Advertisement

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৬

আমরা অনেক সময় এই দুটি শব্দের মধ্যে গোলমাল পাকিয়ে ফেলি।
কোন বস্তুর নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুর্ণনকে আবর্তন বলে। এর ইংরেজি পরিভাষা Rotation। অন্য দিকে কোন বস্তু যদি অন্য কোন বস্তুর চারদিকে ঘুরে আসে, তখন তাকে প্রদক্ষিণ বলে। এর ইংরেজি Revolution।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর যে গতি এটা হচ্ছে প্রদক্ষিণ। পৃথিবী একবার সূর্যের চারদিকে কক্ষপথ ঘুরে আসলে এক বছর হয়। অন্য দিকে, পৃথিবী নিজের চারদিকে আবর্তন করার ফলে একেকটি দিন হয়। সুতোয় বাঁধা একটি লাটিমের মাটিতে ঘুরতে থাকাও আবর্তনের উদাহরণ। একটি টেনিস বলকে উপরের দিকে ছুঁড়ে মারলে এটি উপরে বা নিচে উঠানামার পাশাপাশি নিজেও ঘুরতে থাকে। এই ঘূর্ণনই আবর্তন।
সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর কক্ষপথ
তবে পৃথিবীর মত সূর্যও আবর্তন কিন্তু আবর্তন করে। সৌরদাগ (Sunspot) দেখে বোঝা যায় সূর্যের বিষুব অঞ্চল প্রতি ২৭ দিনে এক বার আবর্তন করে। মেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে এই সময়ের মান ৩১ দিন। তাছাড়াও প্লাজমা পদার্থে গঠিত সূর্যের কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন দূরত্বে আবর্তন বেগের মান আলাদা। আর প্রদক্ষিণ? হ্যাঁ, সূর্য সেটাও করে। 
Category: articles

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

সূর্য পৃথিবীর নকটতম নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে এর গড় দূরত্ব প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার বা ৯ কোটি ৩০ লক্ষ মাইল। এই দূরত্বকে বলা হয় অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল একক যা সৌরজগতের অন্যান্য বস্তুর দূরত্বের একক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যের প্রধান উপাদান আয়নিত গ্যাস। এর মধ্যে তিন চতুর্থাংশ হাইড্রোজেন। বাকি অংশে প্রধানত হিলিয়াম ছাড়াও সামান্য পরিমাণ ভারী মৌল যেমন অক্সিজেন, কার্বন, নিয়ন এবং আয়রন রয়েছে।

সূর্য: সৌরজগতের ৯৯ ভাগের উপরে ভর যার দখলে 

 পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত?

এই সূর্যের মাধ্যমেই পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশকে সম্ভব হয়েছে। সূর্যের কারণেই পৃথিবীতে ঋতু, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং সামুদ্রিক স্রোতের পরিবর্তন ঘটে।  নিউক্লিও বিক্রিয়ার মাধ্যমে হাইড্রোজেন ক্রমাগত হিলিয়ামে পরিণত হয়ে সূর্যে আলো ও তাপ আকারে শক্তি উৎপন্ন করে।

প্রায় ১০ লাখ পৃথিবীকে সূর্যের মধ্যে বসিয়ে দেওয়া যাবে। অন্য দিকে ব্যাস বরাবর বসালে জায়গা হবে ১০৯টি পৃথিবীর। সৌরজগতের ৯৯.৮৬ ভাগ ভর সূর্য একাই ধারণ করে। সূর্যের মধ্যে ছয়টি অঞ্চল আছে- কেন্দ্রীয় অন্তর্বস্তু, বিকিরণ অঞ্চল, পরিচলন অঞ্চল, দৃশ্যমান পৃষ্ঠ বা ফটোস্ফিয়ার, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং সর্ববহিস্থ স্তর করোনা (মুকুট)। পৃথিবীর মত সূর্যে কোন কঠিন পৃষ্ঠ নেই, নক্ষত্রদের কারোই থাকে না।

