Advertisement

শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

সৌরজগতে সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুন। ভরের দিক দিয়ে অবস্থান তিন-এ। আকার বড় হলেও দূরত্ব বেশি হবার কারণেই একে খুঁজে পেতে দেরি হয়েছিল। খালি চোখে দেখা যায় না বললেই চলে। সেজন্যেই এটিই সবার শেষে আবিষ্কৃত গ্রহ। ১৮৪৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর একে খুঁজে পাওয়া যায়। আবিষ্কার নিয়ে ইংরেজ ও ফরাসিদের মধ্যে ঘটে যায় কিছু বিতর্ক। সে আরেক কাহিনি।

আরও পড়ুনঃ 
☛ নেপচুন আবিষ্কারের গল্প 

যাই হোক, গ্রহ নক্ষত্ররা কত বড়- তার হিসাব হয় অন্তত দুইভাবে। এক, এরা আয়তনে কত বড়। ব্যাস বা ব্যাসার্ধ বলা আর আয়তন বলার মধ্যে আসলে কোনো পার্থক্য নেই। যার ব্যাস বা ব্যাসার্ধ বেশি হবে, আয়তন তো তারই বেশি হবে। আরেকটি তুলনীয় বিষয় হলো কার ভর কতটা বেশি।

ব্যাসের দিক দিয়ে নেপচুনের অবস্থান গ্রহদের মধ্যে চার নম্বরে। অর্থ্যাৎ, সৌর জগতের চারটি গ্যাস জায়ান্টের মধ্যে এটি সবচেয়ে ছোট। অপর তিনটি গ্যাস জায়ান্ট হলো বৃহস্পতি, শনি ও ইউরেনাস। তবে ইউরেনাস সামান্যই বড়। গ্যাস দানবদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হলেও অন্য চার গ্রহের তুলনায় একে দানব বলাই ভাল। আয়তন পৃথিবীর প্রায় ৫৮ গুণ। তার মানে, নেপচুনের ভেতরটা ফাঁপা করা হলে এর ভেতরে ৫৮টা পৃথিবী রেখে দেওয়া যাবে।

নেপচুন ও পৃথিবীর তুলনামূলক আকার 

গড় ব্যাসার্ধ হলো ১৫, ২৯৯ মাইল (২৪, ৬২২ কিমি.)। পৃথিবীর প্রায় চার গুণ। মানে চারটি পৃথিবীকে পাশাপাশি রাখলে নেপচুনের এক পাশ থেকে অপর পাশের প্রায় সমান হবে।

অন্যান্য বস্তুর মতোই আবর্তনের কারণে বিষুব অঞ্চলে এটি কিছুটা স্ফীত হয়ে আছে। এ আকৃতিকে বলা হয় অবলেট স্ফেরয়েড বা চাপা উপগোলক।

বিভিন্ন গ্রহের তুলনামূলক সাইজ
 বিষুব রেখা বরাবর পুরোটা ঘুরে আসতে হলে পাড়ি দিতে হবে ৯৬ হাজার ১২৯ মাইল পথ। তবে পায়ে হেঁটে কাজটি করা সম্ভব নয়। অন্য গ্যাস দানবদের মতোই এর কোনো কঠিন পৃষ্ঠদেশ নেই। ঢাকা বরফ দিয়ে।

আকারে পিছিয়ে থাকলে নেপচুন ইউরেনাসকে ভরের দিক দিয়ে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভরের দিক থেকে তাই নেপচুনের অবস্থান তিন নম্বরে। পৃথিবীর ১৭ গুণেরও বেশি ভর এর।  ওপরে আছে শুধু বৃহস্পতিশনি

পৃথিবীর তুলনায় বিভিন্ন গ্রহের ভর 

ঘনত্ব প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে ১.৬৩৬ গ্রাম। ইউরেনাসের মতোই এতেও শনি ও বৃহস্পতির চেয়ে বেশি পরিমাণ বরফ আছে। এ কারণেই এ দুটো গ্রহকে আইসি জায়ান্ট বা বরফ দানবও বলা হয়।

আরও পড়ুন
☛ কোন গ্রহের ভর কত
☛ অদ্ভুদ এক গ্রহ

সূত্রঃ 
১। স্পেস ডট কমঃ হাউ বিগ ইজ নেপটুন
২। ইউনিভার্স টুডেঃ সাইজ অব নেপটুন
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৮

গ্রহ-নক্ষত্রদের ক্ষেত্রে ঘূর্ণন আছে দুই রকম। একটি হলো নিজের অক্ষের সাপেক্ষে। এর কেতাবি নাম আবর্তন (rotation)। যেমন পৃথিবীর নিজ অক্ষের সাপেক্ষে একবার ঘূর্ণনে এক দিন হয়। পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই ঘূর্ণনকে তাই আহ্নিক গতিও (Diurnal motion) বলে। আর অন্য কোনো কিছুকে কেন্দ্র করে যে ঘূর্ণন তার নাম প্রদক্ষিণ (revolution)। যেমন পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এক বার ঘুরে এলে হয় এক দিন।

