Advertisement

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

সৌরজগতের গ্রহরা সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে। পৃথিবী নামক আমাদের গ্রহটি একবার সূর্যকে ঘুরে আসতে যে সময় নেয়, তাকে আমরা এক বছর বলি। সূর্যও কিন্তু নির্দিষ্ট কোন জায়গায় বসে নেই। সৌরজগতের সবকিছুকে সাথে নিয়ে আমাদের নিজস্ব গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণ করে চলছে। প্রদক্ষিণের এই বেগ ঘণ্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার! মাইলের হিসাবে এটি দাঁড়ায় ৫ লক্ষে। তাহলে বলা চলে, মাত্র ৯০ সেকেন্ডে আমরা ২০ হাজার কিলোমিটার (বা সাড়ে ১২ হাজার মাইল) পথ অতিক্রম করছি!
নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, বেগটি অনেক বিশাল। তা ঠিক। কিন্তু অতিক্রম করার জন্যে যদি সামনে অনেক বিশাল পথ পড়ে থাকে তখন কিন্তু বেগটাকে আর লক্ষ্যণীয় মনে হয় না। যেমন, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ব্যাসই হচ্ছে ১ লাখ আলোকবর্ষ। মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে দুই-তৃতীয়াংশ দূরত্বে তথা ২৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরে সূর্যের অবস্থান। ফলে, মিল্কিওয়েকে একবার ঘুরে আসতে সূর্যের ২২.৫ থেকে ২৫ কোটি বছর সময় লেগে যায়। এই সময়কে বলা হয় কসমিক ইয়ার বা মহাজাগতিক বর্ষ (Cosmic year)।
মিল্কিওয়ে ছায়াপথে সূর্যের অবস্থান 
আমরা জানলাম, সূর্য এক জায়গায় বসে নেই। আমাদের পৃথিবীর মতই প্রদক্ষিণের পাশাপাশি সূর্যও কিন্তু আবার নিজের অক্ষের সাপেক্ষেও ঘোরে। একে আমরা বলি আবর্তন। তবে, পৃথিবীর মত এর সর্বত্র আবর্তন বেগ সমান নয়। সৌরদাগ (Sunspot) দেখে বোঝা যায় সূর্যের বিষুব অঞ্চল প্রতি ২৭ দিনে এক বার আবর্তন করে। মেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই সময়ের মান ৩১ দিন। তাছাড়াও প্লাজমা পদার্থে গঠিত সূর্যের কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে আবর্তন বেগের মান আলাদা।
শিল্পীর তুলিতে সৌরজগতের ছবি
কিন্তু মিল্কিওয়ের কী খবর? ছায়াপথটিকি স্থির বসে আছে? প্রথমত এর রয়েছে আবর্তন গতি। সূর্যের মতই কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে এর বেগ ভিন্ন ভিন্ন। আমাদের সূর্যের দূরত্বে এটি ২০ কোটি বছরে এক বার আবর্তন করে। ছায়াপথটিকে প্রদক্ষিণ করতে সূর্যের প্রয়োজনীয় সময় থেকে এই হিসাব বের করা হয়েছে।
কিন্তু গ্যালাক্সিরাকি অন্য কাউকে কেন্দ্র করে ঘোরে? কখনো এরা একে অপরকে প্রদক্ষিন করে। অনেক সময় আবার দল বা গুচ্ছবদ্ধ গ্যালাক্সিরা এদের সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি লোকাল গ্রুপের অন্যান্য গ্যালাক্সিদের সাথে সম্পৃক্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ছোট ও বড় ম্যাজেলানিক ক্লাউড, অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি, ট্রায়াঙ্গুলাম গ্যালাক্সি (Triangulum)। এদের সমন্বিত কার্যক্রমে ঠিক সূর্যের মত কোন কক্ষপথ তৈরি করতে পারেনি। এটা আসলে অনেকটা জোড়াতারা বা বহুতারাজগতে যেমন দুই বা অনেকগুলো তারা সবার সার্বিক ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিণ করে ঠিক সে রকম আচরণ করে। অবশ্য আরো ৪ বিলিয়ন বছর পরে মিল্কিওয়ে এবং অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাকটিক সংঘর্ষে লিপ হবে।
সূত্রঃ
১। Earth Sky
২। Harvard University
৩। কর্নেল ইউনিভার্সিটি

