Advertisement

শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭


এখন পর্যন্ত জানা মতে বামন গ্রহ প্লুটোর উপগ্রহ আছে পাঁচটি। এদের মধ্যে হাইড্রার কক্ষপথ সবচেয়ে দূরে। আবিষ্কৃত হয় ২০০৫ সালে। একই বছর আবিষ্কৃত হয় আরেক উপগ্রহ নিক্স। ২০১৫ সালে নিউ হরাইজনস যান প্লুটোর পাশ দিয়ে যাবার সময় হাইড্রাকেও দেখে যায়। তবে এটি আবিষ্কৃত হয় হাবল স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে। গ্রিক রূপকথার নয় মাথাওয়ালা সাপ হাইড্রার নাম অনুসারে এর এ নাম রাখা হয়। 
Category: articles

বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৭

আজ ৮ নভেম্বর। 
১৬৫৬ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন ইংরেজ জ্যোতির্বিদ এডমান্ড হ্যালি। 

হ্যালির ধূমকেতুর কক্ষপথ হিসাব করার জন্যে তিনি সবচেয়ে বিখ্যাত। বলাই বাহুল্য ধূমকেতুটির নামকরণ তাঁর নামেই হয়েছে। একই সাথে তিনি ছিলেন গণিত, ভূ-পদার্থ, আবহাওয়া ও পদার্থবিদ। 

এডমান্ড হ্যালি

জন্ম ৩৬১ বছর আগে। ইংল্যান্ডের লন্ডনের কাছের একটি গ্রামে। বাবা সাবানের ব্যবসা করে ধনী হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু হ্যালির ঝোঁক ছিল গণিতের দিকে। শুরুতে অধ্যয়ন করেন সেন্ট পলস স্কুলে। ১৬৭৩ সালে চলে আসেন অক্সফোর্ডের কুইনস কলেজে। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই তিনি সৌরজগত ও সৌরদাগ (sunspot) নিয়ে পেপার প্রকাশ করেন। 

সপ্তদশ শতকটি উদীয়মান বিজ্ঞানীদের জন্যে ইংল্যান্ড ছিল খুব অনুকূল জায়গা। লন্ডনের রয়েল সোসাইটি এ শতকেই (১৬৬০) প্রতিষ্ঠিত হয়। হ্যালি তখন ছোট্ট এক শিশু। বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরা এখানে মিলিত হতেন প্রতি হপ্তায়। জন ফ্ল্যামস্টিড ছিলেন প্রথম অ্যাস্ট্রোনোমার রয়েল। 

১৬৭৩ সালে কুইনস কলেজে এসে ফ্ল্যামস্টিডের সাথে সাক্ষাৎ হয় হ্যালির। বিভিন্ন সময়ে ফ্ল্যামস্টিডের সাথে দেখা করে তিনি জ্যোতির্বিদ্যার প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। 

এ সময় ফ্ল্যামস্টিড একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নিয়ে কাজ করছিলেন। উত্তর আকাশের তারাগুলোর একটি তালিকা চাই। তবে খালি চোখে নয়। এত দিনে টেলিস্কোপ চলে এসেছে। হ্যালি ভাবলেন, আমিও একই কাজ করব। তবে উত্তরের বদলে দক্ষিণের আকাশ নিয়ে। 

১৬৭৬ সালের নভেম্বরে তিনি দক্ষিণে যাত্রা করলেন। চুকিয়ে আসলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠটিও। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একটি জাহাজে চেপে চলে এলেন সেন্ট হেলেনা দ্বীপে। দ্বীপটি মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূরে। সবচেয়ে কাছের ভূখণ্ড রিও ডি জেনিরো থেকে আড়াই হাজার মাইল পুবে। বাবার অঢেল টাকা থাকায় ভাড়া নিয়ে চিন্তা করতে হল না। 

খারাপ আবহাওয়ার কারোণে কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছিল। কিন্তু তবুও তিনি কিন্তু খালি হাতে ঘরে ফেরেননি। ১৬৭৮ সালে ফিরে আসার সময় তাঁর কাছে ছিল ৩৪১ টি তারার তথ্য। পর্যবেক্ষণ করেন বুধ গ্রহের দুর্লভ একটি অতিক্রমণও (transit)। 

তাঁর প্রকাশিত নক্ষত্রের এই ক্যটালগ ছিল একটি বড় সাফল্য। এই ধরনের কাজ এটাই প্রথম। দক্ষিণের নক্ষত্রগুলোকে এর আগে কেউ টেলিস্কোপ দিয়ে খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টা করেনি। জানতে চেষ্টা করেনি তাদের অবস্থান। জ্যোতির্বিদ হিসেবে এটাই হ্যালির প্রথম সাফল্য। একই বছর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। নির্বাচিত হন রয়েল সোসাইটির ফেলো। 

১৬৮৪ সালে আসেন কেমব্রিজে। দেখা হয় নিউটনের সাথে। নিউটন ও রবার্ট হুকসহ রয়েল সোসাইটির কয়েকজন বিজ্ঞানী তখন গ্রহদের গতির ব্যাখ্যা খুঁজছিলেন। হ্যালিও যোগ দিলেন এই দলে। মজার ব্যাপার হল, অন্য সবার চেয়ে তাঁর বয়স কম। জানার চেষ্টা চলছে কীভাবে ও কেন গ্রহরা সূর্যের চারদিকে ঘোরে। সবাই চাচ্ছিলেন অন্যদের আগে কীভাবে সমাধান বের করে ফেলা যায়। দরকার এমন একটি মডেল যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যাবে যে কেন গ্রহরা সূর্য থেকে দূরে ছিটকে যায় না, বা সোজা সূর্যের দিকে চলে যায় না। 

হ্যালি ও হুক এর একটি সমাধান পেলেন। তাঁরা একটি বলের প্রস্তাব করলেন, যেটি একটি গ্রহকে সূর্যের চারপাশের কক্ষপথে ধরে রাখবে। এই বল দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতে কমবে। এই নিয়মকেই এখন আমরা বিপরীত বর্গীয় সূত্র (inverse-square law) হিসেবে জানি। 

হ্যালি ও হুক ঠিক পথেই ছিলেন। কিন্তু তাঁরা এর একটি তত্ত্বীয় রূপ তত্ত্ব দাঁড় করাতে ব্যর্থ হলেন, যা দিয়ে পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করা যাবে। হ্যালি গেলেন নিউটনের কাছে। তাঁর মতামত তুলে ধরলেন। এও বললেন, যে তিনি বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিউটন হ্যালির কাছ থেকে অনুপ্রেরণ নিলেন। এর জের ধরেই প্রকাশিত হল তাঁর ম্যাথমেটিক্যাল প্রিন্সিপাল অব ন্যাচারাল ফিলোসফি, সংক্ষেপে যার নাম প্রিন্সিপিয়া। 