আরও পড়ুন
☛ আবর্তন ও প্রদক্ষিণের পার্থক্য

আমরা এর আগে বলেছিলাম, সূর্য আমাদের মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরছে। বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার বা ৫ লক্ষ মাইল। এত বড় বেগেও পুরো ছায়াপথকে ঘুরে আসতে সূর্যের সময় লাগে প্রায় ২৫ কোটি বছর।

আরও পড়ুন
☛ মিল্কিওয়েকে ঘিরে সূর্যের গতি

তাহলে বোঝা গেল, সূর্য প্রদক্ষিণ করছে। তাহলে আবর্তনও কি করছে? আসলে বলতে গেলে সব মহাজাগতিক বস্তুই আবর্তিত হচ্ছে। তবে সূর্যের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু গোলমেলে। কেন? পৃথিবীর কথা একটু চিন্তা করুন। প্রায় ২৪ ঘণ্টায় পুরো পৃথিবী ১ বার নিজ অক্ষেরে চারপাশে ঘুরে আসে। চাই সেটা মেরু অঞ্চল হোক বা বা উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুর মাঝামাঝিতে থাকা বিষুব অঞ্চলই হোক। সবখানেই ২৪ ঘণ্টায় হয় একটি ঘুর্ণন। একটি বল হাতে নিয়েও যদি একবার ঘুরিয়ে নেন, এর যে কোনো জায়গাই পূর্ণ একটি ঘূর্ণন সম্পন্ন করবে একই সাথে।

সমস্যা হলো সূর্য পৃথিবী বা বলের মতো কঠিন পদার্থ নয়। গঠিত উত্তপ্ত আয়নিত গ্যাসীয় প্লাজমা পদার্থ দিয়ে। ফলে বিষুব অঞ্চলে একটি পূর্ণ আবর্তন হয় ২৪.৪৭ দিনে। কিন্তু বিষুব অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে যেতে থাকলে এই বেগ কমে আসে। মেরু এলাকায় সময় লাগে ৩৮ দিন। সব মিলিয়ে গড় আবর্তন সময় ২৭ দিন।

সৌরজগতের বৃহস্পতি ও শনি গ্রহও অনেকটা সূর্যের মতো। এরা হলো গ্যাস দানব। ফলে এদের ঘূর্ণনেও দেখা যায় সূর্যের মতো একই রকম বিভিন্নতা।

বিভিন্ন অঞ্চলে সূর্যের আবর্তন বেগ 

আরও পড়ুনঃ
☛ বৃহস্পতি কেন নক্ষত্র নয়? 

এই ঘূর্ণের খবর আমরা কীভাবে জানলাম? উত্তর হলো সৌরদাগ (sun spot)। দেখা গেছে, সূর্যের বিশেষ বিশেষ দাগগুলো উল্লেখিত সময় পর একই অবস্থানে ফিরে আসে। ঘূর্ণন নিয়ে আরেকটি মজার ঘটনাও আছে। পৃষ্ঠের ওপরে যেমন ঘূর্ণনের বিভেদ আছে, তেমনি ঘূর্ণনের বিভেদ আছে সূর্যের ভেতরের অঞ্চলেও।

সূর্যের পৃষ্ঠের ঠিক ভেতরের এলাকা, কোর বা কেন্দ্রমণ্ডল ও বিকিরণ অঞ্চল একত্রে একটি কঠিন বস্তুর মতো ঘোরে। অন্য দিকে বাইরের স্তর, পরিচলন অঞ্চল ও আলোকমণ্ডল (photosphere) ঘোরে আবার ভিন্ন বেগে।
সূর্যের বিভিন্ন অঞ্চল।
বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। 
সূত্রঃ
২। উইকিপিডিয়া 
Category: articles

রবিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৮

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে আমাদের এই মহাবিশ্ব মূলত তিন ধরণের উপাদান নিয়ে গঠিত। একটি হচ্ছে সাধারণ পদার্থ, যা দিয়ে আমরা তৈরি। টেলিস্কোপের সাহায্যে নির্ণয় করা মহাবিশ্বের সকল দৃশ্যমান বস্তু বিভিন্ন মহাজাগতিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত। এছাড়াও রয়েছে ডার্ক ম্যাটার। মহাবিশ্বের মোট মহাকর্ষ বলের  প্রায় ৮৫ শতাংশের উৎস হল এই ডার্ক ম্যাটার। তবে এটার উৎপত্তি সম্পর্কে আমরা তেমন কিছুই জানি না। আরেকটি উপাদানের নাম ডার্ক এনার্জি। ধারণা করা হয়, ডার্ক এনার্জির কারণেই মহাবিশ্ব মহাকর্ষ বলকে উপেক্ষা করে ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে।
মহাবিশ্বের মোট ভরের বণ্টন