Category: articles

মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫

আজকের ছবিঃ এনজিসি ৩৫২১ (NGC 3521) নামক সর্পিল গ্যালাক্সির কেন্দ্র
বিবরণঃ চিত্রে প্রদর্শিত বিপুল পরিমাণ তারকা, গ্যাস ও ধূলিকণার বাস একটি প্রতিবেশী গ্যালাক্সিতে। গ্যালাক্সিটির অবস্থান সিংহ তারামণ্ডলীতে এবং দূরত্ব সাড়ে তিন কোটি আলোকবর্ষ। ৫০ হাজার আলোকবর্ষ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করা গ্যালাক্সিটির কেন্দ্রীয় অংশই শুধু চিত্রে দেখা যাচ্ছে। পৃথিবীর আকাশে অপেক্ষাকৃত উজ্জ্বল এই গ্যালাক্সিটি ছোটখাট টেলিস্কোপের লেন্সেও ধরা পড়ে।
সূত্রঃ
১। নাসা
Category: articles

শুক্রবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫

ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউড (SMC) গ্যালাক্সিটিকে সবচেয়ে সহজে চোখে পড়ে দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশ থেকে। এটি এর বড় ভাই লার্জ ম্যাজেলানিক ক্লাউড থেকেও দক্ষিণে অবস্থিত। তবে এরা দুজনেই আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাইরে অবস্থিত হলেও দুজনেই মিল্কিওয়ের স্যাটেলাইট গ্যালাক্সি অর্থ্যাৎ এরা মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণ করছে।
১৭ ডিগ্রি উত্তর গোলার্ধ থেকে এদের কোনটাকেই চোখে পড়ে না। অর্থ্যাৎ উত্তর আমেরিকা, উত্তর আফ্রিকা, সমগ্র ইউরোপ এবং এশিয়ার উল্লেখযোগ্য অংশ থেকে (ভারতের দক্ষিণ অংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ছাড়া) এদেরকে দেখা যাবে না। শরতের শেষ এবং শীতের শুরুতে (অক্টোবরে শেষ রাতে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে রাতের প্রথম প্রহরে এবং জানুয়ারিতে সন্ধ্যার পরপরই) ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউডকে সবচেয়ে ভালোভাবে দেখা যায়। যখন ইংরেজি W বা M (অবস্থানভেদে) অক্ষরের মত আকৃতির ক্যাসিওপাইয়া তারামণ্ডলী রাতের উত্তর আকাশের চূড়ায় উঠবে তখনই দক্ষিণ আকাশের চূড়ায় দেখা যাবে এসএমসিকে (SMC- Small Magellanic Cloud)।
বড় ও ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউড
দক্ষিণ খ-মেরু (Celestial pole) থেকে এটি ২০ ডিগ্রি কৌণিক দূরত্বে এবং টিউক্যানা তারামণ্ডলীতে এর অবস্থান। একে খুঁজে পেতে আপনাকে সহায়তা করবে রাতের আকাশের দশম উজ্জ্বল তারকা নদীমুখ (Acherner)। আকাশ নদীর সমার্থক তারামণ্ডলী ইরিডেনাসে অবস্থিত এই তারকাটি থেকে ১৫ ডিগ্রি নিচে এসএমসি এর অবস্থান। এঁকেবেঁকে চলা আকাশনদী তারামণ্ডলীটি আদম সুরতের পায়ের নক্ষত্র রিজেলের নিকট থেকে শুরু হয়ে আখেরনার (নদীমুখ) তারকায় গিয়ে শেষ হয়েছে।
উজ্জ্বলতা এবং আকার- দুই ক্ষেত্রেই এসএমসি বড়ভাই এলএমসি (লার্জ ম্যাজেলানিক ক্লাউড) এর চেয়ে অনেক পিছিয়ে। প্রায় আড়াই বাই ৫ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে এর বিস্তার। ওভারঅল উজ্জ্বলতা +২। প্রায় ১৩ বর্গ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে এর দীপ্তি ছড়িয়ে থাকায় এলএমসির চেয়ে একে খুঁজে পাওয়া কঠিন, আর প্রয়োজন হয় খুব অন্ধকার আকাশের।
ইতিহাস ও রূপকথাঃ
এটি অনুজ্জ্বল এবং দক্ষিন গোলার্ধে অবস্থিত হবার সুবাদে প্রাচীন ইউরোপের রূপকথার বেড়াজাল থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়ায়র রূপকথায় এর স্থান আছে। পলিনেশীয়দের কাছে দুই ম্যাজেলানিক ক্লাউডই চলাচলের ভালো সহায়ক ছিল। নিউজিল্যান্ডে এদেরকে ঝড়ের পূর্বাভাস মনে করা হত। ৬ষ্ঠ শতকের শুরুর দিকে ফার্ডিন্যান্ড ম্যাজেলানের গবেষণার সূত্র ধরে এদের সাথে ম্যাজেলান নামের সংযোগ ঘটে। বেয়ারের ইউর‍্যানোমেট্রিয়াতে এদেরকে যথাক্রমে ubecula major ও nubecula minor বলা হয়েছিল। ১৭৫৬ সালে ফরাসী জ্যোতির্বিদ লেকেইলি তাঁর তারা মানচিত্রে এদেরকে বর্তমান নাম দেন।
বৈশিষ্ট্যঃ
এলএমসির পরে এটি মিল্কিওয়ের চতুর্থ নিকটবর্তী গ্যালাক্সি। সবচেয়ে ভালো হিসাব অনুযায়ী এটি ২ লাখ ১০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে তথা এলএমসির চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি দূরে অবস্থিত। অনিয়তাকার গ্যালাক্সিটি মিল্কিওয়ের টানের কারণের দণ্ডযুক্ত সর্পিল কাঠামো প্রদর্শন করে। সবচেয়ে প্রসারিত অঞ্চলে এর ব্যাস ১৫ থেকে ১৭ হাজার আলোকবর্ষ। এতে তারকার সংখ্যা মাত্র কয়েক কোটি, যা এলএমসি বা মিল্কিওয়ের চেয়ে অনেক কম।
আকাশে ঠিকানাঃ
খ-গোলকে এর অবস্থান নিম্নরূপঃ
বিষবাংশঃ ৫২ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড
বিষুব লম্বঃ প্রায় (-) ৭২ ডিগ্রি।

