Advertisement

সোমবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৬

ব্ল্যাক হোলের গভীরে (৩): বিশালতা

গত দুই পর্বে আমরা ব্ল্যাকহোলের পরিচয় ও জন্ম-প্রক্রিয়া নিয়ে জেনেছিলাম। আমরা এবারে জানবো এদের আকার ও আয়তন নিয়ে। আলোর বেগকে আটকে ফেলে যে ব্ল্যাকহোল তার অবয়বও নিশ্চয় অনেক বড়। দেখা যাক, এই ধারণা কতটুকু সঠিক। সাধারণত কোন বস্তু কত বড় তা বিবেচনা করতে গেলে আমরা শুধু তার দৈর্ঘ্য বা দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক বস্তুর ক্ষেত্রে যথাক্রমে ক্ষেত্রফল ও আয়তন দিয়ে হিসেব করি। বাস্তবে অবশ্য দ্বিমাত্রিক বস্তুর গুরুত্ব না থাকায় আমরা আয়তনকেই এ ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড ধরি। সেই হিসেবে ব্ল্যাকহোলদের নিয়েও এভাবেই চিন্তা করা উচিত।

কিন্তু সমস্যা আছে দুটো। আমরা ইতোমধ্যেই জানি, মহাকর্ষের নিউটনীয় ধারণা ব্ল্যাকহোলের চিন্তা মিচেল-ল্যাপ্লাস সাহহেবদের মাথায় আনলেও আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাই(General Relativity) ব্ল্যাকহোল তত্ত্বকে মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছে। এ সত্ত্বেও আইনস্টাইন নিজেও বাস্তবে ব্ল্যাকহোল আছে বলে বিশ্বাস করতেন না (অবশ্য তাঁর সেই বিশ্বাসের কারণ এই যুগে এসে নড়বড়ে হয়ে গেছে)। 

সত্যি বলতে ব্ল্যাকহোলের ঘটনা দিগন্তের ভেতরে ঠিক কী ঘটে তা কেউ জানে না! আবার এর কেন্দ্রে (সিঙ্গুলারিটি, যেখানে সমগ্র ভর একটি বিন্দুতে সীমাবদ্ধ) ভেঙ্গে পড়ে পদার্থবিদ্যার সব সূত্র। এমনকি বিভিন্ন সূত্র যেমন কোয়ান্টাম ফিজিক্স ও আপেক্ষিকতার মধ্যে চলে পারস্পরিক বৈরিতা। একটু আগে আমরা ব্ল্যাকহোলকে ত্রিমাত্রিক হিসেবে ধরে আকার বা আয়তন হিসেব করবো ভেবেছি। কিন্তু ব্ল্যাকহোল যে আসলে কত মাত্রার বস্তু তাও কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবে না। এটা হতে পারে চার, পাঁচ, দশ বা অন্য যে কোন মাত্রার!

আরেকটি সমস্যা বলি। এটা ঠিক সমস্যা নয়, বলা যায় বিকল্প চিন্তা। মহাজাগতিক বস্তুগুলো কত বড় এটা বোঝার জন্যে দুটি প্যারামিটার ব্যাবহার করা যেতে পারে। একটি হচ্ছে, বস্তুটির আসলেই আয়তন কত। অপরটি হচ্ছে তার ভর। মনে করা ঠিক হবে না, ভর ও আয়তন সব সময় একে অপরের সমানুপাতিক। অর্থ্যাত একটি বাড়লেই আরেকটিও বাড়বে- এমনটি নাও হতে পারে। প্রথম পর্বেই আমরা এটা জেনেছিলাম। তবে, এখানে আরেকটু বিস্তারিত দেখি।

আমরা ভর ও আয়তনের সম্পর্কটি জানি,
M = ρV
যেখানে,M = বস্তুর ভর, ρ = ঘনত্ব এবং V = আয়তন।

