Advertisement

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আমরা সবাই জানি, ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহবর মহিবিশ্বের সবচেয়ে ভারী বস্তু।  (না জানলে এখন তো জানেন!) তারা পুরো নক্ষত্রমণ্ডলকে গিলে ফেলতে পারে। এখন, মহাবিশ্বে ব্ল্যাকহোলই শুধু নেই, আছে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যকহোলও (Super-massive Black holes)। বাংলায় একে বলা যাক মহা ভারী কৃষ্ণগহবর

ব্ল্যাকহোল ও সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের পার্থক্য হল একজন সাধারণ মানুষের সাথে অতিমানবের (Superman) পার্থক্যের মত। সাধারণ মানুষও অনেক সময় অসাধারণ কাজ করে ফেলে, আর সুপারম্যান! সব সময় সুপার!
মহা ভারী ব্ল্যাকহোলরাই মহাবিশ্বের বৃহত্তম কৃষ্ণগহবর। সাধারণ কৃষগহবর যেখানে শত শত বা হাজার হাজার নক্ষত্রকে, এমনকি পুরো তারকামণ্ডলকে হুমকিতে ফেলতে পারে, সেখানে মহা ভারী ব্ল্যাকহোলর সমগ্র ছায়াপথকে (Galaxy) কে গ্রাস করে ফেলতে পারে। এদেরকেই সাধারণত ছায়াপথের কেন্দ্রে দেখা যায়। এদের ভর বিলিয়ন বিলিয়ন সৌর ভরের সমপরিমাণ হতে পারে।
এদের ভর এত বেশি যা চিন্তা করতে গেলে মাথা কেমন কেমন করে ওঠবে! বৃহত্তমদের মধ্যে বৃহত্তম ব্ল্যাকহোল হবার রেকর্ড এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছে এনজিসি ১২৭৭ ( NGC 1277) নামক ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত একটি ব্ল্যাকহোল । এনজিসি ১২৭৭ হচ্ছে একটি লেন্টিকুলার গ্যালাক্সি। লেন্টিকুলার গ্যালাক্সিদের আকৃতি হচ্ছে উপবৃত্তাকার ও স্পাইরাল এই দুই আকৃতির মাঝামাঝি প্রকৃতির। পারসিউস( Perseus) নক্ষত্রপুঞ্জে (Constellation) এনজিসি ১২৭৭ এর অবস্থান। এর দূরত্ব আমাদের বাড়ি মানে মিল্কিওয়ে ছায়াপথ থেকে ২২ কোটি আলোকবর্ষ।
এই এনজিসি ১২৭৭ গ্যলাক্সির কেন্দ্রে অবস্থিত বৃহত্তম ভারী ব্ল্যাকহোলটি তার গ্যালাক্সির স্ফীত অংশের ৫৯ ভাগ ভরের জন্য দায়ী। হিসেব করে এই কৃষ্ণদানবের ভর পাওয়া গেছে গেছে ১৭ বিলিয়ন সৌর ভরের সমান। [সূত্র- ২] জেনে রাখুন এক সৌর ভর মানে আমাদের সূর্যের ভরই হচ্ছে 2×1030  কেজি। [ ১ বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি] তাহলে ভাবুন ব্যাটা কত বিশাল ভারী!
এখন পর্যন্ত এর চেয়ে ভারী ব্ল্যাকহোলের সন্ধান মেলেনি। আক্ষরিক অর্থেই এই দানব নিজের আবাসকে (মানে ছা্যাপথকে) গিলে ফেলছে। এনজিসি ১২৭৭ ছায়াপথে কোটি কোটি তারকা ও তার দশগুণ গ্রহ ও অন্যান্য পাথুরে বস্তু আছে। এতকিছু থাকতে একটা মাত্র বস্তু ১৪% ভর ধরে রেখেছে। কি মহা দানবরে বাবা! অথচ অন্যান্য নিরীহ (!) ব্ল্যাকহোলরা তার ছায়াপথের মাত্র ০.১ ভাগ ভর ধারণ করে।
এর এই বিশালতার কারণে অন্যান্য ব্ল্যাকহোলও এর কাছে নিতান্তই তুচ্ছ। এই দানবকে সৌরজগতে নিয়ে আসা হলে সব গ্রহ সে তার পেটে চালান করে দিত। আমাদের সৌরজগতের নেপচুন গ্রহের কক্ষপথের চেয়ে কৃষ্ণগহবরটি ১১ গুণ প্রশস্ত, তার ঘটনা দিগন্তকে বিবেচনাই না রেখে হিসেব করেই। (ঘটনা দিগন্ত বা Event Horizon হচ্ছে ব্ল্যাকহোলের যেই সীমা যেখান থেকে আলোও আসতে পারে না)