কেন্দ্রে এর তাপমাত্রা দেড় কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস। কেন্দ্রে উৎপন্ন শক্তিই সূর্যের চালিকাশক্তি যা থেকে সূর্য পৃথিবীতেও তাপ ও আলো বিতরণ করে। পরিচলন অঞ্চলে তাপমাত্রা নেমে যায় ২০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
সূর্যের পৃষ্ঠ তথা ফটোস্ফিয়ারের পুরুত্ব ৫০০ কিলোমিটার (৩০০ মাইল)। এখান থেকেই সৌর বিকিরণ মুক্ত হয়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ে এবং ৮ মিনিট পর চলে আসে পৃথিবীতে। এই অঞ্চলের তাপমাত্রা সাড়ে পাঁচ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরের  অনুজ্জ্বল করোনা চোখে পড়ে শুধু পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময়, যখন চাঁদের আড়ালে ফটোস্ফিয়ার ঢাকা পড়ে যায়। ফটোস্ফিয়ারের পরে তাপমাত্রা আবার বেড়ে গিয়ে ২০ লাখ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়। এর সঠিক ও পূর্ণাংগ কারণ এখনও অজানা।

প্রায় সাড়ে ৪ শো কোটি বছর আগে সূর্যের জন্ম। বেঁচে থাকবে আরো প্রায় সমপরিমাণ সময়। কেন্দ্রে হাইড্রোজেন ফিউশান বন্ধ হলে আরো বেশ কিছু পরিবর্তনের পরে এটি লোহিত দানবে (Red Giant) পরিণত হবে। তখন এর ব্যাসার্ধ বেড়ে গিয়ে শুক্র গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছবে, এবং সম্ভবত পৃথিবীকেও স্পর্শ করবে।
নোট-১ঃ প্রকৃত গড় দূরত্ব ১৪.৯৬ কোটি কিলোমিটার বা ৯.২৯৬ কোটি মাইল।

সূর্য সম্পর্কিত সকল নিবন্ধ পাবেন এখানে। অন্যান্য সকল পরিভাষার তালিকা এখানে

সূত্র
১। নাসাঃ সৌরজগৎ
২। উইকিপিডিয়াঃ সূর্য 
Category: articles

মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৫

রাশিচক্র! শব্দটা শুনলে প্রথমেই খবরের কাগজে দেখা রাশিফলের কথা মনে পড়ে হয়ত। রাশিফলের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানে রাশিচক্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। সূর্য বছরজুড়ে যে যে তারামণ্ডলীতে অবস্থান করে তাদেরকে রাশিচক্র বলে। বিস্তারিত জানা যাক।

মেঘমুক্ত রাতের আকাশে আমরা অসংখ্য তারা দেখি। তবে তারা কিন্তু দিনের আকাশেও থাকে, যদিও সূর্যের আলোর কারণে ওদেরকে আমরা  দেখি না। রাতে যেমন চাঁদের আশেপাশে আমরা তারা দেখি, তেমনি দিনেও সূর্যের আশেপাশেও তারা থাকে। কিন্তু একেক রাতে চাঁদের যেমন আকাশের একেক জায়গায় থাকার কারণে এর আশপাশের তারারা বদলে যায়, তেমনি ঘটনা ঘটে সূর্যের ক্ষেত্রেও।

পৃথিবী সূর্যের চারদিকে এক বার ঘুরে আসতে এক বছর সময় নেয়। বছরের বিভিন্ন সময়ে এটি কক্ষপথের বিভিন্ন অবস্থানে থাকে। কক্ষপথে পৃথিবীর এই অবস্থানভেদে আকাশে সূর্যের আপাত অবস্থানও পাল্টে যেতে থাকে। যেহতু পৃথিবী ৩৬৫ দিনে এক বার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, তাই প্রতি দিন সূর্যের এই আপাত অবস্থান একটু একটু করে সরে যেতে থাকে। এইভাবে ৩৬৫ দিনে ৩৬০ ডিগ্রি প্রদক্ষিণ সম্পূর্ণ হয়।

বছরের প্রত্যেকটি আলাদা দিনে আকাশে সূর্যের আপাত অবস্থানবিন্দুগুলো যোগ করে যে রেখা পাওয়া যায় তাকে বলা হয় সূর্যপথ। এই  সূর্যপথ ৮৮টি তারামণ্ডলীর ১৩টিকে ছেদ করে। এই ১৩টি তারামণ্ডলীই রাশিচক্র বলে পরিচিত।
বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তারামণ্ডলীতে সূর্যের আপাত অবস্থান 
তাহলে রাশিচক্র হচ্ছে এমন একটি চক্র যে স্থানে বছরজুড়ে ঘুরে ফিরে সূর্য অবস্থান করে। অন্যভাবে বলা যায়, পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে সূর্যের দিকে একটি রেখা টানলে সেটি খ-গোলকের যে যে অঞ্চলকে ছেদ করবে, সেই অঞ্চলগুলোই হলোই রাশিচক্র।

