Advertisement

সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৩

আকাশের উজ্জ্বল তারারা তৈরি করে দারুণ দারুণ নকশা৷ ৮৮টি তারামণ্ডলের একটি ধনুমণ্ডল। এটা রাশিচক্রের অন্যতম মণ্ডল। পরিচিত ধনুরাশি হিসেবে। মণ্ডলের উজ্জ্বল তারাগুলোকে দেখতে চায়ের পট বা টিপটের মতো লাগে৷ রাশিচক্রের এ মণ্ডলে সূর্য অবস্থান করে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি৷


ধনুমণ্ডলের টিপট তারানকশা


তারামণ্ডল বনাম তারানকশা


আগস্ট মাস একে দেখার সেরা সময়। এ সময় রাত নয়টার দিকে ধনুমণ্ডল দক্ষিণ আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকে। বিষুবলম্ব -২৫ ডিগ্রি। ফলে মূলত দক্ষিণ আকাশে হলেও উত্তর গোলার্ধের অধিকাংশ এলাকা থেকেও দেখা যাবে। সর্বোচ্চ ৫৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে দেখতে পাবেন একে৷

আমাদের হোম গ্যালাক্সি মিল্কিওয়ের কেন্দ্র এ মণ্ডলের পশ্চিম অংশের দিকে আছে৷ এ কারণেই আকাশের এ দিকটায় প্রচুর নক্ষত্রপুঞ্জ ও নীহারিকা আছে৷ টিপটের কয়েক ডিগ্রি উত্তর দিক দিয়ে চলে গেছে সূর্যপথ৷ যে কাল্পনিক পথে পৃথিবীর আকাশে সূর্য চলাচল করে৷ ধনুর ইংরেজি স্যাজিটেরিয়াস শব্দটা এসেছে ল্যাটিন থেকে। অর্থ তীরন্দাজ৷

সূর্য কখন কোথায় থাকে?

পুরো মণ্ডলকে বিভিন্ন কালচারে সেভাবেই চিত্রায়িত করা হয়েছে৷ ছবি। গ্রিক রূপকথায় স্যাজিটেরিয়াসকে অর্ধমানব, অর্ধঘোড়া হিসেবে কল্পনা করা হয়৷ কল্পিত এ জন্তুর অন্য নাম সেন্টোর। কল্পিত চিত্রে তীরন্দাজ তীর ধনু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ মণ্ডলের তীরটা চলে গেছে পাশের বৃশ্চিকমণ্ডলের বিছার বুক বরাবর৷ সেন্টোর থেকে নাম পেয়েছে আকাশের আরও একটি তারামণ্ডল। সেন্টোরাস নামের মণ্ডলটার অবস্থান আরও অনেকটা দক্ষিণে।

ধনুমণ্ডলের কল্পিত সেন্টোর। অর্ধ-মানব ও অর্ধ-ঘোড়া। 


সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা এপসাইলন স্যাজিটেরাই৷ ডাকনাম কোস অস্ট্রালিস। যার অর্থ ধনুর দক্ষিণাংশ৷ দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারার নাম নানকি৷ বেয়ার পদবী সিগমা স্যাজিটেরাই৷ এ মণ্ডলেই আছে দূর আকাশে বিখ্যাত অনেক বস্তু৷ লেগুন নেবুলা, ওমেগা নেবুলা, রেড স্পাইডার ও ট্রিফিড নেবুলা - বিখ্যাত এই নীহারিকাদের পাওয়া যাবে এখানেই৷

ধনুমণ্ডলের তারাচিত্র

মহাকাশযান নিউ হরাইজনস এর গতিপথ বর্তমানে এই মণ্ডলের সামনে৷ বিখ্যাত বেতার সঙ্কেত ওয়াও! সিগনাল এসেছে এ মণ্ডল থেকেই৷ রহস্যময় যে সঙ্কেতকে অনেকে ভিনগ্রহের বাসিন্দার বার্তা মনে করতে পছন্দ করেন৷
Category: articles

রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩

আকাশের এলাকায় দুই ধরনের নকশা খুব দর্শনীয়। এক হলো তারামণ্ডল৷ যা পুরো আকাশকে ৮৮টি অঞ্চলে ভাগ করেছে। সব তারা, ছায়াপথ বা দূর আকাশে জিনিস কোনো না কোনো মণ্ডলে থাকবে।


দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড তারানকশা 



আরেকটি মজার জিনিস হলো তারানকশা। বিভিন্ন তারার সংমিশ্রণে তৈরি তারার সুন্দর নকশা। এমনই একটি নকশার নাম দ্য গ্রেট ডায়ামন্ড। ডায়ামন্ড বা হীরার মতোই এর চারটি কোণা। বলাই বাহুল্য, চার কোণায় আছে চারটি উজ্জ্বল তারা৷

তারামণ্ডলের পরিচয়


তারানকশা কী?