সূত্রঃ
১। আর্থ স্কাই
২। উইকিপিডিয়াঃ ইরিডেনাস
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৪

যাঁকে আধুনিক কসমোলজির জনক বলে প্রায়শই অভিহিত করা হয়, সেই বিজ্ঞানী এডুইন হাবল এমন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছিলেন যা মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধ্যানধারণা আমূল পাল্টে দেয়।
বিজ্ঞানী এডুইন হাবল
জন্ম ১৮৮৯ সালে। পেশাগত জীবন শুরু আইনজীবী হিসেবে। কিন্তু যার মন পড়ে রয়েছে মহাকাশের দূর সীমানায়, তার কি আর আইনের ধারায় মন বসে?  কয়েক বছর পরেই নিলেন জ্যোতির্বিদ্যায় ডক্টরেট । গ্র্যাজুয়েশনের পরপরই ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্ট উইলসন মানমন্দিরে (Observatory) কাজ করার দাওয়াত পেলেন। কিন্তু তিনি আবার ১ম বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকও যে! তাই কাজে যোগ দিতে কিছু দিন দেরি হয়ে গেল। তবে, ফিরে এসেই লেগে গেলেন। এখানেই তিনি বিশ্বের বৃহত্তম দুটি আকাশবীক্ষণ যন্ত্র (Telescope) নিয়ে কাজ করার সুযোগ পেলেন। এগুলো হল যথাক্রমে ৬০ ও ১০০ ইঞ্চির হুকার টেলিস্কোপ।

সৈনিক জীবন বুঝি বড্ড ভালো লেগেছিল!  ২য় বিশ্বযুদ্ধের দামামা শুরু হয়ে গেলে ১৯৪২ সালে আবারো মানমন্দির ছেড়ে গেলেন।  পেলেন বীরত্বের প্রতিকও।

মিল্কিওয়ের বাইরে উঁকিঃ
১৯২০ এর দশকেও আকাশে ছড়ানো ছিটানো ছোপ ছোপ আলোকে মনে করা হত নীহারিকা (Nebula)। মনে করা হত এগুলোর অবস্থানও মিল্কিওয়েতেই। আলাদা আলাদা করে NGC 6822, M33 ও এনড্রোমিডা গ্যালাক্সির ছবি নিরীক্ষা করার সময় হাবল এগুলোর প্রতিটির ভেতরে একটি সেফেইড ভেরিয়েবল নামক স্পন্দনশীল (Pulsating) নক্ষত্র (Star) দেখতে পেলেন। হাবল সাহেব হিসেব কষে বের করলেন নক্ষত্রগুলো কত দূরত্বে আছে। এতে করে বের হল নীহারিকাদের  দূরত্বও। দেখা গেল, মিল্কিওয়ে থেকে তাদের দূরত্ব অনেক বেশি দূরে।