পৃথিবীর প্রদক্ষিণের জন্যেই বছরের একেক সময় আকাশে একেক তারার দেখা মেলে। এ কারনে, প্রতি দিন প্রায় ৪ মিনিট আগে কোন তারাকে আগের অবস্থানে দেখা যায়।

অন্য দিকে প্রচলিত রাশিচক্রে আছে ১২টি তারামণ্ডলী। রাশিফলতো এমনিতেই ভিত্তিহীন, উপরন্তু পৃথিবীর আবর্তনজনিত প্রিসেশনের (Precesion) কারণে বর্তমানে সূর্য ১৮ দিন অবস্থান করে সর্পধারীমণ্ডলীতে (Ophiuchus) যার উল্লেখ প্রচলিত রাশিচক্রে নেই। শুধু তাই নয়, প্রচলিত রাশিচক্রে বিভিন্ন মণ্ডলীতে সূর্যের অবস্থানের যে তারিখ দেওয়া আছে সেটাও এখন সেকেলে হয়ে গেছে। বাস্তবতার সাথে পার্থক্য হয়ে গেছে মাসখানেকের।

ফলে, তথাকথিত রাশিচক্রের ভিত্তি আরো বেশি নড়বড়ে হয়ে গেছে।

সূত্র
১। আর্থ স্কাইঃ সূর্য কখন কোথায় থাকে
২। আর্থ স্কাইঃ রাশিচক্র কী

Category: articles

বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

ধরুন, বিদেশে গিয়ে আপনার সাথে এক বিদেশীর সাক্ষাৎ হলো। তিনি আপনাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার বাড়ি কোথায়?’

আপনার উত্তর, 'বাংলাদেশে'। এবার যদি তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘বাংলাদেশ কোথায় অবস্থিত?’, আপনি নিশ্চয়ই বিরক্ত হবেন। ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলে, বলবেন, ম্যাপে খুঁজে দেখুন। যাদের ওয়ার্ল্ড ম্যাপ সম্বন্ধে ধারণা আছে, তারা নিশ্চয় কোন দেশ বা অঞ্চলের নাম শুনেই বুঝে ফেলেন, ও আচ্ছা! আপনি ঐদিকে থাকেন, ঠিক আছে।




রাতের আকাশের দিকে তাকালে আমাদের মনে হয় যেন একটি গম্বুজের মাঝে অনেকগুলো আলোর বিন্দু সেঁটে দেওয়া আছে। বাস্তবে গম্বুজ না হলেও এই আকাশকে বলা হয় খ-গোলক (Celestial spehere)। এই খ-গোলকে তারকা, গ্যালাক্সি, উল্কা, ধূমকেতু  ইত্যাদির অবস্থান সহজে বোঝার জন্যে পুরো আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সমিতি (IAU) আকাশকে ৮৮টি অঞ্চলে ভাগ করেছে। এই ৮৮টি অঞ্চলের প্রত্যেকটিকে বলা হয় এক একটি হয় তারামণ্ডলী ( Constelation)। এই সবগুলোর মিলিত ক্ষেত্রফল পুরো আকাশের ৩৬০ ডিগ্রি অঞ্চল জুড়ে রয়েছে। তাই, আকাশের যে কোন বস্তু কোন না কোন মণ্ডলীতে অবস্থিত থাকবেই। সবচেয়ে সহজে চোখে পড়ে এমন কিছু তারামণ্ডলী হচ্ছে আদমসুরত বা কালপুরুষ, বৃশ্চিক (Scorpius), বকমণ্ডলী (Cygnus), সপ্তর্ষিমণ্ডলী (Ursa Major) ইত্যাদি।