সাধারণ হিসাবে এ সূত্র অনুসারে, ভর আয়তনের সমানুপাতিক। অর্থ্যাৎ, আয়তন বাড়লে ভরও বাড়বে। তার মানে, ভর বাড়লে আয়তনও বাড়বে, তাই না? আসলে কিন্তু সব সময় তা হবে না। কেন? একটু ভাবুন, তারপরে আবার সামনে পড়ুন। প্রথমত, এখানে আমরা আলোচনা করছি বিশাল বিশাল মহাজাগতিক বস্তুদের নিয়ে। এদের ক্ষেত্রে ভর বাড়ার অর্থ হচ্ছে বস্তুর অভিকর্ষ লক্ষ্যনীয়ভাবে বেড়ে যাওয়া, যার পরিণতি অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী অভিকর্ষ যা বস্তুটির নিজের উপরেই কার্যকর হয়ে একে গুটিয়ে ছোট্টতর করে ফেলবে। এমন ঘটনা নিউট্রন স্টার বা হোয়াইট ডোয়ার্ফ বা শ্বেত বামন নক্ষত্রদের বেলায়ও ঘটে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে বস্তুটির ঘনত্ব। উপরের সূত্রে আয়তন বাড়লে ভরকেও যদি বাড়তে হয় তবে সেক্ষেত্রে বস্তুর ঘনত্ব স্থির থাকতে হবে। অন্যথায় আয়তন বেশি থাকা বস্তুও যদি তারচেয়ে কম আয়তনের বস্তুর চেয়ে কম ঘনত্বের অধিকারী হয়, তবে প্রথম বস্তুর ভর কম হয়ে যেতে পারে।

এই দুই বিষয়ের যৌথ খপ্পরে পড়ে ভর বাড়ার সাথে সাথে আয়তনের বৃদ্ধি ও হ্রাস-দুটোই ঘটতে পারে। যেমন ধরুন আমাদের গত সংখ্যায় আলোচিত নিউট্রন স্টারদের কথা।

এদের ভর সূর্যের কয়েকগুণ বেশি হওয়া সত্ত্বেও ব্যাসার্ধ হয় মাত্র ৭ মাইলের মতো! কল্পনা করা যায়! ফলে দেখা যায় এদের প্রতি ঘন মিটারে 3.7×1017 থেকে 5.9×1017 কেজি পর্যন্ত ভর জড় হয়ে থাকে। অথচ আমাদের সূর্যের প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে মাত্র ১ দশমিক ৪ গ্রামের কাছাকাছি ভর থাকে! ঘনত্বের কি বিশাল ফারাক!

অন্য দিকে উল্টো ঘটনাও ঘটে। যেমন সুপারম্যাসিভ (Supermassive) তথা অতি উচ্চ ভরবিশিষ্ট ব্ল্যাকহোলদের আয়তনও হতে পারে সূর্যের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। যেমন এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া প্রস্তাবিত ব্ল্যাকহোলদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভরযুক্ত দানবের ভর সূর্যের ৪০ বিলিয়ন গুণ। তাই বলে আয়তন কিন্তু ছোট হয়ে যায়নি। এর ব্যাসও বিশাল- প্রায় ২৩৭ বিলিয়ন কিলোমিটার।

তবে এখানে একটু সাবধান হতে হবে। অন্যান্য বস্তুদের মত করে ব্ল্যাক হোলের আকার চিন্তা করলে ভুল হয়ে যেতে পারে। ব্ল্যাক হলের সমগ্র ভর একটি ক্ষুদ্র বিন্দুতে আবদ্ধ থাকে যার আয়তন প্রায় শুন্য। তাই আমরা যখন ব্ল্যাক হোলের আয়তন বা ব্যাসার্ধ বলব, বুঝতে হবে এটা আসলে ব্ল্যাক হলের ঘটনা দিগন্তের (যে দূরত্ব থেকে কিছুই, এমনকি আলোও বেরিয়ে আসতে পারে না) পরিমাপ। তাই উপরের ভর-আয়তনের সূত্রের আলোচনা ঠিক সাধারণ অর্থে ব্ল্যাক হোলের জন্যে কাজ করবে না। অন্য অর্থে বলা যায় সবচেয়ে সুন্দরভাবে কাজ করবে। কারণ আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম ভর বাড়লে আয়তন কমতেও পারে। সেটার সবচেয়ে ভালো উদাহরণতো ব্ল্যাক হোলই।

