[লিখেছেন: ওয়েস আল কারণী]
চলছে ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা! আর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা তর্ক ! ভাবছেন মহাকাশের পোর্টালে আবার খেলার কথা! কারণ আছে বৈকি । আপনারা হয়ত ব্রাজিলের পতাকায় অনেকগুলো তারা দেখে থাকবেন! এগুলো নিছকই এলোমেলো কিছু তারা না! ব্রাজিলের পতাকায় প্রতিটি তারাই আকাশের তারা ও তারামন্ডলের অনুকরণে রাখা হয়েছে।
চিত্র অনুসারে ১ নং তারাটি হল প্রভাস (Procyon), যা পৃথিবী থেকে ১১.৪৬ আলোকবর্ষ দূরে শূণীমণ্ডলে(constellation canis minor) অবস্থিত একটি যুগল তারা (binary star)। প্রভাস ব্রাজিলের অ্যামাজন অঙ্গরাজ্যের প্রতীক হিসেবে ব্যাবহৃত হয়।
২ নং গোলকের মাঝে অবস্থিত তারাগুলো আসলে মৃগব্যাধ বা Canis Major তারামন্ডল! অন্ধকার রাতে পৃথিবী থেকে দূর-আকাশের দিকে তাকালে যে সকল নক্ষত্র দেখা যায়, তাদের কিছু কিছু নক্ষত্রের সাথে কাল্পনিক রেখা যুক্ত করে, বিভিন্ন বিষয়বস্তু কল্পনা করা হয়। প্রাচীনকালের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই সকল বিষয়বস্তুর নামকরণ করেছিলেন পৌরাণিক চরিত্র বা পার্থিব কোন বস্তুর সাথে মিল রেখে। এই নক্ষত্রসমূহ নিয়ে তৈরি এই কাল্পনিক চিত্রগুলোকে নক্ষত্রমণ্ডল বলা হয়।
আরও পড়ুন
☛ নক্ষত্রমণ্ডলের পরিচয়
৩ নং তারাটি রাতের আকাশের দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারা Canopus বা অগস্ত্য (সুহাইল নক্ষত্র)! ৪র্থ তারাটি হল কন্যারাশির সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা ও রাতের আকাশের ১৫ তম উজ্জ্বল তারা চিত্রা (Spica)। ৫ নং আয়তের মাঝে অবস্থিত তারা দুইটি হল হ্রদসর্পমণ্ডলের (Hydra) উজ্জ্বলতম দুই তারা। বড় তারাটি হল বাসুকি (Alphard)।
৬ষ্ঠ বৃত্তের মাঝের তারা গুলো হল হারিয়ে যাওয়া তারামণ্ডল ক্রাক্স অস্ট্রালিস বা দক্ষিণা ত্রিশঙ্কু । ৭ম তারাটি হলো সিগমা অক্ট্যানটিস Sigma Octantis যা দক্ষিণ মেরু নির্নায়ক তারা । উত্তর মেরুর তারা বলতে আমরা যেমন ধ্রূবতারাকে বুঝি, দক্ষিণ মেরুর এমন ধ্রুবতারা হল Sigma Octantis! ৮ম বৃত্তের মাঝে অবস্থিত তারাগুলো হলো দক্ষিণা ত্রিকোণ মণ্ডলের (Triangulum Australe) প্রধান তিন তারা! ৯ম উপবৃত্তের মাঝের ৮টি তারা হলো বৃশ্চিকরাশির (Scorpius) প্রধান ৮ তারা।
ব্রাজিলের পতাকার সব গুলো তারা নিয়ে আমরা ধীরে ধীরে জানব । আজ জানব প্রভাস নিয়ে । প্রভাস হল বাইনারি তারা! বাইনারি তারা হল এমন দুইটি তারা যারা একে অপরের মিলিত ভারকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে। তবে পৃথিবী থেকে এদের দেখতে একটি একক তারাই মনে হয়। অন্য নামে আলফা ক্যানিস মাইনোরিস নামের এই তারাটি পৃথিবীর আকাশের অষ্টম ও নিজ নক্ষত্রমণ্ডলের উজ্জ্বলতম তারা। এর আপাত উজ্জ্বলতা +0.৩৪, অর্থাৎ রাতের আকাশের অন্যতম উজ্জ্বল তারা যা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়।
আরও পড়ুন
☛ আপাত উজ্জ্বলতা কাকে বলে?