রয়েল সোসাইটি এই প্রবন্ধের সম্পাদনার ভার দিলেন হ্যালিকেই। এর কৃতিত্ব নিয়ে নিউটন ও হুকের দ্বন্দ হ্যালি খুব কৌশলে সমাধান করেন। তিনি এর প্রুফ দেখেন ও লাতিন ভাষায় এর ভূমিকা লিখে দেন। 

হ্যালি আবহাওয়া বিদ্যায়ও অবদান রাখনে। ১৬৮৬ সালে তিনি একটি বিশ্ব মানচিত্র তৈরি করেন। এতে ছিল বিপুল পরিমাণ তথ্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বায়ুগুলো সম্পর্কে এই মানচিত্রে তথ্য ছিল। মনে করা হয়, এটাই আবহাওয়াবিদ্যার প্রথম প্রকাশিত মানচিত্র। 

দুই একটি বিষয়ে অবদান রেখে হ্যালির যেন মন ভরছিল না।  তিনি কাজ করতে লাগলেন বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে। মৃত্যুর হারের সাথে বয়সের সম্পর্ক নিয়েও তিনি কাজ করেন। তাঁর এই অবদান পরে জীবন বিমার জন্যে কাজে লাগে। 

১৭০৪ সালে অক্সফোর্ডে জ্যামিতির অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর প্রকাশ করেন ধূমকেতু নিয়ে গ্রন্থ- আ সিনোপসিস ইন অ্যাস্ট্রোনমি অফ কমেটস। এতে তিনি ২৪ টি ধূমকেতুর কক্ষপথের বিবুরণ লেখেন। ১৩৩৭ থেকে ১৬৯৮ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে দেখা গিয়েছিল এই ধূমকেতুগুলো। 

এদের মধ্যে তিনটি ধূমকেতু তাঁর খুব নজর কাড়ে। এগুলো দেখা গিয়েছিল যথাক্রমে ১৫৩১, ১৬০৭ ও ১৬৮২ সালে। তিনি বললেন, এগুলোর মধ্যে এত বেশি মিল দেখা যাচ্ছে যে এরা আসলে একই ধূমকেতু না হয়েই যায় না। আর ফিরে আসে ৭৬ বছর পর পর। এটা ছিল যুগান্তকারী একটি সিদ্ধান্ত। তিনি পূর্বাভাস দিলেন, ধূমকেতুটি আবার ফিরে আসবে। সালটি হল ১৭৫৮। তিনি বললেন, 
১৪৫৬ সালে... পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে একটি ধূমকেতুকে দেখা গিয়েছিল। অতএব, আমার সিদ্ধান্ত হল, ১৭৫৮ সালে এটি আবারও ফিরে আসবে। 
হ্যালির ধূমকেতু 
১৭২০ সালে হ্যালি ফ্ল্যামস্টিডের স্থলাভিষিক্ত হন। নিয়োগ পান দ্বিতীয় অ্যাস্ট্রোনোমার রয়েল হিসেবে।

তিনি ৮৫ বছর বেঁচে ছিলেন। মারা যান ১৭৪২ সালে। তাঁর পূর্বাভাসকৃত ধূমকেতু ঠিকই পরে দেখা যায়। তবে ১৭৫৮'র বদলে ১৭৫৯। কারণ, ওটা ঠিক ৭৬ বছর ফেরে না। একটু এদিক-ওদিক হয়। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮৬ সালে, আবার ২০৬১ সালে দেখা যাবার কথা রয়েছে। তত দিনে বেঁচে থাকলেও আপনি বুড়ো হয়ে যাবেন। 

হ্যালির ধূমকেতু একবার দেখার পর ভাগ্যক্রমে আবারও দেখতে দেখতে বুড়ো হয়ে যাবেন। 


আরো পড়ুনঃ

সূত্রঃ
১। http://earthsky.org/space/today-in-science-edmond-halley-nov-8-1656
২। https://en.wikipedia.org/wiki/Edmond_Halley
৩। https://en.wikipedia.org/wiki/Royal_Society
৪। 
Category: articles

সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭

আমরা দেখি, গ্রহ, উপগ্রহ ও নক্ষত্রদের আকৃতি হয় গোলাকার (spherical)। অবশ্য মেরু অঞ্চলের দিকে কিছুটা চাপা। দুটো বিষয়ই আমরা আলোচনায় রাখবো। 

আপনাকে এক খণ্ড পাথর দেওয়া হলে একে আপনি ইচ্ছে মতো কেটে যে কোন আকৃতি দিতে পারবেন- ঘনক, পিরামিড বা গোলক ইত্যাদি। নিজের মতো রেখে দিলে এটি আগের মতই থাকবে। গোলকাকার হয়ে যাবে না। কিন্তু ধরুন, ঐ পাথরটির বদলে আপনাকে পৃথিবীর সমান একটা বস্তু দেওয়া হল। একে কেটে কুটে কি আপনি পিরামিড বানাতে পারবেন?

পারবেন না। কারণ, এখন বস্তুটা যথেষ্ট ভারী। এর অভিকর্ষ যথেষ্ট শক্তিশালী। বস্তুর আকার যত বড় হবে, এর অভিকর্ষও তত বড় হবে। পূর্বোক্ত পাথরখণ্ডটিরও অভিকর্ষ (Gravity) আছে। কিন্তু অতি নগণ্য, অকার্যকর।
বিভিন্ন গ্রহ 
মনে করুন, আপনি পৃথিবীর বুকে খুব উঁচু একটা ভবন নির্মাণ করবেন। তাহলে, এর ভিত্তি হতে হবে যথেষ্ট মজবুত। তা না হলে এটা নিজের ভারে তথা পৃথিবীর অভিকর্ষের চাপে ধসে পড়বে। কোনো গ্রহ, উপগ্রহ বা নক্ষত্রে যদি অনেক উঁচু কোন স্থাপনা থাকতো, তবে তা অভিকর্ষের টানে গুঁড়িয়ে যেত। ভাবছেন, তাহলে বুর্জ খলিফার মত সুউচ্চ স্থাপনা টিকে আছে কিভাবে? হ্যাঁ, এর ফাউন্ডেশান বা ভিত্তি যথেষ্ট মজবুত এবং উচ্চতা তত বেশি নয় যত হলে ধসে পড়ত।  পাহাড়ের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

