৎকৃষ্ট। এগুলো পৃথিবীতে অবস্থানের ভিত্তিতে না করে সূর্যের অবস্থানের ভিত্তিতে করা হয়েছে। ফলে, একই শব্দ দক্ষিণায়ন দুই গোলার্ধেই প্রযোজ্য। শুধু জানতে হবে, বিপরীত গোলার্ধে একই অয়নের সময় বিপরীত ঋতু থাকে।
দক্ষিণ গোলার্ধে এই অয়নের সময় দীর্ঘতম এবং উত্তর গোলার্ধে ক্ষুদ্রতম দিন পাওয়া যায়।

২। সূর্যের অবস্থানঃ
দক্ষিণায়নের সময় সূর্য মকরক্রান্তি রেখার উপর খাড়াভাবে আলো ফেলে। অন্য দিকে, উত্তরায়নে সূর্য একই কাজ করে কর্কটক্রান্তি রেখার উপর। উল্লেখ্য, দক্ষিণায়নের সময় বর্তমানে সূর্য খ-গোলকের মকরমণ্ডলী অঞ্চলে অবস্থান করে না, করে ধনুমণ্ডলীতে।
আরো পড়ুনঃ সূর্য কখন কোথায় থাকে

৩। নির্দিষ্ট সময়ঃ
আমরা দক্ষিণায়নের জন্যে পুরো একটি ধার্য করলেও আসলে এটি ঘটে একটি নির্দিষ্ট সময়ে- যখন মকরক্রান্তির রেখায় সূর্য বরাবর মাথার উপরে থাকে। ২০১৫ সালে এটি ঘটবে ডিসেম্বরের ২২ তারিখে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টা ৪৯ মিনিটে।

৪। অয়নের তারিখ পরিবর্তনশীলঃ
উত্তরায়ণের মতই দক্ষিণায়নও তারিখ বদলাতে পারে। এটি হতে পারে ডিসেম্বরের ২০, ২১, ২২ বা ২৩ তারিখে। অবশ্য ২০ এবং ২৩ তারিখে এটি কমই হয়ে থাকে। ডিসেম্বরের ২৩ তারিখে অয়ন হবার সর্বশেষ সালটি ১৯০৩ এবং পরবর্তী সাল ২৩০৩!

৫। অয়নের শাব্দিক অর্থঃ
বাংলায় অয়ন শব্দের অর্থ পথ, ভূমি বা গৃহ। এর বিশেষ একটি অর্থ সূর্যের গতি বা গতিপথ। তাহলে দক্ষিণায়ন অর্থ দাঁড়ায় দক্ষিণে সূর্যের অবস্থান বা গতি। বাস্তবে অবশ্য এটি বলতে বোঝায় সূর্যের সর্বদক্ষিণে অবস্থানের দিন বা ঘটনা। এর ইংরেজি পরিভাষা Solstice, যার উদ্ভব ঘটেছে ল্যাটিন শব্দ solstitium থেকে। এর অর্থ 'সূর্য স্থির হল' (The sun stands still)।  ঐ দিন পৃথিবী থেকে দেখতে সূর্যকে মকরক্রান্তি বা কর্কটক্রান্তি রেখার উপর স্থির মনে হয় বলে এই নামের আবির্ভাব ঘটে থাকতে পারে।

৬। জ্যোতির্বিদ্যার হিসাবে শীতের শুরুঃ
যদিও এই তারিখের আগেই শীত শুরু হয়, এই তারিখটিকে বিজ্ঞানীরা এবং বিশেষ করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা শীতের আগমণের তারিখ হিসেবে ব্যবহার করেন। জ্যোতির্বিদ্যার হিসাবে শীত শেষ হয় মার্চ মাসের মহাবিষুবের (Equinox) সময়। অন্য দিকে, আবহাওয়াবিদদের মতে ৩ সপ্তাহ আগে, ডিসেম্বরের ১ তারিখেই শীত শুরু হয়।

৭। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বঃ
অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে, শীতকালে পৃথিবী সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে। বাস্তবতা এর উল্টো। পৃথিবী বরং শীতকালেই সূর্যের নিকটতম অবস্থানে থাকে। এই অবস্থানকে অনুসূর (Perihelion) বলে। ২০১৬ সালে পৃথিবী অনুসূরে থাকবে জানুয়ারির ৩ তারিখে, দক্ষিণায়নের ২ সপ্তাহের মধ্যেই!

