উত্তর গোলার্ধের আকাশের অন্যতম সহজলব্ধ তারামণ্ডলী হল ক্যাসিওপিয়া (Cassiopeia)।অন্যান্য তারামণ্ডলীর (constellation) চেয়ে ক্যাসিওপিয়ার গঠন অনেক সাবলীল ও দৃষ্টি নন্দন। এটি দেখতে অনেকটা ইংরেজি M বা W অক্ষরের মতো। আর এই মণ্ডলীর সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রটিই হল শেডার (schedar)। নক্ষত্রদের আনুষ্ঠানিক নামকরণের ক্ষেত্রে তারামণ্ডলীর নামের সাথে গ্রিক অক্ষর মিলিয়ে নাম রাখা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটিকে বলা হয় আলফা নক্ষত্র। ক্যাসিওপিয়ার ক্ষেত্রেও শেডার বা আলফা ক্যাসিওপি হল সবচেয়ে উজ্জ্বল।
খুঁজে পাবার উপায়
শেডারকে পেতে হলে আগে পাওয়া দরকার ক্যাসিওপিয়া তারামণ্ডলীকে।
আপনি যদি সপ্তর্ষীমণ্ডলী চিনে থাকেন তবে ক্যাসিওপিয়াকে চিনবেনই। এরা সব সময় একে অপর থেকে উল্টো অবস্থানে থাকে। ক্যাসিওপিয়া যখন এর সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওঠে, সপ্তর্ষীমণ্ডলী তখন থাকে তার প্রায় বরাবর নিচে, দিগন্তেরও নিচে (বাংলাদেশ থেকে দেখতে)। এদের যে কোনো একটি যখন উত্তর- পূর্ব আকাশে থাকে, অপরটি তখন থাকে উত্তর- পশ্চিম আকাশে।
☛ তারামণ্ডলী কাকে বলে?
☛ সপ্তর্ষীমণ্ডলীর সন্ধানে
অক্টোবর, নভেম্বর মাসগুলো ক্যাসিওপিয়াকে দেখার সেরা মাস। নভেম্বর মাসে রাত নয়টার দিকে এটি এর সর্বোচ্চ উচ্চতায় থাকে। এ সময় একে ইংরেজি M অক্ষরের মতো দেখায়। অবস্থানভেদে কখনও আবার W এর মতো দেখায়। এই আকৃতির কারণে একে খুঁজে পাওয়া আসলেই সহজ।
এবার চিত্র থেকে মিলিয়ে নিন কোন তারাটি শেডার। এর আগে আমরা আলডেরামিন নক্ষত্র নিয়ে কথা বলার সময়ও এর কথা বলেছিলাম। শেডার ও কাফকে যোগ করে সামনে গেলেই পাওয়া যায় আলডেরামিন।
খেয়াল করুন, ক্যাসিওপিয়ার সবচেয়ে উজ্জ্বল তিনটি তারাকে দেখায় ইংরেজি V অক্ষরের মতো। আসলে শহরে বসে আকাশ দেখার সময় হঠাৎ করে তাকালে প্রথমেই W বা M এর বদলে V কেই চোখে পড়ে। বাকিরা একটু পরে চোখে ধরা পড়ে। এখন এই V এর শীর্ষে বা মাঝেই আছে শেডার।
আশা করি স্পষ্ট হয়েছে।
রূপকথায় ক্যাসিওপিয়া
পূরাণ বিখ্যাত ইথিয়পীয় রাণী ক্যাসিওপিয়ার নাম অনুসারে তারামণ্ডলীটির নামকরণ। তিনি ছিলেন সিফিয়াসের স্ত্রী। সিফিয়াস নামেও উত্তর আকাশে আরেকটি তারামণ্ডলী আছে। তাদের মেয়ে ছিল অ্যান্ড্রোমিডা। যাই হোক, ক্যাসিওপিয়া মণ্ডলীতে যে রাণীকে কল্পনা করা হয় তার বুকের মধ্যে শেডারের অবস্থান।
আর শেডার নামটিও এসেছে এ কারণেই। নামটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে। আরবিতে صدر (সাদর) অর্থ হল বক্ষ।
শেডারের বৈশিষ্ট্য
নক্ষত্রটি পৃথিবী থেকে ২৩০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এর আপাত উজ্জ্বলতা (apparent magnitude) হল ২.২। আমরা জানি, আপাত উজ্জ্বলতার মান বেশি হলে নক্ষত্ররা তুলনামূলক কম উজ্জ্বল হয়। সামগ্রিক বিচারে এটি রাতের আকাশের ৭১তম উজ্জ্বল নক্ষত্র। শেডার এই অরেঞ্জ জায়ান্ট বা কমলা দানব শ্রেণির নক্ষত্র।
আরো পড়ুনঃ
☛ আপাত উজ্জ্বলতা কাকে বলে?