প্রভাসের ইংরেজি নাম Procyon এসেছে গ্রিক পুরাণের Προκύων (Prokyon) শব্দ থেকে । যার অর্থ কুকুরের পূর্বে। প্রাচীন গ্রিসে আকাশের উজ্জ্বলতম তারকা লুব্ধককে (Sirius) কুক্কুর তারা (Dog star) বলা হত। রাতের আকাশে লুব্ধকের পূর্বে প্রভাস উদিত হয় বিধায় এমন নামকরণ করা। প্রভাস ব্রাজিলের অ্যামাজন অঙ্গরাজ্যের প্রতীক হিসেবে ব্যাবহৃত হয় । আরবে একে الغميصاء বা ক্রন্দনরত মেয়ে বলা হয়।
শীতের শেষের দিকে (মার্চ) মাঝরাতে এটি মাথার উপরে অবস্থান করলেও বছরের এই সময়ে একে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন । আকাশ পরিষ্কার থাকায় এর উজ্জ্বল নীলচে আভা সহজেই চোখে পড়ে। আমরা প্রায় সবাই অরায়ন বা কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডল চিনি। রাতের আকাশে পাশাপাশি একই সরলরেখায় অবস্থিত তিনটি তারকা (অরায়ন বেল্ট) দেখেই যা সনাক্ত করা যায় । অরায়নকে সন্ধ্যাবেলায় পশ্চিম দিগন্তের নিকট দেখা যায় ! এর দক্ষিন দিকে উজ্জ্বলতম তারা লুব্ধক (sirius) অবস্থান করে। আর অরায়ন বেল্টের অপর পাশে লাল নক্ষত্র আর্দ্রার (Betelgeuse) অবস্থান। লুব্ধকের উত্তরে ও আর্দ্রার পূর্বে অবস্থিত উজ্জ্বল তারকাটিই হল প্রভাস। শীতকালে আর্দ্রা, লুব্ধক ও প্রভাসকে নিয়ে শীতকালীন ত্রিভুজ বা উইন্টার ট্রায়াঙ্গেল কল্পনা করা হয়।
প্রভাসের দুইটি নক্ষত্রের প্রধানটি হল একটি এফ-টাইফ প্রধান ক্রমের তারা এবং অপরটি একটি শ্বেত বামন তারা। ১.৫ সৌরভরের প্রধান তারাটির ব্যাসার্ধ সূর্যের ২ গুণ এবং দীপ্তি সূর্যের ৭ গুন। এই তারকাটি বর্তমানে এর কোরের হাইড্রোজেন শেষ করে হিলিয়াম ফিউজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অর্থাৎ এটি আর কিছুদিনের মধ্যে লোহিত দানব বা রেড জায়ান্ট দশায় উপনীত হবে। এই সময়ে এর ব্যাস বর্তমান ব্যাসের ৮০-১৫০ গুণ হবে। আজ থেকে ১০-৮০ মিলিয়ন বছর পরে তারকাটির লোহিত দানব দশা শুরু হবে। এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬৫৫০ কেলভিন। দ্বিতীয় শ্বেত বামন তারাটির ভর মাত্র ০.৬৮ সৌরভর এবং ব্যাসার্ধ মাত্র ৬৮০০ কিলোমিটার! শেষে এসে বলতেই হয়!
ব্রাজিল ফুটবলে যেমন শৈল্পিক তেমন তাদের পতাকাও মহাজাগতিক !
