Advertisement

সোমবার, ২ মে, ২০১৬

গ্রহ দেখার আরেকটি দারুণ মাস ২০১৬ সালের মে। এ মাসে সবচেয়ে দারুণ দেখাবে বৃহস্পতি, মঙ্গল ও শনিকে। দেখা যাক, কে কখন, কোথায় থাকবে।
বৃহস্পতিঃ
সন্ধ্যার পরপরই এটি পূর্ব আকাশ থেকে হাজির মাথার উপর। মাসের যে সময়টুকু চাঁদ থাকবে না তাতে বৃহস্পতিই রাতের আকাশের সেরা উজ্জ্বল বস্তু। আগামী মাসগুলোতেও এটি এর পারফরম্যান্স ধরে রাখবে। গত মাসের মতই লুব্ধকের সাথে এর উজ্জ্বলতার প্রতিযোগিতা হবে। অনেকে ভুল করে একে লুব্ধকও মনে করতে পারেন। তবে লুব্ধক এর চেয়েও বেশি পশ্চিমে (এবং মূলত কিছুটা দক্ষিণ-পশ্চিমে) থাকায় বিভ্রান্তি কাটানো সহজ। লুব্ধক আকাশের সেরা উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেও সময় সময় গ্রহদের কাছে একে হার মানতে হয়।
মাস গড়াতে গড়াতে আরেকটি গ্রহ মঙ্গলও বৃহস্পতির সাথে টক্কর লাগাবে। তবে এর লাল রঙ এর কারণে একে চিনতে অসুবিধা হবে না।

মঙ্গলঃ
এ মাসের ২য় সেরা উজ্জ্বল গ্রহ এটি। মাসের শুরুতে উজ্জ্বলতার দৌড়ে বৃহস্পতির চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও দিন গড়াবার সাথে সাথে এর উজ্জ্বলতা বেড়ে বৃহস্পতির খুব কাছাকাছি হয়ে যাবে। গত ২ বছরের মধ্যে এটি আমাদের জন্যে মঙ্গল গ্রহ দেখার সেরা সময়। মাসের শেষের দিকে এটি এপ্রিল মাসের তুলনায় ৪ গুণ উজ্জ্বল হবে। বুধ ছাড়া অন্য যে কোন গ্রহের চেয়ে মঙ্গল সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বলতার পরিবর্তন ঘটায়। এটি এর উজ্জ্বলতম অবস্থায় অনুজ্জ্বল অবস্থা থেকে ৮০ গুণ পর্যন্ত উজ্জ্বল হয়ে ওঠে!
রাতের আকাশে মঙ্গল গ্রহ 


ইদানিং মঙ্গল উজ্জ্বল হচ্ছে কেন?
মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথ পৃথিবীর ঠিক বাইরে। সূর্যের চারদিকে পৃথিবী তাই মঙ্গলের চেয়ে দ্রুত ঘোরে। গত দুই বছর ধরে আমরা মঙ্গলের আগে আগে সূর্যের চারদিকে ছুটছি। এ মাসের শেষ দিকে আমরা চলে যাচ্ছি মঙ্গল ও সূর্যের মাঝে। এই ঘটনাকে বলা হয় প্রতিযোগ (Opposition)। এ সময় সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাবার পরেই পূব আকাশে দেখা মিলবে মঙ্গলের। মাসের শুরুতে অবশ্য মঙ্গল উদিত হবে রাত ৯টার দিকে।

রাতের আকাশে গ্রহদের এলোমেলো ছোটাছুটি এদেরকে নক্ষত্রদের থেকে আলাদা করে চিনতে ভূমিকা রেখেছে। নক্ষত্রদের সাপেক্ষে এরা কখনো পূর্ব দিকে, আবার কখনো পশ্চিমে ছোটে। 


 ভিডিওঃ ২০১৬ সালের বিভিন্ন মাসে মঙ্গলের ছোটাছুটি 

লাল গ্রহটি নিজে একাই রাতের আকাশকে উজ্জ্বল করছে না। এর পাশেই আছে আরেকটি সুন্দর গ্রহ শনি। আপাতত দুজনের দূরত্ব অবশ্য বাড়ছে, কিন্তু আছে বৃশ্চিক মণ্ডলীতেই।

শনিঃ
মঙ্গল ও শনি দুই গ্রহই আরেকটি উজ্জ্বল বস্তুর কাছে আছে। এটি হচ্ছে আকাশের আকাশের ১৬শ উজ্জ্বল নক্ষত্র জ্যেষ্ঠা (Antares)। এত উজ্জ্বল হয়েও বেচারা দুই গ্রহের কাছে ফেল! আপাতত রাত ৯ থেকে ১০টার মধ্যে এটি শনি উদিত হলেও মঙ্গলের মতই আস্তে আস্তে এই সময় কাছে আসছে। জুনের ৩ তারিখে এটিও প্রতিযোগ অবস্থানে আসবে। এই সময় এও সূর্যাস্তের পরে পূর্ব আকাশে হাজিরা দেবে। আগস্টের ২৪ তারিখে মঙ্গল ও শনি খুবই কাছাকাছি থাকবে।

বুধঃ
মে মাসের ৯ তারিখে বুধ সন্ধ্যার আকাশ থেকে ভোরের আকাশে চলে যাচ্ছে। ফলে, এই সময় এটি সূর্যের খুব নিকটে থাকে বলে একে দেখা প্রায় অসম্ভব। বুধ অন্তঃগ্রহ এবং সূর্যের নিকটতম গ্রহ হওয়ায় খুব দ্রুত ভোরের আকাশ ও সন্ধ্যার আকাশে আসতে যেতে থাকে।