একটু খেয়াল করুনঃ 
গ্রহ যদি হতো ঘনকের মতো, তার অর্থ হতো এর কোণাগুলো অপেক্ষাকৃত উঁচু। যেহেতু গ্রহ, নক্ষত্রদের অভিকর্ষ খুব বেশি শক্তিশালী সে কারণে এ কোণাগুলো টিকে থাকতে পারে না, ধসে পড়ে। যে কোনো কিছুই মাথা চাড়া দিতে যাবে, অভিকর্ষ তাকে এক হাত দেখে নিবে। ফলে বস্তুটি চার পাশ থেকেই সমান হতে শুরু করবে।

এখন, সবকিছুই টান-প্রাপ্ত হয় কেন্দ্রের দিকে। ফলে, কেন্দ্রের চারপাশে ভর জড় হয়ে গোলকের (sphere) আকৃতি তৈরি হবে। যথেষ্ট শক্তিশালী ভিত্তি না থাকলে সব উঁচু নিচু স্থাপনা সমতল হয়ে যাবে। এ জন্যেই গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্ররা গোলকাকার। যেসব গ্রহাণুর অভিকর্ষ অপেক্ষাকৃত কম, তারা গোল হতে পারে না। হয় এবড়ো থেবড়ো। যেমন, ছবিতে দেখন ৪ ভেস্টা নামক গ্রহাণুর ছবি।


মহাকাশযান ডন থেকে ৪ ভেস্টার ছবি।
গোলকাকার হবার জন্য সর্বনিম্ন ভর কত হতে হবে?
ব্যাপারটা আসলে শুধু ভরের উপরই নির্ভরশীল নয়। বস্তুটা কী দিয়ে তৈরি তাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোন কোন বস্তুকে অন্য বস্তুর চেয়ে সহজে নির্দিষ্ট আকৃতি দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ভর (mass) কম হলেও চলবে। পাথুরে কোন বস্তুর ক্ষেত্রে গোলাকাকৃতি পাবার জন্য ব্যাস প্রয়োজন ৬০০ কিলোমিটার। কিন্তু বরফ নির্মিত বস্তু হলে ব্যাস ৪০০ কিলোমিটার হলেও যথেষ্ট।

যেমন উপরোক্ত গ্রহাণু  ৪ ভেস্টা হল সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহাণু। এর আকার হল দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে যথাক্রমে ৫৭৮ ও ৪৫৮ কিলোমিটার। ১৮০৭ সালে হেনরিখ উইলহেম ওলবার্স।

মেরু অঞ্চলে চেপে যায় কেন?
আমরা জানি গ্রহ, উপগ্রহরা যেমন আমাদের পৃথিবীও মেরু অঞ্চলে একটু চাপা তথা কম ব্যাসার্ধ্য বিশিষ্ট। এর কারণ হল পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করেআবর্তন বেগ দুই মেরু মাঝখান তথা বিষুব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি আর মেরুতে কম। ফলে,  ঘূর্ণনের কারণে বিষুব অঞ্চলের দিকে বস্তুটা একটু লম্বা হয়ে যায়।

সূত্রঃ
[1] curious.astro.cornell.edu
[২] spaceanswers
[৩] www.universetoday.com
Category: articles

বুধবার, ৮ মার্চ, ২০১৭

পৃথিবীর মহাকর্ষের কারণে আমরা এর বুক আঁকড়ে পড়ে থাকতে পারছি। কিন্তু পৃথিবী ছেড়ে মহাশূন্যে যাবার পথে এই মহাকর্ষই আবার বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

মহাকর্ষের আকর্ষণ এড়িয়ে পৃথিবীকে অব্যাহতভাবে  প্রদক্ষিণ করার জন্যে কৃত্রিম উপগ্রহগুলোর তীব্র বেগের প্রয়োজন হয়। যেমন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন ঘণ্টায় ১৭,৫০০ মাইল (২৮,২০০ কিমি.) বেগে ঘুরছে পৃথিবীর কক্ষপথে। কিন্তু পৃথিবী থেকে বাইরে যেতে হলে আরও বেশি বেগ লাগবে। সেই বেগের নাম মুক্তি বেগ (Escape velocity)।

আরও পড়ুনঃ
মুক্তি বেগের পরিচয়

এ বেগ অর্জনের জন্যে বিপুল জ্বালানি প্রয়োজন। এ কারণেই অ্যাপোলোর মতো আগের রকেটগুলো উৎক্ষেপেণে ব্যবহৃত স্যাটার্ন ভি রকেট খুব ভারী হতো। চাঁদে পৌঁছানোর মতো যথেষ্ট জ্বালানি দিতে হত এতে। ইলোন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের আধুনিক রকেট সে তুলনায় ছোট। কিন্তু এদেরকে যেতে হবে আরও অনেক দূর পথ। সুদূর মঙ্গল।

মাস্ক খুশি হতে পারেন যে তাঁকে অন্তত বৃহস্পতি গ্রিহ থেকে রকেট নিক্ষেপ করতে হচ্ছে না। সৌরজগতের প্রতিটি গ্রহে মুক্তি বেগের মান আলাদা। তবে বৃহস্পতির ক্ষেত্রে সেটা তুলনামূলক অনেক বেশি। রকেট নিক্ষেপ করতে হলে মুক্তি বেগ লাগবে ঘণ্টায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার মাইল (২ লক্ষ ১৭ হাজার কিমি.)। কারণ, গ্রহটির একারই ভর অন্য সব গ্রহের মিলিত ভরের দ্বিগুণ।

নিচের দারূণ অ্যানিমেশনটি থেকে বিভিন্ন গ্রহের মুক্তি বেগের ধারণা পাওয়া যাবে। 

যথাক্রমে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহ থেকে রকেট নিক্ষেপে জন্যে প্রয়োজনীয় বেগ। 

খেয়াল করলে দেখবেন, বৃহস্পতির মুক্তিবেগ অন্য গ্রহদের চেয়ে অনেক বেশি। আগেই বলেছি, কেন এটা হচ্ছে। এর ভর বেশি হবার কারণে। 
Category: articles

শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭

এর আগে একটি নিবন্ধে আমরা দেখেছিলাম, মহাকর্ষ কীভাবে কাল দীর্ঘায়ন ঘটায়। আজ এর গাণিতিক হিসাব দেখব আমরা।

মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন (Gravitational time dilation) অনুসারে, মহাকর্ষীয় বিভবের মান যেখানে বেশি, সে অঞ্চলের সময় তুলনামূলক আস্তে চলবে। অর্থ্যাৎ, মহাকর্ষের উৎসের তুলনামূলক কাছে সময় ধীরে চলে। যেমন, আপনি ভূপৃষ্ঠের যত কাছে থাকবেন,  পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা যে কারও চেয়ে আপনার সময় তত ধীরে অতিবাহিত হবে।