সূত্রঃ
১.  http://www.fromquarkstoquasars.com/the-4-largest-objects-in-the-known-universe/
২. http://www.nature.com/nature/journal/v491/n7426/full/nature11592.html
৩. http://en.wikipedia.org/wiki/NGC_1277
Category: articles

শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৪

আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ব বলছে আলোর বেগ (3×108 m/s) ই সর্বোচ্চ, কোন কিছুই এই বেগ অতিক্রম করতে পারে না। কিন্তু এটাও ঠিক গ্যালাক্সিরা আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে দূরে প্রসারিত হচ্ছে। তাহলে? চলুন দেখা যাক---!! 

আলোর বেগের কাছাকাছি যেতে হলে প্রয়োজন অনেক বেশি এনার্জি। মনুষ্যবাহী মহাকাশযানের সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড হচ্ছে ঘন্টায় প্রায় ৪০ হাজার কি.মি.। এটা হল অ্যাপোলো-১০ এর গতি। 
মহাবিশ্বের সব শক্তি ব্যবহার করে ফেললেও আলোর সমান বেগ অর্জন সম্ভব নয়। আমরা জানি, বিগ ব্যাঙের পর থেকেই ডার্ক এনার্জির প্রভাবে মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। ছায়াপথসমূহ একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সেগুলো ছাড়া যারা নিজেদের মধ্যকার মহাকর্ষীয় টানে আবদ্ধ। আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি ও প্রতিবেশি অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি নিজেদের থেকে দূরে না সরে পারস্পরিক মহাকর্ষীয় ভালোবাসায় দিন দিন কাছে আসছে।
আমাদের থেকে যে গ্যালাক্সি যত দূরে দেখা যায় তারা তত বেশি বেগে দূরে প্রসারিত হচ্ছে। ফলে এটা সম্ভব হয়ে যাচ্ছে যে তাদের কেউ কেউ অনেক দূরে হওয়ায় বেগ বাড়তে বাড়তে আলোর বেগকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় সেই সব গ্যালাক্সি থেকে আলো কখোনই আমাদের পৃথিবীতে পৌঁছবে না।
এ অবস্থায় ঐ গ্যালাক্সি থেকে আসা পৃথিবীতে পৌঁছানো সর্বশেষ ফোটনটি দেখা যাবার পরই গ্যালাক্সিটি দৃষ্টিসীমা থেকে হারিয়ে যাবে।
এখানে এখন আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আলোর পরম বেগ বিষয়ক আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ব লংঘন হচ্ছে। কিন্তু না। প্রকৃতপক্ষে গ্যালাক্সিরা নিজেরা খুব বেশি জায়গা (Space) অতিক্রম করছে না। বরং Space বা স্থান নিজেই প্রসারিত হচ্ছে যার কারণে সাথে সাথে গ্যালাক্সিরাও প্রসারিত হচ্ছে। 
খানে মাথায় রাখতে হবে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ মানে মহাবিশ্বের আয়তনের প্রসারন। অর্থ্যাৎ Space বা স্থান প্রসারিত হচ্ছে। অতএব গ্যালাক্সিরা নিজেরা দূরে সরছে না বরং তারা যেই ‘স্থান’-এ আছে সেটাই প্রসারিত হচ্ছে।
মনে করুন একটি পুকুরের কেন্দ্র থেকে সব দিকেই মাছ আছে। এখন কোন এক শক্তির বলে (মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে যেটা ডার্ক এনার্জি) পুকুর প্রসারিত হয়ে পরিধি কেন্দ্র থেকে ক্রমাগত দূরে চলে যাচ্ছে। এই প্রসারণ পানির প্রবাহজনিত বেগ নয়। এখন এর প্রভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাছেরাও নিজেদের থেকে দূরে সরে যাবে।
অথবা ধরুণ, একটি ফূটবল অজানা কারণে আপনাতেই বড় হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এর পরিধিতে আগে থেকেই থাকা পিঁপড়ারাও নিজেদের থেকে দূরে সরবে।
মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে পানি বা ফুটবলের স্থলে প্রসারিত হচ্ছে ফাঁকা স্থান যা প্রসারিত হতে হতে এর ভেতরকার সবকিছুকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
আলোর বেগ যেহেতু এই প্রসারনশীল মহাবিশ্বের একটি বৈশিষ্ট্য তাই সে মহাবিশ্বের কোন বস্তুর জন্য প্রযোজ্য হলেও মহাবিশ্বের নিজের জন্য প্রযোজ্য হবে না। অর্থ্যাৎ  মহাবিশ্ব নিজে আলোর চেয়ে বেশি বেগ পেতে পারে।