মহাকাশবিদরাও বুঝলেন, এই নীহারিকাগুলোও আসলে মিল্কিওয়ের মতই ছায়াপথ (Galaxy)। প্রতিটি ছায়াপথে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন তারকা। আগে যেখানে মিল্কিওয়েকেই 'মহাবিশ্বের সব' মনে করা হত, সেখানে এবার মহাকাশবিজ্ঞানীদের চোখ আরো অনেক দূর প্রসারিত হয়ে গেল। 
প্রায় একই সময়ে হাবল গ্যলাক্সিদের শ্রেণিবিভক্ত করার একটি স্টান্ডার্ড উপায়ও বার করলেন। তিনিই প্রথম পরিষ্কার করে গ্যালাক্সিগুলোকে ৪টি শ্রেণিতে ফেললেন। এগুলো হল, ডিম্বাকৃতির (Elliptical), প্যাঁচানো তথা সর্পিলাকার (Spiral) , Barred Spiral ও অনিয়াতাকার (Irregular) গ্যালাক্সি। হাবল শুরুতে ধারণা করেছিলেন সর্পিল গ্যালাক্সিরা  ডিম্বাকৃতিরগুলো থেকে বিকশিত হয়। এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা জানেন সব গ্যলাক্সিদের আকৃতিই এদের জীবনের শুরুতেই নির্ধারিত হয়।

সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বঃ
গ্যালাক্সিদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে হাবল দেখলেন, ওগুলো স্থির হয়ে বসে নেই। উপরন্তু এরা প্রায় সবাই পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। অবশ্য এন্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের সাথে পারস্পরিক মহাকর্ষীয় টানে কাছে আসছে এবং আরো ৫০০ কোটি বছর পরে একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে।

ফলে জানা গেল, মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। যে প্রক্রিয়ায় মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার বের করা হয় তাকে বলে হাবলের নীতি (Huble's Law)। অবশ্য জর্জ লেমিটরও এর আগে ১৯২৭ সালে এই নীতি প্রস্তাব করেছিলেন। হিসেব করে পাওয়া গেল, মহাবিশ্ব একটি নির্দিষ্ট হারে প্রসারিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীর সম্মানে এই হারটিকে বলা হয় হাবল ধ্রুবক (Huble Constant)।

হাবলের এক দশক আগে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনও সাধারণ আপেক্ষিকতার নীতির মাধ্যমে সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ সময়ে তার কোন প্রমাণ না পাওয়া যাওয়াতে তিনি সেই প্রস্তাবের সমীকরণগুলো প্রত্যাহার করেন। কিন্তু হাবল সেই ধারণা প্রমাণিত করবার পরে আইনস্টাইন মাউন্ট উইলসনে গিয়ে বলেন, ঐ সমীকরণগুলো প্রত্যাহার ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল

অন্যান্য অবদানঃ
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও জ্যোতির্বিদ্যার জগতেই হাবলের রয়েছে আরো অবদান। পেয়েছেন অসংখ্যা পুরস্কার। কিন্তু মহাবিশ্বের পরিচয় উন্মোচিত করার পরেও তিনি নোবেল পুরস্কার পাননি। তাঁর জীবদ্দশায় নোবেল প্রাইজের জন্য  মহাকাশবিদ্যাকে পদার্থবিদ্যার একটি ফিল্ড মনে করা হত। তিনি আজীবন চেষ্টা করে গেছেন যাতে এই ধারণা চেঞ্জ হয়ে জ্যোতির্বিদরাও নোবেলের সুযোগ পান। সুযোগটি তৈরি হল ১৯৫৩ সালে। কিন্তু একই বছর মারা গেলেন তিনিও । যেহেতু নোবেলের ক্ষেত্রে মরণোত্তর (Posthumous) পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা নেই, তাই নোবেলের তালিকায় হাবল আর স্থান পেলেন না।

১৯৫৩ সালে, ৬৩ বছর  বয়সে মারা যান মহাবিশ্বের নব দিগন্ত উন্মোচনকারী এই জ্যোতির্বিদ। মৃত্যুর আগে তিনি পালোমার পর্বতে ২০০ ইঞ্চির হ্যালি টেলিস্কোপের নির্মাণ দেখে গিয়েছিলেনীর১৯৭৬ সালে রুশ BTA-6 টেলিস্কোপ তৈরি আগ পর্যন্ত এটিই ছিল বৃহত্তম টেলিস্কোপ।