এ ফলাফলগুলো পাওয়া যায় আইনস্টাইনের সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব (General theory of relativity) থেকে। এ তত্ত্বের সমীকরণগুলো অতিমাত্রায় জটিল ও সাধারণের জন্যে দূর্বোধ্য। তবে, কাল দীর্ঘায়নের সমীকরণ সে তুলনায় অনেক সরল। বেগ জনিত কাল দীর্ঘায়নের সূত্রের সাথেও এর বেশ মিল আছে।

মহাকর্ষীয় কাল দীর্ঘায়ন এর সূত্র

এখানে to হচ্ছে কোনো ঘটনার প্রকৃত সময় (Proper time)। দর্শক এবং ঘটনা একই মহাকর্ষীয় বিভবে অবস্থান করলে পরিমাপে এ সময় দেখা যাবে। আর tহচ্ছে যে-কোনো ভর থেকে অসীম দূরত্বে অবস্থান করে মাপা সময়। অর্থ্যাৎ, আমরা ধরে নিচ্ছি tf পরিমাপের জায়গায় আলোচ্য ভরের মহাকর্ষীয় প্রভাব নগণ্য।

G হলো নিউটনের সার্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক। c হলো শূন্যস্থানে আলোর বেগ।  M হচ্ছে আলোচ্য বস্তুর ভর। আর r হলো বস্তুটা থেকে (মানে এর মহাকর্ষীয় কেন্দ্র থেকে) ঘটনার দূরত্ব।

সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বের একটি সূত্র বের হয় সোয়ার্জসাইল্ড সমাধান থেকে। এটাই ব্ল্যাক হোলের সমীকরণ। সূত্র থেকে আপনি পাবেন সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধের মান।  M ভরের একটি বস্তুর সবটুকু ভর এ ব্যাসার্ধের ভেতরে অবস্থান করলে বস্তুটির মহাকর্ষ এত শক্তিশালী হবে যে, এর থেকে কোনো কিছুই বেরিয়ে আসতে পারবে না। এমনকি আলোও না।

আরও পড়ুনঃ 
☛ আলো কীভাবে ব্ল্যাক হোলে আটকা পড়ে?

সূত্রটি হলোঃ
সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধের সমীকরণ


এখানে rs-ই হলো সোয়ার্জসাইল্ড ব্যাসার্ধ।
ব্ল্যাক হোলের সীমানায় পৌঁছে সূত্রটি প্রয়োগ করলে আমরা পাই r = rs। ফলে to এর মান হয়ে যাবে শূন্য। তার মানে, বাইরের কোনো দর্শকের কাছে মনে হবে এখানে সময় থেমে আছে। ফলে ব্ল্যাক হোলের সীমানা পেরিয়ে কোনো কিছুকে কখনোই ভেতরে যেতে দেখা যাবে না।

তবে ব্ল্যাক হোলে পড়েই গেলে ব্যাপারটা হয়ে পড়ে আরও উদ্ভট। অবশ্য বাইরে থেকে এ পতন দেখা সম্ভব হবে না। যাই হোক, এক্ষেত্রে বর্গমূলের ভেতরের রাশিটা হবে ঋণাত্মক। মানে, ফল হিসেবে পাওয়া যাবে কাল্পনিক সময়, যার ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত জানা নেই।

সূত্রঃ
১। সাসেক্স ওয়েবসাইট 
Category: articles

সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭


স্বছ পদার্থ হচ্ছে সেই বস্তু, যার মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারে। যেমন কাঁচ। এর মধ্য দিয়ে তাকালে বিপরীত পাশের বস্তু দেখা যায় (অবশ্যই যদি না অপর পাশে প্রলেপ দেওয়া থাকে)। চলুন দেখি কেন আমরা কাঁচের মধ্য দিয়ে তাকালে অপর পাশের বস্তু দেখি অথচ কাঠের মধ্য দিয়ে তাকালে দেখি না।

নিশ্চয়ই খেয়াল করে থাকবেন, বেশিরভাগ তরল ও গ্যাসীয় পদার্থই স্বচ্ছ। পানি, রান্না-বান্নার তেল, বায়ূ, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি।

কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের মৌলিক ভিন্নতাই এর কারণ।

কোনো বস্তু যখন কঠিন অবস্থায় থাকে, তখন এর অণুগুলো (Molecule) পরস্পরের সাথে খুব সু-সংগঠিত থাকে, এবং এর ফলে তাদের মধ্যকার বন্ধন খুব শক্তিশালী হয় আর বস্তুটি পায় দৃঢ়তা। বস্তুটি যখন তরল হয়ে যায়, তখন বন্ধন-শক্তি কমে যায় এবং অণুগুলোর সজ্জা বা বিন্যাস কিছুটা বিশৃংখল হয়ে যায়। আর গ্যাসীয় অবস্থায় এ বিন্যাস হয়ে যায় একেবারেই এলোমেলো।

বিন্যস্ত অবস্থা থেকে ক্রমে তরল ও গ্যাসে সজ্জাহীনতাই এদের মধ্য দিয়ে আলো চলাচল করতে পারার মূল কারণ। একটার উপর একটা ইট খাড়া করে যেমন দূর্ভেদ্য দেয়াল নির্মাণ করা যায় তেমনি আলোক তরঙ্গ চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অণুর সুবিন্যস্ততা।

বস্তু সাপেক্ষে আলোক তরঙ্গ প্রতিফলিত বা শোষিত হবে অথবা ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু তরল বা গ্যাসের ক্ষেত্রে অণুগুলো নিজেদের সাথে গাদাগাদি করে লেগে থাকবে না। ফলে তাদের মাঝে ফাঁকা স্থান রয়ে যাবে, যে পথে আলোক তরঙ্গ বের নিজের পথ করে নেবে।

অণুগুলোর অবিন্যস্ততা ( randomness) যত বেশি হবে , আলো তত সহজে বস্তূটিকে পাড়ি দেবে।
যখন একটি ফোটন (Photon) কোন পদার্থের পরমাণুর ইলেক্ট্রনের সংস্পর্শে আসে তখন নিম্ন-ঘটনা ঘটতে পারে-
      ক. ইলেক্ট্রন ফোটনের শক্তি শোষণ করে একে রূপান্তরিত করবে (সাধারণত তাপ শক্তিতে)
      খ. ইলেক্ট্রন ফোটনের শক্তি শোষণ ও সঞ্চয় করে ঔজ্জ্বল্য (Luminescence)  প্রদর্শন করবে।
      গ. ফোটনের শক্তি শোষণ করে পরে প্রতিফলিত করবে
      ঘ. ইলেক্ট্রন ফোটন কে শোষিত করতে পারবে না, ফলে ফোটন বস্তুটি ভেদ করে চলে যাবে।