আরো তিন ট্রিলিয়ন বছর পর পৃথিবীর দিগন্ত থেকে সব গ্যালাক্সির দৃশ্য মুছে যাবে। তখন পৃথিবীর কোন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের কস্মোলজিস্ট জানবেনই না যে মহাবিশ্ব এত বিশাল। 
সূত্রঃ
১. http://en.wikipedia.org/wiki/List_of_vehicle_speed_records
২. http://www.universetoday.com/13808/how-can-galaxies-recede-faster-than-the-speed-of-light/
Category: articles

বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১.প্রাক-কথা: 
বিশাল এ মহাবিশ্ব

অনেক বিশিষ্ট বিজ্ঞানিসহ পৃথিবীর মানুষের মধ্যে বৃহত্তর অংশই পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্তে বিশ্বাস করে। জরিপে দেখা যায় চীনে এ বিশ্বাস সবচেয়ে বেশী-৪০%। সব মিলিয়ে বিশ্বাস পুরুষের ২২% আর নারীতে ১৭%। বৈজ্ঞানিক তত্তকথা, সাধারণ জ্ঞান ও ধর্মীয় গ্রন্থরাজি থেকে ধারণা নিয়ে এর পক্ষে- বিপক্ষে প্রচুর মত রয়েছে।
এলিয়েন বা পৃথীবির বাইরের জীব বিষয়ক গবেষণা ও স্টাডিকে বলা হয় exobiology অথবা astrobiology( এ শব্দটি পৃথিবীর ক্ষেত্রেও প্রচলিত)।

২.থাকার সম্ভাবনা যে কারণে: ১৫৪৩ সালে কোপার্নিকাস এরিষ্টটলের বিপক্ষে গিয়ে বলেন পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয় বরং সূর্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান সাধারণ একটি গ্রহ। হাবলের টেলিস্কোপ প্রথমবারের মত মহাবিশ্বের বিশাল পরিধি মানুষের সামনে নিয়ে আসে। জানা গেল মহাবিশ্বে রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন গ্যালাক্সি বা তারকামণ্ডল।

আমাদের গ্যালাক্সিতেই রয়েছে প্রায় ২০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কোটি নক্ষত্র যার মধ্যে আমাদের সূর্যও একটি।
এ বিশাল মহাবিশ্বে সূর্যের মত রয়েছে অসংখ্য নক্ষত্র। তাদের কোনটিতে আমাদের সৌরব্যবস্থার মত ব্যাবস্থা থাকতেই পারে।


আমাদের তারকামণ্ডল (মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা)

মহবিশ্ব অনেক বড় হবার কারণেই স্টিফেন হকিং এবং কার্ল সেগান এর মতে প্রথিবীর বাইরে প্রাণ থাকার সম্ভাবনাটাও বেশী।
অণুজীবরা যদি পৃথিবীর অভ্যন্তরেই পাথরের ছোট ছোট ছিদ্রে থাকতে পারে তাহলে পৃথিবীর বাইরেও এরকম স্থানে থাকতেই পারে।
অনেকে প্রথিবীর বাইরে প্রাণের প্রমাণের জন্য বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যাওয়া UFO(=Un-identified Flying Object=অচেনা উড়ন্ত বস্তু) ’র কথা বলেন। তবে বেশিরভাগ UFO কেই পৃথিবীসৃষ্ট আকাশযান অথবা কোন মহাজাগতিক বস্তু বা দেখার ভুল হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়।

৩.১আমাদের সৈৗরজগতে থাকার সম্ভাবনা:

আমাদের সৌরজগত

আমাদের সৌরজগতে এ সম্ভাবনার দৌড়ে এগিয়ে আছে শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা, শনির উপগ্রহসমূহ যেমন টাইটান ও Enceladus ।

মঙ্গল গ্রহের সম্ভাবনা:


মঙ্গল গ্রহ

মঙ্গল গ্রহ আমাদের্ সৌরজগতে অবস্থানের কারণে এতে প্রণের অস্তিত্ত থাকতে পারে বলে অনেক বিজ্ঞানীর দৃঢ়বিশ্বাস। মনে করা হয় একসময় মঙ্গলের বুকে তরল পানি প্রবাহিত হত, ফলে এখনো এর অভ্যন্তরভাগে পানি থাকতে পারে। এছাড়া এর আবহাওয়ায় মিথেন গ্যাস পাওয়া গেছে।
২০০৮ সালের জুলাইয়ে ফিনিক্স মার্স ল্যান্ডার প্রমাণ করে মঙ্গলের মাটির নমুনায় পানির অস্তিত্ত বিদ্যমান। যন্ত্রটির রোবটিক হাতে সংগৃহীত মাটির নমুনায় তাপ দিয়ে প্রাপ্ত বাষ্পে পানিকণা পাওয়া যায়।
ম্যাক্স গ্লোবাল সার্ভেয়ার থেকে পাঠানো রিপোর্টে প্রমাণ পাওয়া যায় গত ১০ বছরের মধ্যে মঙ্গলে পানি প্রবাহিত হয়েছে। তবে প্রাণ আছে কিনা এ ব্যাপারে এখনও শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়।

শনির উপগ্রহ টাইটান:


শনির উপগ্রহসমূহ

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় উপগ্রহ টাইটান। নাসার বিজ্ঞানীরা ক্যাসিনীর পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে বলেন একমাত্র টাইটান্ প্রাণধারণের উপযোগী এবং সেখানে জীবনের উৎপত্তিও হয়েছে।
ইকারাস সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রবণ্ধে বলা হয় টাইটানের হাইড্রোজেন গ্যাস গ্রহপৃষ্ঠের কাছাকাছি এসে হারিয়ে যাচ্ছে, এ থেকে প্রমাণ হয় যে প্রণীরা শ্বাস নিচ্ছে এবং তারা সম্ভবত অক্সিজেনের পরিবর্তে হাইড্রোজেন গ্রহণ করছে।

তবে চলতি বছরের (২০১১) মে মাসে বিজ্ঞানীরা বলেন, ’আমাদের জানামতে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ত থাকার ব্যাপারে শনির উপগ্রহ Enceladus সবচেয়ে সম্ভাবনাশীল।’

৩.২.সৌরজগতের বাইরের সম্ভাবনা:


মিল্কিওয়ে (আমদের ছায়াপথ) ছাড়াও মহাবিশ্বে আরো শতকোটি তারকামণ্ডল বা ছায়াপথ আবিষ্কৃত হয়েছে। সেসব তারকামণ্ডল বা নক্ষত্রমণ্ডলেও পৃথিবীসদৃশ গ্রহ আছে। আমাদের নিকটতম ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডা ২০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।হাবল টেলিস্কোপের আল্ট্রা ডিপ ক্যামেরার সাহায্যে ৩০ কোটি আলোকবর্ষের চেয়েও বেশি দূরত্বের আলোকবর্ষও পর্যক্ষেণ করা গেছে। অ্যান্ড্রোমিডায় সূর্য্যের মত কোন নক্ষত্রের চারপাশে গ্রহ বা উপগ্রহ থাকতে পারে যা আমাদের পৃথিবীর মত বাসযোগ্য হতে পারে।
এছাড়া এ বিশাল মহাবিশ্বে সূর্য্যের মত অসংখ্য নক্ষত্র রয়েছে। বসবাসোপযোগী নক্ষত্র থাকতে হলে তাকে নিজস্ব ছায়াপথের বাইরের দিকে থাকতে হবে এবং তার নিজস্ব গতি তার ছায়াপথের আবর্তনের সাথে সর্ম্পকযুক্ত হতে হবে। তবে গামা ও মহাজাগতিক রশ্মির আধিক্য থাকলে তা প্রাণের অস্তিত্তের পথে বাধা হবে। আবার তার গতি নিজস্ব ছায়াপথের আবর্তনের সাথে অসংগতিপূর্ণ হলে তার গ্রহব্যবস্থা কয়েক মিলিয়ন বছরেই মিলিয়ে যাবে।