শুক্রঃ
রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম গ্রহটি এ মাসেও নিস্তেজ। ফলে রাতের আকাশের রাজত্ব বৃহস্পতির হাতে। এটি এ মাসে (পৃথিবীর আকাশে) সূর্যের নিকটতর হতে হতে সূর্যের আভায় হারিয়ে যাবে। জুনের ৬ তারিখে এটি সূর্যের ঠিক পেছনে চলে যাবে। কারণ, এ সময় কক্ষপথে এটি অবস্থান নেবে পৃথিবীর উল্টো পাশে। এ সময় এটি ধীরে ধীরে ভোরের পূবাকাশ থেকে সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশের দিকে আসবে।
শুক্র গ্রহের সূর্যকে অতিক্রমের মুহূর্ত 

Category: articles

শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৬

এই এপ্রিলের আকাশের সবেচেয়ে দর্শনীয় বস্তু গ্রহ রাজ বৃহস্পতি। ইদানিং এটি সন্ধ্যার পরপর এটি আকাশে হাজির হয়। অন্য গ্রহদের অবস্থাও এ মাসে বেশ ভালো। কিন্তু উজ্জ্বলতম গ্রহ শুক্রই এ মাসে দেখা যাবে না। তবু সামগ্রিক বিচারে গ্রহ দেখার জন্য এ মাসটি বছরের অন্যতম সেরা মাস। 
বৃহস্পতিঃ
এ মাসে উজ্জ্বলতায় সবার শীর্ষে বৃহস্পতি। সন্ধ্যার পরেই এটি আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকের সাথে উজ্জ্বলতার টক্কর লাগায়। টক্করে বিজয়ী বৃহস্পতিই। পরাজয় মেনে নিয়ে লুব্ধক অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পরেই হারিয়ে যায় পশ্চিম দিগন্তে। কিন্তু বৃহস্পতি প্রায় সারা রাত রাতের আকাশে রাজত্ব করে পশ্চিম দিগন্তে ডুব দেবে ভোরের দিকে। আগামী মাসগুলোতেও এটি নিজের পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখবে।
লুব্ধক ও বৃহস্পতিকে কি করে চেনা যাবে? 
লুব্ধক বছরের এ সময় থাকে দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে। অন্য দিকে বৃহস্পতি সন্ধ্যার পরে পূর্ব দিকে ভেসে ওঠে। আদম সুরতের মাধ্যমে লুব্ধককে চিনে নেওয়া যেতে পারে।
আদম সুরতের মাঝের তিনটি তারা যোগ করে বাম দিকে বাড়িয়ে দিলেও পাওয়া যায় লুব্ধক
বর্তমানে বৃহস্পতির অবস্থান রাশিচক্রের সিংহ মণ্ডলীর কাছে
মঙ্গল গ্রহঃ
এ মাসে মঙ্গল বৃহস্পতির মত এতটা উজ্জ্বল নয়। তবে, আগামী দিনগুলোতে মঙ্গল ক্রমশ উজ্জ্বল হতে থাকবে, আর বৃহস্পতি ধীরে ধীরে অনুজ্জ্বল হবে। এমনকি এ মাসেই মঙ্গল স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ উজ্জ্বল হবে। কেন? কারণ কোন গ্রহ যখন সূর্যাস্তের কাছাকাছি সময় পূর্ব দিকে উদিত হয়, তখন এটি এর সেরা ঔজ্জ্বল্য প্রদর্শন করে। এ কারণেই বৃহস্পতি এখন উজ্জ্বল এবং সেই কারণেই মঙ্গল দ্রুত উজ্জ্বলতা বাড়াচ্ছে। 
মে মাসের শেষের দিকে এটি উজ্জ্বলতায় চারগুণ হয়ে যাবে। ঐ সময় সূর্য পশ্চিমে হারিয়ে গেলে এটি পূর্ব দিগন্তে দেখা দেবে। এ মাসে অবশ্য এটি দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে হাজির হয় ১১টার দিকে। মাসের শেষের দিকে উঠবে ৯ টার দিকে। এর পাশেই আছে আরেকটি গ্রহ শনি। 
দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে মঙ্গল ও শনি গ্রহ
শনি গ্রহঃ
এ মাসের আরেকটি উজ্জ্বল বস্তু। অবশ্য বৃহস্পতি ও মঙ্গলের চেয়ে এটি মৃদু। মঙ্গলের মতই বৃশ্চিক মণ্ডলীর কাছাকাছিতে এর অবস্থান। মাসের শুরুতে রাত ১টা এবং মাসের শেষে ১০ টার দিকে পূর্ব দিগন্তে হাজির হবে। 

বুধ গ্রহঃ
বুধ সব সময় সূর্যের আশেপাশে থাকে। এ মাসে সব তারিখেই এটি সূর্যের পরে অস্ত যাবে। অবশ্য দিগন্তের কাছাকাছি থাকায় বিশেষত শহর অনগচল থেকে একে চিনে নেওয়া একটু কষ্টকর। তবে মাসের ৮ তারিখে চাঁদ একে চিনতে সাহায্য করবে। 

শুক্র (শুকতারা):
আমাদের অনেকেরই আকাশের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু শুকতারা। কিন্তু দূর্ভাগ্যের কথা এটিও বুধের মত সূর্যের খুব কাছাকাছি থাকে। ফলে একে সন্ধ্যায় বা ভোরেই শুধু দেখা যায়। এই মাসে এটি সূর্যের এত কাছে যে একে দেখা দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। আফসোস! 
ভোরের আকাশ থেকে সন্ধ্যার আকাশে পাড়ি দেবার প্রাক্কালে জুনের ৬ তারিখে এটি একেবারে সূর্যের পেছনে থাকবে। 

সূত্রঃ Earth Sky
Category: articles

সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬

[মার্চের শেষ সপ্তাহ] 