এই নকশাটা মে-জুন মাস ও এর আগে পরে ভাল দেখা যায়। ডায়ামণ্ডের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা স্বাতী। রাতের আকাশের চতুর্থ উজ্জ্বল তারা। উত্তর গোলার্ধের এক নম্বর উজ্জ্বল। জুনের শুরুতে রাত নয়টার দিকে ঠিক মাথার উপর থাকে। আরেকটি তারা চিত্রা (spica)। উজ্জ্বলতায় ক্রম ১৫। কন্যারাশির সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা৷

অপর দুই তারার একটি ডেনেবোলা। সিংহরাশির দ্বিতীয় নম্বর উজ্জ্বল তারা। অবস্থান কল্পিত সিংহের লেজে। আর চতুর্থ তারার নাম কর ক্যারোলি। সারমেয়যুগল মণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা।

খুঁজে পাওয়া একদম সোজা। স্বাতী ও চিত্রাকে পাওয়া যাবে সপ্তর্ষীকে কাজে লাগিয়ে। 



গ্রেট ডায়ামন্ড আকারে সপ্তর্ষির চেয়ে বড়। এর দক্ষিণের তিন তারা আবার আলাদা আরেকটি নকশা তৈরি করেছে। নাম বসন্ত ত্রিভুজ। মানে স্বাতী, চিত্রা ও ডেনেবোলা। ডেনেবোলার জায়গায় অনেকসময় সিংহমণ্ডলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা রেগুলাসকে বসানো হয়।
Category: articles

শুক্রবার, ১১ মে, ২০১৮

সপ্তর্ষিমণ্ডলীর ৭টি প্রধান তারাকে আমরা বলছি সপ্তর্ষি। এদের সবগুলো উজ্জ্বলতায় প্রায় সমান।
 সেটা জানার আগে নামগুলো জেনে নেওয়া যাক। সপ্তর্ষির সাতটি তারা দেখতে লাঙল বা চামচের মতো। মণ্ডলের এ অংশটা তাই একটি বিশেষ তারানকশা। 

সপ্তর্ষির তারাগুলো। ইংরেজি নামসহ জানতে এখানে ক্লিক করুন। 


মনে রাখতে হবে, সপ্তর্ষি কিন্তু সব সময় এ অবস্থায় থাকে না। এটি উত্তর আকাশের তারাভুজ। উত্তর পূর্ব আকাশে থাকলে ক্রতু ও পুলহ তারা থাকবে উপরের দিকে। আবার উত্তর পশ্চিম আকাশে এই দুটি তারা থাকবে নীচের দিকে।

ওপরের ছবিতে যেমন দেখানো আছে, এর আকার এমন দেখা যায় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের সন্ধ্যার আকাশে। প্রায় বরাবর উত্তর আকাশে। তার আগের তিন মাস থাকে উত্তর-পশ্চিম আকাশে।

আরও পড়ুন
☛ সপ্তর্ষিমণ্ডলীর খোঁজে

তারাগুলো বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত হলেও এদের আপাত উজ্জ্বলতা প্রায় সমান। কারণ, অপেক্ষাকৃত দূরের তারাগুলো এক্ষেত্রে আসলে বেশি দীপ্তিময়। মানে অভ্যন্তরীণ উজ্জ্বলতা বা দীপ্তি বেশি।


তারা ইংরেজি উচ্চারণ আপাত
উজ্জ্বলতা
ক্রতু Dubhe ডুবি 1.8
পুলহ Merak মিরাক 2.4
পুলস্ত্য Phecda ফেকডা 2.4
অত্রি Megrez মিগ্রেজ 3.3
অঙ্গিরা Alioth অ্যালিয়থ 1.8
বশিষ্ঠ Mizar মাইজার 2.1
মরীচি Alkaid অ্যালকেইড 1.9

দূরতগুলো দেখে নেই: 
দূরত্ব (আলোকবর্ষে
আরও পড়ুন
☛ দিক নির্ণয়ে ধ্রুব তারা 
Category: articles

রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৬

শুধু এই সাতটি তারাকেই আমরা সাধারণত সপ্তর্ষীমণ্ডলী বললেও এরা আসলে পুরো মণ্ডলীর একাংশ মাত্র। এটি প্রকৃতপক্ষে তারানকশা। 

তারামণ্ডলী ও তারানকশা দুটোই আকাশের বিভিন্ন তারায় তৈরি নকশা। রাতের তারাখচিত আকাশের দিকে তাকালেই মনে হবে কিছু তারার সমন্বয়ে অর্থবোধক কোন আকৃতি তৈরি হয়েছে। মানুষের মনে চিত্রিত এই আকৃতিগুলো থেকেই রূপ পেয়েছে তারামণ্ডলী ও তারানকশা। ইংরেজিতে এদের নাম যথাক্রমে Constellation ও Asterism। এতে যেমন মানুষের প্রতিকৃতি আছে, তেমনি আছে রূপকথার প্রাণী, বিভিন্ন বস্তু। তবে তারামণ্ডলী বা তারানকশার তারারা একে অপরের সাথে সাধারণত সম্পর্কিত নয়। পৃথিবী থেকে দেখতে এদেরকে পাশাপাশি মনে হলেও বাস্তবে এরা পৃথিবী থেকে ভিন্ন ভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত।

উল্লেখযোগ্য কিছু তারামণ্ডলী হল কালপুরুষ বা আদম সুরত, বৃশ্চিক মণ্ডলী, বকমণ্ডলী ইত্যাদি।

আদম সুরত। অনেকের মতেই এটাই সেই মণ্ডলী যা সবচেয়ে সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। 


কাঁকড়াবিছার মত দেখতে মণ্ডলীটির নাম বৃশ্চিক মণ্ডলী 

তারামণ্ডলীর সংখ্যা ৮৮ এবং এদের সবাইকে নিয়ে পুরো দৃশ্যমান আকাশ গঠিত। আকাশে কোন তারা বা অন্য কোন বস্তুর (দূরবর্তী গ্যালাক্সি, তারাস্তবক ইত্যাদি) অবস্থান নির্ণয় করতে তারামণ্ডলী কাজে আসে। দৃশ্যমান আকাশের যে কোন বস্তু কোন না কোন তারামণ্ডলীতে অবস্থিত থাকবেই।


তারামণ্ডলীর মতই তারানকশাও তারায় তৈরি নকশা। তবে তারামণ্ডলীর মত এরা জ্যোতির্বিজ্ঞানে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভিন্ন তারামণ্ডলীর তারা নিয়ে এরা গঠিত হতে পারে, আবার একই তারামণ্ডলীর কয়েকটি তারা নিয়েও হতে পারে। বিখ্যাত তারানকশার মধ্যে অন্যতম সপ্তর্ষীমণ্ডলীর সাতটি তারা নিয়ে গঠিত চামচ যা থেকে ধ্রুব তারা চেনা যায়।

সামার ট্রায়াঙ্গেল। এটি তিনটি আলাদা মণ্ডলীর ভিন্ন তিনটি তারার সমাবেশ। 
Category: articles

সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬

[মার্চের শেষ সপ্তাহ] 

কিছু দিন সূর্যের আড়ালে থেকে আবার আবির্ভূত হতে শুরু করেছে সামার ট্রায়াঙ্গেল। একে এখন ভোরের পূবাকাশে দেখা যায়। 


ছবিতে সামার ট্র্যায়াঙ্গেল বা গ্রীষ্মের ত্রিভুজ দেখা যাচ্ছে। এখানে আছে আকাশে অন্যতম উজ্জ্বল তিনটি নক্ষত্র। এরা হল যথাক্রমে বীণামণ্ডলীর নক্ষত্র অভিজিৎ (Vega), ঈগলমণ্ডলীর শ্রবণা (Altair) এবং বকমণ্ডলীর নক্ষত্র পুচ্ছ (Deneb)।


সামার ত্রিভুজ আকাশের তারাদের একটি নকশা হলেও এটি তারামণ্ডলী নয়, বরং  তারানকশা
গরমের দিনগুলোতে (মে-জুন মাসের দিকে) এটি মধ্য রাতে মোটামুটি মাথার উপর থাকে। বসন্ত কালে (যেমন এখন) এটি থাকে ভোরের আকাশে। আস্তে আস্তে পশ্চিমে হেলতে হেলতে নভেম্বর মাসের দিকে এটি থাকে সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশে। আগস্টের শুরুতে রাত নয়টার দিকে থাকে প্রায় মাথার সোজা উপরে। 

Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...