উপরে বর্ণিত প্রতিটি উপাদানই মহাশুন্যের স্থানকালকে বাঁকিয়ে দেয়। ঠিক যেমন আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বে বর্ণিত ছিল। এই তিনটি উপাদানের ফলে মহাশুন্যে সৃষ্ট স্থানকালের বক্রতাকে যোগ করলে দেখা যায়, মহাবিশ্ব প্রায় সমতল আকৃতির (Flat Curvature)।

মহাবিশ্বের মোট ভরস-শক্তির বণ্টন

তবে গবেষকদের মতানুসারে সমতল ছাড়াও মহাবিশ্বের আরও অনেক আকৃতি থাকতে পারত। মহাবিশ্বের ঋণাত্মক বক্রতা (Negative Curvature) থাকতে পারত। সেক্ষেত্রে ঋণাত্মক বক্রতাবিশিষ্ট মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ হত ধনাত্মক। আবার মহাবিশ্ব গোলক আকৃতির বা ধনাত্মক বক্রতাসম্পন্ন (positive curvature) হলে এর নীট শক্তির পরিমাণ দাঁড়াত ঋণাত্মক।
মহাবিশ্বের সম্ভাব্য তিন আকৃতি

বিষয়টি আরও ভালভাবে বোঝার জন্য আমরা মহাবিশ্বের কোন ঘূর্ণায়মান বস্তুর কক্ষপথের শক্তির কথা চিন্তা করতে পারি। কক্ষপথে ঘূর্ণনরত কোন মহাজাগতিক বস্তু যে বস্তুকে ঘিরে আবর্তন করে তার সাথে মহাকর্ষ বল দ্বারা আবদ্ধ থাকে। এই আবদ্ধ কক্ষপথের মহাকর্ষ বল ঋণাত্মক। তখন ঘূর্ণায়মান বস্তুটির কক্ষপথ অনেকটাই বৃত্তাকার থাকে। যদি আমরা  ঘূর্ণনরত বস্তুটিকে শক্তি প্রদান করি, তবে এর বেগ বেড়ে যাবে। ফলে এর উপর মহাকর্ষ বলের প্রভাব কিছুটা কমবে। যার কারণে এর কক্ষপথের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাবে এবং এর আকৃতি বৃত্তাকার থেকে ধীরে ধীরে উপবৃত্তাকার হতে থাকবে।

যত বেশি শক্তি প্রদান করা হবে, উপবৃত্তাকার কক্ষপথের দৈর্ঘ্য ততই বাড়তে থাকে। এভাবে শক্তি বাড়াতে থাকলে দেখা যাবে, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি প্রদানের ফলে ঘূর্ণায়মান বস্তুটি এত বেশি বেগ অর্জন করে ফেলে যার কারণে সেটি আর মহাকর্ষের টানে কক্ষপথে ফিরে আসে না। প্রকৃতপক্ষে বস্তুটি অসীম মহাবিশ্বে মুক্ত হয়ে যাবে। কক্ষপথ থেকে মুক্ত হবার মুহূর্তে ঘূর্ণায়মান বস্তু এবং যে বস্তুটিকে কেন্দ্র করে সেটি ঘুরছিল তাদের মোট মহাকর্ষীয় শক্তির পরিমাণ হবে শুন্য। তখন ঘূর্ণনরত বস্তুটির চলার পথের আকৃতি হবে প্যারাবলা বা পরাবৃত্ত (parabola)।

বিভিন্ন আকৃতির কক্ষপথ

ঘূর্ণনরত বস্তুটিকে আরও শক্তি প্রদান করলে সেটি মহাকাশে অসীম বিস্তৃতিতে চলতে থাকবে। তখন এর মহাকর্ষীয় শক্তি হবে ধনাত্মক। সে সময়ে বস্তুটির আবক্র পথের আকৃতি হবে হাইপারবোলা বা পরাবৃত্ত।