কিছু দিন সূর্যের আড়ালে থেকে আবার আবির্ভূত হতে শুরু করেছে সামার ট্রায়াঙ্গেল। একে এখন ভোরের পূবাকাশে দেখা যায়। 


ছবিতে সামার ট্র্যায়াঙ্গেল বা গ্রীষ্মের ত্রিভুজ দেখা যাচ্ছে। এখানে আছে আকাশে অন্যতম উজ্জ্বল তিনটি নক্ষত্র। এরা হল যথাক্রমে বীণামণ্ডলীর নক্ষত্র অভিজিৎ (Vega), ঈগলমণ্ডলীর শ্রবণা (Altair) এবং বকমণ্ডলীর নক্ষত্র পুচ্ছ (Deneb)।


সামার ত্রিভুজ আকাশের তারাদের একটি নকশা হলেও এটি তারামণ্ডলী নয়, বরং  তারানকশা
গরমের দিনগুলোতে (মে-জুন মাসের দিকে) এটি মধ্য রাতে মোটামুটি মাথার উপর থাকে। বসন্ত কালে (যেমন এখন) এটি থাকে ভোরের আকাশে। আস্তে আস্তে পশ্চিমে হেলতে হেলতে নভেম্বর মাসের দিকে এটি থাকে সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশে। আগস্টের শুরুতে রাত নয়টার দিকে থাকে প্রায় মাথার সোজা উপরে। 

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এ মাসের আকাশের সেরা দৃশ্য দেখতে হলে আজকে আকাশ মিস করা উচিত হবে না।
কারণ, আজকে চাঁদ মামা বসে আছে উইন্টার সার্কেলের ভেতরে। আকাশের অন্যতম ৬টি উজ্জ্বল তারকা মিলে তৈরি এই অ্যাসটারিজমটিকে উইন্টার হেক্সাগন বা শীতের ষড়ভুজও বলে। সামার ট্রায়াঙ্গেল যেমন শীতের শুরুতেও দেখা যায়, তেমনি উইন্টার সার্কেলও শীতের পরেও আকাশে সৌন্দর্য্য বিকিরণ করা চালিয়ে যেতে থাকে।
চাঁদ ও উইন্টার সার্কেল/হেক্সাগন

উইন্টার সার্কেলের অন্যতম নক্ষত্র রিগেল আবার আদম সুরতের অংশ। আপনি আদম সুরত বা কালপুরুষ চিনে ফেললে উইন্টার সার্কেল সহজেই চিনতে পারবেন। 
রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধকও আছে এখানেই। 
Category: articles

সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

লুব্ধক (Sirius) রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র। কিন্তু লুব্ধককে কীভাবে খুঁজে পাব? লুব্ধক আকাশের কোন দিকে থাকে? কোন মাসে বা ঋতুতে একে ভালো দেখা যায়?
লুব্ধককে খুঁজে পেতে হলে তার আগে খুঁজে নিতে হবে আদম সুরত বা কালপুরুষ তারামণ্ডলীটিকে। খুশির খবর হচ্ছে, আদম সুরত হচ্ছে সেই সব তারামণ্ডলীর মধ্যে অন্যতম যাদেরকে সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।

 তারামণ্ডলীর পরিচয়

বছরের বিভিন্ন মাসের মধ্যে মে, জুন, জুলাই- এই তিন মাস আদম সুরত ও লুব্ধক সূর্যের কাছাকাছি সময়ে অস্ত যায় বলে এ মাসগুলোতে এদেরকে দেখা যায় না। আগস্টের দিকে ভোরের পূর্ব আকাশে এরা পুনরায় দেখা দিতে শুরু করে। প্রতি দিন প্রায় চার মিনিট আগে আগে এরা উদিত হয়। ফলে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে এদেরকে সন্ধ্যার আকাশেই খুব সহজে চোখে পড়ে। এপ্রিল মাসে সন্ধ্যায় এরা থাকে পশ্চিম আকাশে। তার একটু পরেই ডুবে যায়।

আদমসুরত ও লুব্ধক

তবে লুব্ধক খুঁজে পাবার সেরা সময় হিসেবে আপনি ফেব্রুয়ারি মাসকে বাছাই করতে পারেন। এ সময় রাত নয়টার দিকে এটি সোজা দক্ষিণ আকাশে থাকবে, মাথার খাড়া উপর থেকে কিছুটা নিচে।
কতটা নিচে?

এটা বুঝতে হলে আপনাকে বিষুবলম্ব বুঝতে হবে। এটা না বুঝেও বের করা সম্ভব। তাই বেশি গভীরে যেতে না চাইলে বাকি অংশ না পড়লেও চলবে। লুব্ধকের বিষুব লম্ব হচ্ছে প্রায় (-১৭) ডিগ্রি। অর্থ্যাৎ, বাংলাদেশ থেকে দেখতে হলে মাথার খাড়া উপর থেকে (২৩+১৭) = ৪০ ডিগ্রি দক্ষিণে যেতে হবে।

উজ্জ্বল তারাদের গল্প

এছাড়াও বিভিন্ন গ্রহ ও নক্ষত্রদের খুঁজে পাবার ব্যাপারে নিয়মিত আপডেট পেতে এই দুটি লিঙ্ক ফলো করুন
Category: articles

রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬





শীতের আকাশে উজ্জ্বল তারাদের আধিপত্য একটু বেশিই থাকে। রাতের আকাশের অন্যতম সহজে খুঁজে পাওয়া তারামণ্ডলী আদম সুরত। এর ইংরেজি নাম Orion এবং আরেকটি বাংলা নাম কালপুরুষ। এতেই আছে দুটি টপ টেনের মধ্যে থাকা উজ্জ্বল নক্ষত্র। একটি হচ্ছে উজ্জ্বলতার দৌড়ে সপ্তম রিগেল এবং অপরটি নবম স্থানে থাকা বিটলজুস (Betelgeuse) বা বাংলায় আর্দ্রা।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই আদম সুরতই আপনাকে অন্য উজ্জ্বল তারকাগুলো চিনিয়ে দেবে।
আদমের কোমরের তিনটি তারাকে যোগ করে দক্ষিণে যেতে থাকলে পেয়ে যাবেন রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধক (Sirius)।

অন্য দিকে তিনটি তারা যোগ করে উল্টো দিকে মানে উত্তরে গেলে পাবেন বৃষরাশির উজ্জ্বলতম নক্ষত্র আলডেবারান।

Category: articles

মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

এক সাথে পাঁচটি গ্রহ- বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি দেখার সবচেয়ে ভালো সুযোগ এ মাসের প্রথম সপ্তাহটি। গত মাসের ২০ তারিখে শুরু হওয়া এই সুযোগটি চলবে এ মাসেও (২০ তারিখ নাগাদ)। প্রথম সপ্তাহে এদের আশেপাশে চাঁদের অবস্থান রাতের আকাশের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়েই তুলবে। চাঁদের সাথে মঙ্গলের দেখা ২ তারিখে, শনির ৪ তারিখে, শুক্রের ৬ তারিখে এবং বুধের সাথে দেখা ৭ তারিখে। চলুন বিস্তারিত দেখি!
ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে গ্রহদের আপাত অবস্থান

বুধঃ
জানুয়ারির শেষের সপ্তাহে বুধ গ্রহ সূর্যোদয় থেকে দূরে সরে এসে অন্য দৃশ্যমান গ্রহদের মিছিলে যোগ দেয়। এ মাসের ৬, ৭ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের খুব কাছে। মাসের ৭ তারিখের আশেপাশের দিনগুলো বুধ গ্রহ দেখার সেরা সময়। সূর্যের প্রায় ৮০ মিনিট আগেই এ সময়গুলোতে বুধ ভোরের পূবাকাশে তার অস্তিত্ব জানান দেবে। মাসের ১১ তারিখ থেকে ১৫ তারিখ এটি শুক্রের খুব কাছে থাকবে।
মার্চ মাসের ২৩ তারিখে এটি আবার চলে যাবে সন্ধ্যার আকাশে। উল্লেখ্য, এই গ্রহটিই সবচেয়ে বেশি ভোর ও সন্ধ্যার আকাশে আসা-যাওয়া করে।
বুধ ও শুকতারা


শুক্রঃ
এ মাসে শুক্রের অবস্থান অপর দুই গ্রহ বুধ ও শনির মাঝখানে। গত মাসেই শনি এর উপরে চলে এসেছিল। রাতের আকাশের জনপ্রিয় বস্তু শুকতারা এ মাসে দ্রুত সূর্যের কাছাকাছি হচ্ছে। মাসের শুরুতে এটি সূর্যের ২ ঘণ্টা আগে উদিত হলেও মাসের শেষের দিকে পূবাকাশে দেখা দিতে দিতে সূর্যোদয়ের এক ঘণ্টা বাকি থাকবে। মাসের ৬ তারিখে এটি থাকবে চাঁদের কাছে। মাসের ১১ থেকে ১৫ তারিখে এটি বুধের এত কাছে থাকবে যে দুজনকে এক সাথে বাইনোকুলারে দেখা যাবে।
চাঁদ, বুধ ও শুক্র

বৃহস্পতিঃ
ইদানিং রাতের আকাশে সবার আগে উপস্থিত হয় বৃহস্পতি। মধ্য রাতের আগেই শুভকাজটি সেরে ফেলে গ্রহরাজ। অন্য দিকে মাসের শেষের দিকে এটি সূর্যাস্তের একটু পরেই (প্রায় দেড় ঘণ্টা) পূর্ব আকাশে দেখা দেবে। এ মাসে মঙ্গল ও বৃহস্পতি দুজনেই বেশ উর্ধ্বাকাশে (দিগন্ত থেকে অনেক উপরে) থাকবে। ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে বৃহস্পতি থাকবে চাঁদের খুব কাছাকাছি।
 

মঙ্গলঃ
বৃহস্পতি বা শুক্রের মত এতটা উজ্জ্বল না হলেও এ মাসে মঙ্গলকে খুব সহজে দেখা যাবে। এ মাসে এর অবস্থান শনি ও বৃহস্পতির মাঝখানে। কন্যামণ্ডলীর উজ্জ্বলতম নক্ষত্র চিত্রা (Spica) এ মাসে এর কাছাকাছি থাকলেও মঙ্গলের লাল রঙ একে চিনতে সুবিধা করে দেবে। খালি চোখে অসুবিধা হলে বাইনোকুলার ঠিকই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে দেবে। এ বছরে আগস্টের সন্ধ্যার আকাশে মঙ্গল ও শনি খুব কাছাকাছি থাকবে। আগামী কয়েক মাস মঙ্গল ক্রমেই উজ্জ্বল হতে থাকবে এবং মে মাসে এটি উজ্জ্বলতার শীর্ষে পৌঁছে বৃহস্পতির সাথেও টেক্কা দেবে যেখানে শুক্রের পরে ২য় উজ্জ্বল গ্রহের তিলক বৃহস্পতির কপালে। 
চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহ

শনিঃ
পুরো মাস জুড়ে শনি থাকবে ভোরের গ্রহ। মাসের শুরুতে এটি সূর্যোদয়ের ৪ ঘণ্টা ও মাসের শেষের দিকে ৫ ঘণ্টা আগে উদিত হবে। মাসের ৪ তারিখে চাঁদের সাথে অবস্থান একে খুঁজে পেতে ভূমিকা পালন করবে। এটিই সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের বস্তু যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই। 
তো! দেখতে থাকুন! 
Category: articles