অবশ্য তারামণ্ডলীর এই সীমানা নির্ধারণ দৈবভাবে করা হয়নি। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ রাতের আকাশের বিভিন্ন তারাদের তুলনামূলক অবস্থানের ভিত্তিতে আকাশে রূপকথারসহ নানারকম প্রাণী, বিভিন্ন ভঙ্গীমার মানুষসহ নানাবিধ আকৃতি কল্পনা করেছে। তবে এদের সবাই তারামণ্ডলী হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। কেননা, অনেক ক্ষেত্রেই একই তারা একাধিক নকশায় স্থান পেত। উপরন্তু, বিভিন্ন নকশার তারাগুলোকে আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে আলাদা আকৃতি তৈরি হত। বর্তমানে তাই এমনভাবে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে একই তারা একধিক মণ্ডলীতে না থাকে। ভিন্ন তারামণ্ডলীর কিছু তারা বা একই তারামণ্ডলীর কয়েকটি তারা মিলিত হয়ে যে আকৃতির সৃষ্টি হয় এখন তাকে নাম দেওয়া হয়েছে asterism। বাংলা এখনো জ্যোতির্বিজ্ঞানে এর কোন নাম নেই। তবে একে আমরা তারানকশা বলতে পারি। এমন কিছু উদাহরণ হলো সামার ট্রায়াঙ্গেল, উইন্টার হেক্সাগন, সাউদার্ন ক্রস, কাস্তে, গ্রেট স্কয়ার অব পেগাসাস ইত্যাদি।
 
উল্লেখ্য, আকাশে তারারা আমাদের চোখে বিভিন্ন আকৃতি হিসেবে ধরা পড়লেও বাস্তবে একই তারামণ্ডলীর তারারা কিন্তু কোন চ্যাপ্টা তল বা গম্বুজে সাঁটানো নয়, বরং এক একটি তারকা পৃথিবী থেকে আলাদা দূরত্বে অবস্থিত। দূরত্ব অনেক বেশি বলেই সবাইকে একই তলে অবস্থিত মনে হয়। যেমন বলা যায় আদম সুরতের কথা। এর উজ্জ্বল তারাগুলোর দূরত্ব ২৫ আলোকবর্ষ থেকে শুরু করে ২২৫ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত।


বছরের আলাদা সময়ে আকাশে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। এর কারণ দুটো- পৃথিবীর আবর্তন ও সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণ। সন্ধ্যার আকাশে যে তারাদের সমাবেশ ঘটে, রাতে গড়াতে গড়াতে তারা পৃথিবীর নিজ অক্ষের চারদিকে আবর্তনের জন্যে পশ্চিমে হেলতে থাকে। যদি পৃথিবীর শুধু আবর্তনই থাকত, প্রদক্ষিণ তথা সূর্যের চারদিকে বেগ না থাকত, তবে প্রতি রাতের একই সময়ে নির্দিষ্ট কোন স্থানে একই তারা দেখা যেত। কিন্তু পৃথিবীর প্রদক্ষিণের কারণে কোন তারকা প্রতি দিন প্রায় ৪ মিনিট আগে একই জায়গায় আসে। কারণ পুরো আকাশের মোট কৌণিক ক্ষেত্রফল ৩৬০ ডিগ্রি। এই পুরো অঞ্চল পৃথিবী ৩৬৫ দিনে ঘুরে, অর্থ্যাৎ প্রতি দিন প্রায় ১ ডিগ্রি করে ঘুরতে হয়। আবার পৃথিবীর আবর্তনের জন্যে প্রতি ডিগ্রির জন্যে সময় লাগে প্রায় ৪ মিনিট।
এ জন্যেই শীত, গ্রীষ্মসহ আলাদা ঋতুতে আলাদা তারামণ্ডলী চোখে পড়ে। যেমন (উত্তর গোলার্ধের) শীতকালে আদম সুরতের দেখা মেলে, কিন্তু এ সময় বৃশ্চিকমণ্ডলী (Scorpius) হারিয়ে যায় দিনের আলোতে। আসলে কোন তারামণ্ডলী রাতে চোখে না পড়ার কারণ, এর সূর্যের সাথে সাথে বা আগেই অস্ত যাওয়া।

প্রাচীন জ্যোতির্বিদ টলেমি এইরকম ৪৮টি তারামণ্ডলী তালিকাভূক্ত করেন। তিনি অনেকগুলোই করতে পারেননি কারণ, তাঁর বাসস্থান থেকে পুরো আকাশ চোখে পড়ত না। পরবর্তীতে মুসলিম বিজ্ঞানীরা অধিকাংশ তারকা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা ও এদের নামকরণ করেন। তাই দেখা যায়, অধিকাংশ তারাদের বর্তমান নাম আরবি ভাষা থেকে আসা।