অবশ্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপরের সব অপশনের সমন্বয় (Combination) ঘটে।

এবার চলুন দেখি কাঁচ কীভাবে স্বচ্ছ হয়?
সিলিকা বা বালি কাঁচ তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত হয়। এটাকে গলনাঙ্কে পৌঁছানো পর্যন্ত উত্তপ্ত করে তরল বানিয়ে এরপর  ঠণ্ডা করা হয়। ফল দাঁড়ায় এর অণুগুলো তরলের মতই অ-বিন্যস্ত থাকে কিন্তু কঠিন পদার্থের মত শক্ত বন্ধন ও দৃঢ়তা ধরে রাখে।
প্লাস্টিককেও একইভাবে শীতলীকরণের মাধ্যমে স্বচ্ছ বানানো হয়।
Category: articles

বুধবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৭


পৃথিবীর পৃষ্ঠে বসিয়ে রাখা একটি রকেট নিয়ে চিন্তা করতে করতেই কাল দীর্ঘায়নে মহাকর্ষের প্রভাব বুঝে ফেলা যায়। আমরা একটু পরেই তা করব। তবে তার আগে কিছু কথা বলে রাখা জরুরী।

অ্যারিস্টটল মনে করতেন, স্থান ও কাল দুটোই পরম। কোনো ঘটনা কোথায় এবং কখন ঘটেছে সে সম্পর্কে সকল পর্যবেক্ষক একমত হবেন। নিউটন এসে পরম স্থানের ধারণাকে বিদায় জানিয়ে দেন। আইনস্টাইন বিদায় দেন পরম সময়কেও। তবে পরম সময়ের কফিনে মাত্র একটি পেরেক ঠুকে তাঁর মন ভরেনি। ১৯০৫ সালে বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রকাশ করে বলেছিলেন, আলোর কাছাকাছি বেগে গতিশীল অভিযাত্রীর সময় চলবে তুলনামূলক অনেক ধীরে। ১৯১৫ সালের প্রকাশ করেন আরো যুগান্তকারী একটি তত্ত্ব। এটাই হল মহাকর্ষের সর্বাধুনিক তত্ত্ব। সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব (General theory of relativity)। দেখালেন, কাল দীর্ঘায়ন ঘটায় মহাকর্ষও।

অবশ্য উচ্চ গতির মতো মহাকর্ষও যে কাল দীর্ঘায়ন ঘটাতে সিদ্ধহস্ত সেটা তিনি ১৯০৭ সালে লেখা ও ১৯০৮ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধেই অনুমান করেন।

দুই আপেক্ষিক তত্ত্বেই একটি করে মৌলিক নীতি মেনে চলা হয়। বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্বে সেটি হল আপেক্ষিকতার মৌলিক স্বীকার্য। এর বক্তব্য হল,
মুক্তভাবে গতিশীল সকল পর্যবেক্ষকের কাছে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো একই থাকবে, বেগ যাই হোক তাতে কিছু আসে যায় না। 
এখানে ত্বরণ সম্পর্কে কিছু বলা হয় না। আর সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বের মৌলিক নীতিটি হল,  সমতুল্যতার নীতি (Principle of equivalence)। এই নীতির বক্তব্য হল,
যথেষ্ট ক্ষুদ্র স্থানের অঞ্চলে অবস্থান করে এটা বলা সম্ভব নয় যে আপনি কোনো মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে স্থিরাবস্থায় আছেন, নাকি শূন্য স্থানে সুষম হারের ত্বরণ (বেগ বৃদ্ধি) নিয়ে চলছেন।
এই গুরুগম্ভীর কথা বুঝতে অসুবিধা হলে সমস্যা নেই। বরং চলুন একটি উদাহরণ দেখি।

মনে করুন, আপনি মহাশূন্যের মধ্যে এমন একটি লিফটে আছেন, যেখান মহাকর্ষ অনুপস্থিত। ফলে এখানে উপর বা বা নিচ বলতে কিছু নেই। আপনি মুক্তভাবে ভেসে আছেন। একটু পর লিফটখানা সমত্বরণে চলা শুরু করল। এখন কিন্তু হঠাৎ করে আপনি ওজোন অনুভব করবেন। আপনি লিফটের এক প্রান্তের দিকে একটি টান অনুভব করবেন। এখন এ দিকটিকেই আপনার কাছে মেঝে মনে হবে! আপনি এখন হাত থেকে একটি আপেল ছেড়ে দিলে এটি মেঝের দিকে চলে যাবে। আসলে এখন আপনার মতোই লিফটের ভেতরের সব কিছুর ত্বরণ হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন আসলে লিফটটা মোটেই গতিশীল নয়, বরং এটি একটি সুষম মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে স্থির অবস্থায় আছে।

আইনস্টাইন বুঝতে পারলেন, ট্রেনের ভেতরে বসে যেমন আপনি বলতে পারেন না যে আপনি সম বেগে চলছেন কি না, তেমনি লিফটের ভেতরে বসেও আপনি বুঝতে পারবেন না, আসলে আপনি সুষম ত্বরণে চলছেন, নাকি কোনো সুষম মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের মধ্যে আছেন। আইনস্টাইনের এই চিন্তার ফলাফলই হল সমতুল্যতার নীতি।

সমতুল্যতার নীতি এবং এর ওপরের উদাহরণটি সত্য হলে বস্তুর জড় ভর (Inertial mass) ও মহাকর্ষীয় ভরকে (Gravitational mass) অবশ্যই একই জিনিস হতে হবে। বল প্রয়োগের ফলে কতটুকু ত্বরণ হবে তা নির্ভর করে জড় ভরের ওপর। এই ভর নিয়েই কথাই বলা হয়েছে নিউটনের গতির দ্বিতীয় সূত্রে। আর অন্য দিকে মহাকর্ষীয় ভরের কথা আছে নিউটনের মহাকর্ষীয় সূত্রে। আপনি কতটুকু মহাকর্ষীয় বল অনুভব করবেন তা নির্ভর করে এই ভরের ওপর।

আমরা সমতুল্যতার নীতি জানলাম। আইনস্টাইনের যুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এবার একটি থট এক্সপেরিমেন্ট (যে পরীক্ষা বাস্তবে করা যায় না, চিন্তা করে করে বুঝতে হয়) করতে হবে। এটা আমাদেরকে দেখাবে মহাকর্ষ সময়কে কীভাবে প্রভাবিত করে।

