Advertisement

রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

আজ বা আসন্ন কয়েক দিনের মধ্যে যে কোন মেঘ বা কুয়াশামুক্ত সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের ঠিক পরপরই আপনি পশ্চিমাকাশে তিনটি উজ্জ্বল তারকা দেখতে পাবেন। এদেরকেই একত্রে বলা হয় সামার ট্রায়াঙ্গেল (Summer triangle) বা গ্রীষ্মের ত্রিভুজ। ত্রিভুজটি কোন তারামণ্ডলী নয়, একটি তারানকশা (Asterism) মাত্র।


শীতকালে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ! কেমন অদ্ভুত বিষয়, তাই না? আসলে একে সামার ট্রায়াঙ্গেল বলার কারণ হচ্ছে, আমাদের উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে এই তারাচিত্রটি মাথার উপরে থাকে। তিনটি আলাদা তারামণ্ডলীর উজ্জলতম নক্ষত্র ত্রিভুজের তিন শীর্ষে বসে আছে। বীণামণ্ডলীর (Lyra) অভিজিৎ (Vega), বকমণ্ডলীর পুচ্ছ (Deneb) এবং ঈগলমণ্ডলীর শ্রবণা (Altair) হচ্ছে এই তিনটি তারকা।

শীঘ্রই এরা সূর্যের আভায় আবৃত হয়ে যাবে। বেশ কিছু দিন দেখা যাবে না। ২/৩ মাস পরে আবার হাজির হবে ভোরের আকাশে।

সূত্র: আর্থ স্কাই
Category: articles

বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫


আপনি যদি গ্রহদের ভক্ত হন, তবে এ মাসেও আপনাকে ভোরের আগে আগে বিছানা ছাড়তে হবে। পুরো ডিসেম্বর জুড়ে সবচেয়ে চমৎকার গ্রহ শুক্র এবং বৃহস্পতি। এরা যথাক্রমে রাতের আকাশের প্রথম ও দ্বিতীয় উজ্জ্বল বস্তু। মেঘহীন ভোরের পূবাকাশে এদেরকে খুঁজে না পাওয়া অসম্ভব। অন্য দিকে একটু অনুজ্জ্বল মঙ্গল থাকবে এদের মাঝখানে। মাসের মাঝামাঝিতে শনি এসে ভোরের মিছিলে যোগ দেবে। আরেকটি দৃশ্যমান গ্রহ বুধ। এটি এ মাসে সন্ধ্যার আকাশে থাকলেও সূর্যের খুবই কাছাকাছি থাকায় মাসের প্রথম দুই তৃতীয়াংশ সময়ই দেখা যাবে না।
উল্লেখযোগ্য দৃশ্যঃ
মাসের ৪ তারিখে চাঁদ থাকবে বৃহস্পতির নিচে
মাসের ৭ তারিখে চাঁদ ও শুক্রের ঘনিষ্ঠ দৃশ্য।
মাসের মাঝামাঝিতে শনি হাজির হবে শুক্রের নিচের দিকে।

সূত্রঃ
১। Earth Sky
Category: articles

শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৫


খালি চোখে একটি এবং টেলিস্কোপে রঙিন ডাবল স্টার মনে হলেও এখন জানা গেছে আলম্যাক আসলে ৪টি তারকার মিলিত আলো  
এটা ঠিক যে অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতে অবস্থিত একই নামের গ্যালাক্সিটিই আমাদের কাছে বেশি পরিচিত। তবে, এই অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতেই রয়েছে সমগ্র আকাশের অন্যতম দারুণ একটি ডাবল স্টার আলম্যাক। এর আনুষ্ঠানিক নাম গামা এ্যান্ড্রোমিডি (Gamma Andromedae)। এর দুটি অংশের একটিকে টেলিস্কোপে সোনালী এবং অপর অংশকে নীল আসমানী দেখায় (উপরের ছবি দেখুন)। গবেষণার আরেকটু গভীরে গিয়ে শেষমেশ জানা গেল এই তারার আলোর উৎসের মূলে রয়েছে আসলে চারটি তারা! একের ভেতর চার!



খুঁজে পাবার উপায়ঃ


অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলী রূপকথায় একটি মেয়ের নাম। আর মেয়েটির বাম পায়ের তারাটিই হচ্ছে আলম্যাক। পেগাসাস বর্গের আলফেরাজ তারকা থেকে দুটি লাইন চলে গেছে পেগাসাস নামক উড়ুক্কু ঘোড়ার পেছনের দিকে। এই লাইনদ্বয় অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীর সম্পত্তির সম্পত্তি।
আলফেরাজ তারকা থেকে শুরু করে নিচের লাইন বরাবর চতুর্থ তারকাটি হচ্ছে আমাদের আজকের আলোচ্য তারা। দ্বিতীয় ক্রমের উজ্জ্বল তারকাটি সপ্তর্ষীমণ্ডলীর প্রদান সাতটি তারকার কাছাকাছি উজ্জ্বল।



এই তারাটি, আসলে বলা উচিত তারাব্যবস্থাটি (Star system) ৩৫০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।

একের ভেতর চারঃ
একে খালি চোখে একটি তারাই মনে হবে। কিন্তু টেলিস্কোপে দেখে বোঝা যাবে আসলে এখানে দুটি তারা আছে। বড়টি দেখতে সোনালী, আর ছোটখানা নীল। এই রঙিন জোড়ের সৌন্দর্য্য প্রত্যক্ষ করতে ৭৫ এক্স বিবর্ধনের টেলিস্কোপ প্রয়োজন। কোন কোন বিশেষজ্ঞের মত হচ্ছে, আলম্যাকের রঙের বৈচিত্র্য বকমণ্ডলীর তারকা আলবিয়েরোকেও (বকমুখ) হার মানায়। সাধারণত মনে করা হয়, আলবিয়েরো হল আকাশের সবচেয়ে সুন্দর ডাবল স্টার। শরত ও শীতের শুরুতে দুটো তারাই আকাশে থাকে। আপনি নিজেই বিচার করুন, কোনটা বেশি সুন্দর!