এই ৮৮টি তারামণ্ডলীর মধ্যে ১৩টি তারামণ্ডলীতে সূর্য সারা বছর পর্যায়ক্রমে অবস্থান করে। এরাই মূলত রাশিচক্র। রাশিচক্র বলার কারণ সূর্য ঘুরেফিরে এদের মাঝেই থাকে। তবে সূর্য কখন কোথায় অবস্থান করে সেটার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ বের করার বিদ্যা তথা জ্যোতিষবিদ্যার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। প্রকৃতপক্ষে তাদের রাশিচক্রে এখনও ১২টি তারামণ্ডলী হিসেব করা হয় এখন যা সেকেলে হয়ে গেছে।

সূত্র: নাসা 
Category: articles

রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫

নিজস্ব অভিকর্ষের বন্ধনে আবদ্ধ আলোকোজ্জ্বল গোলাকার প্লাজমাকে নক্ষত্র বলা হয়। উল্লেখ্য, কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের বাইরে পদার্থের আরেকটি অবস্থা হচ্ছে এই প্লাজমা। নক্ষত্রকে বাংলায় তারকা বা তারাও বলা হয়। তবে, আমরা রাতের আকাশে চাঁদ ছাড়া যা কিছু তাদের দেখি সবাইকেও আবার অনেক সময় তারা বলে সম্বোধন করি। যদিও রাতের আকাশে তারা পাশাপাশি সৌরজগতের গ্রহদের মধ্যে খালি চোখে দৃশ্যমান পাঁচটি গ্রহসহ অন্যান্য বস্তুও থাকতে পারে। পৃথিবীর নিকটতম এবং দিনের আকাশের একমাত্র নক্ষত্র সূর্য। অন্যান্য নক্ষত্ররা অনেক দূরে থাকায় দিনে সূর্যের আলোর সাথে টেক্কা দিতে না পেরে রাতের আকাশে হাজির হয়।
নক্ষত্রের জন্ম নেবুলা তথা গ্যাসীয় মেঘ ও ধূলিকণা থেকে। নেবুলার এই সকল উপাদান নিজস্ব উপাদানের চাপে সঙ্কুচিত হয়ে তৈরি করে প্রোটো স্টার বা ভ্রুণ তারা। ধীরে ধীরে এর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। তাপমাত্রা এক কোটি কেলভিনে পৌঁছলে এতে শুরু হয় নিউক্লিয় ফিউশান বিক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া চলতে থাকে নক্ষত্রে হাইড্রোজেন শেষ হবার আগ পর্যন্ত। এর পরবর্তীতে এটি জায়ান্ট বা সুপারজায়ান্ট ধাপে প্রবেশ করে। পরিশেষে শ্বেত বামন, নিউট্রন স্টার বা ব্ল্যাক হোলে পরিণত হবার মধ্য দিয়ে এর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
ছবিটি বড় করে দেখতে এখানে ক্লিক করুন। 
অনেকগুলো তারকা মিলিতভাবে কোন নক্ষত্রস্তবক বা গ্যালাক্সি তৈরি করতে পারে। সাধারণত, একেকটি গ্যালাক্সিতে কয়েক হাজার থেকে শুরু করে লক্ষ কোটি পর্যন্ত তারকা থাকতে পারে। রাতের আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র লুব্ধক। অন্য দিকে পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টোরি। এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে ৪.২৪ আলোকবর্ষ দূরে।
সূত্রঃ
১। ইংরেজি উকিপিডিয়াঃ প্লাজমা
২। ইংরেজি উকিপিডিয়াঃ প্রক্সিমা সেন্টোরি
৩। ব্যাপন ম্যাগাজিনঃ ব্ল্যাক হোলের জন্মগ্রহণ
৪। স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপঃ তারকা কাকে বলে? 
Category: articles

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০১৪

মহাকাশবিজ্ঞানে এক অতি প্রয়োজনীয় একক হল আলোকবর্ষ । সাবধান! শেষে 'বর্ষ' শব্দ দেখে একে সময়ের একক মনে করা যাবে না! এটি আসলে দূরত্বের একক।