আমরা এই আকারগুলো বাড়িতে হরহামেশাই দেখতে পাই।  একটি টর্চলাইট বা ফ্ল্যাশলাইটের কথা আলোচনা করা যাক। এটি থেকে নিঃসরিত আলোকরশ্মি যখন কোন দেয়াল বা বস্তুর উপর পড়ে তখন আলোকরশ্মিগুলো কণিকের বিভিন্ন আকৃতি গঠন করে। যদি টর্চলাইটকে একেবারে সোজাসুজিভাবে রেখে দেয়ালে আলো ফেলা হয়,তখন আলোকরশ্মি দেয়ালে বৃত্ত তৈরি করবে।
বৃত্তাকার আলো  
টর্চলাইট থেকে দেয়ালে কিছুটা তির্যকভাবে আলো ফেললে আলো যে গঠন দেখাবে,সেটা হবে উপবৃত্ত।
(নীচের ছবি)
উপবৃত্তাকার আলো 
টর্চলাইটকে দেয়ালের সাথে সমান্তরালে রাখলে দেয়ালে যে আলোকরেখার অবয়ব দেখা যায়, সেটা হবে পরাবৃত্ত। (নীচের ছবি)
পরাবৃত্তাকার আলো 

টর্চলাইটটিকে সমান্তরালে রেখে কিছুটা তির্যকভাবে দেয়ালে আলোকরশ্মি ফেললে দেয়ালে যে আলোকচিত্র দেখা যাবে, সেটাকেই বলে হাইপারবোলা বা অধিবৃত্ত (বাসায় চেষ্টা করে দেখতে পারেন)।

অধিবৃত্তাকার আলো 
সুতরাং কণিকের এই বিভিন্ন অংশ কক্ষপথ এবং কক্ষপথ সম্পর্কিত বস্তুদ্বয়ের শক্তির সাথে জড়িত। যদি কক্ষপথের  প্যারাবোলা আকৃতির মত মহাশুন্য সমতল  হয়, তাহলে পুরো মহাবিশ্বের সর্বমোট নীট শক্তির পরিমাণ হবে শুন্য।

মহাবিশ্বের আকৃতি যদি সমতল না হয়ে অন্য কিছু (ধনাত্মক বক্রতা বা ঋণাত্মক বক্রতা বিশিষ্ট) হত, তবে এর সর্বমোট শক্তির পরিমাণ হয় ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক হত। কিন্তু মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ বাস্তবিকঅর্থে শুন্য।

এখন মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে,মহাবিশ্বের আকৃতি সমতল হওয়া আমাদের জন্য ভালো নাকি খারাপ? আসলে সমতল মহাবিশ্বের ধারণার মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সমাধান মিলেছে। সমতল মহাবিশ্বের তত্ত্ব থেকে বোঝা যায়, শুন্য থেকেই এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি। কারণ শুন্যের মোট শক্তি শুন্য। ধনাত্মক বা ঋণাত্মক কোন শক্তির কারণে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হলে তা অনেক বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্নের জন্ম দিত। যেমন, সেই শক্তির উৎস কী? যদি কিছু পরিমাণ নীট শক্তি মহাবিশ্বে অবশিষ্ট থাকত, তবে সেটি কতটুকু? কেন অতটুকু শক্তি থাকবে? কেন তার বেশি বা কম নয় ?
কিন্তু মহাবিশ্বের আকৃতি সমতল হওয়ার কারণে বিজ্ঞানীদের কখনোই এই প্রশ্নগুলোর সম্মুখীন হতে হয়নি।

সূত্রঃ
১। https://www.youtube.com/watch?v=i4UpvpHNGpM
২। https://www.youtube.com/watch?v=veU6hK3jMH4
৩। http://curious.astro.cornell.edu/about-us/103-the-universe/cosmology-and-the-big-bang/geometry-of-space-time/600-why-is-the-universe-flat-and-not-spherical-advanced
৪। https://blogs.scientificamerican.com/degrees-of-freedom/httpblogsscientificamericancomdegrees-of-freedom20110725what-do-you-mean-the-universe-is-flat-part-i/
৫। https://en.wikipedia.org/wiki/Shape_of_the_universe
Category: articles

রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭

দুই উপগ্রহসহ হাউমেয়া 
সৌরজগতের পাঁচ বামন গ্রহের অন্যতম হাউমেয়া। কক্ষপথ সবচেয়ে দূরের গ্রহ নেপচুনেরও বাইরে। ২০০৪ সালে জ্যোতির্বিদ মাইক ব্রাউনের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধানী দল হাউমেয়াকে খুঁজে বের করেন। তবে এটি বামন গ্রহ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ভর প্লুটোর তিন ভাগের এক ভাগ ও পৃথিবীর ১৪০০ ভাগের এক ভাগ। সূর্যকে ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২৮৪ বছর। এখন পর্যন্ত এর দুটো উপগ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে। বামন গ্রহটিতে এক দিন হয় মাত্র চার ঘণ্টায় । কারণ হলো দ্রুত আবর্তন। ১০০ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি চওড়া সৌরজগতের অন্য যে কোনো বস্তুর চেয়ে এটি দ্রুত ঘুরে।