সূত্র: ইংরেজি উইকিপিডিয়া (ফ্ল্যাগ অব ব্রাজিল)
চলছে ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনা! আর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা তর্ক ! ভাবছেন মহাকাশের পোর্টালে আবার খেলার কথা! কারণ আছে বৈকি । আপনারা হয়ত ব্রাজিলের পতাকায় অনেকগুলো তারা দেখে থাকবেন! এগুলো নিছকই এলোমেলো কিছু তারা না! ব্রাজিলের পতাকায় প্রতিটি তারাই আকাশের তারা ও তারামন্ডলের অনুকরণে রাখা হয়েছে।
ব্রাজিলের পতাকায় নক্ষত্রের মেলা |
তারাগুলো এলোমেলো বা ইচ্ছে খামখেয়ালের বশে বসিয়ে দেওয়া নয় |
২ নং গোলকের মাঝে অবস্থিত তারাগুলো আসলে মৃগব্যাধ বা Canis Major তারামন্ডল! অন্ধকার রাতে পৃথিবী থেকে দূর-আকাশের দিকে তাকালে যে সকল নক্ষত্র দেখা যায়, তাদের কিছু কিছু নক্ষত্রের সাথে কাল্পনিক রেখা যুক্ত করে, বিভিন্ন বিষয়বস্তু কল্পনা করা হয়। প্রাচীনকালের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই সকল বিষয়বস্তুর নামকরণ করেছিলেন পৌরাণিক চরিত্র বা পার্থিব কোন বস্তুর সাথে মিল রেখে। এই নক্ষত্রসমূহ নিয়ে তৈরি এই কাল্পনিক চিত্রগুলোকে নক্ষত্রমণ্ডল বলা হয়।
আরও পড়ুন
☛ নক্ষত্রমণ্ডলের পরিচয়
৩ নং তারাটি রাতের আকাশের দ্বিতীয় উজ্জ্বল তারা Canopus বা অগস্ত্য (সুহাইল নক্ষত্র)! ৪র্থ তারাটি হল কন্যারাশির সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা ও রাতের আকাশের ১৫ তম উজ্জ্বল তারা চিত্রা (Spica)। ৫ নং আয়তের মাঝে অবস্থিত তারা দুইটি হল হ্রদসর্পমণ্ডলের (Hydra) উজ্জ্বলতম দুই তারা। বড় তারাটি হল বাসুকি (Alphard)।
৬ষ্ঠ বৃত্তের মাঝের তারা গুলো হল হারিয়ে যাওয়া তারামণ্ডল ক্রাক্স অস্ট্রালিস বা দক্ষিণা ত্রিশঙ্কু । ৭ম তারাটি হলো সিগমা অক্ট্যানটিস Sigma Octantis যা দক্ষিণ মেরু নির্নায়ক তারা । উত্তর মেরুর তারা বলতে আমরা যেমন ধ্রূবতারাকে বুঝি, দক্ষিণ মেরুর এমন ধ্রুবতারা হল Sigma Octantis! ৮ম বৃত্তের মাঝে অবস্থিত তারাগুলো হলো দক্ষিণা ত্রিকোণ মণ্ডলের (Triangulum Australe) প্রধান তিন তারা! ৯ম উপবৃত্তের মাঝের ৮টি তারা হলো বৃশ্চিকরাশির (Scorpius) প্রধান ৮ তারা।
ব্রাজিলের পতাকার সব গুলো তারা নিয়ে আমরা ধীরে ধীরে জানব । আজ জানব প্রভাস নিয়ে । প্রভাস হল বাইনারি তারা! বাইনারি তারা হল এমন দুইটি তারা যারা একে অপরের মিলিত ভারকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে। তবে পৃথিবী থেকে এদের দেখতে একটি একক তারাই মনে হয়। অন্য নামে আলফা ক্যানিস মাইনোরিস নামের এই তারাটি পৃথিবীর আকাশের অষ্টম ও নিজ নক্ষত্রমণ্ডলের উজ্জ্বলতম তারা। এর আপাত উজ্জ্বলতা +0.৩৪, অর্থাৎ রাতের আকাশের অন্যতম উজ্জ্বল তারা যা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয়।
আরও পড়ুন
☛ আপাত উজ্জ্বলতা কাকে বলে?