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

শুক্র গ্রহের একটি অন্যতম ডাক নাম শুকতারা। অন্য দিকে একে সন্ধ্যাতারাও বলা হয়। অথচ বেচারা মোটেই তারা বা নক্ষত্র নয়, সৌরজগতের একটি গ্রহ মাত্র। ইংরেজিতেও একে ভুল করে star বলা হয়- যথাক্রমে Morning star ও Evening star। কিন্তু নক্ষত্র বা তারা না হওয়া সত্ত্বেও একে কেন তারা বলা হয়? এর তো নিজস্ব আলো নেই। এটিও চাঁদের মতই সূর্যের আলোই প্রতিফলিত করে।
ভোরের আকাশে শুকতারার ছবি 

শুক্র গ্রহ পৃথিবীর চেয়ে সূর্যের নিকটে থাকায় এর কক্ষপথ পৃথিবীর চেয়েও ভেতরের দিকে। এ কারণে, বুধের মতই এটিও সব সময় সূর্যের কাছাকাছি অবস্থান করে। পৃথিবীর আকাশে এটি যখন সূর্যের পেছনে থাকে (সূর্যের পরে উদয়-অস্ত ঘটার কারণে), তখন সূর্যাস্তের পরেই পশ্চিমাকাশে এটি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল থাকার সময়গুলোতে এটি সূর্য ডোবার কয়েক মিনিট পরেই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এ সময় একে আমরা সন্ধ্যাতারা বলি (Evening star)।
অন্য দিকে, এটি পৃথিবীর আকাশে সূর্যের চেয়ে এগিয়ে থাকলে এটি সূর্যের আগেই অস্ত যায়। এ সময় একে সন্ধ্যার আকাশে দেখা যায় না। কিন্তু সূর্যের আগে অস্ত গিয়েছে এ কারণেই যে এটি আসলে ভোরে উদিতও হয়েছিল সূর্যের আগে। ফলে, এই সময়গুলোতে একে ভোরের আগে পূবাকশে দেখা যায়। সূর্য উদিত হয়ে এর আলোতে মিলিয়ে যায় এর আলো। এ অবস্থায় একে আমরা বলি সন্ধ্যাতারা।

প্রাচীন গ্রিকরা শুকতারা ও সন্ধ্যাতারাকে দুটি আলাদা বস্তু মনে করত। তারা এদেরকে যথাক্রমে ফসফোরস (Phosphoros) ও হেসপেরোস (Hesperos) নাম দিয়েছিল। প্রথমটির অর্থ আলো আনয়নকারী ও সন্ধ্যার তারা। কয়েকশো বছর পরে তারা বুঝতে পারে যে, এরা দুজন আসলে একই বস্তু।
সূত্রঃ
১। ইউনিভার্স টুডে
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৬

সৌরজগতের গ্রহগুলোর মধ্যে রাতের আকাশে খালি চোখে দেখা যায় ৫টি- বুধ, শুক্র (শুকতারা), মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। এই বছর এক মাস যাবত (জানুয়ারির ২০ থেকে ফেব্রুয়ারির ২০) এদের সবাইকে একত্রে ভোরের আকাশে দেখা যাচ্ছে। এটা দারুণ একটি দৃশ্য। এর আগে সর্বশেষ এই সুন্দর দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে। সে এক যুগ আগের কথা।
দৃশ্যমান এই গ্রহদের মধ্যে সবার আগে রাতের আকাশে হাজির হচ্ছে বৃহস্পতি। মধ্য রাতের কাছাকাছি সময়। দিন গড়াবার সাথে সাথে আগের দিনের চেয়ে আগে। মধ্য রাতের পরে হাজির হবে মঙ্গল। এর পর একে একে হাজির হবে শনি, শুক্র ও বুধ। বুধ অবশ্যই সবার শেষে। কারণ, বেচারা সব সময় সূর্যের কাছাকাছি থাকে।
কখন আবার সব গ্রহকে এক সাথে দেখা যাবে?
খুশির খবর হচ্ছে এ বছরই! সাথে দুঃখের খবর হচ্ছে, অফারটা খুবই সংক্ষিপ্ত! আগস্টের ১৩ থেকে ১৯- তাও উত্তর গোলার্ধের আকাশ সেই দৃশ্য দেখার জন্য খুব একটা সুবিধার জায়গা নয়।



Category: articles

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০১৬

আজ রাতে চাঁদ ও বৃহস্পতি দারুণ একটি দৃশ্য উপহার দিচ্ছে। ছবিতে এই দৃশ্যের সৌন্দর্য্য তুলে ধরা কঠিন। বিশ্বাস না হলে একবার জানালা দিয়ে উঁকে মেরে দেখুন। না দেখা গেলে সম্ভব হলে ছাদে চলে যান। 
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৬

এ মাসে গ্রহরা দারুণ একটি প্রদর্শনী উপহার দিচ্ছে। জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে এক মাসের জন্যে সবাই একত্রে ভোরের পূবাকাশে থাকবে। কে কখন কোথায় থাকবে, চলুন জেনে নিই।
শুক্র, শনি ও মঙ্গলের অবস্থান (২১ জানুয়ারি, ভোর ৫ঃ৫০, পূর্ব আকাশ) 

