সৌরজগতের গ্রহদের মধ্যে একমাত্র শুক্র ও বুধের কোনো উপগ্রহ নেই। |
সৌরজগতে সব মিলিয়ে ১৮১টি উপগ্রহ রয়েছে। এতে অবশ্য বামন গ্রহদের উপগ্রহদেরকে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি উপগ্রহ দেখতে গোলাকার। এর ফলে এরা যদি অন্য কোন গ্রহ বা বামন গ্রহের উপগ্রহ না হত, তবে সরাসরি গ্রহের খেতাব পেয়ে যেত। কিন্তু সৌরজগতের এত উপগ্রহ থাকতেও বুধ ও শুক্র গ্রহের কোন উপগ্রহ নেই।
অন্য দিকে, পৃথিবীর একটিমাত্র উপগ্রহ আছে- চাঁদ। মঙ্গলের আছে ডেমোস ও ফোবোস নামে দুটি উপগ্রহ। বৃহস্পতির উপগ্রহ সবচেয়ে বেশি- অন্তত ৬৭টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আয়ো , ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টো। শনিও পিছিয়ে নেই। এর দখলে আছে ৬২ খানা চাঁদ (উপগ্রহকে অনেক সময় চাঁদও বলা হয়)। ইউরেনাস ও নেপচুনের যথাক্রমে ২৭ ও ১৪টি করে চাঁদ আছে।
প্লুটো এখন আর গ্রহ নয়, কিন্তু তারও উপগ্রহ আছে। তাও একটি দুটি নয়, পাঁচ-পাঁচটি। বামন গ্রহদের মধ্যে সেরেস ও মাকিমাকির কোন চাঁদ নেই। কিন্তু প্লুটো ছাড়াও অপর দুই বামন গ্রহ হোমিয়া ও ইরিসের যথাক্রমে ২টি ও ১টি করে চাঁদ আছে।
কিন্তু বুধ ও শুক্রের কোন উপগ্রহ বা চাঁদ নেই কেন?
এর প্রধান সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে, এরা সূর্যের খুব নিকটে অবস্থান করছে। গ্রহদ্বয় থেকে বেশ দূরে অবস্থানকারী কোন উপগ্রহ স্থিতিশীল কক্ষপথের মালিক হতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে এটি গ্রহের আকর্ষণে থাকার পরিবর্তে সূর্যের টানে সাড়া দেয়। আর যদি গ্রহের খুব কাছে থাকে, তাহলে আবার গ্রহের শক্তিশালী আকর্ষণে গ্রহের সাথে একীভূত হয়ে যায়। এই গ্রহদের চারপাশের যে অঞ্চলে উপগ্রহদের জন্যে নিরাপদ কক্ষপথ হতে পারত সম্ভবত সে অঞ্চলটি খুব সংকীর্ণ যার ফলে কেউ তা হাসিল করতে পারেনি।
আরেকটি ব্যাখা এ রকম। সৌরজগতের অধিকাংশ উপগ্রহই তৈরি হয়েছে গ্রহদের দ্বারা বিভিন্ন গ্রহাণু ও বড় পাথরখণ্ড দখলের কারণে। কিন্তু বুধ সূর্যের খুব নিকটে থাকার কারণে কোন গ্রহাণু বা ধূমকেতু যখন এর কাছাকাছি আসে তখন এটি সূর্যের কবলে পড়ে যায়। এরা তখন হয় সূর্যে গিয়ে পতিত হয় অথবা ধূমকেতুতে পরিণত হয়। ধূমকেতুর কক্ষপথ ছিনতাই করে উপগ্রহ বানাবার মত শক্তি বুধের নেই বলেই এর কোন উপগ্রহ নেই।
সূত্রঃ
[১] উপগ্রহের তালিকা
[২] অ্যাস্ট্রোনমি ক্যাফে
[৩] টেক্সাস আরলিংটন ইউনিভার্সিটি