মহাশূন্যে অবস্থিত একটি রকেটের কথা চিন্তা করুন। চিন্তার সুবিধার জন্যে মনে করুন রকেটটি এত বড় যে এর শীর্ষ থেকে তলায় আলো পৌঁছতে এক সেকেন্ড লাগে। অর্থ্যাৎ এর দৈর্ঘ্য ১, ৮৬,০০০ মাইল। আরও মনে করুন, রকেটের সিলিং ও মেঝেতে একজন করে দর্শক আছেন। দুজনের কাছেই অবিকল একই রকম একটি করে ঘড়ি আছে যা প্রতি সেকন্ডে একটি করে টিক দেয়।

মনে করুন সিলিং এর দর্শক ঘড়ির টিকের অপেক্ষায় আছেন। টিক পেয়েই তিনি মেঝের দর্শকের দিকে একটি আলোক সঙ্কেত পাঠালেন। পরে ঘড়িটি আবারও টিক (সেকেন্ডের কাঁটায়) দিলে তিনি আরেকটি সঙ্কেত পাঠালেন। এ অবস্থায় প্রতিটি সঙ্কেত এক সেকেন্ড পর মেঝের দর্শকের কাছে পৌঁছায়। সিলিং এর দর্শক এক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি সঙ্কেত পাঠালে মেঝের দর্শকও এক সেকন্ডের ব্যবধানে সঙ্কেত দুটি পাবেন।

মহাশূন্যে মুক্তভাবে ভেসে না চলে রকেটখানা যদি পৃথিবীর মহাকর্ষীয় টানের মধ্যে থাকত তাহলে কী ঘটত? নিউটনীয় থিওরি অনুসারে এই ঘটনায় মহাকর্ষের কোনো হাত নেই। সিলিং এর দর্শক এক সেকেন্ডের ব্যবধানে সঙ্কেত পাঠালে মেঝের দর্শকও এক সেকেন্ডের মধ্যেই তা পাবেন। কিন্তু সমতুল্যতার নীতি ভিন্ন কথা বলে। চলুন দেখা যাক, নীতিটি কাজে লাগিয়ে আমরা মহাকর্ষের বদলে সুষম ত্বরণ নিয়ে চিন্তা করে কী পাই। নিজের মহাকর্ষ থিওরি তৈরি করতে আইনস্টাইন সমতুল্যতা নীতিকে যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন এটা হল তার একটি উদাহরণ।

তো, এখন তাহলে মনে করুন রকেটটি ত্বরণ নিয়ে চলছে (অর্থ্যাৎ, প্রতি মুহূর্তে এর বেগ বেড়ে যাচ্ছে। আমরা আপাতত ধরে নিচ্ছি এর ত্বরণের মান ক্ষুদ্র, না হলে আবার এটি আলোর বেগের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে!)। রকেটটি উপরের দিকে গতিশীল বলে প্রথম সঙ্কেতটিকে আগের চেয়ে (যখন রকেট স্থির ছিল) কম দূরত্ব পাড়ি দিতে হবে। কাজেই সঙ্কেতটি এখন এক সেকেন্ড পার হবার আগেই পৌঁছে যাবে তলায়।

রকেটটি যদি নির্দিষ্ট বেগে (ত্বরণহীন) চলত, তাহলে আগে-পরের সব সঙ্কেত এক সেকেন্ড পরপরই পৌঁছত। কিন্তু এখানে ত্বরণ আছে বলে প্রথমে যখন সঙ্কেত পাঠানো হয়েছিল, রকেট এখন তার চেয়ে দ্রুত চলছে। কাজেই দ্বিতীয় সঙ্কেতকে আরও কম দূরত্ব পার হতে হবে। ফলে এটি পৌঁছতেও আরও কম সময় লাগবে। কাজেই মেঝের দর্শক দুই সঙ্কেতের মাঝে সময় ব্যবধান পাবেন এক সেকেন্ডের চেয়ে কম। অথচ সিলিং এর দর্শক তা পাঠিয়েছেন ঠিক এক সেকেন্ড পরে। হয়ে গেল সময়ের গরমিল।

ত্বরণপ্রাপ্ত রকেটের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটা নিশ্চয়ই অদ্ভুত লাগছে না। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, সমতুল্যতার নীতি বলছে, রকেটটি যদি কোনো মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রেও স্থির থাকে তবু একই ঘটনা ঘটবে। অর্থ্যাৎ, রকেটটি যদি ত্বরণপ্রাপ্ত নাও হয় (যেমন ধরুন এটি পৃথিবীর পৃষ্ঠে উৎক্ষেপণের জন্যে বসিয়ে রাখা আছে) তাহলেও সিলিং এর দর্শক এক সেকেন্ড পর দুটো সঙ্কেত পাঠালে মেঝের দর্শক তা পাবেন এক সেকেন্ডের কম সময়ের মধ্যেই। এবার অদ্ভুৎ লাগছে, তাই না!

হয়ত মাথায় প্রশ্ন আসবে, এর অর্থ তাহলে কী দাঁড়াচ্ছে- মহাকর্ষ কি সময়কে বিকৃত করছে, নাকি ঘড়িকে অচল করে দিচ্ছে? ধরুন, মেঝের দর্শক উপরে উঠে সিলিং এর দর্শকের সাথে ঘড়ি মিলিয়ে নিলেন। দেখা গেল, দুটো ঘড়ি অবিকল একই রকম। তারা এও নিশ্চিত যে দুজনে এক সেকেন্ড বলতে সমান পরিমাণ সময়কেই বোঝেন। মেঝের দর্শকের ঘড়িতে কোনো ঝামেলা নেই। এটি যেখানেই থাকুক, তা তার স্থানীয় সময়ের প্রবাহ-ই মাপবে।

বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব আমাদের বলছে, ভিন্ন বেগে চলা দর্শকের জন্যে সময় ভিন্ন গতিতে চলে। আর সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব বলছে, একই মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের বিভিন্ন উচ্চতায় সময়ের গতি আলাদা। সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব অনুসারে, মেঝের দর্শক এক সেকেন্ডের চেয়ে কম সময় পেয়েছেন, কারণ পৃথিবীর পৃষ্ঠের কাছে সময় অপেক্ষাকৃত ধীরে চলে। মহাকর্ষ ক্ষেত্র শক্তিশালী হলে এই প্রভাবও হবে বেশি। নিউটনের গতি সূত্রের মাধ্যমে বিদায় নিয়েছিল পরম স্থানের ধারণা। এবার আপেক্ষিক তত্ত্ব পরম সময়কেও বিদায় জানিয়ে দিল।