সূত্রঃ নাসা সোলার সিস্টেম 
Category: articles

শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭


এখন পর্যন্ত জানা মতে বামন গ্রহ প্লুটোর উপগ্রহ আছে পাঁচটি। এদের মধ্যে হাইড্রার কক্ষপথ সবচেয়ে দূরে। আবিষ্কৃত হয় ২০০৫ সালে। একই বছর আবিষ্কৃত হয় আরেক উপগ্রহ নিক্স। ২০১৫ সালে নিউ হরাইজনস যান প্লুটোর পাশ দিয়ে যাবার সময় হাইড্রাকেও দেখে যায়। তবে এটি আবিষ্কৃত হয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে। গ্রিক রূপকথার নয় মাথাওয়ালা সাপ হাইড্রার নাম অনুসারে এর এ নাম রাখা হয়। 
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৭

 ১৯২৮ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানী পল ডিরাক প্রথম বলেছিলেন, ইলেকট্রনের চার্জ ধনাত্মক-ঋণাত্মক দুটোই হতে পারে। আর ধনাত্মক চার্জধারী (e$^+$) এই ইলেকট্রনেরই নাম পজিট্রন। অন্য নাম অ্যান্টিইলেক্ট্রন। প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৯২৯ সালে।
ইলেকট্রন ও তার প্রতিকণা পজিট্রন

ভর ইলেক্ট্রনের ভরের সমান।  একে বিটা প্লাস ($\beta^+$) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। নির্গত হয় তেজ্বস্ক্রিয় ক্ষয়ের ফলে । আবার কখনও কখনও ফোটন বা একক তরঙ্গের আলো কোন ধাতব পরমানুর সাথে সংঘর্ষ করলেও এটি নির্গত হতে পারে। একটি প্রোটন ভেঙ্গে সধারণত একটি পজিট্রন একটি নিউট্রন ও কিছু শক্তি নির্গত হয়। পজিট্রন এর সাথে সংঘর্ষে প্রায় ১০২৪ কিলোইলেকট্রনভোল্ট শক্তি উৎপন্ন হয়।

পজিট্রন প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম দুভাবেই উৎপন্ন হয়। মজার ব্যপার হলো, এটি প্রত্যেক মানুষের শরীর থেকেও নির্গত হয়! প্রাকৃতিক উৎস হলো মানব শরীরের পটাসিয়াম-৪০ আইসোটোপ। এ আইসোটোপ মানব দেহের সবচেয়ে প্রাচীন। জেনে অবাক হবেন যে ৭০ কেজির একজন মানব শরীরে প্রতিদিন ৪০০০টি পজিট্রন পটাসিয়াম-৪০ আইসোটোপ থেকে উৎপন্ন হয়। এছাড়াও কলার থেকেও পাওয়া যায় কিছু পজিট্রন।

পরমাণুর নিউক্লিয়াস ভেঙে ইলেকট্রন ও পজিট্রন তৈরি

কৃত্রিমভাবে ফ্লোরিন-১৮, অক্সিজেন-১৮, কার্বন-১৪, নাইট্রজেন-১৬ ও আরও কিছু পরমাণু আইসোটোপ তৈরী করে তা থেকে প্রাপ্ত পজিট্রন মানব দেহের কিছু রোগ নির্ণয়ে ব্যবহার হয়। অতিরিক্ত পজিট্রন (প্রায়-১০০০০০টি বা এর বেশী) কিন্তু মানব শরীর ও বিভিন্ন জীবের জন্য হুমকি স্বরুপ। যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

আরও পড়ুনঃ 
☛ পারমাণবিক কণারা চার্জ ও ভর পেল কোথায়?
Category: articles

বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৭

আজ ৮ নভেম্বর। 
১৬৫৬ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন ইংরেজ জ্যোতির্বিদ এডমান্ড হ্যালি। 

হ্যালির ধূমকেতুর কক্ষপথ হিসাব করার জন্যে তিনি সবচেয়ে বিখ্যাত। বলাই বাহুল্য ধূমকেতুটির নামকরণ তাঁর নামেই হয়েছে। একই সাথে তিনি ছিলেন গণিত, ভূ-পদার্থ, আবহাওয়া ও পদার্থবিদ। 

এডমান্ড হ্যালি

জন্ম ৩৬১ বছর আগে। ইংল্যান্ডের লন্ডনের কাছের একটি গ্রামে। বাবা সাবানের ব্যবসা করে ধনী হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু হ্যালির ঝোঁক ছিল গণিতের দিকে। শুরুতে অধ্যয়ন করেন সেন্ট পলস স্কুলে। ১৬৭৩ সালে চলে আসেন অক্সফোর্ডের কুইনস কলেজে। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি সৌরজগত ও সৌরদাগ (sunspot) নিয়ে পেপার প্রকাশ করেন। 