প্রভাসের ইংরেজি নাম Procyon এসেছে গ্রিক পুরাণের Προκύων (Prokyon) শব্দ থেকে । যার অর্থ কুকুরের পূর্বে। প্রাচীন গ্রিসে আকাশের উজ্জ্বলতম তারকা লুব্ধককে (Sirius) কুক্কুর তারা (Dog star) বলা হত। রাতের আকাশে লুব্ধকের পূর্বে প্রভাস উদিত হয় বিধায় এমন নামকরণ করা। প্রভাস ব্রাজিলের অ্যামাজন অঙ্গরাজ্যের প্রতীক হিসেবে ব্যাবহৃত হয় । আরবে একে الغميصاء বা ক্রন্দনরত মেয়ে বলা হয়।
শীতের শেষের দিকে (মার্চ) মাঝরাতে এটি মাথার উপরে অবস্থান করলেও বছরের এই সময়ে একে খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন । আকাশ পরিষ্কার থাকায় এর উজ্জ্বল নীলচে আভা সহজেই চোখে পড়ে। আমরা প্রায় সবাই অরায়ন বা কালপুরুষ নক্ষত্রমণ্ডল চিনি। রাতের আকাশে পাশাপাশি একই সরলরেখায় অবস্থিত তিনটি তারকা (অরায়ন বেল্ট) দেখেই যা সনাক্ত করা যায় । অরায়নকে সন্ধ্যাবেলায় পশ্চিম দিগন্তের নিকট দেখা যায় ! এর দক্ষিন দিকে উজ্জ্বলতম তারা লুব্ধক (sirius) অবস্থান করে। আর অরায়ন বেল্টের অপর পাশে লাল নক্ষত্র আর্দ্রার (Betelgeuse) অবস্থান। লুব্ধকের উত্তরে ও আর্দ্রার পূর্বে অবস্থিত উজ্জ্বল তারকাটিই হল প্রভাস। শীতকালে আর্দ্রা, লুব্ধক ও প্রভাসকে নিয়ে শীতকালীন ত্রিভুজ বা উইন্টার ট্রায়াঙ্গেল কল্পনা করা হয়।
চিনে নিন কয়েকটি তারা |
প্রভাসের দুইটি নক্ষত্রের প্রধানটি হল একটি এফ-টাইফ প্রধান ক্রমের তারা এবং অপরটি একটি শ্বেত বামন তারা। ১.৫ সৌরভরের প্রধান তারাটির ব্যাসার্ধ সূর্যের ২ গুণ এবং দীপ্তি সূর্যের ৭ গুন। এই তারকাটি বর্তমানে এর কোরের হাইড্রোজেন শেষ করে হিলিয়াম ফিউজের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অর্থাৎ এটি আর কিছুদিনের মধ্যে লোহিত দানব বা রেড জায়ান্ট দশায় উপনীত হবে। এই সময়ে এর ব্যাস বর্তমান ব্যাসের ৮০-১৫০ গুণ হবে। আজ থেকে ১০-৮০ মিলিয়ন বছর পরে তারকাটির লোহিত দানব দশা শুরু হবে। এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৬৫৫০ কেলভিন। দ্বিতীয় শ্বেত বামন তারাটির ভর মাত্র ০.৬৮ সৌরভর এবং ব্যাসার্ধ মাত্র ৬৮০০ কিলোমিটার! শেষে এসে বলতেই হয়!
ব্রাজিল ফুটবলে যেমন শৈল্পিক তেমন তাদের পতাকাও মহাজাগতিক !
সূত্র: ইংরেজি উইকিপিডিয়া (ফ্ল্যাগ অব ব্রাজিল)
1 comments:
Write commentsThe wagering necessities will let you realize what want to|you must} do first. This type 메리트카지노 of bonus is just for the slots and most casinos offer free slots after the customer signs up and made a deposit. This bonus could be played at no cost and no strings connected.
Reply