ইতিহাসঃ
১৭৭৮ সালে জোহান টবিয়েস মায়ের প্রাথমিক যুগের একখানা টেলিস্কোপ দিয়ে প্রথম আবিষ্কার করেন যে এটি আসলে ডাবল স্টার। এখন আমরা জানি, ছোট নীল তারাটি আসলে একটি ট্রিপল স্টার সিস্টেম। ফলে, সব মিলিয়ে আলম্যাক আসলে চার তারার মিলিত আলো।

পারসিয়াস তারামণ্ডলীর বিষম তারা এ্যালগলের কাছেই আলম্যাকের অবস্থান। এ্যালগল সর্বোচ্চ দীপ্তি প্রদর্শনের সময় আলম্যাকের সাথে সেয়ানে সেয়ানে আলো বিকিরণ করে।


সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল
নামঃ গামা অ্যান্ড্রোমিডি (Gamma (γ) Andromedae)
তারামণ্ডলীঃ  অ্যান্ড্রোমিডা
অবস্থানঃ ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড, +৪২° ১৯′
নামের উৎসঃ العناق الأرض
নামের অর্থঃ মরু বিড়াল (desert lynx)
দূরত্বঃ ৩৫০ আলোকবর্ষ
আপাত উজ্জ্বলতাঃ ২.২৬
তুলনামূলক উজ্জ্বলতাঃ অ্যান্ড্রোমিডা তারামণ্ডলীতে তৃতীয়


তথ্যসূত্রঃ
১। আর্থ স্কাই
২। ইউটিউবঃ ইংরেজি Almach এর উচ্চারণ আলম্যাক।
৩। উইকিপিডিয়াঃ Almach 
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

ধরুন, বিদেশে গিয়ে আপনার সাথে এক বিদেশীর সাক্ষাৎ হলো। তিনি আপনাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার বাড়ি কোথায়?’

আপনার উত্তর, 'বাংলাদেশে'। এবার যদি তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘বাংলাদেশ কোথায় অবস্থিত?’, আপনি নিশ্চয়ই বিরক্ত হবেন। ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলে, বলবেন, ম্যাপে খুঁজে দেখুন। যাদের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ সম্বন্ধে ধারণা আছে, তারা নিশ্চয় কোন দেশ বা অঞ্চলের নাম শুনেই বুঝে ফেলেন, ও আচ্ছা! আপনি ঐদিকে থাকেন, ঠিক আছে।




রাতের আকাশের দিকে তাকালে আমাদের মনে হয় যেন একটি গম্বুজের মাঝে অনেকগুলো আলোর বিন্দু সেঁটে দেওয়া আছে। বাস্তবে গম্বুজ না হলেও এই আকাশকে বলা হয় খ-গোলক (Celestial spehere)। এই খ-গোলকে তারকা, গ্যালাক্সি, উল্কা, ধূমকেতু  ইত্যাদির অবস্থান সহজে বোঝার জন্যে পুরো আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি (IAU) আকাশকে ৮৮টি অঞ্চলে ভাগ করেছে। এই ৮৮টি অঞ্চলের প্রত্যেকটিকে বলা হয় এক একটি হয় তারামণ্ডলী ( Constelation)। এই সবগুলোর মিলিত ক্ষেত্রফল পুরো আকাশের ৩৬০ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। তাই, আকাশের যে কোন বস্তু কোন না কোন মণ্ডলীতে অবস্থিত থাকবেই। সবচেয়ে সহজে চোখে পড়ে এমন কিছু তারামণ্ডলী হচ্ছে আদমসুরত বা কালপুরুষ, বৃশ্চিক (Scorpius), বকমণ্ডলী (Cygnus), সপ্তর্ষিমণ্ডলী (Ursa Major) ইত্যাদি।

অবশ্য তারামণ্ডলীর এই সীমানা নির্ধারণ দৈবভাবে করা হয়নি। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ রাতের আকাশের বিভিন্ন তারাদের তুলনামূলক অবস্থানের ভিত্তিতে আকাশে রূপকথারসহ নানারকম প্রাণী, বিভিন্ন ভঙ্গীমার মানুষসহ নানাবিধ আকৃতি কল্পনা করেছে। তবে এদের সবাই তারামণ্ডলী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। কেননা, অনেক ক্ষেত্রেই একই তারা একাধিক নকশায় স্থান পেত। উপরন্তু, বিভিন্ন নকশার তারাগুলোকে আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে আলাদা আকৃতি তৈরি হত। বর্তমানে তাই এমনভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে একই তারা একধিক মণ্ডলীতে না থাকে। ভিন্ন তারামণ্ডলীর কিছু তারা বা একই তারামণ্ডলীর কয়েকটি তারা মিলিত হয়ে যে আকৃতির সৃষ্টি হয় এখন তাকে নাম দেওয়া হয়েছে asterism। বাংলা এখনো জ্যোতির্বিজ্ঞানে এর কোন নাম নেই। তবে একে আমরা তারানকশা বলতে পারি। এমন কিছু উদাহরণ হলো সামার ট্রায়াঙ্গেল, উইন্টার হেক্সাগন, সাউদার্ন ক্রস, কাস্তে, গ্রেট স্কয়ার অব পেগাসাস ইত্যাদি।
 