ফলে, এ পর্যন্ত আমরা যা বুঝলাম, মহাজাগতিক বস্তুদের ক্ষেত্রে বড়ত্বের হিসাবে নিছক আয়তনকে নয়, ভরকেও বিবেচনা করতে হবে। তাহলে আমরা এবার দেখার চেষ্টা করি এই দুই দিক দিয়ে ব্ল্যাকহোলরা কত বড় হতে পারে।

প্রথমে ভরের কথা বলা যাক। সত্যি বলতে একটি ব্ল্যাকহোলে সর্বোচ্চ ঠিক কত ভর থাকতে পারে, তার কোন সীমা-পরিসীমা নেই। বেশি ভরের পাশাপাশি অল্প পরিমাণ ভর যুক্ত হয়েও ব্ল্যাকহোলের অন্ধকার রাজ্য গড়ে উঠতে পারে যদি এর ঘনত্ব হয় অতি উচ্চ। তবে, এখন পর্যন্ত জানা তথ্য মতে যেহেতু অধিকাংশ ব্ল্যাকহোলদেরই জন্ম বেশি ভরযুক্ত (Massive)  নক্ষত্রদের জীবনের ক্রান্তিলগ্নে, তাই আমরা বলতে পারি, একটি ব্ল্যাকহোলের ভর একটি ভারী নক্ষত্রের ভরের কাছাকাছি।

আমরা গত পর্বেই দেখেছি, এই স্টেলার ব্ল্যাকহোলরা সূর্যের ১৫ থেকে ২০ গুণ পর্যন্ত বেশি ভর ধারণ করতে পারে। তাহলে তাদের ভর কত হবে? এটা বোঝার জন্যে আমাদেরকে নিছক সূর্যের ভর জানতে হবে যা আমরা জানি যে, ১০৩০ কেজি। তাহলে একটি সাধারণ ব্ল্যাকহোলের ভর হবে (যদি এর ২০ গুণ ধরি) ২৩৩ কেজি। চাইলে এবার তুমি নিজেই ২ এর পরে ৩২ খানা শুন্য বসালে যা হবে সেতাই এই ভর। উল্লেখ্য, এটা কিন্তু ব্ল্যাকহোলের ভরের নিম্ন সীমা। আগেই বলেছি, এর ভর সর্বোচ্চ কত হতে পারে তা বলার কোন উপায় নেই। তবে স্টেলার ব্ল্যাকহোলদের ক্ষেত্রে ভর খুব বেশি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এখন পর্যন্ত জানা তথ্য অনুসারে, সবচেয়ে বেশি ভরের তারকার ভর ২৬৫ সৌর ভরের সমান। এর নাম R136a1।

একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল

এতো গেল শুধু স্টেলার ব্ল্যাকহোলের কথা। কিন্তু সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলরা এতটা পিছিয়ে নেই। এদের ভর হতে পারে সূর্যের কয়েক লক্ষ গুণ থেকে শুরু করে কয়েকশো কোটি গুণ পর্যন্ত! ভাবা যায়! আমাদের মিল্কিওয়েসহ অধিকাংশ গ্যলাক্সির কেন্দ্রে এদের বসবাস। অন্য দিকে আরেক জাতের ব্ল্যাকহোল হচ্ছে মিনি বা মাইক্রো ব্ল্যাকহোল। আমরা জানি, কোন বস্তুকে ব্ল্যাক হোল হতে হলে এর মুক্তিবেগ হতে হবে আলোর বেগের চেয়ে বেশি। অর্থ্যাৎ, কাউকে একটি ব্ল্যাক হোল উৎপাদন করতে হলে বস্তুর ভর বা শক্তিকে এত বেশি সঙ্কুচিত করতে হবে যে এর পৃষ্ঠ থেকে কোন বস্তুকে বের করতে হলে আলোর চেয়ে বেশি বেগ দিতে হবে।

তাহলেতো যে কোন ভরকেই যথেষ্ট পরিমাণ চেপে গুটিয়ে ফেলে ব্ল্যাকহোল বানিয়ে ফেলা সম্ভব, তাই না? তাত্ত্বিকভাবে অবশ্য তাই। কিন্তু আরো জটিল কিছু কারণে একটি ব্ল্যাকহোলের সর্বনিম্ন ভর হতে পারে প্ল্যাঙ্ক ভরের সমান তথা মাত্র ২২ মাইক্রোগ্রামের সমান। উল্লেখ্য, একটিমাত্র মৌলিক আধান (Charge) ধারণে সক্ষম ভরকে প্ল্যাংক ভর (Planck Mass) বলা হয়।