কাল দীর্ঘায়ন। পাহাড়ের ঘড়ি দ্রুত চলে। 

১৯৬২ সালে এই অনুমান পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। একটি ওয়াটার টাওয়ারের উপরে ও নিচে দুটি অতি সূক্ষ্ম ঘড়ি বসানো হয়। দেখা গেল নিচের ঘড়িটিতে (যেটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের বেশি কাছে আছে) সময় ধীরে চলছে, ঠিক সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব যেমনটি অনুমান করেছিল তেমনই। এই প্রভাব খুব ক্ষুদ্র। সূর্যের পৃষ্ঠে রাখা কোনো ঘড়িও পৃথিবীর পৃষ্ঠের তুলনায় মাত্র এক মিনিট পার্থক্য দেখাবে। কিন্তু পৃথিবীর ওপরের বিভিন্ন উচ্চতায় সময়ের এই ক্ষুদ্র পার্থক্যই বর্তমানে বাস্তব ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্যাটেলাইট থেকে আসা সঙ্কেতের মাধ্যমে আমাদের ন্যাভিগেশন সিস্টেমকে ঠিক রাখার জন্যে এর প্রয়োজন হয়। এই প্রভাব উপেক্ষা করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অবস্থান বের করলে ভুল হয়ে যাবে কয়েক মাইল!

সময়ের প্রবাহের পার্থক্য ধরা পড়ে আমাদের শরীরেও। এমন এক জোড়া যমজের কথা চিন্তা করুন, যাদের একজন বাস করছে পাহাড়ের চূড়ায় এবং আরেকজন সমুদ্র সমতলে। প্রথম জনের বয়স অপরজনের চেয়ে দ্রুত বাড়বে। দুজনে আবার দেখা করলে দেখা যাবে একজনের বয়স আরেকজনের চেয়ে বেশি। এই ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্য খুব ক্ষুদ্র হবে হবে। তবে এদের একজন যদি আলোর কাছাকাছি গতিতে মহাকাশযানে করে দীর্ঘ ভ্রমণ করে ফিরে আসে তাহলে দেখা যাবে যমজের চেয়ে তার বয়স অনেক বেশি পরিমাণে কম হচ্ছে।

বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্বে পৃথিবী থেকে দূরে গিয়ে অনেক বেশি বেগে ভ্রমণ করে এলে আপনার বয়স অপেক্ষাকৃত কম হবে। আর সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্বে আপনি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে দূরে অবস্থান করলে বয়স দ্রুত বাড়বে। একটি প্রভাব আপাত দৃষ্টিতে আরেকটি থেকে উল্টোভাবে কাজ করে। অবশ্য বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব কার্যকর হবার জন্যে আপনাকে রকেটে চড়ে মহাশূন্যেই যেতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনি যদি পৃথিবীতেই একটি (অ)সম্ভব দ্রুতগামী ট্রেনে চড়েও ভ্রমণ করেন তবু ট্রেনের বাইরে থাকা আপনার বন্ধুর চেয়ে আপনার বয়স কম হবে।
কাল দীর্ঘায়ন। পাহাড়ের তুলনায় ভূমির সময় চলে ধীরে। 

 একে বলা হয় টুইন প্যারাডক্স। তবে মাথার মধ্যে পরম সময়ের ধারণাকে স্থান দিলে তবেই একে প্যারাডক্স (পরস্পর বিরোধী বা আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব ঘটনা) মনে হবে। আপেক্ষিক তত্ত্বে একক পরম সময় বলতে কিছু নেই। বরং প্রত্যেক দর্শক তার নিজের মতো করে সময় মাপেন। এটা মেনে নিলেই আর কোনো প্যারাডক্স থাকে না।

সূত্রঃ
স্টিফেন হকিং ও লিওনার্দ ম্লোদিনোর লেখা ও লেখকের অনূদিত প্রকাশিতব্য বই অ্যা ব্রিফার হিস্টরি অব টাইম অবলম্বনে। বইটি এ বই মেলায় প্রকাশিত হচ্ছে। পড়তে পারছেন অনলাইনেও। 
Category: articles

সোমবার, ১৬ জানুয়ারী, ২০১৭

পৃথিবীর বুক থেকে থেকে ওপরের দিকে লাফ দিয়ে আমরা গড়ে দেড় ফুটের কিছু বেশি উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারি। বাতাসে ভেসে থাকতে পারি প্রায় এক সেকেন্ড। কিন্তু সৌরজগতের অন্য গ্রহ বা উপগ্রহে গেলে কেমন লাফাতে পারব আমরা?


এ হিসাব মুহূর্তের মধ্যে করে ফেলতে স্টুয়ার্ট লোয়ে ও ক্রসি নর্থ নামের দুজন জ্যোতির্বিদ দারুণ একটি অনলাইন অ্যাপ বানিয়েছেন। এর নাম দিয়েছেন হাই জাম্প। এখান থেকে বের করা যাবে, এক লাফে কত উচ্চতায় ওঠা যাবে, আর কতক্ষণই বা ভেসে থাকা যাবে। চলুন ঘুরে আসি কিছুক্ষণ।

প্রথমেই পৃথিবী। আহেই বলেছি, সোজা ওপরের দিকে লাফ দিয়ে আমরা গড়ে দেড় ফুট উঠতে পারি। আমি অবশ্য দুই ফুটের কাছাকাছি পারি, চিকন হবার সুবাদে।

পৃথিবীর এক লাফ 
চাঁদে যাওয়া যাক। পৃথিবীর বাইরে একমাত্র চাঁদেই এ পর্যন্ত মানুষ লাফানোর সুযোগ পেয়েছে। চাঁদের মহাকর্ষ পৃথিবীর মাত্র প্রায় সতের শতাংশ বা ছয় ভাগের এক ভাগ। ফলে এক লাফে আপনি আরও বেশি উঠতে পারবেন। দশ ফুট! হ্যাঁ, সত্যিই নিজেকে কিছুটা অতিমানব মনে হবে। আর শুন্যে ভেসে থাকতে পারবেন চার সেকেন্ড। বাহ!