উল্লেখ্য, আকাশে তারারা আমাদের চোখে বিভিন্ন আকৃতি হিসেবে ধরা পড়লেও বাস্তবে একই তারামণ্ডলীর তারারা কিন্তু কোন চ্যাপ্টা তল বা গম্বুজে সাঁটানো নয়, বরং এক একটি তারকা পৃথিবী থেকে আলাদা দূরত্বে অবস্থিত। দূরত্ব অনেক বেশি বলেই সবাইকে একই তলে অবস্থিত মনে হয়। যেমন বলা যায় আদম সুরতের কথা। এর উজ্জ্বল তারাগুলোর দূরত্ব ২৫ আলোকবর্ষ থেকে শুরু করে ২২৫ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত।


বছরের আলাদা সময়ে আকাশে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। এর কারণ দুটো- পৃথিবীর আবর্তন ও সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ। সন্ধ্যার আকাশে যে তারাদের সমাবেশ ঘটে, রাতে গড়াতে গড়াতে তারা পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারদিকে আবর্তনের জন্যে পশ্চিমে হেলতে থাকে। যদি পৃথিবীর শুধু আবর্তনই থাকত, প্রদক্ষিণ তথা সূর্যের চারদিকে বেগ না থাকত, তবে প্রতি রাতের একই সময়ে নির্দিষ্ট কোন স্থানে একই তারা দেখা যেত। কিন্তু পৃথিবীর প্রদক্ষিণের কারণে কোন তারকা প্রতি দিন প্রায় ৪ মিনিট আগে একই জায়গায় আসে। কারণ পুরো আকাশের মোট কৌণিক ক্ষেত্রফল ৩৬০ ডিগ্রি। এই পুরো অঞ্চল পৃথিবী ৩৬৫ দিনে ঘুরে, অর্থ্যাৎ প্রতি দিন প্রায় ১ ডিগ্রি করে ঘুরতে হয়। আবার পৃথিবীর আবর্তনের জন্যে প্রতি ডিগ্রির জন্যে সময় লাগে প্রায় ৪ মিনিট।
এ জন্যেই শীত, গ্রীষ্মসহ আলাদা ঋতুতে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। যেমন (উত্তর গোলার্ধের) শীতকালে আদম সুরতের দেখা মেলে, কিন্তু এ সময় বৃশ্চিকমণ্ডলী (Scorpius) হারিয়ে যায় দিনের আলোতে। আসলে কোন তারামণ্ডলী রাতে চোখে না পড়ার কারণ, এর সূর্যের সাথে সাথে বা আগেই অস্ত যাওয়া।

প্রাচীন জ্যোতির্বিদ টলেমি এইরকম ৪৮টি তারামণ্ডলী তালিকাভূক্ত করেন। তিনি অনেকগুলোই করতে পারেননি কারণ, তাঁর বাসস্থান থেকে পুরো আকাশ চোখে পড়ত না। পরবর্তীতে মুসলিম বিজ্ঞানীরা অধিকাংশ তারকা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা ও এদের নামকরণ করেন। তাই দেখা যায়, অধিকাংশ তারাদের বর্তমান নাম আরবি ভাষা থেকে আসা।

এই ৮৮টি তারামণ্ডলীর মধ্যে ১৩টি তারামণ্ডলীতে সূর্য সারা বছর পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। এরাই মূলত রাশিচক্র। রাশিচক্র বলার কারণ সূর্য ঘুরেফিরে এদের মাঝেই থাকে। তবে সূর্য কখন কোথায় অবস্থান করে সেটার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ বের করার বিদ্যা তথা জ্যোতিষবিদ্যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে তাদের রাশিচক্রে এখনও ১২টি তারামণ্ডলী হিসেব করা হয় এখন যা সেকেলে হয়ে গেছে।

সূত্র: নাসা 
Category: articles

রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫

এ মাসে সংক্ষেপে জানাচ্ছি। আমরা জানি, রাতের আকাশে ৫টি গ্রহ খালি চোখে দেখা যায়- শুক্র, বৃহস্পতি, শনি, মঙ্গল ও বুধ। চলুন দেখি, এ মাসে কাদেরকে কোথায় দেখা যাবে।
নভেম্বরের ১২ তারিখের দৃশ্য
এ মাসের সন্ধ্যার একমাত্র গ্রহ শনি।
দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে রাতের আকাশ উজ্জ্বল করে শনি গ্রহ এই মাসে হারিয়ে যেতে বসেছে রাতের আকাশ থেকে। বিদায় শনি! এর কারণ এ মাসের মাঝামাঝিতে এটি পৃথিবী ও সূর্যের সাথে একই রেখা বরাবর অবস্থানে চলে আসবে। ফলে এটি অস্ত যাবে সূর্যের সাথে সাথেই, এবং ক্রমান্বয়ে আগেই। এরপরে ডিসেম্বরের শেষের দিকে হাজির হবে পূবাকাশে, ভোরে সূর্যের আগেই উদিত হয়ে। এখানে একটি সহজ বিষয় মাথায় রাখা দরকার- সন্ধ্যার পশ্চিমাকাশ থেকে কোন গ্রহ হারিয়ে যাবার কিছু দিন পরেই এটি ভোরের পূবাকাশে হাজির হয়। কারণ, সন্ধ্যার আকাশ থেকে হারায় তখনি যখন ভোরে এটি সূর্যের সাথে বা আগেই উদিত হয় এবং পরিণামে যুগপৎ বা আগেই অস্ত যায়।
তবে শনির উল্টো ঘটনা ঘটবে বুধের ক্ষেত্রে- এটি ১৭ তারিখে ভোরের আকাশ থেকে সন্ধ্যার আকাশে ফিরে আসবে। অবশ্য এটি খুবই অনুজ্জ্বল। অন্য দিকে শুক্র, বৃহস্পতি ও মঙ্গল থাকবে ভোরের আকাশেই।
মাসের শুরুর দিকে ভোরের ২/৩ ঘণ্টা আগে বৃহস্পতির উদয় ঘটলেও দিন গড়াতে গড়াতে মাসের শেষের দিকে এর উদয় ঘটবে মধ্য রাতের পরেই। আর এক্ষেত্রে অন্য সবার চেয়ে এই গ্রহটি এগিয়ে থাকবে।
সূত্রঃ
১। আর্থ স্কাই
Category: articles