বুধ (Mercury): মাসের শুরুর দিকে পশ্চিমাকাশে থাকবে। এ সময় একে আমাদের উত্তর গোলার্ধ থেকে দেখা যাবে। মাসের ১৪ তারিখে বুধ (Mercury) সুর্য ও পৃথিবীর সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থান করবে। এই অবস্থানকে অন্তঃসংযোগ (Inferior Conjunction) বলে। অন্তঃসংযোগ শুধু পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থিত দুইটি গ্রহ- বুধ এবং শুক্রের পক্ষেই সম্ভব। অন্য গ্রহরা পৃথিবী ও সূর্যের সাথে একই রেখায় আসলে বহিঃসংযোগ (Superior Conjuction) ঘটে।
উক্ত তারিখের পর গ্রহটি পূবাকাশে পাড়ি জমাবে। এ সময় অবশ্য এটি দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দেখা সহজতর হবে।
শুক্র (Venus): এ মাসেরও পুরোটা সময় এটি ভোরের পূবাকাশে  থাকবে। মাসের শুরুর দিকে শনি এর খুব কাছাকাছি থাকবে। মাসের ১০ তারিখে শনি শুক্রের উপরে উঠে আসবে। মাসের শুরুর দিকে এটি সূর্যের ৩ ঘন্টা আগে ও শেষের দিকে ২ ঘণ্টা আগে ভোরের পূবাকাশে দেখা দেবে।
বৃহস্পতিঃ
ইদানিং এই গ্রহটি সবার আগে রাতের আকাশে হাজির হয়। মাসের শুরুর দিকে মধ্য রাতের আগেই উদিত হবে। দিন গড়াবার সাথে সাথে উদয়কাল নেমে আসবে ৯টার দিকে।
মঙ্গলঃ
এর অবস্থান থাকবে বৃহস্পতি ও শুক্রের মাঝে। কাছাকাছি অবস্থানে চিত্রা (Spica) নক্ষত্রও থাকবে। কিন্তু গ্রহটির লাল আলো একে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে সুবিধা করে দেবে। আগামী মে মাসে এটি সবচেয়ে উজ্জ্বল হবে। অবিশ্বাস্য হলেও এটি তখন বর্তমান অবস্থায় বৃহস্পতির উজ্জ্বলতার সমান হবে।
শনিঃ
মাসের শুরুতে এটি দেখা যাবে সূর্যের ২ ঘণ্টা আগে। মাস শেষ হতে হতে এই সময় হয়ে যাবে ৪ ঘণ্টা।


সূত্রঃ
১। স্পেইস ডট কম
২। Earth Sky
Category: articles

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

আজ বা আসন্ন কয়েক দিনের মধ্যে যে কোন মেঘ বা কুয়াশামুক্ত সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের ঠিক পরপরই আপনি পশ্চিমাকাশে তিনটি উজ্জ্বল তারকা দেখতে পাবেন। এদেরকেই একত্রে বলা হয় সামার ট্রায়াঙ্গেল (Summer triangle) বা গ্রীষ্মের ত্রিভুজ। ত্রিভুজটি কোন তারামণ্ডলী নয়, একটি তারানকশা (Asterism) মাত্র।


শীতকালে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ! কেমন অদ্ভুত বিষয়, তাই না? আসলে একে সামার ট্রায়াঙ্গেল বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে এই তারাচিত্রটি মাথার উপরে থাকে। তিনটি আলাদা তারামণ্ডলীর উজ্জলতম নক্ষত্র ত্রিভুজের তিন শীর্ষে বসে আছে। বীণামণ্ডলীর (Lyra) অভিজিৎ (Vega), বকমণ্ডলীর পুচ্ছ (Deneb) এবং ঈগলমণ্ডলীর শ্রবণা (Altair) হচ্ছে এই তিনটি তারকা।

শীঘ্রই এরা সূর্যের আভায় আবৃত হয়ে যাবে। বেশ কিছু দিন দেখা যাবে না। ২/৩ মাস পরে আবার হাজির হবে ভোরের আকাশে।

সূত্র: আর্থ স্কাই
Category: articles

বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫


আপনি যদি গ্রহদের ভক্ত হন, তবে এ মাসেও আপনাকে ভোরের আগে আগে বিছানা ছাড়তে হবে। পুরো ডিসেম্বর জুড়ে সবচেয়ে চমৎকার গ্রহ শুক্র এবং বৃহস্পতি। এরা যথাক্রমে রাতের আকাশের প্রথম ও দ্বিতীয় উজ্জ্বল বস্তু। মেঘহীন ভোরের পূবাকাশে এদেরকে খুঁজে না পাওয়া অসম্ভব। অন্য দিকে একটু অনুজ্জ্বল মঙ্গল থাকবে এদের মাঝখানে। মাসের মাঝামাঝিতে শনি এসে ভোরের মিছিলে যোগ দেবে। আরেকটি দৃশ্যমান গ্রহ বুধ। এটি এ মাসে সন্ধ্যার আকাশে থাকলেও সূর্যের খুবই কাছাকাছি থাকায় মাসের প্রথম দুই তৃতীয়াংশ সময়ই দেখা যাবে না।
উল্লেখযোগ্য দৃশ্যঃ
মাসের ৪ তারিখে চাঁদ থাকবে বৃহস্পতির নিচে
মাসের ৭ তারিখে চাঁদ ও শুক্রের ঘনিষ্ঠ দৃশ্য।
মাসের মাঝামাঝিতে শনি হাজির হবে শুক্রের নিচের দিকে।

সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles

শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫


খালি চোখে একটি এবং টেলিস্কোপে রঙিন ডাবল স্টার মনে হলেও এখন জানা গেছে আলম্যাক আসলে ৪টি তারকার মিলিত আলো  
এটা ঠিক যে অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতে অবস্থিত একই নামের গ্যালাক্সিটিই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। তবে, এই অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতেই রয়েছে সমগ্র আকাশের অন্যতম দারুণ একটি ডাবল স্টার আলম্যাক। এর আনুষ্ঠানিক নাম গামা এ্যান্ড্রোমিডি (Gamma Andromedae)। এর দুটি অংশের একটিকে টেলিস্কোপে সোনালী এবং অপর অংশকে নীল আসমানী দেখায় (উপরের ছবি দেখুন)। গবেষণার আরেকটু গভীরে গিয়ে শেষমেশ জানা গেল এই তারার আলোর উৎসের মূলে রয়েছে আসলে চারটি তারা! একের ভেতর চার!