তবে পানি থাকার সম্ভাবনার কারণে সম্প্রতি আবিষ্কৃত প্রায় পৃথিবীর ভরের সমান গ্রহ গ্লিস ৫৮১ সি, জি এবং ডি এক্ষেত্রে সম্ভাবনাময়ী।

৪.পরোক্ষ প্রমাণ:
আর্জেন্টিনার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৭০০ মিটার (১৫হাজার ৪০০ ফুট) উপরে লেক ডায়মান্ট নামক হ্রদে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এ আবিষ্কার থেকে ভিনগ্রহে প্রাণের ব্যাপারে সূত্র পাওয়া যেতে পারে।কেননা হ্রদটির কাছেই রয়েছে মাইপো আগ্নেয়গিরি। এখানে কোটি কোটি ব্যাকটেরিয়া অক্সিজেনের প্রকট অভাবেও বেঁচে আছে। এর আগে বিরুপ পারবেশে টিকে থাকা ‘এক্সট্রিমোফিলস’ নামক ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু ’পলিএক্সট্রিমোফিলস’ নামক ব্যাকটেরিয়া চরম বৈরি পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম। ওই হ্রদে আর্সেনিকের নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ২০ হাজার গুণ বেশি মাত্রা রয়েছে। তাপমাত্রা প্রায়ই শূণ্যের নিচে নামে। কিন্তু অতিরিক্ত লবণক্ততার কারণে বরফ জমাট বাঁধেনা।
এ আবিষ্কার নিঃসন্দেহে ভিনগ্রহের বৈরি পরিবেশেও প্রাণের অস্তিত্তের পক্ষে রায় দেয়।

৫.অভিযান-অনুসন্ধান:

ভিনগ্রহের প্রাণের খোঁজে অনুসন্ধান চলতে থাকলেও স্টিফেন হকিং বলছেন ভিনগ্রহে প্রাণীর খোঁজ পেলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা ঠিক হবেনা । যা হোক এ সতর্কবাণীতো আর মানুষের কৌতূহল দমাতে পারবেনা।
USSR এর কৃত্রিম উপগ্রহ স্ফুটনিকের মাধ্যমে মহাশূন্যে অভিযান শুরু।
গবেষকরা ভিনগ্রহের প্রাণের খোঁজ করছেন পৃথিবীতে বসেই পুরানো নথিপত্র ঘেঁটে। হয়তো অতীতে্ এলিয়েনরা পৃথিবীতে এসেছিল আর তখনকার মানুষ তা দেখে নথিভুক্ত করে রেখেছে। এরিক ভন দানিকেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘুরে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, দেয়ালচিত্র ও দেয়াল-লিখনে খুঁজে দেখেছেন এলিয়েনদের বিভিন্ন প্রামাণ্য দলিল। তবে অনেকেই এ দলিলগুলোকে প্রমাণ হিসেবে মানতে নারাজ।

পৃথিবীর বাইরে খোঁজার জন্য ফ্রাংক ড্রেক ১৯৬০ সালে SETI(search for extra-terrestial intelligence) প্রতিষ্ঠা করেন। এটা পৃথিবীতে বসেই বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে এলিয়েন অনুসন্ধান করে। ১০টিরও বেশি দেশে এর কার্যক্রম চলছে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞানী ড্রেক একটি সমীকরণ দেন দেন যা অবশ্য বিজ্ঞানী ফার্মির মতে নিছক হেঁয়ালি।
চিলির আতাকামা মরুভূমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম টেলিস্কোপ যার ব্যাস হবে প্রায় ৪২ মিটার।



সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় একটি বিশাল টেলিস্কোপ বসানো হয়েছে যা পৃথিবীর মত সম্ভাব্য ৮৬টি গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ত খুঁজবে। SETI প্রকল্প বাজেট ঘাটতির কারণে বন্ধ হবার উপক্রম হলে ২০০৭ সালে SETI এর প্রকল্পের অংশ ATA, ইউসি বার্কলে রেডিও অ্যস্ট্রোনমি ল্যাবের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করে।
তদুপরি নাসার (NASA=National Aeronautics and Space Administration) বহুমুখি কার্যক্রমতো চলছেই।
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...