শীতের আবির্ভাবের উপর তাই দূরত্বের প্রভাব খুবই সামান্য। তাহলে শীতকাল আসে কিভাবে? পৃথিবী এর কক্ষতলের সাথে ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে আছে। দক্ষিণায়নের সময় দক্ষিণ গোলার্ধ ঝুঁকে থাকে সূর্যের দিকে। ফলে, সেখানে গ্রীষ্ম আর আমাদের এখানে শীতকাল থাকে। উত্তরায়ণের সময় ঘটে উল্টো ঘটনা।

৮। দ্রুততম সূর্যাস্ত এই দিনে নয়ঃ
উত্তর গোলার্ধের অধিকাংশ স্থানেই এই অয়নের আগেই দ্রুততম সূর্যাস্ত হয়ে যায়। আর দীর্ঘায়িত সূর্যোদয় হয় অয়নের কিছু দিন পরে অর্থ্যাৎ, সূর্য কিন্তু অয়নের দিনে অন্য দিনের চেয়ে আগেভাগে অস্ত যায় না।

৯। উত্তর গোলার্ধের দিনের দৈর্ঘ্যের দ্রুত বৃদ্ধিঃ
উত্তর গোলার্ধে এই সময়ের পরে দ্রুত দিন বড় হতে থাকে। যে স্থান যত বেশি উত্তরে, সেটিতে এই বৃদ্ধির পরিমানও তত বেশি।

১০। উৎসবঃ
অনেক দেশেই উৎসব করে দিনটি পালন করা হয়। অনেক জায়গায় আবার এই দিনে ছুটিও থাকে।

সূত্রঃ
১। Time and Date
২। টাইম অ্যান্ড ডেইটঃ অপসূর, অনুসূর
Category: articles

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

সূর্য পৃথিবীর নকটতম নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে এর গড় দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার বা ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল। এই দূরত্বকে বলা হয় অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল একক যা সৌরজগতের অন্যান্য বস্তুর দূরত্বের একক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যের প্রধান উপাদান আয়নিত গ্যাস। এর মধ্যে তিন চতুর্থাংশ হাইড্রোজেন। বাকি অংশে প্রধানত হিলিয়াম ছাড়াও সামান্য পরিমাণ ভারী মৌল যেমন অক্সিজেন, কার্বন, নিয়ন এবং আয়রন রয়েছে।

সূর্য: সৌরজগতের ৯৯ ভাগের উপরে ভর যার দখলে 

 পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত?

এই সূর্যের মাধ্যমেই পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশকে সম্ভব হয়েছে। সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে ঋতু, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং সামুদ্রিক স্রোতের পরিবর্তন ঘটে।  নিউক্লিও বিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রোজেন ক্রমাগত হিলিয়ামে পরিণত হয়ে সূর্যে আলো ও তাপ আকারে শক্তি উৎপন্ন করে।

প্রায় ১০ লাখ পৃথিবীকে সূর্যের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া যাবে। অন্য দিকে ব্যাস বরাবর বসালে জায়গা হবে ১০৯টি পৃথিবীর। সৌরজগতের ৯৯.৮৬ ভাগ ভর সূর্য একাই ধারণ করে। সূর্যের মধ্যে ছয়টি অঞ্চল আছে- কেন্দ্রীয় অন্তর্বস্তু, বিকিরণ অঞ্চল, পরিচলন অঞ্চল, দৃশ্যমান পৃষ্ঠ বা ফটোস্ফিয়ার, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং সর্ববহিস্থ স্তর করোনা (মুকুট)। পৃথিবীর মত সূর্যে কোন কঠিন পৃষ্ঠ নেই, নক্ষত্রদের কারোই থাকে না।

কেন্দ্রে এর তাপমাত্রা দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেন্দ্রে উৎপন্ন শক্তিই সূর্যের চালিকাশক্তি যা থেকে সূর্য পৃথিবীতেও তাপ ও আলো বিতরণ করে। পরিচলন অঞ্চলে তাপমাত্রা নেমে যায় ২০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
সূর্যের পৃষ্ঠ তথা ফটোস্ফিয়ারের পুরুত্ব ৫০০ কিলোমিটার (৩০০ মাইল)। এখান থেকেই সৌর বিকিরণ মুক্ত হয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ে এবং ৮ মিনিট পর চলে আসে পৃথিবীতে। এই অঞ্চলের তাপমাত্রা সাড়ে পাঁচ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরের  অনুজ্জ্বল করোনা চোখে পড়ে শুধু পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময়, যখন চাঁদের আড়ালে ফটোস্ফিয়ার ঢাকা পড়ে যায়। ফটোস্ফিয়ারের পরে তাপমাত্রা আবার বেড়ে গিয়ে ২০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়। এর সঠিক ও পূর্ণাংগ কারণ এখনও অজানা।

প্রায় সাড়ে ৪ শো কোটি বছর আগে সূর্যের জন্ম। বেঁচে থাকবে আরো প্রায় সমপরিমাণ সময়। কেন্দ্রে হাইড্রোজেন ফিউশান বন্ধ হলে আরো বেশ কিছু পরিবর্তনের পরে এটি লোহিত দানবে (Red Giant) পরিণত হবে। তখন এর ব্যাসার্ধ বেড়ে গিয়ে শুক্র গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছবে, এবং সম্ভবত পৃথিবীকেও স্পর্শ করবে।
নোট-১ঃ প্রকৃত গড় দূরত্ব ১৪.৯৬ কোটি কিলোমিটার বা ৯.২৯৬ কোটি মাইল।

সূর্য সম্পর্কিত সকল নিবন্ধ পাবেন এখানে। অন্যান্য সকল পরিভাষার তালিকা এখানে

সূত্র
১। নাসাঃ সৌরজগৎ
২। উইকিপিডিয়াঃ সূর্য 
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...