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৫

আপনি যদি নতুন তারা দেখা শুরু করেন অথবা তারা দেখতে দেখতে বুড়োও হয়ে যান (অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে!)- দুই ক্ষেত্রেই আপনার সেরা বন্ধু হবে একখান দুরবিন বা বাইনোকুলার। আসুন, জেনে নিই দুরবিন সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় এবং রাতের আকাশে আপনি এটা দিয়ে কী কী দেখতে পাবেন।

১. তারা দেখা শুরু করতে টেলিস্কোপের চেয়ে বেশি ভালো কাজে আসে এই দুরবিন
প্রকৃতপক্ষে টেলিস্কোপ কিনতে আগ্রহী অধিকাংশ তারাপ্রেমীরই উচিত টেলিস্কোপ কেনার আগে প্রায় ১ বছর ধরে দুরবিন দিয়ে কাজ চালানো। কারণ, প্রথম বার টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে গিয়ে পড়তে হয় বিপত্তিতে। কারণ, একই সাথে জটিল একটি যন্ত্রের পরিচালনা এবং রাতের আকাশের সাথে প্রাথমিক পরিচয়-কাজ দুটো একসাথে করতে মানিয়ে নেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
বাজারে প্রাপ্ত একটি মোটামুটি মানের দুরবিনই রাতের আকাশের প্রত্যাশিত দৃশ্য তুলে ধরতে সক্ষম হবে। যন্ত্রের বিবর্ধন (Magnification) ও আলোক সমাবেশ ক্ষমতার (Light-gathering power) সমন্বয়ে আকাশ হয়ে ওঠে কয়েকগুণ বেশি জ্বলমলে। একটি ৭ × ৫০ বাইনোকুলারও খালি চোখের চেয়ে ৭ গুণ বেশি বস্তু চোখের সামনে সামনে হাজির করতে পারবে। মাসের বা বছরের কোন সময় কী দেখবেন তার খোঁজখবর রাখতে নিয়মিত পড়ুন আমাদের রাতের আকাশ সেকশন। এ কাজে প্লেনিস্ফিয়ারও ভালো কাজে আসতে পারে।
২. ছোট এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য দুরবিন দিয়ে শুরু করুন
শুরুতেই বিশাল সাইজের দুরবিন কিনলে বিপত্তিতে পড়তে হবে যদি না আপনি ট্রাইপডও কেনার ইচ্ছা করেন। অন্যথায় দুরবিনখানি আপনার হাতে থেকে আপনার কথা শোনার চেয়ে অভিকর্ষের কথা শোনার দিকে বেশি মনযোগ দেবে যার পরিণাম, কাঁপাকাঁপি আর অস্থির আকাশ। নতুনদের জন্য ৭ × ৫০ আকারের দুরবিনই যথেষ্ট যা দেখাবেও অনেক কিছু, হাতেও বসে থাকবে ভদ্রভাবে। চাইলে পাখি দেখাসহ অন্য কাজেও সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন আলোকযন্ত্রটি।
৩. দুরবিন দিয়ে চাঁদ দেখুন
দুরবিন কেনার শুরুর দিনগুলোতে আপনি চাঁদের বিভিন্ন দশা (Phase) যেমন পূর্ণচাঁদ তথা পূর্ণিমা, ক্রিসেন্ট বা অর্ধচন্দ্র (Crescent) ইত্যাদি দেখা শুরু করে দিতে পারেন। অবশ্য আপনি আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যলাক্সি বা তারও বাইরে অন্য কোন গ্যালাক্সির দূর আকাশের বস্তুগুলো (deep-sky objects) দেখতে চাইলে স্বভাবতই চাঁদকে এড়িয়ে যেতে চাইবেন। কিন্তু চাঁদ নিজেই একটি দর্শনীয় বস্তু। মনে রাখতে হবে, দুরবিন দিয়ে চাঁদ দেখার সেরা সময় হচ্ছে গোধূলীর (Twilight)। এই সময় এর আলোর তীব্রতা থাকবে কম এবং দেখা যাবে অনেকটা বিস্তারিত। দেখতে পারেন চন্দ্রসাগর (Maria) নামে পরিচিত অগ্ন্যুৎপাতের ফলে চাঁদে সৃষ্ট কালো সমতল অঞ্চলও।
৪. চলুন, এবার গ্রহ দেখি
আমাদের রাতের আকাশ সেকশনে আপনি নিয়মিত গ্রহদেরও খোঁজখবর পাবেন। আমরা জানি, সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে খালি চোখে দেখা যায় শুধু ৫টি- বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনি। ইউরেনাস ও নেপচুন খালি চোখে ধরা দেয় না। অবশ্য ভুল বলা হলো, আরেকটিও খালি চোখে দেখা যায়- আমাদের প্রিয় নীল গ্রহটি যাতে আমরা বাস করি!
চলুন দেখে নিই উপরোক্ত ৫টি গ্রহ দুরবিনে কেমন দেখাবে।
বুধ ও শুক্রঃ