সপ্তদশ শতকটি উদীয়মান বিজ্ঞানীদের জন্যে ইংল্যান্ড ছিল খুব অনুকূল জায়গা। লন্ডনের রয়েল সোসাইটি এ শতকেই (১৬৬০) প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যালি তখন ছোট্ট এক শিশু। বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরা এখানে মিলিত হতেন প্রতি হপ্তায়। জন ফ্ল্যামস্টিড ছিলেন প্রথম অ্যাস্ট্রোনোমার রয়েল। 

১৬৭৩ সালে কুইনস কলেজে এসে ফ্ল্যামস্টিডের সাথে সাক্ষাৎ হয় হ্যালির। বিভিন্ন সময়ে ফ্ল্যামস্টিডের সাথে দেখা করে তিনি জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। 

এ সময় ফ্ল্যামস্টিড একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলেন। উত্তর আকাশের তারাগুলোর একটি তালিকা চাই। তবে খালি চোখে নয়। এত দিনে টেলিস্কোপ চলে এসেছে। হ্যালি ভাবলেন, আমিও একই কাজ করব। তবে উত্তরের বদলে দক্ষিণের আকাশ নিয়ে। 

১৬৭৬ সালের নভেম্বরে তিনি দক্ষিণে যাত্রা করলেন। চুকিয়ে আসলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠটিও। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি জাহাজে চেপে চলে এলেন সেন্ট হেলেনা দ্বীপে। দ্বীপটি মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে। সবচেয়ে কাছের ভূখণ্ড রিও ডি জেনিরো থেকে আড়াই হাজার মাইল পুবে। বাবার অঢেল টাকা থাকায় ভাড়া নিয়ে চিন্তা করতে হল না। 

খারাপ আবহাওয়ার কারোণে কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। কিন্তু তবুও তিনি কিন্তু খালি হাতে ঘরে ফেরেননি। ১৬৭৮ সালে ফিরে আসার সময় তাঁর কাছে ছিল ৩৪১ টি তারার তথ্য। পর্যবেক্ষণ করেন বুধ গ্রহের দুর্লভ একটি অতিক্রমণও (transit)। 

তাঁর প্রকাশিত নক্ষত্রের এই ক্যটালগ ছিল একটি বড় সাফল্য। এই ধরনের কাজ এটাই প্রথম। দক্ষিণের নক্ষত্রগুলোকে এর আগে কেউ টেলিস্কোপ দিয়ে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করেনি। জানতে চেষ্টা করেনি তাদের অবস্থান। জ্যোতির্বিদ হিসেবে এটাই হ্যালির প্রথম সাফল্য। একই বছর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। নির্বাচিত হন রয়েল সোসাইটির ফেলো। 

১৬৮৪ সালে আসেন কেমব্রিজে। দেখা হয় নিউটনের সাথে। নিউটন ও রবার্ট হুকসহ রয়েল সোসাইটির কয়েকজন বিজ্ঞানী তখন গ্রহদের গতির ব্যাখ্যা খুঁজছিলেন। হ্যালিও যোগ দিলেন এই দলে। মজার ব্যাপার হল, অন্য সবার চেয়ে তাঁর বয়স কম। জানার চেষ্টা চলছে কীভাবে ও কেন গ্রহরা সূর্যের চারদিকে ঘোরে। সবাই চাচ্ছিলেন অন্যদের আগে কীভাবে সমাধান বের করে ফেলা যায়। দরকার এমন একটি মডেল যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাবে যে কেন গ্রহরা সূর্য থেকে দূরে ছিটকে যায় না, বা সোজা সূর্যের দিকে চলে যায় না। 

হ্যালি ও হুক এর একটি সমাধান পেলেন। তাঁরা একটি বলের প্রস্তাব করলেন, যেটি একটি গ্রহকে সূর্যের চারপাশের কক্ষপথে ধরে রাখবে। এই বল দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতে কমবে। এই নিয়মকেই এখন আমরা বিপরীত বর্গীয় সূত্র (inverse-square law) হিসেবে জানি। 

হ্যালি ও হুক ঠিক পথেই ছিলেন। কিন্তু তাঁরা এর একটি তত্ত্বীয় রূপ তত্ত্ব দাঁড় করাতে ব্যর্থ হলেন, যা দিয়ে পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করা যাবে। হ্যালি গেলেন নিউটনের কাছে। তাঁর মতামত তুলে ধরলেন। এও বললেন, যে তিনি বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিউটন হ্যালির কাছ থেকে অনুপ্রেরণ নিলেন। এর জের ধরেই প্রকাশিত হল তাঁর ম্যাথমেটিক্যাল প্রিন্সিপাল অব ন্যাচারাল ফিলোসফি, সংক্ষেপে যার নাম প্রিন্সিপিয়া। 