খুঁজে পাবার উপায়ঃ


অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলী রূপকথায় একটি মেয়ের নাম। আর মেয়েটির বাম পায়ের তারাটিই হচ্ছে আলম্যাক। পেগাসাস বর্গের আলফেরাজ তারকা থেকে দুটি লাইন চলে গেছে পেগাসাস নামক উড়ুক্কু ঘোড়ার পেছনের দিকে। এই লাইনদ্বয় অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীর সম্পত্তির সম্পত্তি।
আলফেরাজ তারকা থেকে শুরু করে নিচের লাইন বরাবর চতুর্থ তারকাটি হচ্ছে আমাদের আজকের আলোচ্য তারা। দ্বিতীয় ক্রমের উজ্জ্বল তারকাটি সপ্তর্ষীমণ্ডলীর প্রদান সাতটি তারকার কাছাকাছি উজ্জ্বল।



এই তারাটি, আসলে বলা উচিত তারাব্যবস্থাটি (Star system) ৩৫০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

একের ভেতর চারঃ
একে খালি চোখে একটি তারাই মনে হবে। কিন্তু টেলিস্কোপে দেখে বোঝা যাবে আসলে এখানে দুটি তারা আছে। বড়টি দেখতে সোনালী, আর ছোটখানা নীল। এই রঙিন জোড়ের সৌন্দর্য্য প্রত্যক্ষ করতে ৭৫ এক্স বিবর্ধনের টেলিস্কোপ প্রয়োজন। কোন কোন বিশেষজ্ঞের মত হচ্ছে, আলম্যাকের রঙের বৈচিত্র্য বকমণ্ডলীর তারকা আলবিয়েরোকেও (বকমুখ) হার মানায়। সাধারণত মনে করা হয়, আলবিয়েরো হল আকাশের সবচেয়ে সুন্দর ডাবল স্টার। শরত ও শীতের শুরুতে দুটো তারাই আকাশে থাকে। আপনি নিজেই বিচার করুন, কোনটা বেশি সুন্দর!

ইতিহাসঃ
১৭৭৮ সালে জোহান টবিয়েস মায়ের প্রাথমিক যুগের একখানা টেলিস্কোপ দিয়ে প্রথম আবিষ্কার করেন যে এটি আসলে ডাবল স্টার। এখন আমরা জানি, ছোট নীল তারাটি আসলে একটি ট্রিপল স্টার সিস্টেম। ফলে, সব মিলিয়ে আলম্যাক আসলে চার তারার মিলিত আলো।

পারসিয়াস তারামণ্ডলীর বিষম তারা এ্যালগলের কাছেই আলম্যাকের অবস্থান। এ্যালগল সর্বোচ্চ দীপ্তি প্রদর্শনের সময় আলম্যাকের সাথে সেয়ানে সেয়ানে আলো বিকিরণ করে।


সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল
নামঃ গামা অ্যান্ড্রোমিডি (Gamma (γ) Andromedae)
তারামণ্ডলীঃ  অ্যান্ড্রোমিডা
অবস্থানঃ ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড, +৪২° ১৯′
নামের উৎসঃ العناق الأرض
নামের অর্থঃ মরু বিড়াল (desert lynx)
দূরত্বঃ ৩৫০ আলোকবর্ষ
আপাত উজ্জ্বলতাঃ ২.২৬
তুলনামূলক উজ্জ্বলতাঃ অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতে তৃতীয়


তথ্যসূত্রঃ
১। আর্থ স্কাই
২। ইউটিউবঃ ইংরেজি Almach এর উচ্চারণ আলম্যাক।
৩। উইকিপিডিয়াঃ Almach 
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

ধরুন, বিদেশে গিয়ে আপনার সাথে এক বিদেশীর সাক্ষাৎ হলো। তিনি আপনাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার বাড়ি কোথায়?’

আপনার উত্তর, 'বাংলাদেশে'। এবার যদি তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘বাংলাদেশ কোথায় অবস্থিত?’, আপনি নিশ্চয়ই বিরক্ত হবেন। ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলে, বলবেন, ম্যাপে খুঁজে দেখুন। যাদের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ সম্বন্ধে ধারণা আছে, তারা নিশ্চয় কোন দেশ বা অঞ্চলের নাম শুনেই বুঝে ফেলেন, ও আচ্ছা! আপনি ঐদিকে থাকেন, ঠিক আছে।




রাতের আকাশের দিকে তাকালে আমাদের মনে হয় যেন একটি গম্বুজের মাঝে অনেকগুলো আলোর বিন্দু সেঁটে দেওয়া আছে। বাস্তবে গম্বুজ না হলেও এই আকাশকে বলা হয় খ-গোলক (Celestial spehere)। এই খ-গোলকে তারকা, গ্যালাক্সি, উল্কা, ধূমকেতু  ইত্যাদির অবস্থান সহজে বোঝার জন্যে পুরো আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি (IAU) আকাশকে ৮৮টি অঞ্চলে ভাগ করেছে। এই ৮৮টি অঞ্চলের প্রত্যেকটিকে বলা হয় এক একটি হয় তারামণ্ডলী ( Constelation)। এই সবগুলোর মিলিত ক্ষেত্রফল পুরো আকাশের ৩৬০ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। তাই, আকাশের যে কোন বস্তু কোন না কোন মণ্ডলীতে অবস্থিত থাকবেই। সবচেয়ে সহজে চোখে পড়ে এমন কিছু তারামণ্ডলী হচ্ছে আদমসুরত বা কালপুরুষ, বৃশ্চিক (Scorpius), বকমণ্ডলী (Cygnus), সপ্তর্ষিমণ্ডলী (Ursa Major) ইত্যাদি।