আগে মনে করা হত, এটি একটি বিষম তারা। অর্থ্যাৎ, সময় সময় এর উজ্জ্বলতা কম- বেশি হয়। কিন্তু আধুনিক জ্যোতির্বিদরা এমন কনিও লক্ষণ খুঁজে পাননি। এর ভর সূর্যের প্রায় পাঁচ গুণ। তবে এর তাপমাত্রা সূর্যের চেয়ে কম। মনে করা হয়, নক্ষত্রটি ১০২ দিনে এক বার নিজ অক্ষের ওপর আবর্তন করে। আর আমাদের সূর্য এ কাজটি করে ২৫ দিনে।
অবস্থান
শেডারের বিষুব লম্ব হল + ৫৬ ডিগ্রি। পজিটিভ চিহ্ন থেকে বোঝা যাচ্ছে এটি আকাশের উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। বাংলাদেশে আমাদের অক্ষাংশ প্রায় ২৩ ডিগ্রি হওয়ায় আমাদের মাথার ওপরের বিষুব লম্ব হল + ২৩ ডিগ্রি। ফলে শেডার আমাদের মাথার সোজা ওপর থেকে উত্তর দিকে আরও প্রায় ৩৩ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে আছে।
সূত্রঃ
১। http://earthsky.org/brightest-stars/schedar-short-life-of-burning-bright
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Cassiopeia_(constellation)
৩। উইকিপিডিয়াঃ উজ্জ্বল তারাদের তালিকা
খুঁজে পাবার উপায়
শেডারকে পেতে হলে আগে পাওয়া দরকার ক্যাসিওপিয়া তারামণ্ডলীকে।
আপনি যদি সপ্তর্ষীমণ্ডলী চিনে থাকেন তবে ক্যাসিওপিয়াকে চিনবেনই। এরা সব সময় একে অপর থেকে উল্টো অবস্থানে থাকে। ক্যাসিওপিয়া যখন এর সর্বোচ্চ উচ্চতায় ওঠে, সপ্তর্ষীমণ্ডলী তখন থাকে তার প্রায় বরাবর নিচে, দিগন্তেরও নিচে (বাংলাদেশ থেকে দেখতে)। এদের যে কোনো একটি যখন উত্তর- পূর্ব আকাশে থাকে, অপরটি তখন থাকে উত্তর- পশ্চিম আকাশে।
☛ তারামণ্ডলী কাকে বলে?
☛ সপ্তর্ষীমণ্ডলীর সন্ধানে
ক্যাসিওপিয়া ও সপ্তর্ষীমণ্ডলী একে অপরের বিপরীত দিকে থাকে
|
এবার চিত্র থেকে মিলিয়ে নিন কোন তারাটি শেডার। এর আগে আমরা আলডেরামিন নক্ষত্র নিয়ে কথা বলার সময়ও এর কথা বলেছিলাম। শেডার ও কাফকে যোগ করে সামনে গেলেই পাওয়া যায় আলডেরামিন।
ক্যাসিওপিয়ার তারাগুলো |
খেয়াল করুন, ক্যাসিওপিয়ার সবচেয়ে উজ্জ্বল তিনটি তারাকে দেখায় ইংরেজি V অক্ষরের মতো। আসলে শহরে বসে আকাশ দেখার সময় হঠাৎ করে তাকালে প্রথমেই W বা M এর বদলে V কেই চোখে পড়ে। বাকিরা একটু পরে চোখে ধরা পড়ে। এখন এই V এর শীর্ষে বা মাঝেই আছে শেডার।
আশা করি স্পষ্ট হয়েছে।
রূপকথায় ক্যাসিওপিয়া
পূরাণ বিখ্যাত ইথিয়পীয় রাণী ক্যাসিওপিয়ার নাম অনুসারে তারামণ্ডলীটির নামকরণ। তিনি ছিলেন সিফিয়াসের স্ত্রী। সিফিয়াস নামেও উত্তর আকাশে আরেকটি তারামণ্ডলী আছে। তাদের মেয়ে ছিল অ্যান্ড্রোমিডা। যাই হোক, ক্যাসিওপিয়া মণ্ডলীতে যে রাণীকে কল্পনা করা হয় তার বুকের মধ্যে শেডারের অবস্থান।
আর শেডার নামটিও এসেছে এ কারণেই। নামটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে। আরবিতে صدر (সাদর) অর্থ হল বক্ষ।
শেডারের বৈশিষ্ট্য
নক্ষত্রটি পৃথিবী থেকে ২৩০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এর আপাত উজ্জ্বলতা (apparent magnitude) হল ২.২। আমরা জানি, আপাত উজ্জ্বলতার মান বেশি হলে নক্ষত্ররা তুলনামূলক কম উজ্জ্বল হয়। সামগ্রিক বিচারে এটি রাতের আকাশের ৭১তম উজ্জ্বল নক্ষত্র। শেডার এই অরেঞ্জ জায়ান্ট বা কমলা দানব শ্রেণির নক্ষত্র।
আরো পড়ুনঃ
☛ আপাত উজ্জ্বলতা কাকে বলে?
কমলা দানব নক্ষত্র শেডার |
অবস্থান
শেডারের বিষুব লম্ব হল + ৫৬ ডিগ্রি। পজিটিভ চিহ্ন থেকে বোঝা যাচ্ছে এটি আকাশের উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। বাংলাদেশে আমাদের অক্ষাংশ প্রায় ২৩ ডিগ্রি হওয়ায় আমাদের মাথার ওপরের বিষুব লম্ব হল + ২৩ ডিগ্রি। ফলে শেডার আমাদের মাথার সোজা ওপর থেকে উত্তর দিকে আরও প্রায় ৩৩ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে আছে।
আরও পড়ুন
শেডার নক্ষত্র দিয়ে অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথ খুঁজে নেওয়া যায় সহজেই। জানুন এখানে।
সূত্রঃ
১। http://earthsky.org/brightest-stars/schedar-short-life-of-burning-bright
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Cassiopeia_(constellation)
৩। উইকিপিডিয়াঃ উজ্জ্বল তারাদের তালিকা