হাবলের জন্মের ১০১ বছর পর ১৯০০ সালে নাসা পৃথিবীর কক্ষপথে হাবল স্পেইস টেলিস্কোপ বসাল। এই আকাশবীক্ষণ যন্ত্র মহাবিশ্বের হাজার হাজার ছবি পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। পৃথিবীর নিখুঁত বয়স নির্ণয়, গ্যালাক্সিদের ক্রমবিকাশ ও মহাবিশ্বকে প্রসারণের জন্য দায়ী ডার্ক এনার্জির আবিষ্কারের ক্ষেত্র প্রভূত  অবদান রয়েছে এই টেলিস্কোপ্টির।

সূত্রঃ
১. স্পেইস ডট কম
২. উইকিপিডিয়াঃ Edwin Hubble

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৪

মহাকাশে ১৫০০ দিনের মত ঘোরাঘুরি করে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির আকাশযান প্ল্যাঙ্কের পাঠানো ছায়াপথের আলোর গতিপথের চিত্র থেকে আমাদের সৌরজগতের আবাস মিল্কিওয়ে ছায়াপথের চৌম্বক ছবি বানানো হয়েছে।  সংস্থাটির দাবী, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির চৌম্বক ক্ষেত্র প্রদর্শনের ক্ষেত্রে এই ছবিগুলোই অগ্রগামী। বিগ ব্যাঙ তথা মহাবিশ্বের জন্মের পর একে দেখতে ঠিক কেমন লেগেছিল - তা এই নকশা থেকে জানা যেতেও পারে।
প্ল্যাঙ্ক মহাকাশযানের পাঠানো আলোর সমাবর্তন (Polarisation) তথ্য ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে চিত্রগুলো। আলোকরশ্মি তার গতিপথে কী কী প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছিল, সমাবর্তন থেকে তার অনেকগুলো তথ্য পাওয়া যায়।
সমাবর্তনের পরিমাণ থেকে মহাকাশবিদরা আঁচ করতে পারেন, চুম্বকত্বসহ কোন ভৌত কারণে সমাবর্তন ঘটেছে।
প্ল্যাঙ্ক মহাকাশযানটিকে ১৪ মে, ২০০৯ সালে প্রেরণ করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল বিগ ব্যাঙ পরবর্তী কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (CMB) নিয়ে তথ্য আহরণ করা।
সূত্রঃ
ডেইলিমেইল
Category: articles

শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৪

কেন্দ্রস্থলে সূর্য, অন্যান্য গ্রহ, কিছু বামন গ্রহ, ধূমকেতু ইত্যাদি নিয়ে আমাদের সৌর পরিবারের বাস মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে ।। মহাবিশ্বে গ্যলাক্সি বা ছায়াপথের সংখ্যা বহু। এর সঠিক সংখ্যা আমরা জানি না। কারণ, সেই চাহিদা মেটাবার মত  আমাদের এখনও নির্ভরযোগ্য কোন যন্ত্র (টেলিস্কোপ) নেই। তবে, অনুমিত ধারণা মতে এ সংখ্যা ১০০ বিলিয়ন থেকে ২০০ বিলিয়নের মধ্যে । সেই হিসেবে, আমাদের মিল্কিওয়ের রয়েছে অনেক অনেক প্রতিবেশি।
কিন্তু মিল্কিওয়ের সবচেয়ে নিকটবর্তী গ্যালাক্সি কোনটি?
সবচেয়ে নিকটবর্তী গ্যালাক্সি