এরা দুজনেই অভ্যন্তরীণ তথা ভেতরের দিকের (Inner) গ্রহ। এদের ক্ষেত্রে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার কক্ষপথ পৃথিবীর চেয়ে ক্ষুদ্র। এ কারণেই অনেক সময় গ্রহ দুটি চাঁদের মত বিভিন্ন দশা প্রদর্শন করে থাকে। ঘটনাটি ঘটে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝপথ পাড়ি দেবার সময়। দুরবিন আপনাকে এদের দশা ফাঁস করে দিতে সহায়তা করবে।
মঙ্গলঃ
লাল এই গ্রহটি আসলেই দেখতে লাল। আর দুরবিন এর তীব্রতা আরো বাড়িয়ে তুলবে। আকাশের তারাদের তুলনায় (যারা সত্যিই তারা, গ্রহ নয়) মঙ্গলের গতি অনেকটা বেশি। এ সময় আপনি দুরবিনের সাথে আপনার বন্ধুত্বকে রাঙিয়ে নিতে পারেন।
বৃহস্পতিঃ
এবার শুরু আসল খেলা! নতুনদের জন্যেও বৃহস্পতি একটি দারুণ শিকার। দুরবিন স্থিরভাবে ধরে রাখতে পারলে বৃহস্পতি আপনার সামনে তার চারটি উপগ্রহও প্রকাশ করে দেবে। এগুলো সর্বপ্রথম গ্যালিলিও তাঁর স্ব-আবিষ্কৃত প্রতিসারক টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেন। এ জন্যে এদেরকে বলা হয় গ্যালিলীয় উপগ্রহ। দুরবিন দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে যে বিভিন্ন রাতে গ্রহটির উপগ্রহগুলোর অবস্থান থাকে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়।
শনিঃ
যদিও শনির বলয় (Ring) দেখতে হলে টেলিস্কোপ ছাড়া উপায় নেই, কিন্তু দুরবিন আপনাকে এর সোনালী রঙ অন্তত দেখাবে। অভিজ্ঞ দর্শকরা অবশ্য শনির বৃহত্তম উপগ্রহ টাইটানও (Titan) দেখতে পান। একটু শক্তিশালী দুরবিন ব্যবহার করলে আপনি দেখবেন যে শনি আসলে পুরোপুরি গোলাকার (Round) নয়, কিছুটা উপবৃত্তাকার (Elliptical)।
ইউরেনাস ও নেপচুনঃ
খালি চোখে ধরা না পড়লেও দুরবিনের চোখে ধরা পড়ে যায় সৌরজগতের সর্ববহিস্থ গ্রহ দুটি। ইউরেনাসের বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাস থাকায় একে দেখাবে সবুজাভ। বছরে একবার ইউরেনাস খালি চোখে ধরা পড়ার মত উজ্জ্বল হয়। আরেকটু দূরবর্তী নেপচুনকে অবশ্য দেখা যাবে তারকার মতো যদিও এরও বায়ুমণ্ডল ইউরেনাসের মতই।
অনান্যঃ
গ্রহদের বাইরেও সৌরজগতের আরো কিছু বস্তু দেখতে আপনাকে সহায়তা করবে দুরবিন। খোঁজ রাখতে পারেন অনিয়মিত ধূমকেতুদের (Comet)। দুরবিনে ১২ টি পর্যন্ত গ্রহাণুও (Asteroid) দেখা যায়। আমরা যথাসম্ভব এদের আপডেট খবর ওয়েবসাইটে জানানোর চেষ্টা করবো।
৫. আমাদের হোম গ্যলাক্সি মিল্কিওয়ে দেখতে দুরবিন
পৃথিবীর নিকটবর্তী স্টার ক্লাস্টার (Star Cluster) তারাস্তবক দেখতে দুরবিন বেশ কাজে আসবে। এখানে মনে রাখার বিষয়, রাতের আকাশে আমরা যত তারা দেখি তার সবই মিল্কিওয়ের গ্যালাক্সির সম্পত্তি। তাই কিছু তারা নিয়ে গঠিত তারাস্তবক সমর্কেও একই কথা বলা চলে। বেশি দূরের ক্লাস্টার দেখতেও অবশ্য চাই টেলিস্কোপ। শীতকালের আকাশে আপনি দেখতে পাবেন কৃত্তিকা মণ্ডল (Pleiades) নামক ৭টি তারার জালি। খালি চোখে অনেকেই এখানে মাত্র ৬টি তারকা দেখলেও বাইনোকুলার আপনাকে আরো অনেকগুলো দেখিয়ে দেবে। এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে ৪০০ আলোকবর্ষ
আরেকটি দারুণ জিনিস আপনি দেখতে পাবেন আদম সুরত তথা কালপুরুষ (Orion) তারামণ্ডলীতে। এটিও ভালো দেখা যাবে শীতকালে। এর নাম ওরিওন নেবুলা। অন্য দিকে গ্রীষ্মকালে দেখতে পাবেন ধনুমণ্ডলীতে (Sagittarius) অবস্থিত লেগুন নেবুলা। মিল্কিওয়ে নিজেই একটি দর্শনীয় বস্তু। চোখে পড়বে অনেক বেশি তারকা এবং আরো আরো নানান কিছু।
৬. মিল্কিওয়ে ছাড়িয়ে
পৃথিবীর কাছাকাছি গ্রহদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গ্যালাক্সি এ্যান্ড্রোমিডা। খালি চোখে এটি দেখা গেলেও বাইনোকুলার এর সৌন্দর্য্য তুলে ধরবে আরো বেশি করে। পাশাপাশি দেখার মতো আরো আছে বড় ও ছোট ম্যাজেলানিক ক্লাউড।
মোটকথা আপনি নতুন তারা দেখা শুরু করলে দুরবিনই আপনার জন্যে টেলিস্কোপের চেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। 
Category: articles