এবার চলুন দেখি ব্ল্যাকহোলদের আকার কেমন হতে পারে। আমরা যেহেতু জানি, ব্ল্যাকহোলের মুক্তিবেগ অন্তত আলোর বেগের সমান হতে হবে, এই তথ্য কাজে লাগিয়ে আমরা এদের ন্যূনতম ব্যাসার্ধ বের করতে পারি।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ব্ল্যাকহোল নামক বস্তুটির ব্ল্যাকহোলসুলভ আচরণ শুধু তার ঘটনা দিগন্ত বা তার ভেতরের অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ। কারণ, এই সীমার ভেতরের কোন ঘটনা আমরা দেখতে না পেলেও বাইরের ঘটনা দেখতে পাবো। আরেকভাবে বললে, আপনি যদি কখনো ব্ল্যাকহোল অভিযানে যান, তবে ঘটনা দিগন্ত পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে। কিন্তু যেই আপনি এই সীমা ভেদ করে আরো ভেতরে যাবেন, তখনই আপনার ফিরে আসার সম্ভাবনা বাতিল হয়ে যাবে। 

অবশ্য আশা যে একেবারেই নেই তা কিন্তু নয়। কারণ, তাত্ত্বিকভাবে ব্ল্যাকহোল টাইম ট্র্যাভেল ঘটাতে পারে, তৈরি করতে এক ডাইমেনশন থেকে আরেক ডাইমেনশনে যাবার, এমনকি আরেকটি ইউনিভার্সে পাড়ি দেবার জন্যে ওয়ার্মহোল নামক টানেলও তৈরি করতে পারে। ভবিষ্যতের কোন পর্বে আমরা ওয়ার্মহোল ও টাইম ট্র্যাভেল নিয়ে জানবো, ইনশা-আল্লাহ। যাই হোক, এখন তাহলে মূলত, ব্ল্যাকহোলের আকার বা ব্যাসার্ধ বলতে আসলে আমরা ঘটনা দিগন্তের (Event horizon) ব্যাসার্ধ জানতে চাচ্ছি।

এই ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধ সর্বপ্রথম বের করেন জার্মান বিজ্ঞানী কার্ল সোয়ার্জসাইল্ড। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে যুদ্ধকালীন সময়েই এই গাণিতিক হিসাবখানি প্রস্তুত করেন। তাঁর নামানুসারে এক বিশেষ ধরনের ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধকে সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধ (Schwarzschild radius) বলা হয়। এই ব্যাসার্ধ্য ব্ল্যাকহোলের ভরের সাথে সমানুপাতিক। সূত্রটি হচ্ছে,


যেখানে, R = সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধ, G = মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, M = ব্ল্যাকহোলের ভর এবং c = আলোর বেগ যা সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কিলোমিটার বা ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ৬ মাইল থেকে শুরু করে সৌরজগতের সমানও ঘটনা দিগন্ত খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু এই সূত্র দিয়ে হিসাব করলে আমরা তাত্ত্বিকভাবে আরো ক্ষুদ্র বা বড় ব্ল্যাকহোলও পাব। যেমন, পৃথিবীর সমান ভরের কোন বস্তুকে যদি ব্ল্যাকহোল হতে হয়, তবে এর ভরকে গুটিয়ে এতটা সঙ্কুচিত করতে হবে যে তখন এর আকার দাঁড়াবে একটি ক্ষুদ্র মার্বেলের সমান। বিশ্বাস না হলে উপরের সূত্রে পৃথিবীর ভর (৬×১০২৪ কিলোগ্রাম) বসিয়ে দেখুনই না!

