Advertisement

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৬

গ্র্যাভিটি হিলের রহস্য

আচ্ছা বলুনতো, গাড়ি কোন পথে চলতে পারে? নিশ্চয়ই সমতল, ঢালু, আকাবাঁকা সব ধরনের পথেই গাড়ি চলবে। উত্তর সঠিক। এবার তাহলে বলুন, গাড়ির ইন্জিন বন্ধ করে দিলে এটি কোথায় কোথায় চলবে? এবার নিশ্চয়ই বলবেন, শুধু ঢালু পথ ধরে উপর থেকে নিচে সেটা হতে পারে। আমি যদি বলি, ঢালু পথে ইঞ্জিন বন্ধ করে রাখা গাড়িও নিচ থেকে উপরেও উঠতে পারে- এমনকি তা হতে পারে ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে, তবে কি বিশ্বাস করবেন?

সাধারণত একটি বস্তু নিজে নিজেই ঢালু পথে উপর হতে নিচে নামে। কারণ পৃথিবী অভিকর্ষ বল দ্বারা প্রতিটি বস্তুকে কেন্দ্রের দিকে টানে। কিন্তু এমনটা অস্বাভাবিক মনে হয় যখন কোনো বস্তু পাহাড়ের ঢালু পথে নিচ থেকে উপরে ওঠে কোনো প্রকার বল প্রয়োগ ছাড়াই। আশ্চর্যজনক হলেও আপাত দৃষ্টিতে এমনটি সত্য। এই বিশেষ ধরনের পাহাড়ের নাম গ্র্যাভিটি হিল। এর আরেক নাম ম্যাগনেটিক হিল।



আপাত দৃষ্টিতে দেখে মনে হচ্ছে কোনো শক্তি খরচ না করেই নিচ থেকে উপরে উঠা যাচ্ছে। আসলে কিন্তু এ সাইকেলের আরোহী উপর থেকেই নিচে নামছেন। কিন্তু দৃশ্যপট এমন হয়ে আছে যে উল্টোটাই মনে হচ্ছে। 

অনেকেই একে  রহস্যময় পর্বত বা রহস্যময় স্থান হিসেবে অভিহিত করে থাকেন, এমন কিছু স্থান যেখানে পরিপার্শ্বিক দৃশ্যপট এমন একটি দৃষ্টি বিভ্রম সৃষ্টি করে, যাতে একজন দর্শকের কাছে ঐ স্থানের একটি নিম্মমুখী ঢাল বিশিষ্ট রাস্তাকে উর্ধ্বমুখী ঢালু মনে হতে থাকে। এ সকল স্থানে কোনো গাড়ির গিয়ার বন্ধ করে রাখলেও তা আপনা আপনি চলতে থাকে। এতে করে চালক বা দর্শকের কাছে গাড়িটি উঁচু রাস্তা বেয়ে উঠে যাচ্ছে বলে মনে হয়। অথবা রাস্তায় পানি ঢালা হলে তা গড়িয়ে উঁচু রাস্তায় উঠছে বলে মনে হয়। এই পৃথিবীতে এরকম প্রায় একশ পাহাড় আছে । যেমন কানাডার কুইবেকের চারটিয়ারভিল, সৌদি আরবের মদিনার ওয়াদি ই জ্বিন, অস্ট্রেলিয়ার ওরোরা, ভারতের লাদাখে ইত্যাদি।

এসব পাহাড় পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। অনেকে মনে করেন, অতপ্রাকৃতিক শক্তি (supernatural force) বা চুম্বকীয় বলের এর কারণে এমনটি হয়ে থাকে, যা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার বিপরীত। তবে বিজ্ঞানীরা গ্রাভিটি হিলের রহস্য বের করেছেন।

সৌদিআরবের মদিনার ওয়াদি ই জ্বিন

বিজ্ঞানীরা জিপিএস ব্যবহার করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, এটা মরীচিকার মতই একটি দৃষ্টি ভ্রম, যা আলোক বিভ্রমের (optical illusion)  জন্য হয়ে থাকে। আশেপাশের গাছপালা, ঢালু এলাকা, আকাবাঁকা দিগন্তরেখা বা বাধাগ্রস্থ দৃষ্টিসীমার কারণে মানব চোখ ঐ এলাকার ঢাল নির্ণয়ের জন্য কোনো প্রসঙ্গ কাঠামো খুঁজে পায় না বলে মস্তিষ্কে এমন অনুভূতি সৃষ্টি হয় যাতে ঐ এলাকাটিকে
ঊর্ধমুখী ঢাল বলে মনে হয়।

গ্র্যাভিটি হিলের আরেকটি উদাহরণ 


Advertisement 02

Unknown

লেখকের পরিচয়

মোকারম হোসাইন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যয়নরত। বিশ্ব ডট কমের পাশাপাশি লেখালেখি করেন ব্যাপন ম্যাগাজিনেও।
লেখকের সব লেখা এখানে। ফেসবুকে লেখকঃ Mokarom Hossain

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...