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

আমরা আগেই জেনেছি, সৌরজগতের খালি চোখে দৃশ্যমান ৫টি গ্রহের মধ্যে শনিই সবচেয়ে অস্পষ্ট। কিন্তু কিছু দিন ধরেই রাতের আকাশে চলছে এই নিয়মের ব্যতিক্রম। এই ব্যত্যয় চলবে এ মাসেও। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, এই মাসেও উত্তর গো্লার্ধের আকাশে বুধ (Mercury) সন্ধ্যার গোধূলীর আভায় লুকিয়ে থাকবে। অন্য তিনটি দৃশ্যমান গ্রহও তথা শুক্র (Venus), বৃহস্পতি (Jupiter) ও মঙ্গল (Mars) সূর্যাস্তের আগে দেখা দেবে পূর্ব দিগন্তে। বিস্তারিত জানা যাক একে একে।
বুধঃ
আমরা জানি, বুধ সৌরজগতের সবচেয়ে ভেতরের (Innermost) গ্রহ এবং তাই এর অবস্থান থাকে সব সময় সূর্যের কাছাকছি। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে গ্রহটি ভোরের আকাশ থেকে সন্ধ্যার আকাশে পাড়ি দিয়েছিল। সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত এটি সন্ধ্যার আকাশেই থাকবে। তবে, গত কয়েক মাসের মতোই উত্তর গোলার্ধের আকাশপ্রেমীদের এই গ্রহটি দেখার ব্যাপারে কিছুটা হতাশ হতে হবে। উল্টো দিকে দক্ষিণ গোলার্ধে কিন্তু বছরের সবেচেয়ে ভালো সাজে দেখা যাবে গ্রহটিকে।
দক্ষিণ ও ক্রান্তীয় উত্তর অঞ্চলে (কর্কটক্রান্তি রেখা) গ্রহটি সূর্যের ২ ঘণ্টা পর পর্যন্ত দিগন্তের উপরে থাকবে। মধ্য-উত্তর গোলার্ধে সূর্যাস্তের  ১ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যেই বুধও অস্ত যাবে। আরো উত্তরে দুরবিন দিয়েও একে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। মাস শেষে গ্রহটি সন্ধ্যার আকাশ থেকে লাফ দিয়ে চলে যাবে ভোরের আকাশে। অক্টোবরে অবশ্য উত্তর গোলার্ধে একে ভালোই চোখে পড়বে।

শনিঃ
পুরো সেপ্টেম্বর মাসেই মেঘমুক্ত আকাশে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শনি গ্রহ দৃষ্টির সামনে চলে আসবে। উত্তর অক্ষাংশ অঞ্চলে সন্ধ্যার কয়েক ঘণ্টা পর পর্যন্ত শনি দিগন্তের উপরে হাজির থাকবে। তবে, দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশে গ্রহটি আরো বেশি সময় এমনকি মধ্য রাত পর্যন্ত জ্বলজ্বল করবে।
কিভাবে চেনে যাবে গ্রহটিকে? অনেক দিন ধরেই এটি দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশের কাঁকড়াবিছার মতো আকৃতির তারামণ্ডলী বৃশ্চিকের সামনে অবস্থান করছে। দেখতে সোনালী রঙ এর গ্রহটি স্থির আলো প্রতিফলিত করে। অর্থ্যাৎ, এটি নক্ষত্রের মত মিটমিট করে জ্বলে না। এ মাসে একে চাঁদের পাশে দেখা যাবে। তারিখটি হচ্ছে ১৮ সেপ্টেম্বর। দুরবিন ছাড়া কখোনই এর উপগ্রহগুলো চোখে পড়ে না।

শুক্রঃ
সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ জুড়ে শুকতারা শুক্র এই মাসে নিজের সবচেয়ে উজ্জ্বল আলো প্রতিফলিত করবে। দৃশ্যমান অবস্থায় একে চিনতে কখোনোই ভুল হয় না। কারণ, এটি পৃথিবীর আকাশের ৩য় উজ্জ্বলতম বস্তু যেখানে ১ম ও ২য় বস্তুদ্বয় এর সাথে তুলনীয়ই নয়। কারণ, এরা হলো যথাক্রমে সূর্য ও চন্দ্র।
তবে গ্রহটিকে দেখে মুগ্ধ হবার জন্যে ২১ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার কোন মানে নেই। কারণ, পুরো মাসেই পূবাকাশে ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই গ্রহটি উজ্জ্বলভাবে চোখে ধরা দেবে। পাশাপাশি অনুজ্জ্বল গ্রহ মঙ্গলকে খুঁজে পেতেও কাজে আসবে গ্রহটি। সেপ্টেম্বরের ৯, ১০ ও ১১ তারিখে অপসৃয়মান ক্রিসেন্ট মুনের (অর্ধ-চন্দ্র) সাহায্যে  শুক্র (Venus), বৃহস্পতি (Jupiter), ও মঙ্গলকে খুঁজে পাওয়া যাবে।