আসলে ব্ল্যাকহোল হবার জন্যে খুব বেশি ভরের দরকার নেই, দরকার শুধু উপস্থিত ভরটুকুর গুটিয়ে যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষুদ্র জায়গায় অবস্থান করার। একইভাবে আমাদের সূর্য যদি ব্ল্যাকহোল হতে চায় তবে এর ব্যাসার্ধ কমিয়ে বানিয়ে দিতে হবে ৩ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এমনকি তাত্ত্বিকভাবে মাউন্ট এভারেস্টের সমান পাহাড়ও ব্ল্যাকহোল হতে পারবে যদি এর ভরকে গুটিয়ে এত ছোট বানাতে হবে এর সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধ দাঁড়াবে এক ন্যানোমিটারের চেয়েও অনেকটা ক্ষুদ্র।  কিন্তু বাস্তবে মাউন্ট এভারেস্ট, পৃথিবী বা সূর্য কারো পক্ষেই ব্ল্যাকহোল হওয়া সম্ভব নয়। একটু ভাবুন কেন সম্ভব নয়। গত সংখ্যার লেখায় কিছু ক্লু পাবে। বিস্তারিত আমরা অন্য পর্বে দেখবো, ইনশাআল্লাহ।

অন্য দিকে, আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি নিজেই যদি একটি ব্ল্যাকহোল হবার আশা পোষণ করে তবে এর ঘটনা দিগন্তের ব্যাসার্ধ হবে প্রায় ২ কোয়াড্রিলিয়ন মিটার। ২ এর ১৫ শুন্য বসিয়ে দেখুন সংখ্যাটি কত বিশাল।  তবে এই দৈর্ঘ্য কিন্তু মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির নিজের ব্যাসার্ধ্যের চেয়ে ৫ লক্ষ গুণ ছোট।

আশা করি, শেষের দিকের এই আলোচনা সংক্ষেপে আমাদের গত পর্বের বিদায়ী প্রশ্নের জবাব সংক্ষেপে হলেও দিয়েছে। প্রশ্নটি ছিল অতি অল্প পরিমাণ ভর নিয়ে কিভাবে ব্ল্যাকহোল, সত্যি বলতে মাইক্রো ব্ল্যাকহোল তৈরি হতে পারে? এর জবাব আমরা আরো বিস্তারিত জানবো অন্য পর্বে। চলে যাচ্ছি আরেকটি বিদায়ী প্রশ্ন দিয়ে। গত পর্বে আমরা দেখেছিলাম, তারকাদের জীবনের শেষের দিকেই কেবল স্টেলার ব্ল্যাকহোল তৈরি হতে পারে। অথচ জীবনের শুরুতেই এর ভর ছিল আরো বেশি। কারণ, জীবনের শেষের দিকে পৌঁছতে গিয়ে এর জ্বালানি খরচ করে আলো, তাপ ইত্যাদি উৎপন্ন করতে হয়েছে। ফলে, শেষের দিকে এর ভরতো আইনস্টাইনের E=MC2 সূত্র মেনে শক্তি রূপে অনেকটাই কমে গেছে। প্রশ্ন হলো, জীবনের শুরুতেই এর ভর কেন একে ব্ল্যাকহোল বানায়নি? চিন্তা করুন। বুঝতে পারলে আমাকে জানাতে পারেন, এই নাম্বারে- 01722-(3500112)7। নাম্বারটি বুঝতে অসুবিধা হলে আপাতত কিছু করার নেই- এই লিঙ্কটি দেওয়া ছাড়া।

তথসূত্র
১। http://cfpa.berkeley.edu/Education/BHfaq.html#q2
2. https://en.wikipedia.org/wiki/Neutron_star
৩। https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_most_massive_stars_known
৪। https://en.wikipedia.org/wiki/Supermassive_black_hole
৫। http://csep10.phys.utk.edu/astr162/lect/active/smblack.html
৬। http://hubblesite.org/explore_astronomy/black_holes/encyc_mod3_q3.html
৭। https://en.wikipedia.org/wiki/Schwarzschild_radius
৮। https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_most_massive_black_holes

অন্যান্য পর্ব




Advertisement 02

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ

লেখকের পরিচয়

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ। প্রভাষক, পরিসংখ্যান বিভাগ, সিলেট ক্যাডেট কলেজ। পড়াশোনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রকাশিত বই পাঁচটি | সব লেখা | ফেসবুক | পারসোনাল ওয়েবসাইট

2 comments

Write comments

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...