মঙ্গলে যাই চলুন। চাঁদের চেয়ে বড় হলেও পৃথিবীর চেয়ে কিন্তু ছোট। মহাকর্ষ পৃথিবীর প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ। উঠতে পারবেন তিন ফুট, আর ভেসে থাকবেন দুই সেকেন্ড। খুব বেশি না, তাই না? চলুন তাহলে একটু শিহরিত হই।

চলে আসুন বামন গ্রহ প্লুটোয়। এর পৃষ্ঠের অভিকর্ষের মান পৃথিবীর এক শ ভাগের ছয় ভাগ। এক লাফে এক্কেবারে ২৫ ফুট। শুন্যে থাকবেন ঝাড়া ৯ থেকে ১০ সেকেন্ড! চাঁদের চেয়েও বেশি। মনে রাখতে হবে, প্লুটো কিন্তু চাঁদের চেয়েও ছোট। এটাও এর গ্রহ থেকে বামন গ্রহ হয়ে যাবার একটা কারণ।

ভাবছেন হয়ত, বৃহস্পতি বা শনি থেকে লাফালে কেমন হয়? আফসোস! সেটা পারবেনই না। এদের কোনো কঠিন পৃষ্ঠ নেই, যেখান থেকে আপনি লাফ দেবেন। আর দিতে পারলেও পৃথিবীর চেয়ে অনেক কম উঠতে পারতেন। তার চেয়ে চলুন, সত্যি সত্যি সুপারম্যান হয়ে যাই।

আসুন শনির উপগ্রহ এনসেলাডাস-এ। এক লাফে শুন্যে ভেসে থাকবেন ঝাড়া এক মিনিট। পৌঁছবেন ১৪০ ফুট (প্রায় ৪৩ মিটার) ওপরে। বাহ!

এনসেলাডাস উপগ্রহে জাম্প 

একটি ধূমকেতু সফর করে এলে কেমন হয়। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। বেছে নিলাম ধূমকেতু ৬৭পি। এর অভিকর্ষ এতই তুচ্ছ যে, নাসার পাঠানো ফিলি ল্যান্ডার এর বুক আঁকড়ে থাকার জন্যে হারপুনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এখান থেকে লাফ দিলে আপনি আর এর বুকে ফিরেই আসবেন না। ছিটকে চলে যাবেন মহাশূন্যে! তার মানে নিছক একটি লাফের বেগ এর বুকের মুক্তিবেগের চেয়েও বেশি।

আরও পড়ুনঃ 
মুক্তি বেগ কাকে বলে? 

আরও জানতে চাইলে নিজেই ঘুরে আসুন এই লিঙ্ক থেকে

সূত্রঃ বিজনেস ইনসাইডার, কসমস বুক 
Category: articles

বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৭

আলডেবারান রাতের আকাশের ১৪তম উজ্জ্বল নক্ষত্র।
একে চেনার ভালো একটি মাস জানুয়ারি। সন্ধ্যা নামলেই পূর্ব দিগন্তের বেশ ওপরে দেখা যাবে একে। তাকাতে হবে প্রায় সোজা পূর্ব দিকে। পরের মাসগুলোতে আস্তে আস্তে ওঠে আসবে মাথার ওপরের দিকে। এপ্রিল মাসের দিকে সন্ধ্যার  পশ্চিম আকাশে চলে আসবে। পরের কয়েক মাস দেখা কঠিন হবে।

আলডেবারানকে নিশ্চিত করে চেনার জন্যে কাজে লাগবে আদম সুরতের (কালপুরুষ) এর তিন তারা। আদম সুরতের মাঝখানের কোমরের তিনটি তারাকে যোগ করে ডান দিকে বাড়িয়ে দিলেই পেয়ে যাবেন নক্ষত্রটি।

আর তিন তারা থেকে যদি বাম দিকে যান, তাহলে পাবেন লুব্ধক। রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র।

আদম সুরত থেকে আলডেবারান
আরও পড়ুনঃ
Category: articles

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬

মহাকর্ষ তরঙ্গ বইয়ের প্রচ্ছদ

অনলাইনে উইকিপিডিয়া জাতীয় সাইটগুলোর কল্যাণে বই পড়ার অভ্যাস কম। বাংলা বই তো আরও কম পড়া হয়। কিন্তু আব্দুল গাফফার রনি ভাইয়ের লেখা মহাকর্ষ তরঙ্গ বইটি দুই নিঃশ্বাসে (মানে এক বিরতিতে) শেষ করে বুঝলাম, না পড়লে বিশাল মিস হয়ে যেত।

শুরুর দিকে আলোচনা করেছেন, কীভাবে গ্যালিলিও এবং নিউটনদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হল প্রাথমিক মহাকর্ষ তত্ত্ব। এরপর বললেন, ম্যাক্সওয়েল সহ বিভিন্ন বিজ্ঞানীর পরিশ্রমের ফসল তড়িচ্চুম্বকীয় তত্ত্বের আবির্ভাবের ব্যাপারে। অতঃপর কীভাবে আইনস্টাইন আগের তত্ত্বগুলো ও নতুন পর্যবেক্ষণের মিশেলে তৈরি করে ফেললেন আপেক্ষিক তত্ত্ব। 

সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্ব থেকে এল মহাকর্ষ তরঙ্গের ইঙ্গিত। 

কিন্তু আইনস্টাইনই সেটা বাতিল করতে চাচ্ছিলেন। পরে বুঝতে পারেন নিজের ভুল।  ১৯৭৪ সালে এই তরঙ্গের পরোক্ষ প্রমাণ হাতে এল। এ জন্যে হালস ও টেলর নোবেল পেলেন ১৯৯৩ সালে। 
কিন্তু প্রত্যক্ষ্য প্রমাণ? তাতে সফল হবার জন্যে অসদুপায় অবলম্বন করলেন জোসেফ ওয়েবার। কিন্তু কিপ থর্ন, ওয়েইস ও ড্রেভার এর প্রতিষ্ঠিত লাইগো ঠিকই ধরে ফেলল এই রহস্যময় তরঙ্গ। 

কিন্তু এত সূক্ষ্ম এই তরঙ্গ কীভাবে ধরা গেল? এটি পেয়েই বা লাভ কী? এ তরঙ্গের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আবার বিগ ব্যাঙ ও মহাবিশ্বের গান শুনতে চাচ্ছেন। কিন্তু কীভাবে? 
এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে অবদান আছে সাত বাঙালি বিজ্ঞানীরও। এঁদের দুজন আবার বাংলাদেশি। কারা সেই মহান ব্যক্তি? জানতে হলে পড়ে ফেলুন মহাকর্ষ তরঙ্গ বইটি। 

আস্থা রাখুন, টাকা ও সময় কোনোটিই নষ্ট হবে না। 

লেখক 

বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে সতেরোর বই মেলায়। তবে ইতোমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
রকমারি ডট কম থেকেও কিনতে পারেন। 
Category: articles

জ্যোতির্বিজ্ঞান পরিভাষা: জেনে নিন কোন শব্দের কী মানে

এখানে সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ জ্যোতির্বিদ্যায় প্রয়োজনীয় পরিভাষাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো। সাজানো হয়েছে অক্ষরের ক্রমানুসারে। এই তালিকা নিয়মিত আপডেট...