অনেকেই উত্তরে বলবেন, অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি অথবা, ম্যাজেলানিক ক্লাউড (Magellanic Clouds)। কিন্তু, সত্যি কথা হল, মিল্কিওয়ের নিকটতম গ্যালাকটিক প্রতিবেশির বাস মিল্কিওয়ের ভেতরেই!
চমকে যাবেন না প্লিজ, ব্যাখ্যা করছি।
ক্যানিস ম্যাজর বামন (Canis Major Dwarf) গ্যলাক্সির দূরত্ব মিল্কিওয়ের কেন্দ্র থেকে ৪২ হাজার আলোকবর্ষ। অন্য দিকে, আমাদের থেকে, মানে সৌর পরিবার থেকে এর অবস্থান আরো কাছে, মাত্র ২৫ হাজার আলোকবর্ষ। ফলে ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারুণ! এই গ্যালাক্সিটি আমাদের মিল্কিওয়ের চেয়েও কাছের। কারণ, আমাদের থেকে মিল্কিওয়ের কেন্দ্রের দূরত্ব ৩০ হাজার আলোকবর্ষ।
ক্যানিস ম্যাজর বামন গ্যলাক্সির আবিষ্কার ২০০৩ সালে। মহাকাশবিদরা একে পেয়েছেন অবলোহিত (Infrared) ছবি বিশ্লেষণ করে। অবলোহিত ছবির কারিশমা হল, এটা গ্যাস ও ধূলিকণা ভেদ করে পর্যবেক্ষকের চোখে এসে ধরা দেয়।
ক্যানিস ম্যাজর বামন গ্যালাক্সিতে অনেকগুলো এম-শ্রেণীর বামন তারকার বাস। তারকাগুলো শীতল, লোহিত। এরা অবলোহিত বর্ণালীতে উজ্জ্বল হয়ে ধরা দিয়ে অবলোহিত চিত্র তৈরি করে।
মিল্কিওয়ের আজকের এই বপু হয়েছে এই ক্যানিস ম্যাজরের কিয়দাংশ ভক্ষণ করে। মিল্কিওয়ে এখনও তাকে গ্রাস করে চলেছে। বামন ক্যানিস ম্যাজরের অনেকগুলো তারকা ইতোমধ্যেই মিল্কিওয়ের অংশ হয়ে গেছে। এর ফলে হয়েছে কি, মিল্কিওয়ের নিকটতম তারকার অবস্থান হয়েছে এর অভ্যন্তরেই!
বামন ক্যানিস ম্যাজরের আকার অতটা বড় নয়। এর তারকার সংখ্যা মাত্র ১ বিলিয়নের কাছকাছি। অন্য দিকে আমাদের মিল্কিওয়েতে তারকার সংখ্যা ২০০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন।
নিকটতম গ্যালাক্সি হবার রেকর্ডটি আগে ছিল বামন স্যাগিটেরিয়াস নামক ডিম্বাকৃতির (Elliptical) গ্যালাক্সিটির। এটি আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। এর দূরত্ব ছিল ৭৫ হাজার আলোকবর্ষ
সাধারণভাবে প্রচলিত যে,  অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের নিকটতম। আসলে এটা হচ্ছে সর্পিল (Spiral) গ্যালাক্সিদের মধ্যে নিকটতম। এটা অবশ্য মিল্কিওয়ের সাথে মহাকর্ষীয় বন্ধনে আবদ্ধ। কিন্তু দূরত্বের দিক দিয়ে আমাদের গ্যলাক্সি থেকে এর অবস্থান ২০ নম্বরে। পৃথিবী থেকে অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সির দূরত্ব ২৫ লাখ আলোকবর্ষ
লার্জ ও স্মল ম্যাজেলানিক ক্লাউড (Large and Small Magellanic Clouds) এর দূরত্ব আমাদের থেকে যথাক্রমে ১ লক্ষ আশি হাজার ও দুই লক্ষ দশ হাজার আলোকবর্ষ। মনে করা হয়,  এরা মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণ করছে, তবে তা নাও হতে পারে।
এই সবগুলো গ্যালাক্সিই লোকাল গ্রুপ নামক ত্রিশের অধিক গ্যলাক্সিদলের সদস্য। এদের বিস্তৃতি মিল্কিওয়ে থেকে ৪০ লাখ আলোকবর্ষ পর্যন্ত।
সূত্রঃ
১. উইকিপিডিয়াঃ নিকটতম গ্যালাক্সিদের তালিকা
২. ইউনিভার্স টুডে
৩. স্পেইস ডট কম
Category: articles

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

এনজিসি ৬৮৭২ (NGC 6872) গ্যালাক্সি পৃথিবী থেকে ২১২ মিলিয়ন (বা ২১.২ কোটি) আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। একে IC 4970 গ্যালাক্সির সাথে প্যাভো (Pavo) নক্ষত্রপুঞ্জে দেখা যায়। এর আকৃতি অনেকটা সেকশন চিহ্নের (§) মত।
১৯৯৯ সালে ইউরোপিয়ান সাউদার্ন মানমন্দির (ESO) একে খুঁজে পায়। এর অপর নাম কনডর ছায়াপথ (Condor Galaxy)।