রয়েল সোসাইটি এই প্রবন্ধের সম্পাদনার ভার দিলেন হ্যালিকেই। এর কৃতিত্ব নিয়ে নিউটন ও হুকের দ্বন্দ হ্যালি খুব কৌশলে সমাধান করেন। তিনি এর প্রুফ দেখেন ও লাতিন ভাষায় এর ভূমিকা লিখে দেন। 

হ্যালি আবহাওয়া বিদ্যায়ও অবদান রাখনে। ১৬৮৬ সালে তিনি একটি বিশ্ব মানচিত্র তৈরি করেন। এতে ছিল বিপুল পরিমাণ তথ্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বায়ুগুলো সম্পর্কে এই মানচিত্রে তথ্য ছিল। মনে করা হয়, এটাই আবহাওয়াবিদ্যার প্রথম প্রকাশিত মানচিত্র। 

দুই একটি বিষয়ে অবদান রেখে হ্যালির যেন মন ভরছিল না।  তিনি কাজ করতে লাগলেন বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে। মৃত্যুর হারের সাথে বয়সের সম্পর্ক নিয়েও তিনি কাজ করেন। তাঁর এই অবদান পরে জীবন বিমার জন্যে কাজে লাগে। 

১৭০৪ সালে অক্সফোর্ডে জ্যামিতির অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর প্রকাশ করেন ধূমকেতু নিয়ে গ্রন্থ- আ সিনোপসিস ইন অ্যাস্ট্রোনমি অফ কমেটস। এতে তিনি ২৪ টি ধূমকেতুর কক্ষপথের বিবুরণ লেখেন। ১৩৩৭ থেকে ১৬৯৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছিল এই ধূমকেতুগুলো। 

এদের মধ্যে তিনটি ধূমকেতু তাঁর খুব নজর কাড়ে। এগুলো দেখা গিয়েছিল যথাক্রমে ১৫৩১, ১৬০৭ ও ১৬৮২ সালে। তিনি বললেন, এগুলোর মধ্যে এত বেশি মিল দেখা যাচ্ছে যে এরা আসলে একই ধূমকেতু না হয়েই যায় না। আর ফিরে আসে ৭৬ বছর পর পর। এটা ছিল যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত। তিনি পূর্বাভাস দিলেন, ধূমকেতুটি আবার ফিরে আসবে। সালটি হল ১৭৫৮। তিনি বললেন, 
১৪৫৬ সালে... পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে একটি ধূমকেতুকে দেখা গিয়েছিল। অতএব, আমার সিদ্ধান্ত হল, ১৭৫৮ সালে এটি আবারও ফিরে আসবে। 
হ্যালির ধূমকেতু 
১৭২০ সালে হ্যালি ফ্ল্যামস্টিডের স্থলাভিষিক্ত হন। নিয়োগ পান দ্বিতীয় অ্যাস্ট্রোনোমার রয়েল হিসেবে।

তিনি ৮৫ বছর বেঁচে ছিলেন। মারা যান ১৭৪২ সালে। তাঁর পূর্বাভাসকৃত ধূমকেতু ঠিকই পরে দেখা যায়। তবে ১৭৫৮'র বদলে ১৭৫৯। কারণ, ওটা ঠিক ৭৬ বছর ফেরে না। একটু এদিক-ওদিক হয়। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮৬ সালে, আবার ২০৬১ সালে দেখা যাবার কথা রয়েছে। তত দিনে বেঁচে থাকলেও আপনি বুড়ো হয়ে যাবেন। 

হ্যালির ধূমকেতু একবার দেখার পর ভাগ্যক্রমে আবারও দেখতে দেখতে বুড়ো হয়ে যাবেন। 


আরো পড়ুনঃ

সূত্রঃ
১। http://earthsky.org/space/today-in-science-edmond-halley-nov-8-1656
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Edmond_Halley
৩। https://en.wikipedia.org/wiki/Royal_Society
৪। 
Category: articles

সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭

আমরা দেখি, গ্রহ, উপগ্রহ ও নক্ষত্রদের আকৃতি হয় গোলাকার (spherical)। অবশ্য মেরু অঞ্চলের দিকে কিছুটা চাপা। দুটো বিষয়ই আমরা আলোচনায় রাখবো। 

আপনাকে এক খণ্ড পাথর দেওয়া হলে একে আপনি ইচ্ছে মতো কেটে যে কোন আকৃতি দিতে পারবেন- ঘনক, পিরামিড বা গোলক ইত্যাদি। নিজের মতো রেখে দিলে এটি আগের মতই থাকবে। গোলকাকার হয়ে যাবে না। কিন্তু ধরুন, ঐ পাথরটির বদলে আপনাকে পৃথিবীর সমান একটা বস্তু দেওয়া হল। একে কেটে কুটে কি আপনি পিরামিড বানাতে পারবেন?