এর মানে কী?
আলো এক বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে বলা হয় এক আলোকবর্ষ। আলো যেখানে প্রতি সেকেন্ডেই ৩ লক্ষ কিলোমিটার (১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল) পথ অতিক্রম করে, সেখানে এক বছরে কত দূর যাবে ভাবতেই নিজেকে খুব ছোট্ট ছোট্ট লাগে, তাই না? নিচে আমরা দেখবো, এই মান আসলে কত বিশাল এবং এর কিছু উদাহরণ।

আলোকবর্ষ এককটির প্রয়োজন হল কেন? 
মহাজাগতিক বস্তুসমূহ এবং তাদের মধ্যকার দূরত এত বিশাল যে আমাদের সাধারণ এসআই একক মিটার এমনকি কিলোমিটারও সেখানে কোণঠাসা। প্রয়োজন আরও অনেক বড় এককের। যেমন আমাদের প্রতিবেশি গ্যালাক্সিদের মধ্যে সবচেয়ে বড়- অ্যান্ড্রোমিডার দূরত্ব যদি আপনি এসআই একক মাপতে যান, তাহলে তা হবে 2.4×1022 মিটার। এত বড় মান এসআই এককে লিখতে গেলে অঙ্কটি যেমন বড় হয়ে যায়, তেমনি এর মানে বোঝাও হয়ে দাঁড়ায় কঠিন। তাই জ্যোতির্বিদ্যায় অন্যান্য এককের পাশাপাশি আলোকবর্ষ এককটি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত নিকটবর্তী নক্ষত্রদের দূরত্ব বের করতে এই এককটি ব্যবহার করা হয়। 


এখন, এই এককে হিসাব করলে দেখা যায়, আমাদের সৌরজগত যে গ্যলাক্সিতে অবস্থিত (মিল্কিওয়ে) তার ব্যাস প্রায় ১ লাখ আলোকবর্ষ।  আমাদের প্রতিবেশি গ্যালাক্সি অ্যান্ড্রোমিডার দূরত্ব প্রায় ২.৫ লাখ ও ব্যাস ২ লাখ বিশ হাজার আলোকবর্ষ । ফলে, সহজে লেখাও যাচ্ছে, বিভিন্ন দূরত্বের তুলনাও করা যাচ্ছে।  আবার, সৌরজগতের বাইরে বৃহত্তম গ্রহ ট্রেস-৪ এর দূরত্ব পৃথিবী থেকে ১৪০০ আলোকবর্ষ দূরে।

আরো দেখুনঃ জ্যোতির্বিদ্যায় দূরত্বের এককেরা

আলোকবর্ষের মান কত? 
আলোকবর্ষ হল সেই পরিমাণ দূরত্ব যা আলো এক বছরে অতিক্রম করে। আমরা জানি আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে 3×108 মিটার, মানে ৩ এর পরে ৮টি শুন্য দিলে যা হয়। মাইলের হিসাবে তা ১ লক্ষ ৮৬ হাজার।

গাণিতিক হিসাব তাহলে এ রকমঃ
১ আলোকবর্ষ  = ১ বছরে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = ৩৬৫ দিনে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = ৩৬৫ × ২৪ ঘণ্টায়  আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    =  ৩৬৫ × ২৪ × ৩৬০০ সেকেন্ডে আলোর অতিক্রান্ত পথ
                    = 365 × 24 × 3600 ×  3×108 মিটার
                    = 9.4607×1015 মিটার। 
অর্থাৎ ৯ ৪৬০ ৮০০ ০০০ ০০০ ০০০ মিটার। 

এটি ৯ ট্রিলিয়ন কিলোমিটারের চে একটু বেশি বা প্রায় ৬ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার। 
জ্যোতির্বিদ্যায় আরেকটি প্রয়োজনীয় একক পারসেক। এটি আলোকবর্ষের চেয়ে বড়। এর মান ৩.২৬ আলোকবর্ষের সমান। 

অপেক্ষাকৃত ছোট দূরত্বের ক্ষেত্রে আবার আলোকবর্ষের পরিবর্তে আলোকমিনিট বা আলোকসেকেন্ড জাতীয় এককগুলো ব্যবহার করা হয়। বোঝাই যাচ্ছে, আলোর এক মিনিটে অতিক্রান্ত দূরত্বই হচ্ছে আলোকমিনিট ইত্যাদি। উপরের ছবিতে এ রকম প্রয়োগগুলো দেখুন। 
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...