প্রথম দর্শনে, একে অন্য সর্পিল ছায়াপথের মতই মনে হবে। আসলেও তাই-কিন্তু আকার বাদ দিয়ে। এনজিসি ৬৮৭২ এর আকার বিস্ময়কর রকম বিশাল। এই পোস্ট লেখা পর্যন্ত এই গ্যালাক্সিটিই বৃহত্তম সর্পিল গ্যালাক্সি। সার্বিকভাবে সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সি অবশ্য আইসি ১১০১।
এই মহাজাগতিক দৈত্যের প্রশস্ততা ৫ লাখ ২২ হাজার আলোক বর্ষ যা আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপাথের পাঁচ গুণ। এটি মিল্কিওয়ে অ্যান্ড্রোমিডা (আমাদের নিকটত গ্যালাক্সি) কে হজম করার পরও পেট ভরবে না।
এটা এত বিশাল হল কেন? সায়েন্স ফিকশনে যেমন দেখা যায় বাতিকগ্রস্থ বিজ্ঞানীর আকার বড় করার ওষুধ খেয়ে  মাকড়সা, মাছ ইত্যাদি মানুষের চেয়ে বিশাল হয়ে যায়- তেমন কোন ঘটনা নাকি!
হিসেব করে দেখা গেছে, কোটি কোটি বছর আগে নিকটবর্তী গ্যালাক্সি আইসি ৪৯৭০ (IC_4970) এই এনজিসি ৬৮৭২ এর কাছাকাছি আসে। ঐ সময় এরা সংঘর্ষ এড়াবার মত যথেষ্ট দূরত্বে ছিল, কিন্তু দু'জন দু'জনার অভিকর্ষীয় টানে আটকা পড়ে। ফলে, দু'জন সন্ধি করে বিশাল এই দানবীয় রূপ পরিগ্রহ করে। উইকিপিডিয়ার আর্টিকেলে তাই গ্যালাক্সিদ্বয় একই পৃষ্ঠায় ঠাঁই পেয়েছে।
কিন্তু যেই অভিকর্ষীয় বল ছায়াপথ দুটোকে একত্র করেছে, তাই হবে এদের মৃত্যুর কারণ। হ্যাঁ, গ্যালাক্সিদের প্রাণ নেই, মরতে পারে না, কিন্তু এপোড় - ওপোড় তো হয়ে যেতে পারে।  এনজিসি ৬৮৭২ এর ভাগ্যে তাই ঘটতে যাচ্ছে। আইসি ৪৯৭০ এর টানে এর অন্যতম ভারী একটি বাহু আলাদা হয়ে গিয়ে একে বামন ছায়াপথে রূপ দিতে যাচ্ছে।
অতএব, বেশি দিন সম্ভবত এনজিসি ৬৮৭২ এর পক্ষে বৃহত্তম সর্পিল গ্যালাক্সি (Spiral Galaxy) হবার রেকর্ড ধরে রাখা সম্ভব হবে না।
প্রায় ৪ বিলিয়ন বছর পরে একই রকম কিছু একটা আমাদের গ্যালাক্সিতেও ঘটে যাচ্ছে। হাবল পরিমাপের একটি বিশ্লেষণীতে দেখা গেছে মিল্কিওয়ে অ্যান্ড্রোমিডার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবে। তাহলে, ভবিষ্যতে এমনও হতে পারে আমরাই হয়ে যেতে পারি বৃহত্তম স্পাইরাল গ্যালাক্সির অংশ।
কিন্তু হায়, যদি কিয়ামত হবার আগে তা ঘটার সুযোগ হয়ও, আমরা সেই আনন্দ উদযাপন করার সুযোগ পাব না! (আপনি কি ৪ শ' কোটি বছর বেঁচে থাকবেন?)
সূত্রঃ
১. http://www.jpl.nasa.gov/news/news.php?release=2013-016
২. http://en.wikipedia.org/wiki/NGC_6872_and_IC_4970
Category: articles

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৪

আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ব বলছে আলোর বেগ (3×108 m/s) ই সর্বোচ্চ, কোন কিছুই এই বেগ অতিক্রম করতে পারে না। কিন্তু এটাও ঠিক গ্যালাক্সিরা আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে দূরে প্রসারিত হচ্ছে। তাহলে? চলুন দেখা যাক---!! 