মঙ্গলঃ 
জুনের মাঝামাঝিতে মঙ্গল ভোরের আকাশে পাড়ি দিয়েছিল। সূর্যের চারদিকে পৃথিবী ও মঙ্গলের কক্ষীয় গতি প্রায় সমান। পৃথিবীর ক্ষেত্রে বেগটি যেখানে সেকেন্ডে ১৮ মাইল, মঙ্গলের ক্ষেত্রে তা ১৫। ফলে সূর্যোদয়ের আভা থেকে গ্রহটি রেহাই পেতে সময় লেগে যায়। তবে একবার রেহাই পেলে তা কিছু দিন বলবৎ থাকে। এটিই ঘটছে দক্ষিণ গোলার্ধের আকাশে গত কয়েক মাস ধরে।
এই মাসে শুক্রের ভোরের আকাশে উপস্থিতি মঙ্গলকে খুঁজে পেতে সুবিধা করে দিয়েছে। তারিখ যতোই এগোতে থাকবে, গ্রহটি সূর্যোদয়ের ততোই আগে দেখা যেতে থাকবে এবং দেখাও যাবে ক্রমান্বয়ে দিগন্ত থেকে বেশি উপরের দিকে। পুরো মাস জুড়ে মঙ্গলের কাছাকাছি অবস্থান করে শুক্র গ্রহটিকে খুঁজে পাবার ক্ষেত্রে লাইটহাউসের ভূমিকা পালন করবে।

বৃহস্পতিঃ
পৃথিবীর আকাশে অন্য যে কোন নক্ষত্রের চেয়েও সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহটি বেশি উজ্জ্বল দেখায়। শুক্রের পরেই উজ্জ্বলতায় এর অবস্থান। এ বছরের আগস্টে শুক্রের সাথে সাথে এটিও চলে আসে ভোরের আকাশে। তবে, এ মাসে মঙ্গল বা শুক্রের চেয়ে এর অবস্থান সূর্যের আভার বেশি কাছে। তবে তারিখ গড়াবার সাথে সাথে গ্রহখানা উল্লেখিত গ্রহ দুটির দিকে এগোতে থাকবে। অক্টোবরের ১৭ তারিখে এটি মঙ্গলকে ধরে ফেলবে এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত নিকটতম অবস্থানের রেকর্ড ধরে রাখবে।

অক্টোবরের ২৬ তারিখে এটি ধরে ফেলবে শুক্রকে এবং বছরের তৃতীয় ও শেষ মিলন ঘটাবে। একই তারিখে মঙ্গলকে সাথে নিয়ে এই তিন গ্রহ একটি চমৎকার প্রদর্শনী দেখাবে যার আবার দেখতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২১ সাল পর্যন্ত।


তথ্যসূত্রঃ Earthsky
Category: articles

বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই, ২০১৫


২০১৫ সালের জুলাই মাস দুটি পূর্ণিমা (full moon) পাচ্ছে। এই ঘটনা কিন্তু অহরহ ঘটে না। অধিকাংশ ইংরেজি মাসই একটিই মাত্র পূর্ণিমা পায়। সত্যি বলতে, প্রতি দুইকি তিন বছরের মধ্যে একবার এই ঘটনা ঘটে। আর এই ক্ষেত্রে  ২য় পূর্ণিমাটিকে বলা হয় ব্লু মুন (Blue Moon)।
এই মাসের প্রথম পূর্ণিমাটি ঘটতে যাচ্ছে ২ তারিখ। বাংলাদেশ সময় ৮টা বেজে ২০ মিনিটে।
এই মাসে আরেকটি পূর্ণিমা হবে জুলাইয়ের ৩১ তারিখে। তার মানে সেটিই হচ্ছে ব্লু মুন, অন্তত নামের দিক দিয়ে, সে দেখতে যেমনই হোক না কেন।

একই মাসে আবার দুটি পূর্ণিমা পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। ঐ বছর ফেব্রুয়ারিতে কোন পূর্ণিমাই হবে না। মার্চেই আবার হবে দুটো।

কারণ, ফেব্রুয়ারি বাদ দিলে অন্য সব মাসই ৩০ বা ৩১ দিনের। আর দুটি পূর্ণ চন্দ্র তথা পূর্ণিমার মাঝখানে ব্যাবধান থাকে ২৯.৩ দিন থেকে ২৯.৮ দিনের। ফলে, কোন মাসের একটি পূর্ণিমা যদি মাসের একেবারে শুরুতেই ঘটে যায়, তাহলেই ব্লু মুন পাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়।