অবশ্য তারামণ্ডলীর এই সীমানা নির্ধারণ দৈবভাবে করা হয়নি। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ রাতের আকাশের বিভিন্ন তারাদের তুলনামূলক অবস্থানের ভিত্তিতে আকাশে রূপকথারসহ নানারকম প্রাণী, বিভিন্ন ভঙ্গীমার মানুষসহ নানাবিধ আকৃতি কল্পনা করেছে। তবে এদের সবাই তারামণ্ডলী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। কেননা, অনেক ক্ষেত্রেই একই তারা একাধিক নকশায় স্থান পেত। উপরন্তু, বিভিন্ন নকশার তারাগুলোকে আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে আলাদা আকৃতি তৈরি হত। বর্তমানে তাই এমনভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে একই তারা একধিক মণ্ডলীতে না থাকে। ভিন্ন তারামণ্ডলীর কিছু তারা বা একই তারামণ্ডলীর কয়েকটি তারা মিলিত হয়ে যে আকৃতির সৃষ্টি হয় এখন তাকে নাম দেওয়া হয়েছে asterism। বাংলা এখনো জ্যোতির্বিজ্ঞানে এর কোন নাম নেই। তবে একে আমরা তারানকশা বলতে পারি। এমন কিছু উদাহরণ হলো সামার ট্রায়াঙ্গেল, উইন্টার হেক্সাগন, সাউদার্ন ক্রস, কাস্তে, গ্রেট স্কয়ার অব পেগাসাস ইত্যাদি।
 
উল্লেখ্য, আকাশে তারারা আমাদের চোখে বিভিন্ন আকৃতি হিসেবে ধরা পড়লেও বাস্তবে একই তারামণ্ডলীর তারারা কিন্তু কোন চ্যাপ্টা তল বা গম্বুজে সাঁটানো নয়, বরং এক একটি তারকা পৃথিবী থেকে আলাদা দূরত্বে অবস্থিত। দূরত্ব অনেক বেশি বলেই সবাইকে একই তলে অবস্থিত মনে হয়। যেমন বলা যায় আদম সুরতের কথা। এর উজ্জ্বল তারাগুলোর দূরত্ব ২৫ আলোকবর্ষ থেকে শুরু করে ২২৫ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত।


বছরের আলাদা সময়ে আকাশে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। এর কারণ দুটো- পৃথিবীর আবর্তন ও সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ। সন্ধ্যার আকাশে যে তারাদের সমাবেশ ঘটে, রাতে গড়াতে গড়াতে তারা পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারদিকে আবর্তনের জন্যে পশ্চিমে হেলতে থাকে। যদি পৃথিবীর শুধু আবর্তনই থাকত, প্রদক্ষিণ তথা সূর্যের চারদিকে বেগ না থাকত, তবে প্রতি রাতের একই সময়ে নির্দিষ্ট কোন স্থানে একই তারা দেখা যেত। কিন্তু পৃথিবীর প্রদক্ষিণের কারণে কোন তারকা প্রতি দিন প্রায় ৪ মিনিট আগে একই জায়গায় আসে। কারণ পুরো আকাশের মোট কৌণিক ক্ষেত্রফল ৩৬০ ডিগ্রি। এই পুরো অঞ্চল পৃথিবী ৩৬৫ দিনে ঘুরে, অর্থ্যাৎ প্রতি দিন প্রায় ১ ডিগ্রি করে ঘুরতে হয়। আবার পৃথিবীর আবর্তনের জন্যে প্রতি ডিগ্রির জন্যে সময় লাগে প্রায় ৪ মিনিট।
এ জন্যেই শীত, গ্রীষ্মসহ আলাদা ঋতুতে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। যেমন (উত্তর গোলার্ধের) শীতকালে আদম সুরতের দেখা মেলে, কিন্তু এ সময় বৃশ্চিকমণ্ডলী (Scorpius) হারিয়ে যায় দিনের আলোতে। আসলে কোন তারামণ্ডলী রাতে চোখে না পড়ার কারণ, এর সূর্যের সাথে সাথে বা আগেই অস্ত যাওয়া।

প্রাচীন জ্যোতির্বিদ টলেমি এইরকম ৪৮টি তারামণ্ডলী তালিকাভূক্ত করেন। তিনি অনেকগুলোই করতে পারেননি কারণ, তাঁর বাসস্থান থেকে পুরো আকাশ চোখে পড়ত না। পরবর্তীতে মুসলিম বিজ্ঞানীরা অধিকাংশ তারকা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা ও এদের নামকরণ করেন। তাই দেখা যায়, অধিকাংশ তারাদের বর্তমান নাম আরবি ভাষা থেকে আসা।

এই ৮৮টি তারামণ্ডলীর মধ্যে ১৩টি তারামণ্ডলীতে সূর্য সারা বছর পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। এরাই মূলত রাশিচক্র। রাশিচক্র বলার কারণ সূর্য ঘুরেফিরে এদের মাঝেই থাকে। তবে সূর্য কখন কোথায় অবস্থান করে সেটার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ বের করার বিদ্যা তথা জ্যোতিষবিদ্যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে তাদের রাশিচক্রে এখনও ১২টি তারামণ্ডলী হিসেব করা হয় এখন যা সেকেলে হয়ে গেছে।

সূত্র: নাসা 
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...