আলোর বেগের কাছাকাছি যেতে হলে প্রয়োজন অনেক বেশি এনার্জি। মনুষ্যবাহী মহাকাশযানের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড হচ্ছে ঘন্টায় প্রায় ৪০ হাজার কি.মি.। এটা হল অ্যাপোলো-১০ এর গতি। 
মহাবিশ্বের সব শক্তি ব্যবহার করে ফেললেও আলোর সমান বেগ অর্জন সম্ভব নয়। আমরা জানি, বিগ ব্যাঙের পর থেকেই ডার্ক এনার্জির প্রভাবে মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। ছায়াপথসমূহ একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সেগুলো ছাড়া যারা নিজেদের মধ্যকার মহাকর্ষীয় টানে আবদ্ধ। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি ও প্রতিবেশি অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি নিজেদের থেকে দূরে না সরে পারস্পরিক মহাকর্ষীয় ভালোবাসায় দিন দিন কাছে আসছে।
আমাদের থেকে যে গ্যালাক্সি যত দূরে দেখা যায় তারা তত বেশি বেগে দূরে প্রসারিত হচ্ছে। ফলে এটা সম্ভব হয়ে যাচ্ছে যে তাদের কেউ কেউ অনেক দূরে হওয়ায় বেগ বাড়তে বাড়তে আলোর বেগকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় সেই সব গ্যালাক্সি থেকে আলো কখোনই আমাদের পৃথিবীতে পৌঁছবে না।
এ অবস্থায় ঐ গ্যালাক্সি থেকে আসা পৃথিবীতে পৌঁছানো সর্বশেষ ফোটনটি দেখা যাবার পরই গ্যালাক্সিটি দৃষ্টিসীমা থেকে হারিয়ে যাবে।
এখানে এখন আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আলোর পরম বেগ বিষয়ক আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ব লংঘন হচ্ছে। কিন্তু না। প্রকৃতপক্ষে গ্যালাক্সিরা নিজেরা খুব বেশি জায়গা (Space) অতিক্রম করছে না। বরং Space বা স্থান নিজেই প্রসারিত হচ্ছে যার কারণে সাথে সাথে গ্যালাক্সিরাও প্রসারিত হচ্ছে। 
খানে মাথায় রাখতে হবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ মানে মহাবিশ্বের আয়তনের প্রসারন। অর্থ্যাৎ Space বা স্থান প্রসারিত হচ্ছে। অতএব গ্যালাক্সিরা নিজেরা দূরে সরছে না বরং তারা যেই ‘স্থান’-এ আছে সেটাই প্রসারিত হচ্ছে।
মনে করুন একটি পুকুরের কেন্দ্র থেকে সব দিকেই মাছ আছে। এখন কোন এক শক্তির বলে (মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে যেটা ডার্ক এনার্জি) পুকুর প্রসারিত হয়ে পরিধি কেন্দ্র থেকে ক্রমাগত দূরে চলে যাচ্ছে। এই প্রসারণ পানির প্রবাহজনিত বেগ নয়। এখন এর প্রভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাছেরাও নিজেদের থেকে দূরে সরে যাবে।
অথবা ধরুণ, একটি ফূটবল অজানা কারণে আপনাতেই বড় হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এর পরিধিতে আগে থেকেই থাকা পিঁপড়ারাও নিজেদের থেকে দূরে সরবে।
মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে পানি বা ফুটবলের স্থলে প্রসারিত হচ্ছে ফাঁকা স্থান যা প্রসারিত হতে হতে এর ভেতরকার সবকিছুকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
আলোর বেগ যেহেতু এই প্রসারনশীল মহাবিশ্বের একটি বৈশিষ্ট্য তাই সে মহাবিশ্বের কোন বস্তুর জন্য প্রযোজ্য হলেও মহাবিশ্বের নিজের জন্য প্রযোজ্য হবে না। অর্থ্যাৎ  মহাবিশ্ব নিজে আলোর চেয়ে বেশি বেগ পেতে পারে।

আরো তিন ট্রিলিয়ন বছর পর পৃথিবীর দিগন্ত থেকে সব গ্যালাক্সির দৃশ্য মুছে যাবে। তখন পৃথিবীর কোন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কস্মোলজিস্ট জানবেনই না যে মহাবিশ্ব এত বিশাল। 
সূত্রঃ
১. http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_vehicle_speed_records
২. http://www.universetoday.com/13808/how-can-galaxies-recede-faster-than-the-speed-of-light/
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...