ফলে, ফেব্রুয়ারিই একমাত্র মাস যাতে কোনোভাবেই দুটি পুর্ণিমার সুযোগ তৈরি হবে না। আবার, এটাই একমাত্র মাস যাতে অনেক সময় একটি পূর্ণিমাও নাও হতে পারে। যেমন দেখুন ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে একটিও পূর্ণ চন্দ্র নেই। একই ঘটনা ঘটবে আবার ২০৩৭ সালে। তার অর্থ ঐ দুটি বছর দুটি করে ব্লু মুন পাওয়া যাবে। মানে একই বছরে এমন দুটি মাস পাওয়া যাবে যাতে দুটি করে পূর্ণিমা সংঘটিত হবে।
জানতে চান পূর্ণিমা কিভাবে ঘটে?
সূত্রঃ Earth Sky
Category: articles

বুধবার, ১ জুলাই, ২০১৫

গত মাসের মত এ মাসেও চলুন জেনে নিই কোন গ্রহের কী খবর। এ মাসে কোন গ্রহ কোথায় চোখে পড়বে এবং ধীরে ধীরে ওরা কোন দিকে যাবে এবং কিছু দিন পর ওদেরকে কোথায় পাওয়া যাবে, এসব জানাই এই পোস্টের উদ্দেশ্য।
বৃহস্পতি ও শনিঃ
এই মাসে যেহেতু এই দুই উজ্জ্বল গ্রহ সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে এসেছে, তাই একত্রেই উল্লেখ করলাম। পৃথিবীর রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম বস্তু এবং সার্বিকভাবে ৩য় উজ্জ্বল বস্তু (সূর্য ও চন্দ্রের পরে) গ্রহ শুক্রের অবস্থান জুনের শেষ ও জুলাইয়ের শুরুর দিনগুলোতে বৃহস্পতির একেবারে কাছাকাছি। তবে সবচেয়ে নিকটে অবস্থান জুনের ৩০ ও জুলাইয়ের ১ তারিখে। এই দুইটি দিনে এরা এতই কাছাকাছি থাকে যে পৃথিবী থেকে দেখতে চাঁদের ব্যাস যতটুকু মনে হয় এদের আপাত দূরত্ব তার চেয়ে কম। ২০১৬ সালের ২৭ আগস্টের আগে এরা আর এতটা নিকটবর্তী হবে না।
কিন্তু পশ্চিম আকাশের সৌন্দর্য্য জুলাইয়ের ১ তারিখেই শেষ হচ্ছে না। বছরের এই সময়গুলোতে শুক্র এমনিতেই বেশি উজ্জ্বল। কিন্তু এই মাসের ৯-১০ তারিখের দিকে এটি এর সর্বোচ্চ ঔজ্জ্বল্য প্রদর্শন করবে।
মাসের শুরুর দিকে মধ্য-উত্তর অক্ষাংশে সন্ধ্যার পর শুক্র আকাশে থাকবে ৩ ঘণ্টার কাছাকাছি। মাসের শেষের দিকে এই সময়টি হয়ে যাবে মাত্র ১ ঘণ্টা। আগস্টের মাঝামাঝিতে এটি আমাদের সন্ধ্যার আকাশকে বিদায় জানাবে।
শুক্রের মতো বৃহস্পতিও আগস্টে চলে যাবে ভোরের আকাশে। ২০১৫ সালের ২৬ অক্টোবরে এরা ভোরের আকাশে আবার খুবই নিকটাবস্থানে আসবে। ঐ একই দিনে আরেকটু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটবে। এই দুই গ্রহের সাথে যোগ দিবে মঙ্গল। ২০২১ সালের আগে এই তিন গ্রহ আর এত কাছে আসবে না।

মাসের ১৭-১৮ তারিখে গ্রহ দুইটি চাঁদ এবং সিংহ মণ্ডলীর উজ্জ্বলতম নক্ষত্র রেগুলাসের সাথে জড়সড় হয়ে থাকবে। ফলে ঐ দিনের পশ্চিম আকাশ অল্প একটু জায়গায় অনেকগুলো উজ্জ্বল বস্তু পেয়ে ধন্য হবে।

বৃহস্পতি গ্রহ হওয়ায় এর নিজস্ব আলো না থাকলেও এটি রাতের আকাশে যতক্ষণ থাকে উজ্জ্বলতায় হার মানিয়ে দেয় নক্ষত্রদেরও।

মঙ্গলঃ
জুনের ১৪ তারিখে মঙ্গল পাড়ি দিয়েছিল ভোরের আকাশে। আগস্ট বা সেপ্টেম্বরের আগে গ্রহটিকে চোখের লেন্স দিয়ে দিয়ে ধরতে পারার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

শনিঃ
বছরের এই সময়টি আসলে সত্যি বলতে এই গ্রহটির রাজত্বই চলে রাতের আকাশে। বৃশ্চিক মণ্ডলীর (Scorpius) মাথার সামনে এটি উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠে সন্ধ্যার পরপরই। থাকেও প্রায় সারা রাত। জুলাইয়ের ২৪, ২৫ ও ২৬ তারিখে গ্রহটি বৃশ্চিকের উজ্জ্বলতম ও রাতের আকাশের ১৬ তম উজ্জ্বল নক্ষত্র জ্যেষ্ঠা (Antares) এবং চাঁদের সাথে মিলেমিশে থাকবে।

বুধঃ
বুধ সূর্যের নিকটতম গ্রহ। গত মাসের মত এ মাসেও গ্রহটি উত্তর গোলার্ধের মানুষের খালি চোখে দেখা যাবে না। জুলাইয়ের ২৩ তারিখ পর্যন্ত এটি ভোরের আকাশে অতঃপর পাড়ি দেবে সন্ধ্যার আকাশে।
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...