পারবেন না। কারণ, এখন বস্তুটা যথেষ্ট ভারী। এর অভিকর্ষ যথেষ্ট শক্তিশালী। বস্তুর আকার যত বড় হবে, এর অভিকর্ষও তত বড় হবে। পূর্বোক্ত পাথরখণ্ডটিরও অভিকর্ষ (Gravity) আছে। কিন্তু অতি নগণ্য, অকার্যকর।
বিভিন্ন গ্রহ 
মনে করুন, আপনি পৃথিবীর বুকে খুব উঁচু একটা ভবন নির্মাণ করবেন। তাহলে, এর ভিত্তি হতে হবে যথেষ্ট মজবুত। তা না হলে এটা নিজের ভারে তথা পৃথিবীর অভিকর্ষের চাপে ধসে পড়বে। কোনো গ্রহ, উপগ্রহ বা নক্ষত্রে যদি অনেক উঁচু কোন স্থাপনা থাকতো, তবে তা অভিকর্ষের টানে গুঁড়িয়ে যেত। ভাবছেন, তাহলে বুর্জ খলিফার মত সুউচ্চ স্থাপনা টিকে আছে কিভাবে? হ্যাঁ, এর ফাউন্ডেশান বা ভিত্তি যথেষ্ট মজবুত এবং উচ্চতা তত বেশি নয় যত হলে ধসে পড়ত।  পাহাড়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

একটু খেয়াল করুনঃ 
গ্রহ যদি হতো ঘনকের মতো, তার অর্থ হতো এর কোণাগুলো অপেক্ষাকৃত উঁচু। যেহেতু গ্রহ, নক্ষত্রদের অভিকর্ষ খুব বেশি শক্তিশালী সে কারণে এ কোণাগুলো টিকে থাকতে পারে না, ধসে পড়ে। যে কোনো কিছুই মাথা চাড়া দিতে যাবে, অভিকর্ষ তাকে এক হাত দেখে নিবে। ফলে বস্তুটি চার পাশ থেকেই সমান হতে শুরু করবে।

এখন, সবকিছুই টান-প্রাপ্ত হয় কেন্দ্রের দিকে। ফলে, কেন্দ্রের চারপাশে ভর জড় হয়ে গোলকের (sphere) আকৃতি তৈরি হবে। যথেষ্ট শক্তিশালী ভিত্তি না থাকলে সব উঁচু নিচু স্থাপনা সমতল হয়ে যাবে। এ জন্যেই গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্ররা গোলকাকার। যেসব গ্রহাণুর অভিকর্ষ অপেক্ষাকৃত কম, তারা গোল হতে পারে না। হয় এবড়ো থেবড়ো। যেমন, ছবিতে দেখন ৪ ভেস্টা নামক গ্রহাণুর ছবি।


মহাকাশযান ডন থেকে ৪ ভেস্টার ছবি।
গোলকাকার হবার জন্য সর্বনিম্ন ভর কত হতে হবে?
ব্যাপারটা আসলে শুধু ভরের উপরই নির্ভরশীল নয়। বস্তুটা কী দিয়ে তৈরি তাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোন কোন বস্তুকে অন্য বস্তুর চেয়ে সহজে নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ভর (mass) কম হলেও চলবে। পাথুরে কোন বস্তুর ক্ষেত্রে গোলাকাকৃতি পাবার জন্য ব্যাস প্রয়োজন ৬০০ কিলোমিটার। কিন্তু বরফ নির্মিত বস্তু হলে ব্যাস ৪০০ কিলোমিটার হলেও যথেষ্ট।

যেমন উপরোক্ত গ্রহাণু  ৪ ভেস্টা হল সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহাণু। এর আকার হল দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে যথাক্রমে ৫৭৮ ও ৪৫৮ কিলোমিটার। ১৮০৭ সালে হেনরিখ উইলহেম ওলবার্স।

মেরু অঞ্চলে চেপে যায় কেন?
আমরা জানি গ্রহ, উপগ্রহরা যেমন আমাদের পৃথিবীও মেরু অঞ্চলে একটু চাপা তথা কম ব্যাসার্ধ্য বিশিষ্ট। এর কারণ হল পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করেআবর্তন বেগ দুই মেরু মাঝখান তথা বিষুব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আর মেরুতে কম। ফলে,  ঘূর্ণনের কারণে বিষুব অঞ্চলের দিকে বস্তুটা একটু লম্বা হয়ে যায়।

সূত্রঃ
[1] curious.astro.cornell.edu
[২] spaceanswers
[৩] www.universetoday.com
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...